সোমবার, ২৯ সেপ্টেম্বর, ২০১৪

অনুবাদ কবিতা - কৌশিক ভাদুড়ী



অনুবাদ কবিতা
কৌশিক ভাদুড়ী

১৪* যে কৌণসি মুহূর্তরে মুঁ গিরফ্ হোইযাইপারে *

যে কৌণসি মুহূর্তরে মুঁ গিরফ্ হোইযাইপারে
দেশদ্রোহর অভিযোগরে
কীর্তনমংডলীকু সৈন্যবাহিনী করিদেইপারে
গণতন্ত্র
যে কৌণসি মুহূর্তরে মুঁ বরখাস্ত হোইযাইপারে
চৌকিকু বেখাতির করিবার অপরাধরে,
আখির রঙ্গ নীল নুহেঁ বোলি
সুধর্মা সভার অপ্সরাঠারকু অস্বিকার করে
মো' ভিতরর চিরংতন অসুর,
অমৃতরে মোর অধিকার সমান বোলি
উচ্চারণর দ্রোহরে মোতে লাছি দিআযাইপারে
যেকৌণসি মুহূর্তরে
চুংবনকু বিদ্যুত-শক্ করিদেইপারে গণতন্ত্র,
লুহাভীমকু আলিঙ্গন করু করু বা
কড়মড় হোই ভাঙ্গিযাইপারে এথর
ধৃতরাষ্ট্রর হাড়-ছাংচ
কবিতা সহিত কথাবার্তা বেলে মৌনতা বরং সহ্য,
দোভাষী কিন্তু লোড়া নাইঁ মোর, ধন্যবাদ,
বাধ্য করনা
আকাশকু ধ্বজা বোলি মানিনেবা পরে
আনুগত্য মুঁ দেখাইবি আউ
কেউঁ পতাকাকু ?
প্রকাশ্য দম্ভরে
সকল নীরবতাকু মুঁ তোসরফ করিসারিছি
শব্দটিএ গঢ়িবা পাইঁ বর্তমান্,
চক্রবৃদ্ধি সুধ সহ ফেরাইদেবি পুণি
অথচ
সারা সৃষ্টিকু ভাঙ্গি চূরি তরলাই যোড়ি
হলে হাতকড়ি তিআরি হেব কমারশালরে
খাস্ মোরি পাইঁ !
যেকৌণসি মুহূর্তরে মুঁ গিরফ্ হোইযাইপারে...
নির্বাসিত হোইযাইপারে নির্বাসনর রাজ্যরু,
চিহ্নট করাযাইপারে মোতে হাড়ক্রস্-খপুরি চিহ্নরে,
যেকৌণসি মুহূর্তরে মুঁ দংডিত হোইপারে
'
নাগরিক' ন বোলাই
'
মণিষ' বোলি পরিচয় দউথিবার দায়রে !
"
যেকৌণসি মুহূর্তরে মুঁ গিরফ্ হোইযাইপারে" বোলি
উচ্চারণ করিথিবার দ্রোহরে
যেকৌণসি মুহূর্তরে মুঁ গিরফ্ হোইযাইপারে
হঠাত্...
আশংকাকু ঘটণা করিদেইপারে গণতন্ত্র ।।


১৪* যে কোনো মুহূর্তে আমি গ্রেফতার হতে পারি *

যে কোনো মুহূর্তে আমি গ্রেফতার হতে পারি
দেশদ্রোহের অভিযোগে
গণতন্ত্র
কীর্তনদলকে সৈন্যবাহিনী করে দিতে পারে
যে কোনো মুহূর্তে আমি বরখাস্ত হয়ে যেতে পারি
কুর্সিকে বেখাতির করার অপরাধে,
চোখের রং নীল নয় বলে
সুধর্মা সভার অপ্সরাধামকে অস্বীকার করে
আমার ভেতরের চিরন্তন অসুর,
অমৃতে আমার অধিকার সমান-
এ কথা উচ্চারণের দ্রোহে
গুলিবিদ্ধ হতে পারি যে কোনো মুহূর্তে
গণতন্ত্র চুম্বনকে বিদ্যুত-শক করে দিতে পারে,
লৌহ ভীমকে আলিঙ্গন করতে না করতে
কড়মড় করে ভেঙে যেতে পারে এবার
হয়তো ধৃতরাষ্ট্রের হাড়গোড়
কবিতার সাথে কথাবার্তার সময় মৌনতা বরং সহনীয় ,
দোভাষী কিন্তু অপরিহার্য নয় আমার, ধন্যবাদ,
বাধ্য কোরো না
আকাশকে ধ্বজা বলে মেনে নেওয়ার পরে
আবার আমি আনুগত্য দেখাব
কোন পতাকাকে?
প্রকাশ্য দম্ভে
সকল নীরবতাকে আমি তোষামোদ করে রেখেছি
একটি শব্দ গড়ার জন্যে বর্তমানে,
চক্রবৃদ্ধি সুদ সহ পুনরায় ফিরিয়ে দেব
অথচ
সারা সৃষ্টিকে ভেঙেচুরে গলিয়ে জুড়ে
হাতকড়ি তৈরি হবে কামারশালায়
খাস আমারই জন্যে!
যে কোনো মুহূর্তে আমি গ্রেফতার হতে পারি...
নির্বাসিত হয়ে যেতে পারি নির্বাসনের রাজ্য থেকে,
চিহ্নিত করা যেতে পারে আমাকে হাড়ক্রস-খুপরি চিহ্নে,
যে কোনো মুহূর্তে আমি দণ্ডিত হতে পারি
'
নাগরিক' না বলে
'
মানুষ' পরিচয় দেওয়ার দায়ে!
"
যে কোনো মুহূর্তে আমি গ্রেফতার হয়ে যেতে পারি"
এ কথা উচ্চারণের দ্রোহে
যে কোনো মুহূর্তে আমি গ্রেফতার হয়ে যেতে পারি
হঠাত্...
গণতন্ত্র আশঙ্কাকে ঘটনা করে দিতে পারে


কবিতা গ্রন্থ দ্রোহবাক্য

কবি পরিচিতি
শ্রী সচ্চিদানন্দ রাউতরায়ের (১৯১৬-২০০৪) পরবর্তী উত্তরাধিকারত্বে ওড়িয়া সাহিত্যের যে নব্য আধুনিক’ (Neo-modernity) যুগের প্রবর্তন হয়, কবি রাজেন্দ্র কিশোর পণ্ডা তার অন্যতম ধারকভারতীয় আঞ্চলিক ভাষায় কবিতার জাতীয় পুরস্কার প্রাপ্তপেশাগত জীবনে কবি ভারত সরকারের এক আই-এ-এস আধিকারিক ছিলেন, অধুনা অবসরপ্রাপ্ত
তত্সম শব্দ ওড়িয়া ও বাংলায় অনুরূপকবিতা অনুবাদের ক্ষেত্রে যেটা হয়, অনুরূপ বাংলা শব্দ সব সময় সমান্তরাল অনুভূতি বহন করে নাসেক্ষেত্রে আমার মনে হয় কবিতার আত্মাটিকে( স্প্যানিশ কবিতায় বিবৃতদুয়েন্দে, লোরকা বিভিন্ন সময়ে শব্দটা ব্যবহার করেছেন) সনাক্ত করে ফুটিয়ে তোলাটাই সঙ্গত ও সঠিক অনুবাদ এখানেও সামান্য দু একটি জায়গায় তাই করেছিযদিও ওড়িয়া ও বাংলার উত্সমুখের অভিন্নতা স্বীকার করে তত্সম শব্দ অপ্রতিস্থাপিত রাখার দায় আগাগোড়াই থেকেছে
জন্মসূত্রে, কৈশোর অতিবাহনের সূত্রে, কবি রাজেন্দ্রকিশোর পণ্ডা পশ্চিম উরিষ্যার দেওগড় জেলারকবির সাথে কথপোকথন সূত্রে জেনেছি গ্রন্থভূক্ত কবিতাগুলি একটি দীর্ঘ সময়কাল, ১৯৮১ থেকে ১৯৯৮-এর মধ্যে রচিতকবির জাতীয় পুরস্কার প্রাপ্ত গ্রন্থটি শৈলকল্পপ্রকাশিত হয় ১৯৮২-তে কটক থেকেদ্রোহবাক্যপ্রকাশিত হয় ভুবনেশ্বর থেকে ২০০৩-এসেই অর্থে দ্রোহবাক্যের কবিতাগুলি বেশি আধুনিক



অনুবাদক সম্পর্কে

কৌশিক ভাদুড়ীর জন্ম কোলকাতায় বেড়ে ওঠা হাওড়ায়, যত্সামান্য পড়াশুনো কোলকাতা হাওড়া মিলিয়েচাকরি সূত্রে ১৯৮৬ থেকে আজ পর্যন্ত উরিষ্যার অনুগুলে জন্মসূত্রে, কৈশোর অতিবাহনের সূত্রে, কবি রাজেন্দ্রকিশোর পণ্ডা পশ্চিম উরিষ্যার দেওগড় জেলারঅনুগুল পশ্চিম উড়িষ্যা আর উপকূলীয় উরিষ্যার ঠিক মাঝখানেসেই সুবাদে, 'দ্রোহবাক্য' কাব্যগ্রন্থে কবি রাজেন্দ্রের আঙুল বেয়ে উঠে আসা বহু গ্রামীন অনুষঙ্গ, স্বল্প কিছু গ্রামাঞ্চলে চালু বাক্যের সাথে প্রাত্যহিক-সূত্রে অনুবাদকের সম্পর্কঅনুবাদের ক্ষেত্রে কাব্যভাবকে পরিবাহিত না করে যতদূর সম্ভব কাব্যিক অনুষঙ্গগুলিই পাঠকের কাছে আনতে চেয়েছেন, যাতে করে পাঠক নিজেই কবিতাকে খুঁজে নিতে পারেন
শ্রদ্ধেয় কবি রাজেন্দ্র কিশোর পণ্ডা বাবুর পরিণতি-সম্পৃক্ত দ্রোহবাক্যগ্রন্থভুক্ত গভীর বোধাশ্রিত কবিতাগুলির অনুবাদার্থে অনুবাদকের কম্পিউটারে ওড়িয়া ফন্ট না থাকায়; শ্রদ্ধেয় সম্বিদ দাশ বাবু যৎপরোনাস্তি আদর প্রদর্শন হেতু; স্বহস্তে বাংলা ফন্টে আপলোড করে কবিতাগুলি পাঠিয়েছেনঅনুবাদকের সাথে সাথে আমরাও সম্মানিতগর্বিত


শ্রী প্রবোধ রাউতের কবিতা
অনুবাদ - কৌশিক ভাদুড়ী


Many of my friends asked me to present Odia poems in the language herself. So this time I present an ODIA poem of শ্রী প্রবোধ রাউত in bengali  script. While reading Odia in Bengali script please follow the norms:
1. Odia pronunciation does not have default ‘
্‌’ rather default is ‘’. For example, wherever it is কর(do) please read as কর(অ) neither কর্‌ nor করো, likewise.
2. Where it is
ল্র read so, because in Odia alphabet there is one more which is absent in Bengali alphabet.
3.
in Bengali doesn’t sound different than , so here I replace with NR.
Friends hope your happy reading!!


সে যায় তুথ্‌র হেই থা

মুঁ ফেরিবি
পাহাড় মথানরে জহ্ন হেই
সে যায় তু নই হেই থা

লোকবাক, গছ বৃচ্ছ
দেখ্‌বু আ......
বিরল্র তোটামাল্র
বুদিকিআ খরিগছ
কুম্ভাটুআ ডাক
ঘাটিআ ছাড়িবা দিন ঠুঘাট
মুঁ তসে পারির লোক।।

কন্র করিবা কহ?
বাড়িপট দেবদারু
তো ঝাল্র
তো হস
প্রেম আউ কন্র যে?
পিঠিকরি আউজি গলে
বুলি পড়ুছি আগকু।।

চেঁই থা,
চক্‌ চক্‌ সুনা ইলিশী
পোহল্রা
বাণ্‌ধিনেইথ্‌বা ফুলবন্র
ভরা ছাতি শব্দ গন্ধ
অশীন্র রাতিরে
ঠক্‌ ঠক্‌ করিব বাড়ি কবাট
সে যাঁএ তো চহলা পান্রিকু
থ্‌র করি থা।।


ও যাচ্ছে তুই স্থির থাক

আমি ফিরব
পাহাড়ের মাথায় জোৎস্না হয়ে
ও যাচ্ছে তুই নদী হয়ে থাক

লোকজন গাছ গাছালি
দেখবি তো আয়
বিরল আওসা
খেজুর গাছের ঝোপ
হাঁড়িচাঁচার ডাক
হয়ে গেছে ফেরীঘাট
ঘাটওয়ালা গেছে চলে,
আমি তো ও-পারের লোক
কী করব বল?
বাগানে দেবদারু
তোর ঘাম
তোর হাসি
প্রেম এ ছাড়া কী?
পিঠ দেখিয়ে যেতে যেতে
মুখ ঘুরিয়ে চাওয়া
চেয়ে থাক
চকচকে সোনা ইলিশ
বাটা
আমাকে বেঁধে ফেলেছে ফুলবন
বুক ভরা শব্দ গন্ধ
আশ্বিন রাত্তিরে
ঠকঠক করবে সদরের কপাট
ও তো যাচ্ছে চুলবুলে জলে

রঘু মাঝির গান-২ (ভাষা কেয়ুঞ্ঝর)

তকয় কোকো দিশ মা হো
দিরিদি শম দ
হো হো তকয় কোকো নতু ইয়া হো
নতু ন আণ
মা রে হেসে রে হো
দিরিদি শম দ
গিরিয়ে রে গাব্‌লা রে হো
নতু ন আণ
যা গোসায় মণে কোকো দিশ মা হো
দিরিদি শম দ
তুরুই কোকো নতু ইয়া হো
নতু ন আণ

ওরা জঙ্গলে পাহাড়ে বসত করে
ওরা জঙ্গলে পাহাড়েই ঘর পাতে
ওরা পাঁচ জন ওদের স্বজন
তারা ছয় জন তরু পরিজন
ঘর গেরস্থলির ঋতু রীতিতে
নিবাসে নিভৃত মায়া ঘিরে রাখে
ওরা কাঠ কেটে কাঠ ডাঁই করে
স্নান সেরে ওরা আরাধনা করে
হে ঈশ্বর হে প্রাণেশ রেখো স্বীয়
পাদে রেখো নিজ ভূমে পাঁচ জনে


দিরজঙ্গল ২দিশমপাহাড় ৩গিরিএ(গাছ) কাটা ৪গাব্‌লা(গাছ) বয়ে নিয়ে যাওয়া ৫নআণস্নান ৬গোসাএঈশ্বর ৭মণেপাঁচ ৮তুরুইছয়

৪টি মন্তব্য: