অনুবাদ কবিতা
কৌশিক ভাদুড়ী
মূল কবিতা - রাজেন্দ্র কিশোর পণ্ডা
‘মুওকা’ এবং ‘পাদপুরাণ-২’
[অনুবাদ – কৌশিক ভাদুড়ী]
অনুবাদকের ভূমিকা
শ্রদ্ধেয় কবি রাজেন্দ্র কিশোর পণ্ডা বাবুর পরিণতি-সম্পৃক্ত “দ্রোহবাক্য” গ্রন্থভুক্ত গভীর বোধাশ্রিত কবিতাগুলির অনুবাদার্থে আমার কম্পিউটারে ওড়িয়া ফন্ট না থাকায়; শ্রদ্ধেয় সম্বিদ দাশ বাবু আমাকে যৎপরোনাস্তি আদর প্রদর্শন হেতু; স্বহস্তে বাংলা ফন্টে আপলোড করে কবিতাগুলি পাঠিয়েছেন। আমি সম্মানিত। আমি গর্বিত। আমার সীমিত ক্ষমতাতে অনুবাদ প্রচেষ্টা নিচ্ছি।
শ্রী সচ্চিদানন্দ রাউতরায়ের (১৯১৬-২০০৪) পরবর্তী উত্তরাধিকারত্বে ওড়িয়া সাহিত্যের যে ‘নব্য আধুনিক’ (Neo-modernity) যুগের প্রবর্তন হয়, কবি রাজেন্দ্র কিশোর পণ্ডা তার অন্যতম ধারক। ভারতীয় আঞ্চলিক ভাষায় কবিতার জাতীয় পুরস্কার প্রাপ্ত। পেশগত জীবনে কবি ভারত সরকারের এক আই-এ-এস আধিকারিক ছিলেন, অধুনা অবসরপ্রাপ্ত। কবি রাজেন্দ্রকিশোরের শৈলকল্প কাব্য গ্রন্থটি ১৯৮২ সালে কটকের এক প্রকাশনী থেকে প্রকাশিত। কাব্য গ্রন্থটির জন্য কবি ১৯৮৫ সালে কেন্দ্রীয় সাহিত্য অ্যাকাডেমি পুরস্কারে ভূষিত হন।
তত্সম শব্দ ওড়িয়া ও বাংলায় অনুরূপ। কবিতা অনুবাদের ক্ষেত্রে যেটা হয়, অনুরূপ বাংলা শব্দ সব সময় সমান্তরাল অনুভূতি বহন করে না। সেক্ষেত্রে আমার মনে হয় কবিতার আত্মাটিকে( স্প্যানিশ কবিতায় বিবৃত—দুয়েন্দে, লোরকা বিভিন্ন সময়ে শব্দটা ব্যবহার করেছেন) সনাক্ত করে ফুটিয়ে তোলাটাই সঙ্গত ও সঠিক অনুবাদ। এখানেও সামান্য দু একটি জায়গায় তাই করেছি। যদিও ওড়িয়া ও বাংলার ব্যুত্পত্তিগত অতিন্নতা স্বীকার করে তত্সম শব্দ অপ্রতিস্থাপিত রাখার দায় আগাগোড়াই থেকেছে।
দ্রোহবাক্য প্রথম প্রকাশিত হয় ২০০৩ সালে, কটক থেকে। গ্রন্থভুক্ত কবিতাগুলি অব্যবহিত আগের রচনা।
মওকা
রাজেন্দ্র কিশোর পণ্ডা
[অনুবাদ – কৌশিক ভাদুড়ী]
মওকাকে গ্রহণ না করলে মওকা তোমাকে
আক্রমণ করবে অকস্মাত
আপন ধর্মে !
ঘটনা কোন দিকে মোড় নেবে সেকথা
গণপতা তো কদাপি বলবে না
ব্যাসও ঊহ্য রেখে দেবে 'কূট' ভেতরে ।
নিপাত হওয়ার আগে মাত্র একটি মওকা
দেওয়া হবে তোমাকে
শরণ বা মারণের অন্তিম কর্ম নিমিত্তে
চোখের পলকে।
বৃত্তের ঠিক কেন্দ্রবিন্দুতে গেঁথে গেল তো গেল,
নচেত্ ছুরি
বুমেরাং হয়ে ফিরে বিঁধে যাবে তোমার ছাতিতে।
প্রখর দেবীর মুকুট থেকে টকটকে লাল মন্দার
সাষ্টাঙ্গ প্রণিপাতরত তোমার দেহে
পড়ল তো পড়ল, নচেত্...
তুমি শিবাজী না আফজল তা অবান্তর
উভয়ের ছিল ধূর্ততা এবং গোপন অস্ত্র,
গোপন অস্ত্র !
আসল ক্ষেত্রে চলে এস,
মধ্যযুগীয় সামন্তোপম তোমাকে
দ্বন্দ্ব যুদ্ধের মওকা দেওয়া হবে মাত্র একবার,
সুতরাং 'বিজয়' না 'স্বর্গ' তোমার বিকল্প
সে বিচার তোমার।
কোনো কর্ম ফলহীন নয়,
অন্তত
কিছু না কিছু 'প্রতিকর্ম' তো ফেরে,
যে রকম ফিরে আসে প্রতিধ্বনি
আকাশ আর দিগন্ত থেকে
ভিন্নতর হয়ে।
মওকা কখন আসে কখন ফসকে যায়
হাড়নির্মিত পাশাকাঠিই বা কী জানে-
তাকে তো খড়খড়খড়খড় রগড়ে
গড়িয়ে দেওয়া হয় অতি নির্মম ভাবে।
কুরুক্ষেত্র কারুর শবাশ্রিত হয়ে খাতির করেনা
যে এ একদিন ভাসবে রক্তনদীর স্রোতে!
তোমার তূণের শেষ তির
তোমার বন্দুকের শেষ গুলি
তোমার স্বরনলীর শেষ শব্দ
লক্ষ্যবিন্দুতে গেঁথে গেল তো গেল,
নচেত্...
ইতিহাসকে বিশ্বাস করছ ?
এ গাঁর শালগ্রাম বলে ও গাঁয়ে পাথর,
সে গাঁয়ে অসুর !
নিপাত করা নিপাত হওয়া আদৌ নির্ভর করে না
কর্তা কিংবা কর্ম কারকের
নির্দিষ্ট মর্জিতে।
নীল ফড়িং হয়ে উড়ে যেতে যেতে আত্মমগ্ন আকাশও
দ্বিখণ্ড হয়ে যেতে পারে হঠাত্,
কারো নিশ্চল হাতে ধরা ধারালো খাঁড়ার
ছোঁয়া পাওয়া মাত্র
প্রত্যেকর অজান্তে।
তবে কী
মওকায় মওকায় ভরপুর প্রত্যেক পরক্ষণ,
বাছার অধিকার নেই ?
পাদপূরণ-২
রাজেন্দ্র কিশোর পণ্ডা
[অনুবাদ – কৌশিক ভাদুড়ী]
আরম্ভ করব ভণিতা দিয়ে
শেষ
উপক্রমণিকায়?
কিশোরীকে কসবী না করলে
প্রমাণিত হয় না কৌমার্য!
অংশ হয়ে যাও দৃশ্যের,
অথবা
দৃষ্টিতে ছিন্নভিন্ন কর তাকে,
একবার খালি বিলি কেটে দিও
যদি কিছু ছুঁতেই হয় তোমাকে।
এই যে
যেখানেই ছোঁয় আমার আঙুল
অহল্যার ফুল্ল স্তনের মতন লাগে!
খেলার আরম্ভ কালে জানতাম না
ধলো বা কালোর
যে কোনো একটা রং বেছে নিতে হয়
চেস্-এ।
জানতাম না,
এক জনকে হারতেই হয়
শেষে !
সব হিসেব-নিকেশ হয় কিন্তু,
একদিন না একদিন পাওনাও মেলে।
বৈকুণ্ঠ ?
পোড়াভিটের ঠিক পাশ ঘেঁসে
যার ইচ্ছা সে যাক অবাধে!
তোমার হাত আমি এগিয়ে আসতে দেখি,
তোমাকে দেখি না।
কোথায় থাকো তুমি? হাত থেকে কত দূরে?
লকলক করে পাঁচ আঙুল
বন্যাবিহ্বল নদী-উপম,
ধেয়ে এসে চেসবোর্ড ঘেঁসে।
পরাস্তপ্রায় দেখে লাগলেও, শরণপ্রার্থী নই
যে কোনো যুদ্ধে।
যোগ বিয়োগ চলতে থাক চলছে যেমন;
আমি জানি,
পাওনা একদিন মেলে।
তুমি নয়, তোমার হাতটা কেবল
এগোতে থাকছে দেখি-
কখনও কিশোর হাত, কখনও বৃদ্ধ হাত,
কখনও বধূর হাত, কখনও বিধবা হাত,
কখনও কুষ্ঠ আক্রান্ত তো
কখনও ঠুটো জগন্নাথ ...
কার প্রতিধ্বনি হয়ে আমি ফিরেছি
কত যুগ কত যোজন দূর থেকে?
প্রিয় বন্ধু!
কার পাওনা হয়ে আমি এসেছি
আমার প্রচণ্ড পরাজয়ের
আসন্ন মহিমামণ্ডলে?
তুমি 'চেকমেট্' চিত্কার করলে
আমি উচ্চারণ করি : 'য়ুরেক্কা' ।
ত্রাহি নেই কবিতার কবজা থেকে।
চেসবোর্ডের ওপরে প্রত্যেকটির রং তো
ইন্দ্রধনুময় :
রাজা মন্ত্রী ঘোড়া সেপাই।
কি ধলো কি কালো?
কোন পক্ষের হয়ে আমার লড়াই?
উত্তর দে, হাত।
তোর মুখ তোর কন্ঠ বলে কিছু আছে ?
আছে কী?
হিসেব খাতার উভয় পৃষ্ঠার ফল
সমান সর্বদা।
যতই দাও দেনা চোকে না,
পাওনা একদিন না একদিন মেলে।
দেওয়া নেওয়া চলে বলে তো জীবন
চলে।
এবার তোমার পালা। পাদপূরণ কর ।
কবিতার তো
উপসংহার কিছু থাকে না।
কৌশিক ভাদুড়ী
মূল কবিতা - রাজেন্দ্র কিশোর পণ্ডা
‘মুওকা’ এবং ‘পাদপুরাণ-২’
[অনুবাদ – কৌশিক ভাদুড়ী]
অনুবাদকের ভূমিকা
শ্রদ্ধেয় কবি রাজেন্দ্র কিশোর পণ্ডা বাবুর পরিণতি-সম্পৃক্ত “দ্রোহবাক্য” গ্রন্থভুক্ত গভীর বোধাশ্রিত কবিতাগুলির অনুবাদার্থে আমার কম্পিউটারে ওড়িয়া ফন্ট না থাকায়; শ্রদ্ধেয় সম্বিদ দাশ বাবু আমাকে যৎপরোনাস্তি আদর প্রদর্শন হেতু; স্বহস্তে বাংলা ফন্টে আপলোড করে কবিতাগুলি পাঠিয়েছেন। আমি সম্মানিত। আমি গর্বিত। আমার সীমিত ক্ষমতাতে অনুবাদ প্রচেষ্টা নিচ্ছি।
শ্রী সচ্চিদানন্দ রাউতরায়ের (১৯১৬-২০০৪) পরবর্তী উত্তরাধিকারত্বে ওড়িয়া সাহিত্যের যে ‘নব্য আধুনিক’ (Neo-modernity) যুগের প্রবর্তন হয়, কবি রাজেন্দ্র কিশোর পণ্ডা তার অন্যতম ধারক। ভারতীয় আঞ্চলিক ভাষায় কবিতার জাতীয় পুরস্কার প্রাপ্ত। পেশগত জীবনে কবি ভারত সরকারের এক আই-এ-এস আধিকারিক ছিলেন, অধুনা অবসরপ্রাপ্ত। কবি রাজেন্দ্রকিশোরের শৈলকল্প কাব্য গ্রন্থটি ১৯৮২ সালে কটকের এক প্রকাশনী থেকে প্রকাশিত। কাব্য গ্রন্থটির জন্য কবি ১৯৮৫ সালে কেন্দ্রীয় সাহিত্য অ্যাকাডেমি পুরস্কারে ভূষিত হন।
তত্সম শব্দ ওড়িয়া ও বাংলায় অনুরূপ। কবিতা অনুবাদের ক্ষেত্রে যেটা হয়, অনুরূপ বাংলা শব্দ সব সময় সমান্তরাল অনুভূতি বহন করে না। সেক্ষেত্রে আমার মনে হয় কবিতার আত্মাটিকে( স্প্যানিশ কবিতায় বিবৃত—দুয়েন্দে, লোরকা বিভিন্ন সময়ে শব্দটা ব্যবহার করেছেন) সনাক্ত করে ফুটিয়ে তোলাটাই সঙ্গত ও সঠিক অনুবাদ। এখানেও সামান্য দু একটি জায়গায় তাই করেছি। যদিও ওড়িয়া ও বাংলার ব্যুত্পত্তিগত অতিন্নতা স্বীকার করে তত্সম শব্দ অপ্রতিস্থাপিত রাখার দায় আগাগোড়াই থেকেছে।
দ্রোহবাক্য প্রথম প্রকাশিত হয় ২০০৩ সালে, কটক থেকে। গ্রন্থভুক্ত কবিতাগুলি অব্যবহিত আগের রচনা।
মওকা
রাজেন্দ্র কিশোর পণ্ডা
[অনুবাদ – কৌশিক ভাদুড়ী]
মওকাকে গ্রহণ না করলে মওকা তোমাকে
আক্রমণ করবে অকস্মাত
আপন ধর্মে !
ঘটনা কোন দিকে মোড় নেবে সেকথা
গণপতা তো কদাপি বলবে না
ব্যাসও ঊহ্য রেখে দেবে 'কূট' ভেতরে ।
নিপাত হওয়ার আগে মাত্র একটি মওকা
দেওয়া হবে তোমাকে
শরণ বা মারণের অন্তিম কর্ম নিমিত্তে
চোখের পলকে।
বৃত্তের ঠিক কেন্দ্রবিন্দুতে গেঁথে গেল তো গেল,
নচেত্ ছুরি
বুমেরাং হয়ে ফিরে বিঁধে যাবে তোমার ছাতিতে।
প্রখর দেবীর মুকুট থেকে টকটকে লাল মন্দার
সাষ্টাঙ্গ প্রণিপাতরত তোমার দেহে
পড়ল তো পড়ল, নচেত্...
তুমি শিবাজী না আফজল তা অবান্তর
উভয়ের ছিল ধূর্ততা এবং গোপন অস্ত্র,
গোপন অস্ত্র !
আসল ক্ষেত্রে চলে এস,
মধ্যযুগীয় সামন্তোপম তোমাকে
দ্বন্দ্ব যুদ্ধের মওকা দেওয়া হবে মাত্র একবার,
সুতরাং 'বিজয়' না 'স্বর্গ' তোমার বিকল্প
সে বিচার তোমার।
কোনো কর্ম ফলহীন নয়,
অন্তত
কিছু না কিছু 'প্রতিকর্ম' তো ফেরে,
যে রকম ফিরে আসে প্রতিধ্বনি
আকাশ আর দিগন্ত থেকে
ভিন্নতর হয়ে।
মওকা কখন আসে কখন ফসকে যায়
হাড়নির্মিত পাশাকাঠিই বা কী জানে-
তাকে তো খড়খড়খড়খড় রগড়ে
গড়িয়ে দেওয়া হয় অতি নির্মম ভাবে।
কুরুক্ষেত্র কারুর শবাশ্রিত হয়ে খাতির করেনা
যে এ একদিন ভাসবে রক্তনদীর স্রোতে!
তোমার তূণের শেষ তির
তোমার বন্দুকের শেষ গুলি
তোমার স্বরনলীর শেষ শব্দ
লক্ষ্যবিন্দুতে গেঁথে গেল তো গেল,
নচেত্...
ইতিহাসকে বিশ্বাস করছ ?
এ গাঁর শালগ্রাম বলে ও গাঁয়ে পাথর,
সে গাঁয়ে অসুর !
নিপাত করা নিপাত হওয়া আদৌ নির্ভর করে না
কর্তা কিংবা কর্ম কারকের
নির্দিষ্ট মর্জিতে।
নীল ফড়িং হয়ে উড়ে যেতে যেতে আত্মমগ্ন আকাশও
দ্বিখণ্ড হয়ে যেতে পারে হঠাত্,
কারো নিশ্চল হাতে ধরা ধারালো খাঁড়ার
ছোঁয়া পাওয়া মাত্র
প্রত্যেকর অজান্তে।
তবে কী
মওকায় মওকায় ভরপুর প্রত্যেক পরক্ষণ,
বাছার অধিকার নেই ?
পাদপূরণ-২
রাজেন্দ্র কিশোর পণ্ডা
[অনুবাদ – কৌশিক ভাদুড়ী]
আরম্ভ করব ভণিতা দিয়ে
শেষ
উপক্রমণিকায়?
কিশোরীকে কসবী না করলে
প্রমাণিত হয় না কৌমার্য!
অংশ হয়ে যাও দৃশ্যের,
অথবা
দৃষ্টিতে ছিন্নভিন্ন কর তাকে,
একবার খালি বিলি কেটে দিও
যদি কিছু ছুঁতেই হয় তোমাকে।
এই যে
যেখানেই ছোঁয় আমার আঙুল
অহল্যার ফুল্ল স্তনের মতন লাগে!
খেলার আরম্ভ কালে জানতাম না
ধলো বা কালোর
যে কোনো একটা রং বেছে নিতে হয়
চেস্-এ।
জানতাম না,
এক জনকে হারতেই হয়
শেষে !
সব হিসেব-নিকেশ হয় কিন্তু,
একদিন না একদিন পাওনাও মেলে।
বৈকুণ্ঠ ?
পোড়াভিটের ঠিক পাশ ঘেঁসে
যার ইচ্ছা সে যাক অবাধে!
তোমার হাত আমি এগিয়ে আসতে দেখি,
তোমাকে দেখি না।
কোথায় থাকো তুমি? হাত থেকে কত দূরে?
লকলক করে পাঁচ আঙুল
বন্যাবিহ্বল নদী-উপম,
ধেয়ে এসে চেসবোর্ড ঘেঁসে।
পরাস্তপ্রায় দেখে লাগলেও, শরণপ্রার্থী নই
যে কোনো যুদ্ধে।
যোগ বিয়োগ চলতে থাক চলছে যেমন;
আমি জানি,
পাওনা একদিন মেলে।
তুমি নয়, তোমার হাতটা কেবল
এগোতে থাকছে দেখি-
কখনও কিশোর হাত, কখনও বৃদ্ধ হাত,
কখনও বধূর হাত, কখনও বিধবা হাত,
কখনও কুষ্ঠ আক্রান্ত তো
কখনও ঠুটো জগন্নাথ ...
কার প্রতিধ্বনি হয়ে আমি ফিরেছি
কত যুগ কত যোজন দূর থেকে?
প্রিয় বন্ধু!
কার পাওনা হয়ে আমি এসেছি
আমার প্রচণ্ড পরাজয়ের
আসন্ন মহিমামণ্ডলে?
তুমি 'চেকমেট্' চিত্কার করলে
আমি উচ্চারণ করি : 'য়ুরেক্কা' ।
ত্রাহি নেই কবিতার কবজা থেকে।
চেসবোর্ডের ওপরে প্রত্যেকটির রং তো
ইন্দ্রধনুময় :
রাজা মন্ত্রী ঘোড়া সেপাই।
কি ধলো কি কালো?
কোন পক্ষের হয়ে আমার লড়াই?
উত্তর দে, হাত।
তোর মুখ তোর কন্ঠ বলে কিছু আছে ?
আছে কী?
হিসেব খাতার উভয় পৃষ্ঠার ফল
সমান সর্বদা।
যতই দাও দেনা চোকে না,
পাওনা একদিন না একদিন মেলে।
দেওয়া নেওয়া চলে বলে তো জীবন
চলে।
এবার তোমার পালা। পাদপূরণ কর ।
কবিতার তো
উপসংহার কিছু থাকে না।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন