সম্পাদকীয়
সম্পাদক খানিকটা দেরি করে ফেলেছেন পাঠকবন্ধুদের জন্য তাঁর এই লিখিত বক্তব্য দফতরে জমা দিতে। পক্ষকাল সময় পার করে দৈনিক পত্রিকার ভাষায় ডেটলাইন মিস করে ফেলেছেন।
সেই অধম সম্পাদকটি এবারের সংখ্যায় আমি জুঁই। কয়েকটা দিন আমি হারিয়ে গিয়েছিলাম। গন্তব্য জানা ছিল না। কোথায় বিশ্বাস হারিয়ে যাচ্ছিলাম। তাতে কি? ফেসবুকে আমাদের কবিবন্ধুদের দিনের পর দিন আমি বিমর্ষ হতে দেখেছি। ওঁদের স্টেটাস আপডেট দেখে মনে হয়েছে কোনও ঠেকে যেন জমে যাচ্ছে আখড়া। বুঝতে পারছি কবির মন অন্তরঙ্গতায়। শীতের শুরু এখানে সেখানে জলসাঘর। আমার এক ডানাওয়ালা শিশু কবিকে দেখছি বাস্তবটাকে ক্রমাগত ফুটিয়ে তুলে লিখে যাচ্ছে। তাই মন ভালো। বহুদিন বাদে আমি কবির লেখা শুনছি। আমার কাগজে, মানে আমার অফিসে একটু রাতের বেলায় কবি অভিজিৎ রায়ের সঙ্গে শীতকালীন কবিতা আড্ডা বসে। কবি কিশোর এবং অভিজিৎ এরা জানে যাপনের কবিতা কেমন করে শীতকালীন সিরিজে খাতা বদ্ধ হয়। মানুষের মধ্যে কবি জাতটাকে আমি আলাদা করেই চিনেছি। কবি বলাটা কেমন উচিত হল তা এখনই আমার জানা নেই।
পথেঘাটে মানুষকে দেখি, অনেক মানুষকে দেখলে মনে হয় তাঁর উপলব্ধিগুলোকে ছুঁয়ে ফেলি। এগিয়ে গিয়ে প্রশ্ন করি আপনি কি কবিতা লেখেন? আমাদের কবিতার পাগলা গারদের জন্য আপনার অমূল্য লেখাটি যদি আমাকে দেন।
অন্তত তেমনটাই নয় যে তাঁকে কবিতা লিখতেই হবে! কবি শুধুমাত্র কবিতাই লেখেন না। অন্তত এমনটা নয় যে তাঁকে কবিতা লিখতেই হবে। তবু কবিদের জাত ধরা পড়ে গেলে আমি বলি, পাগলে পাগল চিনে ফেলে।
মানুষ অবুঝ। তরঙ্গ না মিলিলে আমরা সহজিয়া প্রেম করতে পারি না। এভাবেই ভাবি আর সেই দিনটার স্বপ্ন দেখি। যে দিনে, কবিতার যাপন হবে সহজিয়া চুম্বনের মতন। শুদ্ধতার শ্বেতবর্ণ প্রেম সঙ্গে করে, কবিদের দল মধ্যরাতে পার হবে অশ্লীল শহর, মনের ভেতর অশান্ত গ্রাম, মোরাম রাস্তা, বুকের ওপর জোয়ারের ফুলে ওঠা এবং ভাটার টানে পুড়ে ছাই নদী। এসবই পার হবে কবিদের কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে। শুদ্ধপ্রেমের রঙ বদল হবে স্বপ্নে। শুরু হবে এশহরের সরল দাম্পত্য জীবন। বিভোর হয়ে দেখছিলাম। ভালো লাগছিল খুব। কলমে সেই দৃশ্য আঁকতে চেষ্টা করে যাবে সারাজীবন। তবুও শিল্পীর হৃদয় গাথা কোনওকালে সম্পূণ হবে না।
কলকাতায় এখনও শীত পড়েনি। ডিসেম্বরে আমাদের পা। কুয়াশা জীবন শুরু হল। আমাদের শহরতলির শীত আমাকে পুরোনো ঘরবাড়ি, গাছ, পাগল বুড়িমা, একলা পচাপানির ডোবা আর পুরোনো প্রেম মনে করায়। কুচি কুচি কামরাঙা বনে সবুজ তারার মত কাটা মেঘ ভাসে। সেই অম্ল স্বাদের কলম ধরেছি হাতে। এতো বহুকালের পুরোনো কলম।
স্বেচ্ছামৃত্যুর পরও বাকি ছিল কিছু তাই এ্ই পুরোনো কলম হাতে নিয়েছি। জয়দীপ, সৌম্য, ঋপণ, আর্ষ, শ্রীজিৎ, রাজদীপ, জুবিন, কঙ্ক, অরিত্র, প্রদ্যোৎ, সৈকত, সুমিত, সোমনাথ, শকুন্তলা, চান্দ্রেয়ী, এষা, সংঘমিত্রা, অভিজিৎ, শ্রেয়সী, রঙ্গীত, দিঘী আরও কত শুন্য দশক কবির মুখ মনে পড়ছে। শীতে্র উৎসবগুলোতে ফি বছরের বাউল আড্ডায় বার বার পরিণত হবে নতুন শুন্য দশক। বাদ পড়েছে অনেক নাম। তাতে কিছু এসে যায় না।
আমরা অনেকেই ক্ষুধার্ত হতে চেয়েছিলাম, কেড়ে খেতে চেয়েছিলাম খাবার, তারুণ্যের রক্ত আমাদের ছুটিয়েছিল। পরখ করে দেখেছিলাম আদৌ বেস্টসেলর, কবি না শব্দশিল্পী। নাকি শুধুই, গোপনে গোপনে চলে লেনদেন বিকিকিনি যত মরণাস্ত্র। কবিতা গানের যাপনের অন্যতম মোহিনের গান মনে পড়ল। কবির হাতের মরনাস্ত্র দেখেছিলাম। ব্যস্ত জীবনে ডানাওয়ালা উড়ন্ত শিশুকে দেখলে বিশ্বাসঘাতককে আর মনে পড়ে না। কলহের সংস্কৃতি আমাদের গরম রক্তকে শান্ত করে নি। মারনাস্ত্র তুলে দিয়েছে আমাদের হাতে। তা দিয়ে কত রক্তক্ষরণের দিন পার করেছি। দীর্ঘ যাপনের পর কবি হৃদয়ে মৃত্যু চেতনা প্রবেশ করেছে যখন তখন আমরাই কি টের পাইনি যে, কবির হৃদয়ে আঘাত হেনে ইচ্ছামৃত্যু ডেকে এনেছি। অথচ শান্ত আন্দোলনে আমরাই পা মিলিয়েছিলাম। অন্ধের মতন ছুটেও দেখেছি অনেকেই। কবির চোখ পুরে গেলেও দৃষ্টি নিক্ষেপ করে থাকে।
নতুন করে প্রেমের বিধি জানবার সময় এসেছে।
দশক দশক দশক পেরিয়ে যাবে। সকলেই নিস্তব্ধ রাতের ভেতর পরিণত হব। কিন্তু মানুষকে না বুঝে খোলসে জড়িয়ে থেকে এই সুরা মগ হিসেবে পান করলেও কোনও কালেও বুঝব না নতুন প্রেমের বিধি। আখড়ায় আমরা খুচরো হিসেব করে যাব। টুংটাং পয়সার শব্দে ছন্দ ভঙ্গ হবে।
আমার দীর্ঘদিনের কবিতাসঙ্গী জুবিন লিখেছিল,
কবি যাযাবর হলে আয়ু বাড়ে শুধু কবিতার।
ক্ষেপচুরিয়াসের দফতরে জমা পড়া বাছাই লেখা এবং নিয়মিত লেখা গুলো ছাড়াও বেশকিছু কবিকে অনুরোধ করেছিলাম এই সংখ্যাটিতে লেখার জন্য। তাঁদের অমূল্য লেখাটি পেয়ে খুব ভালো লেগেছ। সকলে ভালো থাকুন। শীতের জলসায় মেতে উঠুন প্রেমে।
নতুন করে প্রেমের বিধি জানবার সময় এসেছে।
সম্পাদক খানিকটা দেরি করে ফেলেছেন পাঠকবন্ধুদের জন্য তাঁর এই লিখিত বক্তব্য দফতরে জমা দিতে। পক্ষকাল সময় পার করে দৈনিক পত্রিকার ভাষায় ডেটলাইন মিস করে ফেলেছেন।
সেই অধম সম্পাদকটি এবারের সংখ্যায় আমি জুঁই। কয়েকটা দিন আমি হারিয়ে গিয়েছিলাম। গন্তব্য জানা ছিল না। কোথায় বিশ্বাস হারিয়ে যাচ্ছিলাম। তাতে কি? ফেসবুকে আমাদের কবিবন্ধুদের দিনের পর দিন আমি বিমর্ষ হতে দেখেছি। ওঁদের স্টেটাস আপডেট দেখে মনে হয়েছে কোনও ঠেকে যেন জমে যাচ্ছে আখড়া। বুঝতে পারছি কবির মন অন্তরঙ্গতায়। শীতের শুরু এখানে সেখানে জলসাঘর। আমার এক ডানাওয়ালা শিশু কবিকে দেখছি বাস্তবটাকে ক্রমাগত ফুটিয়ে তুলে লিখে যাচ্ছে। তাই মন ভালো। বহুদিন বাদে আমি কবির লেখা শুনছি। আমার কাগজে, মানে আমার অফিসে একটু রাতের বেলায় কবি অভিজিৎ রায়ের সঙ্গে শীতকালীন কবিতা আড্ডা বসে। কবি কিশোর এবং অভিজিৎ এরা জানে যাপনের কবিতা কেমন করে শীতকালীন সিরিজে খাতা বদ্ধ হয়। মানুষের মধ্যে কবি জাতটাকে আমি আলাদা করেই চিনেছি। কবি বলাটা কেমন উচিত হল তা এখনই আমার জানা নেই।
পথেঘাটে মানুষকে দেখি, অনেক মানুষকে দেখলে মনে হয় তাঁর উপলব্ধিগুলোকে ছুঁয়ে ফেলি। এগিয়ে গিয়ে প্রশ্ন করি আপনি কি কবিতা লেখেন? আমাদের কবিতার পাগলা গারদের জন্য আপনার অমূল্য লেখাটি যদি আমাকে দেন।
অন্তত তেমনটাই নয় যে তাঁকে কবিতা লিখতেই হবে! কবি শুধুমাত্র কবিতাই লেখেন না। অন্তত এমনটা নয় যে তাঁকে কবিতা লিখতেই হবে। তবু কবিদের জাত ধরা পড়ে গেলে আমি বলি, পাগলে পাগল চিনে ফেলে।
মানুষ অবুঝ। তরঙ্গ না মিলিলে আমরা সহজিয়া প্রেম করতে পারি না। এভাবেই ভাবি আর সেই দিনটার স্বপ্ন দেখি। যে দিনে, কবিতার যাপন হবে সহজিয়া চুম্বনের মতন। শুদ্ধতার শ্বেতবর্ণ প্রেম সঙ্গে করে, কবিদের দল মধ্যরাতে পার হবে অশ্লীল শহর, মনের ভেতর অশান্ত গ্রাম, মোরাম রাস্তা, বুকের ওপর জোয়ারের ফুলে ওঠা এবং ভাটার টানে পুড়ে ছাই নদী। এসবই পার হবে কবিদের কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে। শুদ্ধপ্রেমের রঙ বদল হবে স্বপ্নে। শুরু হবে এশহরের সরল দাম্পত্য জীবন। বিভোর হয়ে দেখছিলাম। ভালো লাগছিল খুব। কলমে সেই দৃশ্য আঁকতে চেষ্টা করে যাবে সারাজীবন। তবুও শিল্পীর হৃদয় গাথা কোনওকালে সম্পূণ হবে না।
কলকাতায় এখনও শীত পড়েনি। ডিসেম্বরে আমাদের পা। কুয়াশা জীবন শুরু হল। আমাদের শহরতলির শীত আমাকে পুরোনো ঘরবাড়ি, গাছ, পাগল বুড়িমা, একলা পচাপানির ডোবা আর পুরোনো প্রেম মনে করায়। কুচি কুচি কামরাঙা বনে সবুজ তারার মত কাটা মেঘ ভাসে। সেই অম্ল স্বাদের কলম ধরেছি হাতে। এতো বহুকালের পুরোনো কলম।
স্বেচ্ছামৃত্যুর পরও বাকি ছিল কিছু তাই এ্ই পুরোনো কলম হাতে নিয়েছি। জয়দীপ, সৌম্য, ঋপণ, আর্ষ, শ্রীজিৎ, রাজদীপ, জুবিন, কঙ্ক, অরিত্র, প্রদ্যোৎ, সৈকত, সুমিত, সোমনাথ, শকুন্তলা, চান্দ্রেয়ী, এষা, সংঘমিত্রা, অভিজিৎ, শ্রেয়সী, রঙ্গীত, দিঘী আরও কত শুন্য দশক কবির মুখ মনে পড়ছে। শীতে্র উৎসবগুলোতে ফি বছরের বাউল আড্ডায় বার বার পরিণত হবে নতুন শুন্য দশক। বাদ পড়েছে অনেক নাম। তাতে কিছু এসে যায় না।
আমরা অনেকেই ক্ষুধার্ত হতে চেয়েছিলাম, কেড়ে খেতে চেয়েছিলাম খাবার, তারুণ্যের রক্ত আমাদের ছুটিয়েছিল। পরখ করে দেখেছিলাম আদৌ বেস্টসেলর, কবি না শব্দশিল্পী। নাকি শুধুই, গোপনে গোপনে চলে লেনদেন বিকিকিনি যত মরণাস্ত্র। কবিতা গানের যাপনের অন্যতম মোহিনের গান মনে পড়ল। কবির হাতের মরনাস্ত্র দেখেছিলাম। ব্যস্ত জীবনে ডানাওয়ালা উড়ন্ত শিশুকে দেখলে বিশ্বাসঘাতককে আর মনে পড়ে না। কলহের সংস্কৃতি আমাদের গরম রক্তকে শান্ত করে নি। মারনাস্ত্র তুলে দিয়েছে আমাদের হাতে। তা দিয়ে কত রক্তক্ষরণের দিন পার করেছি। দীর্ঘ যাপনের পর কবি হৃদয়ে মৃত্যু চেতনা প্রবেশ করেছে যখন তখন আমরাই কি টের পাইনি যে, কবির হৃদয়ে আঘাত হেনে ইচ্ছামৃত্যু ডেকে এনেছি। অথচ শান্ত আন্দোলনে আমরাই পা মিলিয়েছিলাম। অন্ধের মতন ছুটেও দেখেছি অনেকেই। কবির চোখ পুরে গেলেও দৃষ্টি নিক্ষেপ করে থাকে।
নতুন করে প্রেমের বিধি জানবার সময় এসেছে।
দশক দশক দশক পেরিয়ে যাবে। সকলেই নিস্তব্ধ রাতের ভেতর পরিণত হব। কিন্তু মানুষকে না বুঝে খোলসে জড়িয়ে থেকে এই সুরা মগ হিসেবে পান করলেও কোনও কালেও বুঝব না নতুন প্রেমের বিধি। আখড়ায় আমরা খুচরো হিসেব করে যাব। টুংটাং পয়সার শব্দে ছন্দ ভঙ্গ হবে।
আমার দীর্ঘদিনের কবিতাসঙ্গী জুবিন লিখেছিল,
আমরা কেউ কারোর পিশাচকে বুঝতেযদিও পড়ে জুবিন কবিতাটা অনেক বড় করে এবং নাম দেয় দেবলীনার উজ্জ্বল চাকা। লেখাটা মেন পড়ছে। আমরা কেউ কারোর পিশাচকে বুঝতে পারিনি। বুঝতে পারছি কবিযাপনের গুরুত্ব।
সেই ফাঁকে আমাদের পিক্ খেয়ে গেছে অজানা পিশাচ
আমি তোমাকে শাদা নারী ভেবেছি
তুমি আমাকে মিছড়ির ঘোড়া।
কবি যাযাবর হলে আয়ু বাড়ে শুধু কবিতার।
ক্ষেপচুরিয়াসের দফতরে জমা পড়া বাছাই লেখা এবং নিয়মিত লেখা গুলো ছাড়াও বেশকিছু কবিকে অনুরোধ করেছিলাম এই সংখ্যাটিতে লেখার জন্য। তাঁদের অমূল্য লেখাটি পেয়ে খুব ভালো লেগেছ। সকলে ভালো থাকুন। শীতের জলসায় মেতে উঠুন প্রেমে।
কার্যনির্বাহী সপাদনায়
জুঁই সরকার
জুঁই সরকার
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন