হাইকু লেখার উপর কিছু তথ্য
কবির চোখে পড়েছে প্রথমে তারপর লক্ষ করেছেন অতি সুন্দর রঙ্গিন ঘুড়ি তার উপরে উড়ছে। এখন চিন্তা করলে সবার নিকট কবিতাটির ভাব পরীষ্কার হয়ে যাবে। কিন্তু সে ভাব কিন্তু বড় গভীর অর্থ বহন করছে। তা হলো একজন ভিখারির নড়বড়ে ঘরের উপর রঙ্গিন ঘুড়ি দেখে কবি অবাক। তাই সে ভাব হাইকুতে প্রকাশ করেছেন। এখন বাকি রইল 'সময়' কি করে দেখালেন। আমার আগের লেখাতেও উল্লেখ করেছি যে সময় প্রকাশ করে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ একটি সীজন উল্লেখের মাধ্যমে। তা না হলে সঠিক হাইকু হবেনা। এ হাইকুতে ঘুড়ি উড়াবার সময়টি বুঝে নিলেই হবে। শীত প্রধান দেশে বসন্ত কালে অর্থাৎ মার্চ মাসে শিশু দিবসে ঘুড়ি উড়ায়। আমার কথা এখানে শেষ হয়নি। তা হলো শেষের লাইনটি যদি ভিখারি(র) ঘর হতো তা হলে আরো পূর্ণাংগ বাক্য হতো। কিন্তু 'র' বাদ দিয়েছি। এই বাদ দেওয়ার প্রথাও জাপানী হাইকুতে রয়েছে। তাকে বলে 'কিরেইজি' অর্থাৎ কাটা বা বাদ দেওয়া শব্দ। 'র' বাদ দিয়ে পাঁচটি অক্ষরে মিলানো হয়েছে, তাতে কিন্তু হাইকুটি অসম্পূর্ণ হয়নি। ট্রেডিশন্যাল জাপানী হাইকুতে দু'টি 'rhythmical unit' বা সমান তাল বা মাত্রা থাকে। উপরে 'কমা' লক্ষ করলে তা বোধগম্য হবে। উপরে বারটি অক্ষরে বা অন্জিতে ও নিচে পাঁচটি অক্ষর বা অনজিতে লিখা হয়েছে। আবার উপরে পাঁচটি লিখে নিচে বারটি অক্ষরেও হাইকু লিখার প্রথা আছে।
যারা হাইকুতে আগ্রহি তাদের মনে রাখতে হবে যে ট্রেডিশন্যাল হাইকুর সৃষ্টি হয়েছে অসম্পূর্ণ দীর্ঘ কবিতার স্তবক থেকে। তাই হাইকুতে সমান তাল বা মাত্রাও অসম্পূর্ণ থাকে। হাইকুতে সাধারণ ব্যাকারণ নীতি বর্জন করা হয়। তাতে অসম্পূর্ণ বাক্য থাকে এবং জটিল ক্রিয়াও বর্জন করা হয়।
হাইকুর উপর আরো কিছু কথা স্মরণ রাখা উচিত। তা হল বাংলাতে হাইকু লিখতে ৫-৭-৫ অক্ষরেই লিখতে হবে ও যুক্তাক্ষর একটি গণনা করা হবে। ইংরেজী, জার্মন ও ইটালিয়ান ভাষাতে হাইকু লিখতে হলে 'সিলেবল' এ লিখা হয়। বাংলাতে যথাপোযুক্ত অক্ষর যুক্ত করে মাত্রা বা তালের সাথে মিল রেখে লিখতে হবে। একটি কথা মনে রাখতে হবে যে হাইকু লিখা কিন্তু সহজ নয়। একটি পারফেক্ট হাইকু লিখতে হলে অনেক ভাবতে হয়। আর সেটি যথার্থ হাইকু হল কিনা তা পড়েই বুঝা যাবে। আমি আবার বলছি বাংলা হাইকু বাংলা ভাষাতে জাপানী হাইকুর অনুকরনে লিখা সম্ভব। নিম্নে নজদিক লিখা আমার
দু'টি হাইকু উদাহরণ হিসাবে দিলাম।
নিষ্প্রাণ ঘোড়া,
শকুনের ছায়ায়
উড়ন্ত মাছি......
গ্রীষ্মের মশা
রক্ত খেকো পতঙ্গ,
নির্ভীক যুদ্ধা......
আরশাদ উল্লাহ
হাইকু কবিতা নিয়ে অনেক লেখক অনেক রকম আলোচনা করেছেন। তাদের অনেকেরই মন্তব্য ছিল যে
হাইকু হল ১৭ টি syllable এর কবিতা যা তিনটি লাইনে লিখা হয়। তাদের ধারনা প্রথম লাইনে ৫ টি,
দ্বৈতীয় লাইনে ৭ টি ও তৃতীয় লাইনে ৫ টি সিলেবল থাকে। এ কথা জেনে অনেকেই হাইকু লিখতে গিয়ে সিলেবল খুঁজাখুঁজি শুরু করেন। কিন্তু Willium J. Higginson তাঁর লেখা বই The HAIKU HANDBOOK টিতে অনেক গবেষণা করে লিখেছেন যে জাপানী হাইকু পাশ্চাত্য দেশে লিখা হাইকু থেকে সম্পূর্ণ ভিন্ন। কারণ, জাপানী হাইকু তাদের ট্রেডিশন্যাল ধারায় ৫-৭-৫ পদ্ধতিতে লিখে এবং তাদের লিখা হাইকুতে সিলেবল নেই। জাপানী হাইকুতে 'অনজি' থাকে সিলেবল নয়।
উদাহরণ হিসাবে তিনি যেমন দেখিয়েছেন তা নিম্নরূপঃ
English syllable: a on two wrought
Japanese onji: a (আ); n (ণ); ka (কা); shi (শি); tsu (ৎচু), ইত্যাদি।
উপরের ইংলিশ সিলেবল এ, অ্ টু, রট উচ্চারণ করতে প্রলম্বিত স্বর-ধ্বনি বুঝা যায়। আবার জাপানী হাইকুতে যে সব বর্ণকে 'অন্জি' বলা হয়েছে সেগুলির উচ্চারণ আ, কা, সি, ৎচু, ইত্যাদি। এগুলি কিন্তু জাপানী ৪৮ টি 'হিরাগানা' বর্ণের পাঁচটি বর্ণ। সুতরাং বর্ণ গণনায় ৫-৭-৫ টি বর্ণ মিলে মোট ১৭ টি বর্ণ বা অক্ষর হয়। বাংলা ব্যাঞ্জন বর্ণে অনেক অনজি আছে, যেমন, খ, ঘ, চ, থ, ঝ, ঠ, ইত্যাদি। তাই বাংলাতে হুবহু জাপানী পদ্ধতিতে মোট সতের অক্ষরে হাইকু লিখা সম্ভব।
আমার কথা হল বাংলাতে হাইকু লিখতে হলে জাপানী হাইকুর নিয়মাবলি মেনে লিখাই উত্তম। আমরা যদি ইংলিশ হাইকুর ধারা মতো লিখি তাহলে বড় বিভ্রান্তিতে পড়তে হবে।
ইংলিশ এবং জাপানী হাইকুর এক অনুবাদ অনুষ্ঠান করেছিল নিউ ইয়র্কের Japan Society, Inc. সে অনুষ্ঠানে ইংলিশ হাইকু কবি ও লেখক Willium J. Higginson উপস্থিত ছিলেন। তিনি তাঁর বইটিতে অনুষ্ঠানটির উপর লিখেছেন যে সেখানে ২৮ টি হাইকু কবিতা আবৃত্তি করা হয়েছিল। ইংরেজীতে যিনি অনুবাদ করেছেন তিনিও একজন হাইকু কবি ছিলেন। তিনি অনুবাদ হাইকু পাঠ করার সময়ে খুব কম সিলেবল ব্যবহার করেন। তিনি লিখেছেন, বিস্ময়ের কথা হল ইংরেজীতে অনুবাদ করা হাইকুটি জাপানী হাইকুর তুলনায় পড়তে ৬০% দীর্ঘ সময় নেয়। সময়ের ব্যাপারটি হয়তো আবৃতি যিনি করেছেন তার উপর নির্ভর করেছে। সে যাই হোক, আবৃতি অনুষ্ঠান শেষে হিজ্ঞিন্সন জাপানী হাইকু লেখক ও ইংলিশ হাইকু লেখকের সাথে কথা বলে এ ব্যাপারে প্রশ্ন করাতে উভয়ে উত্তর দিয়েছেন যে তারা নিয়মাবলী অনুসারেই হাইকু পাঠ করেছেন। অথচ আবৃতির সময়ের কথাটি বিবেচনা করলে বেশ ব্যতিক্রম বুঝা গিয়েছে।
বাংলা হাইকুতে কিন্তু ইংলিশ হাইকুর মতো অধিক সময় নিবেনা। আমি পরীক্ষা করে দেখেছি যে বাংলা ও জাপানী হাইকু আবৃতি করলে একই সময়ে শেষ হয়।
নিম্নে দু'টি জাপানী হাইকু কবিতার ইংলিশ ও বাংলা অনুবাদ করেছি। যেহেতু আমি জাপানী ভাষা জানি সেহেতু জাপানী ভাষা থেকে অনুবাদ করা হয়েছে। ইংলিশে অনুবাদ করেছেন হিজ্ঞিন্সন।
এ হাইকুটি লিখেছেন কবি বাশোঃ
furuike ya old pond........ জ্বলা পুকুর
kawazu tobikamu a frog leaps in বেঙ্গের লাফালাফি,
mizuno oto water's sound জলের শব্দ.........
এ হাইকুটি লিখেছেন কবি ইস্সাঃ
utsukushiki a really lovely অতি সুন্দর
tako agarikeri kite has risen above ঘুড়ি উপরে উড়ে,
kojiki goya a begger's hut ভিখারি ঘর.........
হাইকু দুটিতে ',' কমা দিয়েছি এ জন্য যে প্রথম বারটি বর্ণ বা অক্ষর বোধগম্য। একটি ঘুড়ি উপড়ে উড়ছে; তারপর 'ভিখারি ঘর' কথাটি লেখা। তাতে বুঝা যাচ্ছে যে উপরের ১২ টি অক্ষরে যে বক্তব্য প্রকাশ পেয়েছে নিচের পাঁচটি অক্ষরে লেখা কথার সামঞ্জস্য নেই মনে হচ্ছে। এটাও এক রহস্য, কারণ হাইকুতে অনেক কিছু উহ্য থাকে যা বুঝে নিতে হয়। পূর্ণাংগ বাক্য না হলেও হাইকু হয়। 'ভিখারি ঘর'
হাইকু কবিতা নিয়ে অনেক লেখক অনেক রকম আলোচনা করেছেন। তাদের অনেকেরই মন্তব্য ছিল যে
হাইকু হল ১৭ টি syllable এর কবিতা যা তিনটি লাইনে লিখা হয়। তাদের ধারনা প্রথম লাইনে ৫ টি,
দ্বৈতীয় লাইনে ৭ টি ও তৃতীয় লাইনে ৫ টি সিলেবল থাকে। এ কথা জেনে অনেকেই হাইকু লিখতে গিয়ে সিলেবল খুঁজাখুঁজি শুরু করেন। কিন্তু Willium J. Higginson তাঁর লেখা বই The HAIKU HANDBOOK টিতে অনেক গবেষণা করে লিখেছেন যে জাপানী হাইকু পাশ্চাত্য দেশে লিখা হাইকু থেকে সম্পূর্ণ ভিন্ন। কারণ, জাপানী হাইকু তাদের ট্রেডিশন্যাল ধারায় ৫-৭-৫ পদ্ধতিতে লিখে এবং তাদের লিখা হাইকুতে সিলেবল নেই। জাপানী হাইকুতে 'অনজি' থাকে সিলেবল নয়।
উদাহরণ হিসাবে তিনি যেমন দেখিয়েছেন তা নিম্নরূপঃ
English syllable: a on two wrought
Japanese onji: a (আ); n (ণ); ka (কা); shi (শি); tsu (ৎচু), ইত্যাদি।
উপরের ইংলিশ সিলেবল এ, অ্ টু, রট উচ্চারণ করতে প্রলম্বিত স্বর-ধ্বনি বুঝা যায়। আবার জাপানী হাইকুতে যে সব বর্ণকে 'অন্জি' বলা হয়েছে সেগুলির উচ্চারণ আ, কা, সি, ৎচু, ইত্যাদি। এগুলি কিন্তু জাপানী ৪৮ টি 'হিরাগানা' বর্ণের পাঁচটি বর্ণ। সুতরাং বর্ণ গণনায় ৫-৭-৫ টি বর্ণ মিলে মোট ১৭ টি বর্ণ বা অক্ষর হয়। বাংলা ব্যাঞ্জন বর্ণে অনেক অনজি আছে, যেমন, খ, ঘ, চ, থ, ঝ, ঠ, ইত্যাদি। তাই বাংলাতে হুবহু জাপানী পদ্ধতিতে মোট সতের অক্ষরে হাইকু লিখা সম্ভব।
আমার কথা হল বাংলাতে হাইকু লিখতে হলে জাপানী হাইকুর নিয়মাবলি মেনে লিখাই উত্তম। আমরা যদি ইংলিশ হাইকুর ধারা মতো লিখি তাহলে বড় বিভ্রান্তিতে পড়তে হবে।
ইংলিশ এবং জাপানী হাইকুর এক অনুবাদ অনুষ্ঠান করেছিল নিউ ইয়র্কের Japan Society, Inc. সে অনুষ্ঠানে ইংলিশ হাইকু কবি ও লেখক Willium J. Higginson উপস্থিত ছিলেন। তিনি তাঁর বইটিতে অনুষ্ঠানটির উপর লিখেছেন যে সেখানে ২৮ টি হাইকু কবিতা আবৃত্তি করা হয়েছিল। ইংরেজীতে যিনি অনুবাদ করেছেন তিনিও একজন হাইকু কবি ছিলেন। তিনি অনুবাদ হাইকু পাঠ করার সময়ে খুব কম সিলেবল ব্যবহার করেন। তিনি লিখেছেন, বিস্ময়ের কথা হল ইংরেজীতে অনুবাদ করা হাইকুটি জাপানী হাইকুর তুলনায় পড়তে ৬০% দীর্ঘ সময় নেয়। সময়ের ব্যাপারটি হয়তো আবৃতি যিনি করেছেন তার উপর নির্ভর করেছে। সে যাই হোক, আবৃতি অনুষ্ঠান শেষে হিজ্ঞিন্সন জাপানী হাইকু লেখক ও ইংলিশ হাইকু লেখকের সাথে কথা বলে এ ব্যাপারে প্রশ্ন করাতে উভয়ে উত্তর দিয়েছেন যে তারা নিয়মাবলী অনুসারেই হাইকু পাঠ করেছেন। অথচ আবৃতির সময়ের কথাটি বিবেচনা করলে বেশ ব্যতিক্রম বুঝা গিয়েছে।
বাংলা হাইকুতে কিন্তু ইংলিশ হাইকুর মতো অধিক সময় নিবেনা। আমি পরীক্ষা করে দেখেছি যে বাংলা ও জাপানী হাইকু আবৃতি করলে একই সময়ে শেষ হয়।
নিম্নে দু'টি জাপানী হাইকু কবিতার ইংলিশ ও বাংলা অনুবাদ করেছি। যেহেতু আমি জাপানী ভাষা জানি সেহেতু জাপানী ভাষা থেকে অনুবাদ করা হয়েছে। ইংলিশে অনুবাদ করেছেন হিজ্ঞিন্সন।
এ হাইকুটি লিখেছেন কবি বাশোঃ
furuike ya old pond........ জ্বলা পুকুর
kawazu tobikamu a frog leaps in বেঙ্গের লাফালাফি,
mizuno oto water's sound জলের শব্দ.........
এ হাইকুটি লিখেছেন কবি ইস্সাঃ
utsukushiki a really lovely অতি সুন্দর
tako agarikeri kite has risen above ঘুড়ি উপরে উড়ে,
kojiki goya a begger's hut ভিখারি ঘর.........
হাইকু দুটিতে ',' কমা দিয়েছি এ জন্য যে প্রথম বারটি বর্ণ বা অক্ষর বোধগম্য। একটি ঘুড়ি উপড়ে উড়ছে; তারপর 'ভিখারি ঘর' কথাটি লেখা। তাতে বুঝা যাচ্ছে যে উপরের ১২ টি অক্ষরে যে বক্তব্য প্রকাশ পেয়েছে নিচের পাঁচটি অক্ষরে লেখা কথার সামঞ্জস্য নেই মনে হচ্ছে। এটাও এক রহস্য, কারণ হাইকুতে অনেক কিছু উহ্য থাকে যা বুঝে নিতে হয়। পূর্ণাংগ বাক্য না হলেও হাইকু হয়। 'ভিখারি ঘর'
কবির চোখে পড়েছে প্রথমে তারপর লক্ষ করেছেন অতি সুন্দর রঙ্গিন ঘুড়ি তার উপরে উড়ছে। এখন চিন্তা করলে সবার নিকট কবিতাটির ভাব পরীষ্কার হয়ে যাবে। কিন্তু সে ভাব কিন্তু বড় গভীর অর্থ বহন করছে। তা হলো একজন ভিখারির নড়বড়ে ঘরের উপর রঙ্গিন ঘুড়ি দেখে কবি অবাক। তাই সে ভাব হাইকুতে প্রকাশ করেছেন। এখন বাকি রইল 'সময়' কি করে দেখালেন। আমার আগের লেখাতেও উল্লেখ করেছি যে সময় প্রকাশ করে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ একটি সীজন উল্লেখের মাধ্যমে। তা না হলে সঠিক হাইকু হবেনা। এ হাইকুতে ঘুড়ি উড়াবার সময়টি বুঝে নিলেই হবে। শীত প্রধান দেশে বসন্ত কালে অর্থাৎ মার্চ মাসে শিশু দিবসে ঘুড়ি উড়ায়। আমার কথা এখানে শেষ হয়নি। তা হলো শেষের লাইনটি যদি ভিখারি(র) ঘর হতো তা হলে আরো পূর্ণাংগ বাক্য হতো। কিন্তু 'র' বাদ দিয়েছি। এই বাদ দেওয়ার প্রথাও জাপানী হাইকুতে রয়েছে। তাকে বলে 'কিরেইজি' অর্থাৎ কাটা বা বাদ দেওয়া শব্দ। 'র' বাদ দিয়ে পাঁচটি অক্ষরে মিলানো হয়েছে, তাতে কিন্তু হাইকুটি অসম্পূর্ণ হয়নি। ট্রেডিশন্যাল জাপানী হাইকুতে দু'টি 'rhythmical unit' বা সমান তাল বা মাত্রা থাকে। উপরে 'কমা' লক্ষ করলে তা বোধগম্য হবে। উপরে বারটি অক্ষরে বা অন্জিতে ও নিচে পাঁচটি অক্ষর বা অনজিতে লিখা হয়েছে। আবার উপরে পাঁচটি লিখে নিচে বারটি অক্ষরেও হাইকু লিখার প্রথা আছে।
যারা হাইকুতে আগ্রহি তাদের মনে রাখতে হবে যে ট্রেডিশন্যাল হাইকুর সৃষ্টি হয়েছে অসম্পূর্ণ দীর্ঘ কবিতার স্তবক থেকে। তাই হাইকুতে সমান তাল বা মাত্রাও অসম্পূর্ণ থাকে। হাইকুতে সাধারণ ব্যাকারণ নীতি বর্জন করা হয়। তাতে অসম্পূর্ণ বাক্য থাকে এবং জটিল ক্রিয়াও বর্জন করা হয়।
হাইকুর উপর আরো কিছু কথা স্মরণ রাখা উচিত। তা হল বাংলাতে হাইকু লিখতে ৫-৭-৫ অক্ষরেই লিখতে হবে ও যুক্তাক্ষর একটি গণনা করা হবে। ইংরেজী, জার্মন ও ইটালিয়ান ভাষাতে হাইকু লিখতে হলে 'সিলেবল' এ লিখা হয়। বাংলাতে যথাপোযুক্ত অক্ষর যুক্ত করে মাত্রা বা তালের সাথে মিল রেখে লিখতে হবে। একটি কথা মনে রাখতে হবে যে হাইকু লিখা কিন্তু সহজ নয়। একটি পারফেক্ট হাইকু লিখতে হলে অনেক ভাবতে হয়। আর সেটি যথার্থ হাইকু হল কিনা তা পড়েই বুঝা যাবে। আমি আবার বলছি বাংলা হাইকু বাংলা ভাষাতে জাপানী হাইকুর অনুকরনে লিখা সম্ভব। নিম্নে নজদিক লিখা আমার
দু'টি হাইকু উদাহরণ হিসাবে দিলাম।
নিষ্প্রাণ ঘোড়া,
শকুনের ছায়ায়
উড়ন্ত মাছি......
গ্রীষ্মের মশা
রক্ত খেকো পতঙ্গ,
নির্ভীক যুদ্ধা......
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন