রবিবার, ২১ জুলাই, ২০১৩

মুক্তগদ্য - রঙ্গীত মিত্র

বিনায়ক দা এবং এই সময়
রঙ্গীত মিত্র



“একটি অসাধারণ গদ্য লিখতে বলল জুবিন”

ঋতুরা পালাচ্ছে ঐ দেখো
ঐ দেখো তারা আমার মোবাইলের স্ক্রিন।
আমি রোজভাবি প্লেবয় হবো
হতে পারিনা।
রোজ ভাবি কারুর উপকার করবো।
পারি না।
এইভাবে যেতে যেতে দেখি একটা ইওয়ান বাস ডাকছে আমাকে
আরে আমি তো অনেকেই দেখলাম
আমি দেখেছি অন্ধকারকে
কিন্তু কাল থেকে মন খারাপ
আমি ঠিক বড় হয়ে যাব।দেখবেন আমি ঠিক বড় হয়ে যাব...

পর্ব-১

লিখতে বল্লেই হলো! আমি তো আমার ওই “অসাধারণ” লেখা লিখতে পারিনা।জুবিন শুনবে না।আসলে আজ এমনিই ফোন করা।দেশে বেরোনো বিনায়কদার কবিতা নিয়ে কথা বলছিলাম আমরা।কি অসাধারণ লেখা...প্রতিটা লাইন-ই আমাদের নিয়ে যাচ্ছিলো...এইযে সময়কে দেখার একটা চোখ...বিনায়কদাই পারে।বিনায়কদার লেখায় বিভিন্ন বিষয় উঠে এসেছে...যা আগে বাংলা কবিতায় আমি দেখিনি। শুধু কবিতা কেন? গান, গদ্য , নাটক, প্রবন্ধ সব-ই লিখেছেন বিনায়কদা।কি ভার্সেটাইল মানুষ। এছাড়াও দেবতুল্য মানুষ...সৎ,হেল্পফুল...সবেতেই ১০০তে ১০০ ; আমি অন্ততঃ বিনায়কদার ভিতরে কোনো খারাপ কিছু দেখিনি। এবং এই সময় অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ও বিখ্যাত মানুষ তিনি।অথচ কখনো প্রকাশই করেন না।বরং কিভাবে মানুষের পাশে থেকে লড়াই করা যায়...সেটাই দেখান।আমার সব ভালোকিছুই বিনায়কদার জন্যে হয়েছে। বিনায়কদার বাড়ি গেছি অনেকবার।অনেকবার-ই খুব বিরক্ত করেছি।বিনায়কদা আমাকে শিখিয়েছেন,একলা নয় সবাইকে নিয়ে বেঁচে থাকতে হবে।সবার ভালো করতে হবে। আজ জুবিনের সাথে বিনায়কদার লেখা নিয়ে , বিনায়কদাকে নিয়ে অনেক কথা হলো।

দেবায়ূধ,কুবলয়দা,সোহম,জুবিন,অরন্যদা,প্রশান্ত,সৌভিকদা,দেবাদৃতা,আমি এবং আরো অনেকে তাই জন্যে বিনায়কদাকে এতো ভালোবাসি। ওইরকম পবিত্র এবং খাঁটি মানুষ পাওয়া খুব কঠিন।বিনায়কদাকে সেলাম জানাই।


পর্ব-২

গড়িয়াহাটের রাস্তায় হাঁটলে অনেক সুন্দরীদের দেখা যায়।তারা নিজেরা যতটা সুন্দরী নয় তার থেকে এক্সপোজ করে। শরীরটাই নাকি সব।আমার প্রজন্ম সেটাই বোঝে।তাদের কাছে দামি ওয়াইন আর পেট্রোল একই।তারা আবিস্কার করতে চায় না। বরং একই জিনিস ফলো করে।ইদানীং কেউ কেউ নিজেকে আলাদা প্রমান করে।বলে তারা বিপ্লবী।কিন্তু ভিতরে তাদের কিছুই নেই।নিম্নমধ্যমেধা। মেয়েদের বিভিন্ন রং-এর জিন্সের মতো আমাদের যাপন। এইভাবতে ভাবতে লেকমার্কেটে দাঁড়িয়ে আছি। শরীর বার করা মেয়েদের বার-ভীর করা দুপুর আজ।আজ তাদের বয়ফ্রেন্ড বদল।হাত নেড়ে ট্যাক্সী ডাকাটাও তাদের কাছে ফল পেড়ে নেওয়ার মত । সেইরকম একটি মেয়ে অনেকক্ষণ ধরে ফোন করছিলো।হঠাত দেখলাম একটি গাড়ি এলো।গাড়ি তাকে তুলে নিয়ে হু হু করে চলে গেলো।এ প্রসঙ্গে বলে রাখি আজকাল ট্যাক্সির পিছনে তো চোখ ফ্যালা যায়-ই না। দামি গাড়ি জামা কাপড়—গ্ল্যামার হোটেলের দরজার ফুটোদিয়ে সব ইন্টার নেট করে দেয়।তবে একেই বলে বেঁচে থাকা।আধা-প্রস্টিটিউসান কি? আসলে যৌনতাও একটা চাপিয়ে দেওয়া।এদের কাছে সব কিছুই নিয়ম।কোথাও রহস্য নেই। বদলের বদলে কেবল পিছনে চলে যেতে যেতে জামাকাপড় ছোটো হতে থাকে।যদিও আমি ওয়েস্ট্র্যানাইজেশানকে সমর্থন করি।কিন্তু কপিপেস্টকে নয়।যার ভিতরে কিছুই নেই সে শুধু কেন বড় বড় কথা বলে যাবে?মামদোবাজি নাকি? নারীস্বাধীনতাকে আমিও সমর্থন করি।আমার-ও ভালো লাগে একটি মেয়ে পুরুষের থেকে এগিয়ে আছে...কিন্তু সে যদি কিছুই বোঝে না...শুধু শরীরটাই সব তার...মাথায় তার কিছু নেই...তার সাথে কি কথা বলবো? আমরা শুধু তাই কপিই করে যাচ্ছি...এটাই জীবন...


পর্ব-৩

বৃষ্টির এলো।আস্তে আস্তে।পৃথিবীটা যেন ইউনিসেক্স টয়লেটের মতো। একটি মেয়েকে দেখলাম ছাতা আছে অথচ ভিজছে।তার শরীর...স্তন...জিন্সের কোমর...ভাঁজ উঠে আসছে কাগজের উপর...যেরকম ফুল ফুটে ওঠে...যেরকম সিগারেটের প্রথম ধোঁয়া...যেরকম ভদকার ফ্লেবার...যেরকম প্রথম প্রেম...সব কিছুর ভালোর ভিতর থেকে সে অপরূপা হয়ে বৃষ্টীতে ভাসিয়ে দিচ্ছে আমার হৃদয়...আমাদের গোলপার্কের মোড়...তবে এখনো সব কিছু সহজ ও অনেক হয়ে গিয়ে বড় ভুল হয়েছে।কারণ আমি দেখলাম একটি মেয়ে বাইকের পিছনে বসে বৃষ্টীতে ভিজছে।তার শরীরের সব অংশ...সার্ট...মাইক্রো-মিনিস্কার্ট থেকে বেরিয়ে আসছে...যেরকম টিউব থেকে মাজন বেরিয়ে আসে...আমার চশমায় তার ছাপ...আমাকে যৌনঋণী করে দিয়ে সে চলে যাচ্চে...কিন্তু আমাকে আর বসে থাকলে হবে না।ক্যাফেলায় যেতে হবে।সুতপা এখন ঘুমছে।সৌভিকদা,দিপ,কৌস্তব,কিঙ্কিনিরা বসে আছে...আমি লেকেরা রাস্তায় দেখেছে এক মধ্যতিরিশের মহিলা বিয়ার খেয়ে বিয়ারের ক্যান ফেলে রেখে যাচ্ছে...আমি দেখেছি একটি মেয়ে গাড়িতে তুলে নিয়ে যাচ্ছে ছেলেদের...তার শরীরে টোমাটোর মতো সূর্য লেগে...তার শরীরের আমাজন...নদীর গতিপথে দাঁড়িয়ে বলছি আমি ভিতরটাকে আরো প্রসারিত করো কমরেড...দ্রুত দ্রুত দৌড়াতে গেলে আরো আন্তর্জাতিক হতে হবে।আরো অ্যাডভান্সড হতে হবে।নিজেদের আপডেট করতে হবে। সব কিছুই তো জীবনের অঙ্গ।কিন্তু আগে হিউম্যানফিলিংসগুলোকে জাগ্রত করো...নিজেকে কোথাও আটকে রেখোনা।কাউকে পাত্তা না দিয়ে এগিয়ে যাও...এনজয় ইয়োর লাইফ বস...

সিস্টেমের বাইরে গিয়ে অন্য কিছু করে দেখানোর সিস্টেম হয়ে যাওয়া না হয়ে যাওয়া একদম নিজের ব্যাপার...একবার সেই দিকে প্রকৃতির মতো তাকিয়ে দেখো

সে অপ্সরীর মত তাকিয়ে আছে...


1 টি মন্তব্য:

  1. রঙ্গীত, কোলাজ গুলো দিয়ে একটা অসাধারণ ছবি এঁকেছিস... বেশ একটা এলোমেলো ছুটির রবিবারের মতো .....এরকম যৌনতা চুসে খাওয়া, এরকম ভালোলাগার মানুষের কাছে রোদ্দুর কুরতে যাওয়া, এরকম বৃষ্টির ভেজা, এরকম হঠাত রাস্তায় ৪৪০ ভোল্ট শক খাওয়া..... সব খুব সুন্দর করে তোর ক্যানভাসে ফুটিয়ে তুলেছিস...

    পরিশেষে,একটা কথা... কৌস্তভকেও এই কথাটা বলি, এমন কিছু তোদের থেকে এমনকিছু প্রত্যাশা করি যেটা পাঠকদের নাড়িয়ে দেবে... ঝটকা খাবো.. মনে হবে এইরকম তো আগে হয় নি... এইরকম ভাবে আগে তো ভাবতে পারিনি কিংবা এইরকম জিনিস তো আগে দেখিনি...

    এটা খুব সুন্দর ছবি হয়েছে, কিন্তু বহুবার দেখা, বহুবার পড়া, বহুবার শোনা ছবি.... বহুলোক বহুভাবে এই ছবিটা এঁকেছে... তুইও তাদের মধ্যে একজন... দ্য রঙ্গীত মিত্র হতে পারিস নি..

    উত্তরমুছুন