সাক্ষাত
: ভগবান-এর সাথে সুপ্রিয়
মিত্র
১।
দক্ষিনে আকাশমনি ক্যালিপটাশের তাঁবু
হাট করে খোলা দরজা - জানালা ;
আর একটু ডান দিকে আধমরা টালির ছাদ ,
বাঁশ-ঝাড়ে আটকা পড়া ফ্যাকাশে আলোর গুমোট ...
এধার থেকেও কিছু প্রণামী পড়েছে সেই ডেরায় –
এ হেন অলৌকিক ভিটায় কলঙ্কলতা আঁধার
নেমে এলে দূরবীনে ধরা পড়ে ,-
কিছু ফিনফিনে ঘেমো জামা ভেদ ক'রে
গজিয়ে উঠছে পালক ...
একটু পুরনো হলে কিছু কিছু ঘা , সৃষ্টি তে বাড়ে ব’লে
পালকগুচ্ছ গোপনে লালন করে সেসব টাটকা ক্ষত ।
এটুকুই তাদের কাজ ।
অত্যধিক
ক্ষমতার
মায়া
তাদের
অসুখ
ডেকে
আনে
।
দূরবীনের এপারের মানুষটি ডানাওলাদের ভগবান।
ভগবান ব্যর্থতা প্রশ্রয় রাখেন না অনাথের দ্বারেও ।
সন্তান দের এমন প্রবণতা তাঁকে হতাশ করে।
দুঃখে দু'চোখ তাঁর
অন্ধ
হয়ে
যায়
।
ধীর লয়ে ছাদ থেকে নেমে আসেন
এক পা এক পা ক'রে ...
সিঁড়ি শেষ হলে ,
উঠোনের কাছে পৃথিবী কুঁকড়ে ওঠে ভয়ে , - অথচ
ঘর থেকে বেরিয়ে আসেন এক অকালবৃদ্ধ 'লোক' !
বাকি , সামনের অক্ষরটুকু পিঠ থেকে ঝরে ঝরে বিলিয়ে যায়
পিছিয়ে পড়া রুগ্ন পাতার
ছাপে ...
২.
সে নিয়মিত এই সময়েই আসে, অথচ
তার কেন পাত্তা নেই আজ
- এ বড়
পিছুটানওয়ালা
এক
কৌতুহল।
আজকাল
এরকম
ঘটনায়
ভরে থাকে জীবনের চাথাল,
পরিচিত আকাশ ঢাকা পড়ে সাত ঋষির প্রকান্ড প্রশ্ন জটায় ...
ঘুম যেন - অপেক্ষার, শুয়োপোকা
থেকে
প্রজাপতি
হওয়ার
মধ্যবর্তী
দশা
;
আদপে তা নিছকই কাব্যিক
- আজ ভুল
ভাঙল
....
আমার ঘুমন্ত অবস্থার ফটো তুলে রেখেছিল
আমার এক ভাই, উঠে চোখ
কচলে
দেখলাম
-
একটা জ্যান্ত প্রশ্ন কুঁকড়েশুয়ে আছে !
৩.
কাকে বলব, ক'জনই বা বোঝে -
বন্ধ্যাত্বের বেদনা বড় পবিত্র ...
এ কথা সবার জন্যে নহে।
তারা সচরাচর আর এদিকে
পা মাড়াচ্ছেনা।
সহনশক্তি কঁকিয়ে উঠছে -
এও বা কম কি কবিতার থেকে?
গেজলা উঠে আসছে সান্তনার।
ধবধবে সাদা ফ্যানা,
বালিশের বুকে আল্পনা এঁকেছে ...
ত্রিভুবন জুড়ে শুধু তারই চরণ আমায়
ধুলো দেয় আশীর্বাদের ....
হে ঈশ্বর, থুঃ ...
এ শতকে শুধুমাত্র দ্বিধায় বেঁচে আছ!
৪.
মানবধর্মে ক্রমশ বিশ্বাস বাড়বে বুঝেই
ঈশ্বর এই বিশেষ প্রজাতিকে
সর্বোচ্চ মেধা দিলেন ... এরপর,
আমরা দেখলাম কেমনভাবে স্থল - জল - আকাশের সাথে পৃথিবী টা ছোট হয়ে এল।
এ যাবৎ লিখতে বসে মনে পড়ে
গ্যালিলিও, কোপারনিকাসের মুখ ...
কেমনভাবে আমার কলমের ডগায় একটা গোলক ঘুরতে ঘুরতে দাগ কেটে যাচ্ছে
প্রসীত মহাকাশে ....
৫.
আমার ভেতরের সুপ্রিয় ক্রমশ আমার শত্রু হয়ে উঠছে ... বড় অহঙ্কার তার, বড় জেদ!
রুলের বাইরে কথা বলতে গেলেই
পায়ে পড়তে হচ্ছে -
সরকার, মেয়নে আপকা ন্যমক খায়া হে।
রক্ষনাত্মকখেলে তাকে
অপ্রিয়
করে
তোলাই
এখন
আমার
ব্রত।
ছোটবেলায় শিখে এসেছি এক বাক্যে দুটি নেতিবাচক শব্দ, ইতিবাচকের কাছাকাছি পৌঁছিয়ে দেয়....
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন