উত্তর বসন্তঃ দধীচি
কিছু উদ্ধত কাক আর একটা অরুন্ধতী নক্ষত্র,
একটা জলপাই রঙের সেপাই আসে হিতৈষীর কাছে;
পায়ের তলায় ভাঙা কাঁচ কিংবা চশমা,
বিভেদ অমূলক, কারণ হিতৈষী অন্ধ।
সেপাই চোখ বোজে নীরব আর্তনাদে।
প্রশ্ন করে প্রথমা অরুন্ধতী। সেপাই বিনম্র বৌদ্ধমূর্তি।
‘ভিক্ষাম্ দদামি’। সুতরাং, ধুমকেতু অবশ্যম্ভাবী,
আর কিছু হায়নার রক্তও।
কাকগুলো মাথা নাড়ে।
বিবেচ্য বুদ্ধিজীবী।
বোকা বাক্সের পর্দায় বকের শ্লীলতাহানি।
প্রশ্নকর্তা ধর্মভীরু শৃগাল।
কবে নাকি শুকতারা আদালতে দোষী প্রমাণিত;
তবু ধৃতরাষ্ট্র বা কাক, অন্ধ আহাম্মক
চুলচেরা হিসেব কষে ব্রহ্মার সাথে বসে।
হিতৈষী কান চুলকোয়।
মন্দাক্রান্তা নদী, তীরে পারিজাত বন।
অশ্বমেধের ঘোড়া ধরে প্রাচীন বিভীষণ
প্রাগৈতিহাসিক সন্ত্রাসবাদী;
পলাশের বনে রক্ত মিশেছে, পাষণ্ডর।
তবে ওটা ফুল নয়। সোমরসজাত প্রাচীন বিষ।
হুলোবেড়াল এবং কিছু মাননীয়ার গোপন আঁতাত,
কাম ভস্ম শিবের নয়নে।
অরুন্ধতী উবাচ, জলপাইরঙা সেপাই ততধিক।
জরাজীর্ণ হিতৈষী খিলখিল করে হেসে ওঠে।
কাকগুলো মাথা নাড়ে ক্রমশ আন্দোলনে।
অতএব, ঋতুরাজ প্রসঙ্গত অপ্রাসঙ্গিক।
পাতালের দেবতা সে। ক্রমাগত অধঃগামী...
প্রতিবাদী মিছিলে পারেনি দিতে গাধার যোগান।
এখনো প্রেমের কবিতা, বসন্ত! আরে মূর্খ, লাঙল চালা।
শেয়াল পণ্ডিত বা নীল শৃগালের পাঠশালায়
কিছু পাখির অন্যায্য কর্মবিরতি আজ।
ঘুঘু এসে বসে হিতৈষীর কোলে।
অরুন্ধতী উশখুশ করে।
কৈলাশের হাওয়ায় ভাজা মাছের সুবাস।
কাকগুলো মাথা নাড়ে একবুক হতাশায়।
#
তবু জলপাই রঙা সৈনিক হাসে।
সে জানে মুক্তির উল্টোপুরাণ...
একখানি শ্বেত বর্ণ পদ্ম
বাড়িয়ে দেয় হিতৈষীকে।
বৃষ্টিস্নাত, কিংবা শিশিরভেজা, অর্থাৎ মূল্যহীন।
তবু গর্ভকেশরে বাঁধা ছিল কিছু সোঁদা মাটির ঘ্রাণ।
হিতৈষী ভ্রুকুটি করে।
গভীর, কুটিল, বৈষয়িক।
নির্মেদ দেহ থরথর করে কাঁপে।
বাকিটুকু ইতিহাস...
#
কোকিলের দিন শেষ হলে একগোছা রজনীগন্ধা
কিংবা বসন্ত বিলাপ।
অন্তত ভাগাড়ে কাকের খাদ্যাভাব হয়নি সেই রাতে।
তবে সপ্তর্ষিমন্ডল থেকে খসে যাওয়া কিছু তারা
যেন হঠাৎ মাটি পায়।
আর জলপাই রঙা ভোর আসে অস্থির ভগ্নস্তূপে;
নির্মল নিষ্পাপ দেবশিশু।
কাকগুলো মাথা নাড়ে ...
পরিতৃপ্ত,
আরেকটা দধীচি খাবে।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন