গ্রাম্য
পথে অতীত রোমন্থন
আমি এখন লাল-কমলার আবেশ ভরা গোধূলিতে বসে
নির্জনে প্রতীক্ষারত গ্রাম্য সন্ধ্যা
নেমে আসবে বলে---
আরও নৈঃশব্দ্য এবং স্থবিরতা
নিয়ে ।
সারাদিন সূর্যের তাপে এ মাঠ
পুড়েছে-------
পুড়েছে কোমল ঘাস , গাছে গাছে সবুজ পাতা ;
রাতের আড়াল এলে চুপি চুপি তারা
উদাসী হাওয়ার কাছে চেয়েছে কি
শুশ্রূষা তাই !
অথবা দগ্ধ বুকে আর কোন শীতলতা
নাকি শুধু জমে থাকা চাপ চাপ
বেদনা
দীর্ঘশ্বাসের সাথে বিলিয়ে
দিয়েছে মুখ বুজে ।
একদিন নির্বোধের মত আমরা গড়েছি
স্বপ্নকুঞ্জ
ওই স্যাঁতসেঁতে জায়গাগুলোতে
যেখানে শক্তিমান ভাঁড়সদৃশ
বাজিকর
নিরন্তর ভেল্কি দেখায় বালসুলভ
জনতার মাঝে
এবং যথাবিহিত কুৎসিত কুচকাওয়াজ
দেখে ;
উদ্ভট ভঙ্গিতে সালাম পেয়ে ফুলে
ওঠে গেঁজে ওঠা ফেনার মত !
ওদের নিশানগুলো অনুজ্জ্বল , শতচ্ছিন্ন -------
ছেঁড়া কলাপাতার সাথে দাঁড়ানোর
নখের যোগ্যতাও নেই ।
ওদের মঞ্চগুলোর তলে অজস্র বিকৃত
কঙ্কাল ;
ওই কেল্লার চারপাশ রক্তের
ঐতিহ্যে ভৌতিক,বিষণ্ণ ;
সমস্ত তল্লাটে স্যুট-বুট-বাবুয়ানা-সোনা-রুপো-জরি
সবমিলিয়ে জবড়জং অভিনয় !
কিন্তু আশ্চর্য এই যে ওরা তাতেই
খুশি ------
শুয়োরের পাল যেমন খুশি কাদার
মধ্যে ঘেঁচু খুঁজে ।
ভেবে দেখো, ওইরকম নির্জীব পটভূমিতে
আমরা শ্যামল স্বপ্নসৌধ তুলতে
চেয়েছি প্রতিদিন ----
কিন্তু কেমন বেঢপ লাগত কখনও
ভাবি নি !
আমরা ছিলাম তিনটি উপাদান ------
একান্ত তুমি ও আমি আর কল্পনার
নদী-মাঠ-পাখি ;
মেঘের উপর মেঘ ছেয়ে ছিল
চাঁদোয়ার মত ;
সেদিন কিছুই কম পড়ে নি দিনের
শেষ আলো আর বাতাসের ছোঁয়া
শুধুই হৃদয়ে ছিল বলে !
ঘাসের ডগায় শিশিরের সান্নিধ্যের
মত
আজ আমি নিবিড় হয়ে বসে আছি
তার চেয়ে মায়াবীর দেশে ;
শুধু তুমি আজ কল্পময়ী, মায়াবিনী আরও ------ অদৃশ্য ,অস্পৃশ্য !
তাই এ দেহের ইচ্ছে হয়
সত্ত্বাহীন হতে ,
সে দৈব নেই তাই -----
সূর্যের মত সাধ তারাদের মত ভেসে
যায় দূরে ,
নিবুনিবু করে ওই জোনাকির মত ,
তারপরে নিভে যায় গাঢ় অন্ধকারে
হৃদয়ের ক্রমাগত শূন্যতার বোধে ।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন