মঙ্গলবার, ৩ সেপ্টেম্বর, ২০১৩

শ্রুতিনাট্য - মাজুল হাসান

চলো বৃষ্টিবিদ্ধ
(একটি বর্ষণমুখর শ্রুতিনাট্য)



রচনা: মাজুল হাসান


ট্র্যাক- ১
সাউন্ড অন

(সন্তুরের চঞ্চল তান...। সাউন্ড ডিজল্ভ। মেঘের গর্জন, বৃষ্টির শব্দ...)



স্বাগতোক্তি:
যুবক:

আজ আমারো ইচ্ছে হলো দুলে ওঠার বেফাস বাতাস
যদিচ বৃষ্টি; নিকোষ মুক্তি। নিষিদ্ধ আতরে মন ভিজে ওঠে
মেঘের পেখমে রংচটা ছাতি, নূরের বরাক পেজাপেজা হাতি
রেখে দাও সব; আজ কুটিকুটি যাও জারুল বর্ষাতি
পারুল ওখানে।
ওখানে পাখিযান।
চোখ এড়িয়ে; চলে যেতে চায়; ভিড়ের রাস্তায়।
পথ প্রোরচনাময়। সোহাগের ফাঁদ।
ফাঁদ ভালবাসি। এখন সহবাস।
নিকটে উলন রোড। চলেছেন সীতা।
সাথে কামদেব। লকেটে গীতা।
মেঘের গমকে গগন ঘেমে ওঠে, বাণের আঘাতে নগরে নাভিশ্বাস
অতএব ঘর।
ঘরেতে প্রদীপ।
ঘুমেতে উৎপাত পামর-পামর!
আমায় বিদ্ধ করো পেরেক বৃষ্টি।
নাচো কদমপাতা। নাচো পত্রমিতা। নাচো জলধোয়া লাশ।
(সন্তুরের চঞ্চল তান...। সাউন্ড ডিজল্ভ। মেঘের গর্জন, বৃষ্টির শব্দ...)

স্বগতোক্তি:
যুবতী:

ও বৃষ্টি ভাল বাসত। ভালবাসত আমের আচার।
বলত, বিড়াল তাড়িয়ে দিলে সন্ধ্যার বুক ভারী হয়ে আসে।
বড় অদ্ভূত। শুনতো মেটালিকা কিন্তু খোঁজ রাখত মাইকফুলের।
লালচে বেগুনি
সাদাছোপ
মাইমফুল।
বাজী ধরে কথা বলতে এলো একদিন। লেকচার থিয়েটারে। বলল,
যুবক:
আমি ঠাণ্ডা সিং। মানে তুষার।
আমার সাথে একটা দুষ্টু সম্পর্ক করবে?
মাধ্যবয়স্ক ভামরা যেমন বৃষ্টির সময় বাকবাকুম বাকবাকম চোখে
কাকভেজা হয়ে ফিরে আসা স্কুলপড়ুয়া কিশোরীদের দেখে – সেরকম।
(সাউন্ড ডিজলভ...। বাতাসের শো-শো শব্দ।)

যুবতী:

কী সব দিন ছিল একেকটা।
লাগাম টেনে রাখা দায়।
ঘোড়া ছুটছে তো ছটছে।
ছুটছে... তো.... ছুটছে....
(সাইন্ড ডিজলভ.. । ঘোড়ার খুরের শব্দ। সাউন্ড ডিজল্ড। হাসির কলহাস্য + চুড়ির শব্দ।)
হায় ঘোড়া নেই। তাড়া নেই। একটা পদচ্ছাপও নেই।
তবু চরকির মতো এই কমলালেবু পৃথিবীটা ঘুরছে।
দালির ছবির মতো অর্ধগলিত ঘড়ি থেকে চুইয়ে চুইয়ে পড়ছে সময়।
সকাল। ডিমের কুসুমের মতো সকাল।
দুপুর। বিকেল। যাচ্ছে তাই।
স্বগতোক্তি:
তবে এইসব বাতাবিলেবু, বিকেল বৈভব গড়িয়ে যাক। যা-ক...।
তোমার ভীষণ ব্যস্ততা আজ
দজ্জাল বসের ছাপোষা কেরানির মতো।
দৃষ্টিতে মরুঝড়, শ্রবণে উল্কাপতন
আদতে মনমরা পাগল-পাগল।
পাগলাগারদ নিলে না আমায়
না নিলে তিষ্টকাল।
কালকেতুভাঙ্গা সেদিন বর্ষাকাল
ভেজালে বারুদ, ভাসালে সবুজ পত্রশিরা
শিথানে রেখে আসা হলো বারোমাসী হাস্নুহেনা।
ফুলের সৌরভে নগর দুলে ওঠে
নড়েচড়ে বসে নগরবজরা।
দূরে ফিনফিনে হাসি। কাছে লাবণ্যআঁধার।
তারমাঝে একবিন্দু প্রেম, লোকভর্তি অষ্টলগ্ন, বিয়ের আয়োজন
(সাউন্ড ডিজলভ। করুন সানাই। )
কদম ফুলে ওঠে। মেলায় পেখম।
আমি কি আরাধ্য ছিলাম একাকী আরাধনার?
(সাউন্ড আপস। করুন সানাই। সাউন্ড মিউট) ...

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন