হিম্-রাতের পাঁচালী
মিলন চট্টোপাধ্যায়
রাস্তাটা কেমন ধোঁয়া মেখে আছে । ঠাণ্ডা একটা নীল্চে কম্বলের মত ধোঁয়া ধোঁয়া কুয়াশার আবরণ অদ্ভুত শূন্যতা সৃষ্টি করছে চারপাশে ।
বাড়ির সামনের গলিটায় হাঁটতে হাঁটতে মনে হচ্ছে পিছন থেকে কাঁধে হাত দিয়ে এই বুঝি কেউ বলবে - ' কীরে কেমন আছিস ? '
এই রাতে শুনশান রাস্তায় হাঁটলে ফেলে আসা ছেলেবেলা মনে পড়ে । আগে ছোটোরা মিলে বিকেলেই শুকনো পাতা, কাঠ জোগাড় করে বারান্দায় রেখে দিতাম , না বারান্দা বললে ঠিক বোঝানো যাবে না, আমরা রক্ বলতাম । তারপর রাতে পড়া শেষ হলে খেয়েদেয়ে এসে গোল হয়ে বসে আগুন ধরাতাম, আর পাড়ার বয়স্করা ভূতের গপ্পো শোনাত ।
কৈশোরে গানের লড়াই খেলতাম বা মেমোরি গেম । নানা অদ্ভুত খেলা বানাতাম । সব হারিয়ে যায় । যৌবনের দিন খুব কষ্টের , প্রথমে বেকার, তারপর একটা কাজের জন্য হন্যে হয়ে চেষ্টা , এরমধ্যেই প্রেম । যদিও সেই প্রেম আসলে স্বার্থ চিনে নেয় দ্রুত । ভুল ভেঙে গেলে হতাশা, তারপর নির্বিকারত্ব । তারপর আবার খোঁজ, অবশেষে খুঁজে পাওয়া ।
আজ হঠাৎ মনে পড়ছে সব , আর ইচ্ছে করছে তার সাথে বসে থাকতে, তার হাতদুটো নিজের হাতের মুঠোয় নিয়ে, কাঁধে মাথা রেখে চুপচাপ রবি ঠাকুরের গান শুনতে । খুব ইচ্ছে করছে , খুব । আর কে না জানে ইচ্ছে আসলে কারো বারণ শোনে না ।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন