এ দেশ তোমার আমার
অরিন্দম চন্দ্র
সাহিত্যচর্চায় নিমগ্ন থাকাটা কোন দোষ নয় কিন্তু সমকালকে বাদ দিয়ে কি সত্যিই সাহিত্য হবে??এখানে এ’বিষয়ে যে কোন আকাদেমিক ডিসকাশন চলতেই পারে,কিন্তু আমি বলতে চাই এই যে এ’দেশের সীমারেখা বা তার বাইরে ঘটমান বর্তমানকে কি আমরা অস্বীকার করেই সাহিত্যে তন্নিষ্ট হব----বা পারব??
বিগত দুটি দশক জুড়ে এ দেশে চলছে নয়া অর্থনৈতিক ব্যবস্থা।স্বাধীনতা পরবর্তী চার-পাঁচটি দশক কেমন ছিল তা নিয়ে বিতর্ক হোক,কিন্তু এ লেখার মূল উপজীব্য গত দুই দশক আমাদের এই দেশের মাটি আর দেশের মানুষ।আজ আমরা টিভির পর্দায়,সিনেমায়,খবরের কাগজের পাতায় পাতায় শুধু CONSENT MANUFACTURE হতে দেখি,কিন্তু আমার ক্লাসের লাস্ট বেঞ্চে বসা ছাত্র,তার বাপ-মা পরিবার তারা কোথায়,তাদের কথা কোথায়?
পাঠক আমাকে পক্ষপাতের দোষে দুষ্ট বলতেই পারেন।কিন্তু কিছু চিন্তা না করবার চেয়ে ভুল চিন্তা করাও ভালো,তাই না?আসুন সাম্প্রতিক কিছু তথ্যের আলোয় দেখি কেমন আছে,আমার আপনার দেশের ম্যাঙ্গো পাবলিক,মানে গরীব মানুষ?
U.N.D.P র সাম্প্রতিকতম WORLD REPORT, 2013 দুই হাত তুলে সাধুবাদ জানিয়েছে এ দেশকে।এ বছর ব্রাজিল,চীন,রাশিয়া আর ভারতের মোট উৎপাদন সম্মিলিতভাবে কানাডা,ফ্রান্স,জার্মানী,ইতালী,ব্রিটেন আর আমেরিকার মোট G.D.P র চেয়ে বেশী হয়েছে—পাঠক,ভুলবেন না—১৫০ বছরে এই প্রথম।
ঐ এক রিপোর্ট বলেছে ভারতের দারিদ্র্য দূরীকরণে সাফল্যের কথা----বিগত দুই দশকে,অর্থাৎ ১৯৯০ থেকে ২০১০ সালের মধ্যে ৪৯.৪% থেকে ৩২.৭%।কম হল,প্রিয় পাঠক??
GLOBAL HUNGER INDEX অনুযায়ী গোটা দুনিয়ার ৮৮ টি দেশের মধ্যে ভারতের স্থান ২০০৯ সালে ৬৫ তম, ২০১০ সালে ৬৭ আর ২০১১ সালেও ৬৭।না না, এখানে নম্বর যত বাড়বে আপনি তত খারাপ,মানে পাকিস্তানের চেয়েও।আজ দেশের ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য চালু “মিড-ডে-মিল”—ভাবুন তো একবার,প্রাইমারী ক্লাসে প্রতিদিন প্রতি ছাত্র ৩ টাকা ৪৪ পয়সা আর আপার প্রাইমারীতে দৈনিক ৫ টাকা।আমার আপনার ঘরের বাচ্ছারা নাই বা গেল খিচুড়ী স্কুলে,কিন্তু পাশের বাড়ির দিনু বা মিনু কি পুষ্টি পাবে ঐ টাকায়!প্রতি বছর সামরিক খাতে ব্যয় বাড়বে আর শিশুরা অবহেলিত থাকবে এমন দেশটি কোথাও খুঁজে পাবে নাকো তুমি!!!!
GINI INDEX, যার মাধ্যমে সমাজের বিভিন্ন স্তরের আর্থ-সামাজিক অসাম্য মাপা হয়,তার বিচারে ভারতের ১০% সবচেয়ে বড়লোক শ্রেণীর আয় সবচেয়ে কম আয়ভূক্ত ১০% মানুষের চেয়ে ৮.৬ গূণ বেশী।O.E.C.D র দেওয়া সাম্প্রতিকতম তথ্যের ভিত্তিতে এই ফারাক বর্তমানে প্রায় ১২ গূণ।
UNICEF এর দেওয়া তথ্য অনুযায়ী আপনার আমার প্রিয় দেশের অপুষ্টিতে ভোগা শিশুর সংখ্যা কঙ্গো,তানজানিয়া,বাংলাদেশ এমন কি পাকিস্তানের চেয়েও বেশী।
জলবাহিত রোগে এই পোড়া দেশে প্রতি বছর ১ লক্ষ শিশু মারা যায়।মোট জনগণের মাত্র ৩৪% সরকারী হাসপাতালে যেতে পারে।শূণ্য থেকে ছয় বছরের শিশু কণ্যার সংখ্যা ২০০১ সালে ৯২৭ থেকে ২০১১ সালে ৯১৪ তে নেমেছে(সরকারী জনগণনা ২০১১ দ্রষ্টব্য)।হে পাঠক,আমি ইঙ্গিত দিচ্ছি না কিচ্ছু,আপনি ভেবে নিন...
যে দেশের প্রায় ৫০% মানুষ শৌচাগারের সুবিধা থেকে বঞ্চিত সে দেশের যোজনা কমিশনের দুটি শৌচাগার তৈরী হল ৩৫ লক্ষ টাকায়,যার মধ্যে ৫ লক্ষ টাকা লেগেছে কে কে সেখানে ঐ কম্মটি করতে পারবেন সেই জন্য কার্ড বানাতে।
প্রিয় পাঠক,এ দেশ তোমার আমার...আর আজ এ দেশ দুই ভাগে বিভক্ত---বড়লোকেদের ইন্ডিয়া আর গরীবমানুষের ভারত।না, এটা কোন নির্বাচনী প্রচারের কথা নয় বন্ধু,আসুন এই ভারতের মানুষের জন্য কিছু ভাবি,কিছু লিখি বা আরও কিছু করি।হ্যাঁ,কিছু দায় আমাদের প্রত্যেককেই আজ নিতে হবে,কিছু ত্যাগ সবাইকেই করতে হবে।ক্ষুধার্ত মানুষ আজ ডাকছে,মানুষ সত্যিই খুব কাঁদছে।আমাদের লেখায় তাদের ভাষা দিতে হবে,প্রয়োজনে পথে নামতে হবে। আমাকে আমার মত থাকতে দাও,বোধ করি আপনিও আর ভাববেন না,ভাবতে পারবেনও না।
সাহিত্যচর্চায় নিমগ্ন থাকাটা কোন দোষ নয় কিন্তু সমকালকে বাদ দিয়ে কি সত্যিই সাহিত্য হবে??এখানে এ’বিষয়ে যে কোন আকাদেমিক ডিসকাশন চলতেই পারে,কিন্তু আমি বলতে চাই এই যে এ’দেশের সীমারেখা বা তার বাইরে ঘটমান বর্তমানকে কি আমরা অস্বীকার করেই সাহিত্যে তন্নিষ্ট হব----বা পারব??
বিগত দুটি দশক জুড়ে এ দেশে চলছে নয়া অর্থনৈতিক ব্যবস্থা।স্বাধীনতা পরবর্তী চার-পাঁচটি দশক কেমন ছিল তা নিয়ে বিতর্ক হোক,কিন্তু এ লেখার মূল উপজীব্য গত দুই দশক আমাদের এই দেশের মাটি আর দেশের মানুষ।আজ আমরা টিভির পর্দায়,সিনেমায়,খবরের কাগজের পাতায় পাতায় শুধু CONSENT MANUFACTURE হতে দেখি,কিন্তু আমার ক্লাসের লাস্ট বেঞ্চে বসা ছাত্র,তার বাপ-মা পরিবার তারা কোথায়,তাদের কথা কোথায়?
পাঠক আমাকে পক্ষপাতের দোষে দুষ্ট বলতেই পারেন।কিন্তু কিছু চিন্তা না করবার চেয়ে ভুল চিন্তা করাও ভালো,তাই না?আসুন সাম্প্রতিক কিছু তথ্যের আলোয় দেখি কেমন আছে,আমার আপনার দেশের ম্যাঙ্গো পাবলিক,মানে গরীব মানুষ?
U.N.D.P র সাম্প্রতিকতম WORLD REPORT, 2013 দুই হাত তুলে সাধুবাদ জানিয়েছে এ দেশকে।এ বছর ব্রাজিল,চীন,রাশিয়া আর ভারতের মোট উৎপাদন সম্মিলিতভাবে কানাডা,ফ্রান্স,জার্মানী,ইতালী,ব্রিটেন আর আমেরিকার মোট G.D.P র চেয়ে বেশী হয়েছে—পাঠক,ভুলবেন না—১৫০ বছরে এই প্রথম।
ঐ এক রিপোর্ট বলেছে ভারতের দারিদ্র্য দূরীকরণে সাফল্যের কথা----বিগত দুই দশকে,অর্থাৎ ১৯৯০ থেকে ২০১০ সালের মধ্যে ৪৯.৪% থেকে ৩২.৭%।কম হল,প্রিয় পাঠক??
GLOBAL HUNGER INDEX অনুযায়ী গোটা দুনিয়ার ৮৮ টি দেশের মধ্যে ভারতের স্থান ২০০৯ সালে ৬৫ তম, ২০১০ সালে ৬৭ আর ২০১১ সালেও ৬৭।না না, এখানে নম্বর যত বাড়বে আপনি তত খারাপ,মানে পাকিস্তানের চেয়েও।আজ দেশের ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য চালু “মিড-ডে-মিল”—ভাবুন তো একবার,প্রাইমারী ক্লাসে প্রতিদিন প্রতি ছাত্র ৩ টাকা ৪৪ পয়সা আর আপার প্রাইমারীতে দৈনিক ৫ টাকা।আমার আপনার ঘরের বাচ্ছারা নাই বা গেল খিচুড়ী স্কুলে,কিন্তু পাশের বাড়ির দিনু বা মিনু কি পুষ্টি পাবে ঐ টাকায়!প্রতি বছর সামরিক খাতে ব্যয় বাড়বে আর শিশুরা অবহেলিত থাকবে এমন দেশটি কোথাও খুঁজে পাবে নাকো তুমি!!!!
GINI INDEX, যার মাধ্যমে সমাজের বিভিন্ন স্তরের আর্থ-সামাজিক অসাম্য মাপা হয়,তার বিচারে ভারতের ১০% সবচেয়ে বড়লোক শ্রেণীর আয় সবচেয়ে কম আয়ভূক্ত ১০% মানুষের চেয়ে ৮.৬ গূণ বেশী।O.E.C.D র দেওয়া সাম্প্রতিকতম তথ্যের ভিত্তিতে এই ফারাক বর্তমানে প্রায় ১২ গূণ।
UNICEF এর দেওয়া তথ্য অনুযায়ী আপনার আমার প্রিয় দেশের অপুষ্টিতে ভোগা শিশুর সংখ্যা কঙ্গো,তানজানিয়া,বাংলাদেশ এমন কি পাকিস্তানের চেয়েও বেশী।
জলবাহিত রোগে এই পোড়া দেশে প্রতি বছর ১ লক্ষ শিশু মারা যায়।মোট জনগণের মাত্র ৩৪% সরকারী হাসপাতালে যেতে পারে।শূণ্য থেকে ছয় বছরের শিশু কণ্যার সংখ্যা ২০০১ সালে ৯২৭ থেকে ২০১১ সালে ৯১৪ তে নেমেছে(সরকারী জনগণনা ২০১১ দ্রষ্টব্য)।হে পাঠক,আমি ইঙ্গিত দিচ্ছি না কিচ্ছু,আপনি ভেবে নিন...
যে দেশের প্রায় ৫০% মানুষ শৌচাগারের সুবিধা থেকে বঞ্চিত সে দেশের যোজনা কমিশনের দুটি শৌচাগার তৈরী হল ৩৫ লক্ষ টাকায়,যার মধ্যে ৫ লক্ষ টাকা লেগেছে কে কে সেখানে ঐ কম্মটি করতে পারবেন সেই জন্য কার্ড বানাতে।
প্রিয় পাঠক,এ দেশ তোমার আমার...আর আজ এ দেশ দুই ভাগে বিভক্ত---বড়লোকেদের ইন্ডিয়া আর গরীবমানুষের ভারত।না, এটা কোন নির্বাচনী প্রচারের কথা নয় বন্ধু,আসুন এই ভারতের মানুষের জন্য কিছু ভাবি,কিছু লিখি বা আরও কিছু করি।হ্যাঁ,কিছু দায় আমাদের প্রত্যেককেই আজ নিতে হবে,কিছু ত্যাগ সবাইকেই করতে হবে।ক্ষুধার্ত মানুষ আজ ডাকছে,মানুষ সত্যিই খুব কাঁদছে।আমাদের লেখায় তাদের ভাষা দিতে হবে,প্রয়োজনে পথে নামতে হবে। আমাকে আমার মত থাকতে দাও,বোধ করি আপনিও আর ভাববেন না,ভাবতে পারবেনও না।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন