ওড়িয়া ভাষার কবি শ্রী রাজেন্দ্র কিশোর পণ্ডা রচিত “দ্রোহ বাক্য” কাব্যগ্রন্থ থেকে ‘শিশুপালের উক্তি’ কবিতাটির অনুবাদ করলেন কবি কৌশিক ভাদুড়ী ।
শিশুপালের উক্তি
ভীম সুন্দর শিকারি পক্ষীটির ঘোর শনশন ঠাটে
আলোকজিত্ গতিতে
তেড়ে আসার দৃশ্য ভারি উন্মাদক ।
ছিন্ন শির খসে পড়ার কালে
কেই বা কবে দৃষ্টি রাখে
রত্নমুকুট পড়ল কত দূরে
সমবেত উদ্যোগীদের ভিতর কার বেশি হাতের কাছে!
নির্দিষ্ট নির্ঘন্ট ভিতরে রক্ত-পরত না পড়লে
জং ধরে যায় ধাতুতে,
অস্থিতে লবণ-চর পড়ে,
চর্মরোগের জ্বালায় অতিষ্ঠ হয়
ছাতির শ্রীবত্স চিহ্ন তোমার!
অর্চনা তোমার সম্ভব নয়,
যুগে যুগে আমার
ঘোর ঘর্ঘর ভর্ত্সনা না হলে!
মুণ্ডু কাটা যাওয়ার পরই
পুনরায় আমার শরীর চতুর্ধা মূর্তি ধরে,
মৃত্যুকে আলিঙ্গন-পাশে নিলে বোঝা যায় সে রুক্মিণী!
একদিন হয়তো অনন্ত মৃত্যুর অনুভবে
রুক্মিণীময় হয়ে যাবে আমার
প্রতীপ অমরত্বের প্রত্যেক মুহূর্ত-
কবে আসবে পরিণতির সে মহালগ্ন কে জানে!
..........................
টীকা- “চতুর্ধা মূর্তি”- পুরীর জগন্নাথ মন্দিরের জগন্নাথ বলরাম ও সুভদ্রা দৃশ্যত ত্রিমূর্তি হলেও, সুদর্শন চক্রের উপস্থিতি হেতু অনেক মতে এই রূপে অভিহিত করা হয়। সম্ভবত শিশুপাল নিধনের সঙ্গে এই ভাবেই কথাটি সম্পর্ক রাখে।
- অনুবাদক কৌশিক ভাদুড়ী।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন