জিবারিশ
ইন্দ্রনীল সেনগুপ্ত
এক
আমি অভিভূত
দেখছি সংশয়হীন আত্মপ্রকাশ
আশ্চর্য দীর্ঘ লম্ফনে অতিক্রম করলেন বজ্র বলয়
সৎসাহস এবং এক ফালি চাঁদের সন্ধ্যায় ফুটন্ত রাতফুলেরা সম্ভবত
অহল্যা পাথরকেও সামুহিক সচল করে
শুকনো বালিকে উর্বরা করে প্রেরণা নদী
আপনি আলেকজান্দ্রিয়া মেসোপটেমিয়া সিন্ধু নদ ভলগা ডানিয়ুব
পেরিয়ে চলে যাচ্ছেন মিসিসিপি অববাহিকায়
এ পৃথিবী তুচ্ছ গণ্ডী কেটে অবরুদ্ধ করে না
রোষকষায়িত নেত্রে তাকাবে না কাপালিক
নিজের মধ্যে দেখবেন ঈশ্বর
অভিশাপের সাধ্য কি স্পর্শ করে
আশীর্বাদ ও প্রয়োজন নেই
রক্তে প্রতিটি বিন্দুতে তখন নিরন্তর প্রাণের প্রকাশ
দুই
সমাপ্তি রেখার কাছাকাছি স্মৃতিরা ধ্বসে গেলে গহ্বরে
উদ্দাম জাদু টোনা গোপন সঞ্চারী
অ্যালুভিয়াল সয়েলে বেড়ে ওঠে প্রাণদায়ী শস্য
নীলাকাশ এখনও কি ততটাই
শীতের হাওয়াও কি জানি উষ্ণায়ণ কতটা ছুঁয়েছে
তুমিও কি এখনও ততটাই
বিছানা টানটান করবে ঝাড়বে শো কেসের ধুলো
তিন
দেহ অবশেষে কি হয় নব কলেবর
তবুও কি হুবহু হয় কাউকে কি বলতে পারব আশ্চর্য কোথায় পেলে এই চোখ
অবিকল জন্মদাত্রীর মত
চার
পারে বসে দেখি জলের আনাগোনা ছোট ছোট ঘূর্ণি প্রিয়তমা নদীবক্ষ
অদূরে ইউক্যালিপটাসের নগ্ন ঊরু সার সার সিমেট্রিতে ক্লান্ত পথিক বিশ্রামে
মনের মধ্যে একাকার দেশ বিদেশ
আমরা মানুষ প্রথম
আমরা মানুষ মধ্যবর্তীতে
সর্বশেষেও সেই মানুষ ছুঁয়ে যাওয়া
পাঁচ
নদী তোমাকে ছুঁয়ে থাকি দেশে বিদেশে গঙ্গা টেমস ইয়াংসি
মরুতে হারানো সরস্বতীও বালিতে জমিয়েছে প্রাণের ফসিল
অতীতে থেক না নদী বয়ে চল ইদানীং খাতে
ছয়
এত রাতেও কোথাও বাজছে ভায়োলিন
গা ছম ছম কে বাজায়
এক শখের বাদক ছিলেন পেশা অন্য
গভীর রাতে তার ভায়োলিনের নেশা
বারান্দায় চাঁদের আলো পড়লেই কেঁদে উঠত যন্ত্র
ঠিক যেন মানুষ
গতকাল তাঁর শবযাত্রায় সঙ্গী ছিলাম
সাত
ছন্দের মিল খুঁজছি
ক্রমশ সেই হ্রদের কাছে নতজানু
আত্মগোপনে এক প্রাগৈতিহাসিক সম্রাট
এইখানে লেখা আছে অজস্র ভুলের ইতিহাস
ন্যায় অন্যায়ের সূক্ষ্মতা কতটা বিচার দেয়
অধিক আহত করে
এই সেই দ্বৈপায়ন হ্রদ
শ্রীকৃষ্ণ ইঙ্গিতে দেখালেন দুর্যোধনের ঊরু
প্রেম ও যুদ্ধেও কি সত্যি কোন ধর্মনীতি থাকে না
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন