জাতে ওঠার বজ্জাতি
প্রকল্প ভট্টাচার্য
পড়াশোনায় ডিগ্রী, ভাল চাকরি, অফিস অথবা শ্বশুরবাড়ীর পয়সায় দু’চারবার বিদেশভ্রমণ, এইসব তো আজকাল ঘরে ঘরে। এতে আর আজকাল জাতে ওঠা যায় না। বড় মুখ করে কারোকে বলতে যান ‘এই আমার পিএইচ ডি টা শেষ হলো’ কিংবা ‘মাইক্রোসফট এ চাকরি পেয়েছি’, জবাবে নির্ঘাত শুনতে হবে, ‘ও তাই নাকি? হ্যাঁ হ্যাঁ, আমার বড় শালার মেজ ভাগ্নেও তো...’ বক্তার মুখ বাঁকিয়ে মন্তব্যের থেকেই জেনে যাবেন যে আপনার সাফল্যের দাম খুব বেশী হলে একটা একচোখ ওয়ালা কড়ি। জাতে ওঠার জন্য তিনটে জিনিস প্রয়োজন। এক নম্বর হলো, বড়সড় কোনও অসুখ বা অপারেশন। আপনার নিজের হলেই সবথেকে ভাল, নাহলে খুব কাছের কারো। ‘আর বলবেন না, অ্যাপোলো ডেন্টালে গেছিলাম তো রুট ক্যানাল করাতে। সব হল, ডাক্তারের চেম্বার থেকে বেরোতেই মাথাটা গেল ঘুরে। ও তো আবার ভীষণ নার্ভাস, জানেনই তো, তার ওপর গত বছরই বাই পাস হয়েছে...’ দেখবে সক্কলে হাঁ করে শুনছে। আরও কেউ কেউ ফিরিস্তি অবশ্যই দেবেন যে তাঁর বত্রিশটা দাঁতেই রুট ক্যানাল হয়েছে, বা বার চারেক বাইপাস। তবে খবর্দার তাঁদের জিগ্যেস করে বসবেন না যে তাঁরা আদৌ দাঁত মাজেন কি না, অথবা ঠিক কতগুলো হার্টের অধিকারী তিনি। জেনে রাখবেন, অসুস্থতাই আজকাল সুস্থতার পরিচয়। দ্বিতীয় হলো যোগাযোগ বা কন্ট্যাক্টস। সি এম-এর পিএ বা পি এম-এর সিএ হলেই ভালো, তা নাও যদি হয় বড় মেজ সেজ ন’ ফুল হাফ কোনো একটা মন্ত্রীর সাথে পরিচিতি দরকার। তাও যদি না হয় তাহলে যে কোনও একটা সেলিব্রিটির সাথে যোগাযোগ থাকতে হবে। আত্মীয় হতে পারলে তো কথাই নেই। যখন বাজার করতে যাবেন, আপনাকে দেখিয়ে লোকেরা বলাবলি করবে, ‘ওই দ্যাখ, ওনার ই সেজ ভায়রাভাই সেদিন দাদাগিরিতে এসেছিল!’ ব্যাস, সেই বছর আপনার পাড়ার কালীপুজোর আর উদ্বোধন আটকায় কে! তিন নম্বরটা অবশ্য একটু গোলমেলে। একটা স্ক্যান্ডাল চাই। বেশ রগরগে হবে, অথচ ছিঁচকেমি থাকবে না। মানে চিট ফাণ্ডের টাকা ঝাড়া চলবে না, কিন্তু একটা ডিভোর্স বা ইলোপ কেস, নিদেন পক্ষে লিভ টুগেদার যেন থাকে। ব্যাস, দেখবেন আপনার দাম বাজারে আলুর মতো চড়ছে! আর কি চাই! মশলা তো জেনেই গেলেন, বানিয়ে ফেলুন মুখরোচক ঝালমুড়ি! জাতে তো উঠে গেলেন দাদা, এবার এই ভাইটাকে যদি একটু দ্যাখেন...!
পড়াশোনায় ডিগ্রী, ভাল চাকরি, অফিস অথবা শ্বশুরবাড়ীর পয়সায় দু’চারবার বিদেশভ্রমণ, এইসব তো আজকাল ঘরে ঘরে। এতে আর আজকাল জাতে ওঠা যায় না। বড় মুখ করে কারোকে বলতে যান ‘এই আমার পিএইচ ডি টা শেষ হলো’ কিংবা ‘মাইক্রোসফট এ চাকরি পেয়েছি’, জবাবে নির্ঘাত শুনতে হবে, ‘ও তাই নাকি? হ্যাঁ হ্যাঁ, আমার বড় শালার মেজ ভাগ্নেও তো...’ বক্তার মুখ বাঁকিয়ে মন্তব্যের থেকেই জেনে যাবেন যে আপনার সাফল্যের দাম খুব বেশী হলে একটা একচোখ ওয়ালা কড়ি। জাতে ওঠার জন্য তিনটে জিনিস প্রয়োজন। এক নম্বর হলো, বড়সড় কোনও অসুখ বা অপারেশন। আপনার নিজের হলেই সবথেকে ভাল, নাহলে খুব কাছের কারো। ‘আর বলবেন না, অ্যাপোলো ডেন্টালে গেছিলাম তো রুট ক্যানাল করাতে। সব হল, ডাক্তারের চেম্বার থেকে বেরোতেই মাথাটা গেল ঘুরে। ও তো আবার ভীষণ নার্ভাস, জানেনই তো, তার ওপর গত বছরই বাই পাস হয়েছে...’ দেখবে সক্কলে হাঁ করে শুনছে। আরও কেউ কেউ ফিরিস্তি অবশ্যই দেবেন যে তাঁর বত্রিশটা দাঁতেই রুট ক্যানাল হয়েছে, বা বার চারেক বাইপাস। তবে খবর্দার তাঁদের জিগ্যেস করে বসবেন না যে তাঁরা আদৌ দাঁত মাজেন কি না, অথবা ঠিক কতগুলো হার্টের অধিকারী তিনি। জেনে রাখবেন, অসুস্থতাই আজকাল সুস্থতার পরিচয়। দ্বিতীয় হলো যোগাযোগ বা কন্ট্যাক্টস। সি এম-এর পিএ বা পি এম-এর সিএ হলেই ভালো, তা নাও যদি হয় বড় মেজ সেজ ন’ ফুল হাফ কোনো একটা মন্ত্রীর সাথে পরিচিতি দরকার। তাও যদি না হয় তাহলে যে কোনও একটা সেলিব্রিটির সাথে যোগাযোগ থাকতে হবে। আত্মীয় হতে পারলে তো কথাই নেই। যখন বাজার করতে যাবেন, আপনাকে দেখিয়ে লোকেরা বলাবলি করবে, ‘ওই দ্যাখ, ওনার ই সেজ ভায়রাভাই সেদিন দাদাগিরিতে এসেছিল!’ ব্যাস, সেই বছর আপনার পাড়ার কালীপুজোর আর উদ্বোধন আটকায় কে! তিন নম্বরটা অবশ্য একটু গোলমেলে। একটা স্ক্যান্ডাল চাই। বেশ রগরগে হবে, অথচ ছিঁচকেমি থাকবে না। মানে চিট ফাণ্ডের টাকা ঝাড়া চলবে না, কিন্তু একটা ডিভোর্স বা ইলোপ কেস, নিদেন পক্ষে লিভ টুগেদার যেন থাকে। ব্যাস, দেখবেন আপনার দাম বাজারে আলুর মতো চড়ছে! আর কি চাই! মশলা তো জেনেই গেলেন, বানিয়ে ফেলুন মুখরোচক ঝালমুড়ি! জাতে তো উঠে গেলেন দাদা, এবার এই ভাইটাকে যদি একটু দ্যাখেন...!
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন