জুই
শরত্কালের জুই এখন গোটা বছর ফোটার জন্য মাথা কুটে
শারদ লাগা আকাশে ছেঁড়া চাঁদ যখন ঝাপসা হয়ে ওঠে
বিন্দু বিন্দু শিশির জমে গৈরী ঘাসের ঠোঁটে
তখন সে মধ্যরাতে ঝুল বারান্দার রেলিং ধরে ফুটতে ভালোবাসে ৷
শ্যামা রাতে রামপুরা খাল ঘুমিয়ে গেলে দরজায় টোকা পড়ে
কবাট খুলতেই তছনছ জুই এর লাবণ্য শরীর শিশির ঝরে ৷
তাকে আর পড়ে না চোখে শুধু এলোমেলো বাতাসে ভাসে এক
কিশোর চরণ ধ্বনি; বলেছিল, একটু থামো বীর্য পুরুষের পাশে
বড়ো হয়ে একদিন ডাকব রমণী ৷
সেদিন কাছে পেয়ে দ্রুত পায়ে এড়িয়ে গিয়েছিল বালিকালাজে
সাহস হয়নি খুলে দেখতে কী লেখা ছিল তার কাগজের ভাঁজে ৷
আজ মনে পড়ছে আবার সাগরে যাবার রৌদ্রবহুল দিনে,
সে যেন আসে ভরা প্লাবন নিয়ে নদীর মতো পথ চিনে ৷
ফিরে আসুক এই রুমালী সন্ধ্যায় অথবা কোজাগরি পুর্ণিমায়
মন ভরা দায় নিয়ে পুরোনো দিনের পাশে বসবার খেলায় ৷
শেফালির মেধাবী মাংস ভারে উপচে পড়ে শহুরে ফুলদানি
ফিকে সন্ধ্যা কেঁদে ওঠে “এসো গো জ্বেলে দিয়ে যাও প্রদীপখানি”
সুখ এক দূরারোগ্য অসুখের নাম ৷ সুখ ছেড়ে অসুখের ঘরে
হঠাৎ হঠাৎ দুলে উঠে মন, শরীর ভরা ঘর জ্বালাবার জ্বরে ৷
অবসাদে কিশোরী মিতভাষী জিহ্বা এখন অস্থির সিদ্ধবাক
অতীতের “ভরা থাক স্মৃতিসুধা পাত্রখানি” জ্বলে পুড়ে খাক ৷
প্রেম সমগ্রের পাতা উল্টাতে উল্টাতে অলস অবহেলায়
বৈশাখের সূচনা বৃষ্টিতেই হারানো কিশোর মনে পড়ে যায় ৷
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন