সম্পাদকীয়
সম্পাদকীয়র শুরুতেই
আমাদের পাঠকদের কাছে ক্ষমা চেয়ে নিচ্ছি অনিচ্ছাকৃত দেরী হবার জন্য।এপ্রিলের এখন মাঝামাঝি।
ভোট পুজোর ঢাকে কাঠি পরে গেছে, গরমও তার স্বমহিমায় হাজির। জননেতারা প্রত্যকেই স্ব
স্ব মহিমায় ভোট যুদ্ধে অবতীর্ণ হয়ে আপন আপন অস্ত্রে শান দিচ্ছেন। দাদা বলছেন দিদি
চোর দিদি বলছেন দাদারা ডাকাত। বাক্যবাণে এক একজন মহাভারতের অর্জুন কর্ণকেও লজ্জায়
ফেলে দিতে পারেন। বাঙালীর দোল, পয়লা বৈশাখ পেরিয়ে এখন ভোট পরবই সবচেয়ে সামনে। মাঝে
সেই আগষ্টে বাঙালীর চিরকালের সেলেবল রবি ঠাকুর পরব। তাই এই এপ্রিল থেকে আগষ্টের
প্রথম সপ্তাহের মধ্যেকার সময়ে ভোট উৎসবই সবচেয়ে বড় এবং প্রতিক্ষীত।
এবারের ষোড়শ লোকসভা
নির্বাচন স্বাধীনোত্তর ভারতের সবচেয়ে দীর্ঘ নির্বাচন। শুধু দীর্ঘতম হিসাবেই নয়
এবারের নির্বাচন অন্যদিক থেকেও তাৎপর্যপূর্ণ। দীর্ঘদিনপর দিল্লীর সিংহাসনও
পরিবর্তনের মুখে। এই মুহুর্তে চলছে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলগুলির প্রতিশ্রুতি পাল্টা
প্রতিশ্রুতির পালা। চলছে কাদা ছোঁড়াছুড়ি। কিন্তু কোথাও ভারতবর্ষের
বর্তমান হাল ফেরানোর প্রতিশ্রুতি নেই। মনে পড়ে আমাদের ছেলেবেলার কথা সেই যখন সবে
আমাদের দাড়িগোঁফের রেখা দেখা দিয়েছে, আমরাও বড়োদের মত পাড়ার ক্লাবে বা রকে রাজনীতি
নিয়ে আলোচনা করছি তখন একটা কথা আমাদের মধ্যে খুব জনপ্রিয় হয়েছিল “লঙ্কায় জেই যায়
সেই রাবন”। অর্থাৎ ভোটের পর ক্ষমতায় এসে সেই একই পুনরাবৃত্তি, সেই চুরি (পুকুর
চুরি!), সেই বড়ো বড়ো স্ক্যাম, হাওলা, গাওলা, বোফর্স, দাঙ্গা। এইখানে কৈশোরে কবি
বীরেন্দ্র চট্টোপাধ্যায় এর ‘রাজা আসে যায়’ কবিতাটি প্রাসঙ্গিক।
“রাজা আসে যায় রাজা বদলায়
লাল জামা গায়ে নীল জামা গায়ে
এই রাজা আসে ওই রাজা যায়
জামা কাপড়ের রঙ বদলায়
দিন বদলায় না।
গোটা পৃথিবীটাকে গিলে খেতে চায়
সেই যে ন্যাংটো ছেলেটা
কুকুরের সাথে ভাত নিয়ে তার লড়াই
চলছে চলবেই
পেটের ভিতর কবে যে আগুন
জ্বলছে এবং জ্বলবে।
রাজা আসে যায় আসে আর যায়
শুধু পোশাকের রঙ বদলায়
শুধু মুখোশের ঢঙ বদলায়
পাগলা মেহের আলি
দুই হাতে দিয়ে তালি
এই রাস্তায় ওই রাস্তায়
এই নাচে ওই গান গায়
সব ঝুট হ্যায়। সব ঝুট হ্যায়। সব ঝুট হ্যায়
জননী জন্মভূমি।
সব দেখে সব শুনেও অন্ধ তুমি
সব জেনে সব বুঝেও বধির তুমি”।।
কিন্তু সত্যি কথা বলতে কি
এই ভয়ঙ্কর সময়ের মধ্যে দাঁড়িয়ে পাগল মেহের আলি রাও যেনো কোথায় হারিয়ে গেছে। যারা
শত পাগলামির মধ্যেও সার কথাটা বলে যাবে “রাজা তোর কাপড় কোথায়?” বরং আজ মেহের
আলিরাও আমাদের মত অন্ধ, বধির। তারাও মেনে নিয়েছে আমাদেরই মত। দু’একটা বিস্ফোরণ যে
মাঝে মাঝে ঘটেনা তা নয়, কিন্তু সেগুলো নেহাতই বুড়ীমার চকলেট বোমা, গ্রেনেড বা
নিদেনপক্ষে পেটো বোমা হবার যোগ্যতা তাদের নেই। তারা সব নিরবতা পালনের সারিতে
মোমবাতি হাতে। তাতে আগুন আছে বটে কিন্তু আঁচ নেই।।
ক্ষেপচুরিয়াসের পক্ষে ~ শুভেন্দু দেবনাথ
অনেকটা পরিসর জুড়ে বিচরণ করেছেন।
উত্তরমুছুনআন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন।
এগিয়ে চলুক ক্ষেপচুরিয়ানস।