সোমবার, ১৬ ডিসেম্বর, ২০১৩

কবিতা - সূর্যস্নাত বসু

মাঝপথ
সূর্যস্নাত




এক এক করে এ বাড়ির সব ঘরেই
আলো নিভে যায় ।
একটি দীর্ঘ কবিতা লিখতে গিয়ে হঠাৎ এভাবেই
থেমে যেতে হয়। বারবার ।
তারপর কুপি-লণ্ঠন-হ্যাজাক জোগাড় করে
দূরের তেলকল, রেশনঘন আবহাওয়া
এসবের থেকে নিজেকে সরিয়ে রাখার ব্যাপারটাও
বেশ ভেজা ভেজা কোণে আঙুলের মত । বুঝতে পারি ।
শেষমেশ অবশ্য নিভে যাওয়া আকাশ, শেষ
বার্তা দিয়ে যায় ।
#
জানি, এ দেশে যতই আছে তেরো পার্বন,
দীপাবলি কিন্তু একটাই ।


আমাদের বাড়ি জুড়ে অনেক গান ছড়িয়ে আছে
তেমন তেমনই মাঝে সাঝে নাচেরাও চলে আসেন
সাথে অ্যাকাডেমি, কলাকেন্দ্র, অজস্র ছাগলদাড়ি ।
এসবের মাঝে পুরনো পাটকলের পাশ থেকে কেমন এক
ঘ্যাচায় ফুঁ শব্দ এসে ভিড় করে কখনও কখন ।
অদ্ভুত, কিন্তু বহুপরিচিত ।
আড্ডা বসে সন্ধ্যেবেলায়, সঙ্গে তাস-বিড়ি-কাচাখিস্তি ।
#
শুনেছি ওঁরাও নাকি একদিন গান-ফান বাঁধতো,
সরকার থেকে তাই এক ভাতাও পেতেন ওরা ।


একটা ঝুড়ির ওপর কিছু কবিতা রেখেছি।
বেতের ঝুড়ি, হাল্কা-বাদামী আর কালোর মাঝে যে রঙ
তুমি দেখেছো, সে রঙা ।
সেখানে বাতাস বয় খুব,
উড়ন্ত মখমল থেকে ভেসে আসে কফিকাপ, সান্ধ্যদৈনিক, জ্যোৎস্না
ডকে বাঁধা জাহাজ থেকে ছুটতে থাকে হাজারো কম্পাস
সেখানেই একসময় শোনা যেত তেলেভাজার ডাক, দরাদরি
চলত একই সাথে মদ ও ত্রিপিটকের খোঁজ ।
#
শুনেছি সেই বাঁশগাছ,
যার বেত, যার ঝুড়ি, যার কবিতা, যার টুকরো
সবকিছুই নাকি চুরি গেছে কখনও ।
এখন আমার কাজ হল এটাই লেখা---
যে পুলিশের কাজ শুধু ‘খতিয়ে দ্যাখা’ ।


২টি মন্তব্য:

  1. দীর্ঘ কবিতার চল আজকাল প্রায় উঠেই গেছে । অথচ কয়েকজন কত সুন্দর ভাবে আজও সেই ধারা বয়ে বেড়াচ্ছে ভাবতে দারুণ লাগে । মজাদার ছন্দে এগিয়েছে কবিতা নানাবিধ উঠক-বৈঠকের মাঝে । দীর্ঘ কবিতা অনেকেই পড়ে না বা লেখে এসব মিথ শুনেছি । কিন্তু আমরা বোধায় আজো ঐচ্ছিক ট্র্যাডিশনাল হতে ভালোবাসি ।

    এই লেখা এই ট্রেণ্ড এই রেল আর লাইন স্বাগতম !

    উত্তরমুছুন