গানে গানে শৈশব
কল্পনা দাস
“ তুই হেসে উঠলেই সূর্য লজ্জা পায়
আলোর মকুটখানা তোকেই পরাতে চায়...”
সুমন চট্টোপাধ্যায়ের(কবীর সুমন) এই গানখানা শুনলেই মনে হয় আলো ঝলমল সুন্দর ছোটো ছোটো শিশুকে যেন দেখতে পাচ্ছি । কিন্তু আমার নিজেকে তাদের-ই একজন মনে হয়েছে, আমার নবশৈশব ফিরিয়ে দিয়েছে এই গান ।
শৈশব আমাদের কবে হারিয়ে গেছে, কিন্তু না শৈশব হারালে তো চলবে না ! এইতো পুজো এলো নিয়ম মেনে, আবার চলেও গেল। প্রত্যেক পুজোর আগে কেন জানিনা আমি এই গানটা শুনি, আর বন্ধুদেরও শোনাতে ইচ্ছা করে খুব, আমার ভালোলাগা গানের একাংশ ভাগ দিতে চাই ---- “ ও আয়রে ছুটে আয়, পুজোর গন্ধ এসেছে, ঢ্যাং কুড়া কুড়, ঢ্যাং কুড়া কুড় বাদ্যি বেজেছে, গাছে শিউলি ফুটেছে, কালো ভোমরা জুটেছে / আজ পাল্লা দিয়ে আকাশে মেঘেরা ছুটেছে’’ । অনবদ্য কথা, সুর, সলিল চৌধুরি composer । তেমনই মন মাতান গান অন্তরা শুনিয়েছে ৭০/৮০ –র দশক থেকে ।
ভীষণ ফিরে পেতে মন চায় শৈশবের দিনগুলিকে, মনে পড়ছে হারানো দিনের গানের কথা । ছোট বেলায় নাচের ছন্দে মেতে উঠতাম-‘ মেঘের কোলে রোদ হেসেছে বাদল গেছে টুটি, আজ আমাদের ছুটি রে ভাই, আজ আমাদের ছুটি, ’। আমার তো মনে হয় প্রত্যেক ছোট ছোট শিশুই কবি গুরুর এই গানের সঙ্গে নৃত্যে মেতে ওঠে ।
সুকুমার রায়ের আসধারণ অনবদ্য সৃষ্টি ‘আবোল তাবোল’। যাহা আজগুবি, যাহা উদ্ভট, যাহা অসম্ভব, এই ছড়া গুলোর সঙ্গে শৈশবে পরিচয় ছিল ঠিকই, কিন্তু সেগুলোতে সুরারোপিত করা, বাস্তবিক-ই প্রশংসার দাবী রাখে । সংগীত জগতের বহুমুখি প্রতিভা সামন্তক সিনহা (সানি), এই প্রজন্মের শিল্পীদের মধ্যে আমার পছন্দের প্রিয় একজন । সম্প্রতি সামন্তক এবং Empty Spaces –র ‘আবোল তাবোল’ গানের এ্যালবাম শুনে মুগ্ধ হলাম, আনন্দিত হলাম । অসম্ভব প্রতিভাবান সামন্তক- ‘ বুড়ির বাড়ি’, ‘প্যাঁচা পেঁচি’, ‘বোম্বাগড়ের রাজা’,- এই গান গুলোতে এত চমক এনেছে, তা বাস্তবিকই ভালোলাগার মতন । বোম্বাগড়ের রাজা-র রাজত্বে সবটাই অদ্ভুত, বিছানা পাতা হয় শিরীষ কাগজ দিয়ে, টাকের ওপর ডাকটিকিট মারা হয় ।
হারানো দিনের গানের কথা মনে পড়ে যাচ্ছে, ‘লাল ঝুঁটি কাকাতুয়া’, ‘হাট্টি মাটিম টিম’, গুপিবাঘার জনপ্রিয় গান তো আছেই । হই হুল্লোড়, খেলা, হাসি, আনন্দ, মজা, কৌতুক সবই যে ছেলেবেলা জুড়ে আচ্ছন্ন ছিল তা-নয় । এই প্রসঙ্গে আমার নিজের কথা ব্যক্ত করা হয়ে যাবে, বুকের মধ্যে জমে থাকা কষ্ট অনুভব করি প্রতি মুহূর্তে, বেদনায় ভরে ওঠে মন, দু নয়ন অশ্রু সজল হয়ে ওঠে যখন এই গান শুনি, ‘ও তোতা পাখি রে, শেকল খুলে উড়িয়ে দেবো, আমার মাকে যদি এনে দাও, আমার মাকে যদি এনে দাও’। জনপ্রিয় শিল্পী নির্মলা মিশ্র-র গায়কীতে, কি অসহ্য বেদনায় ফুটে উঠেছে । আমার মাকে আমি হারিয়েছি খুব ছোট বেলায় । আমিও সেই তোতা পাখিকে কাতর মিনতি করেছি আমার মাকে এনে দেবার জন্য।
জ্যোতিন্দ্র মোহন বাগচী-র লেখা কবিতা গানে গানে হৃদয়ের গভীরে রয়ে গেছে – ‘বাঁশ বাগানের মাথার ওপর চাঁদ উঠেছে ওই, মাগো আমার শোলক বলা কাজলা দিদি কই’, এই গান গেয়েছেন প্রতিমা বন্দ্যোপাধ্যায় । ‘পথের পাঁচালী’ –র অপু দুর্গাকে সারাজীবনেও ভোলার নয়, তাদের কথা এই গানে যেন প্রকাশ পেয়েছে ।
আমরা যেভাবে শৈশব –কে পেয়েছি, দেখেছি । সবার মধ্যে, সবাইকে ভালোবেসে । কান্না, হাসি, দুঃখ, বেদনা এখনও কি ছোটরা একই রকমভাবে অনুভব করে? মনে হাজার প্রশ্নের ভিড় । তারা কি জানতে চায়, হট্টমেলার ওপারে কী আছে? নাকি কেবলই পড়া পড়া পড়া । পুস্তকের ভারে এতটাই ন্যুব্জ খোলা আকাশ তাদের ডাকে না । লোপামুদ্রা মিত্র তাই গেয়ে উঠলেন, ‘ডাকছে আকাশ, ডাকছে বাতাস/ ডাকছে মাঠের সবুজ ঘাস/ এই ছেলেটা খেলা ফেলে / শুধুই কেন পড়তে যাস... ডাকছে আকাশ, ডাকছে বাতাস’ ।
“ তুই হেসে উঠলেই সূর্য লজ্জা পায়
আলোর মকুটখানা তোকেই পরাতে চায়...”
সুমন চট্টোপাধ্যায়ের(কবীর সুমন) এই গানখানা শুনলেই মনে হয় আলো ঝলমল সুন্দর ছোটো ছোটো শিশুকে যেন দেখতে পাচ্ছি । কিন্তু আমার নিজেকে তাদের-ই একজন মনে হয়েছে, আমার নবশৈশব ফিরিয়ে দিয়েছে এই গান ।
শৈশব আমাদের কবে হারিয়ে গেছে, কিন্তু না শৈশব হারালে তো চলবে না ! এইতো পুজো এলো নিয়ম মেনে, আবার চলেও গেল। প্রত্যেক পুজোর আগে কেন জানিনা আমি এই গানটা শুনি, আর বন্ধুদেরও শোনাতে ইচ্ছা করে খুব, আমার ভালোলাগা গানের একাংশ ভাগ দিতে চাই ---- “ ও আয়রে ছুটে আয়, পুজোর গন্ধ এসেছে, ঢ্যাং কুড়া কুড়, ঢ্যাং কুড়া কুড় বাদ্যি বেজেছে, গাছে শিউলি ফুটেছে, কালো ভোমরা জুটেছে / আজ পাল্লা দিয়ে আকাশে মেঘেরা ছুটেছে’’ । অনবদ্য কথা, সুর, সলিল চৌধুরি composer । তেমনই মন মাতান গান অন্তরা শুনিয়েছে ৭০/৮০ –র দশক থেকে ।
ভীষণ ফিরে পেতে মন চায় শৈশবের দিনগুলিকে, মনে পড়ছে হারানো দিনের গানের কথা । ছোট বেলায় নাচের ছন্দে মেতে উঠতাম-‘ মেঘের কোলে রোদ হেসেছে বাদল গেছে টুটি, আজ আমাদের ছুটি রে ভাই, আজ আমাদের ছুটি, ’। আমার তো মনে হয় প্রত্যেক ছোট ছোট শিশুই কবি গুরুর এই গানের সঙ্গে নৃত্যে মেতে ওঠে ।
সুকুমার রায়ের আসধারণ অনবদ্য সৃষ্টি ‘আবোল তাবোল’। যাহা আজগুবি, যাহা উদ্ভট, যাহা অসম্ভব, এই ছড়া গুলোর সঙ্গে শৈশবে পরিচয় ছিল ঠিকই, কিন্তু সেগুলোতে সুরারোপিত করা, বাস্তবিক-ই প্রশংসার দাবী রাখে । সংগীত জগতের বহুমুখি প্রতিভা সামন্তক সিনহা (সানি), এই প্রজন্মের শিল্পীদের মধ্যে আমার পছন্দের প্রিয় একজন । সম্প্রতি সামন্তক এবং Empty Spaces –র ‘আবোল তাবোল’ গানের এ্যালবাম শুনে মুগ্ধ হলাম, আনন্দিত হলাম । অসম্ভব প্রতিভাবান সামন্তক- ‘ বুড়ির বাড়ি’, ‘প্যাঁচা পেঁচি’, ‘বোম্বাগড়ের রাজা’,- এই গান গুলোতে এত চমক এনেছে, তা বাস্তবিকই ভালোলাগার মতন । বোম্বাগড়ের রাজা-র রাজত্বে সবটাই অদ্ভুত, বিছানা পাতা হয় শিরীষ কাগজ দিয়ে, টাকের ওপর ডাকটিকিট মারা হয় ।
হারানো দিনের গানের কথা মনে পড়ে যাচ্ছে, ‘লাল ঝুঁটি কাকাতুয়া’, ‘হাট্টি মাটিম টিম’, গুপিবাঘার জনপ্রিয় গান তো আছেই । হই হুল্লোড়, খেলা, হাসি, আনন্দ, মজা, কৌতুক সবই যে ছেলেবেলা জুড়ে আচ্ছন্ন ছিল তা-নয় । এই প্রসঙ্গে আমার নিজের কথা ব্যক্ত করা হয়ে যাবে, বুকের মধ্যে জমে থাকা কষ্ট অনুভব করি প্রতি মুহূর্তে, বেদনায় ভরে ওঠে মন, দু নয়ন অশ্রু সজল হয়ে ওঠে যখন এই গান শুনি, ‘ও তোতা পাখি রে, শেকল খুলে উড়িয়ে দেবো, আমার মাকে যদি এনে দাও, আমার মাকে যদি এনে দাও’। জনপ্রিয় শিল্পী নির্মলা মিশ্র-র গায়কীতে, কি অসহ্য বেদনায় ফুটে উঠেছে । আমার মাকে আমি হারিয়েছি খুব ছোট বেলায় । আমিও সেই তোতা পাখিকে কাতর মিনতি করেছি আমার মাকে এনে দেবার জন্য।
জ্যোতিন্দ্র মোহন বাগচী-র লেখা কবিতা গানে গানে হৃদয়ের গভীরে রয়ে গেছে – ‘বাঁশ বাগানের মাথার ওপর চাঁদ উঠেছে ওই, মাগো আমার শোলক বলা কাজলা দিদি কই’, এই গান গেয়েছেন প্রতিমা বন্দ্যোপাধ্যায় । ‘পথের পাঁচালী’ –র অপু দুর্গাকে সারাজীবনেও ভোলার নয়, তাদের কথা এই গানে যেন প্রকাশ পেয়েছে ।
আমরা যেভাবে শৈশব –কে পেয়েছি, দেখেছি । সবার মধ্যে, সবাইকে ভালোবেসে । কান্না, হাসি, দুঃখ, বেদনা এখনও কি ছোটরা একই রকমভাবে অনুভব করে? মনে হাজার প্রশ্নের ভিড় । তারা কি জানতে চায়, হট্টমেলার ওপারে কী আছে? নাকি কেবলই পড়া পড়া পড়া । পুস্তকের ভারে এতটাই ন্যুব্জ খোলা আকাশ তাদের ডাকে না । লোপামুদ্রা মিত্র তাই গেয়ে উঠলেন, ‘ডাকছে আকাশ, ডাকছে বাতাস/ ডাকছে মাঠের সবুজ ঘাস/ এই ছেলেটা খেলা ফেলে / শুধুই কেন পড়তে যাস... ডাকছে আকাশ, ডাকছে বাতাস’ ।
খোলা আকাশ তাদের ডাকে না গো........
উত্তরমুছুনহ্যাঁ গো , ভাবলে কষ্ট হয় .........অপরাজিতা ্ধনবাদ......
মুছুন