হরিণ ও রঙ্গনগাছ
অনুপ কুমার দত্ত
১।
নতুন গাছটায় ফুলফোটার খবর জানালে তুমি,
...
রঙ্গনফুল।
এত সামান্য বর্ষায় যে গাছ ভরে উঠতে পারে
তার নাম মানুষ
তুমি কি মানুষের কথাই বলছ?
রৌদ্রে, অল্প রৌদ্রেও ঐ দেখো
তেপান্তরের মতো হাঁ মেলে
সে জল চায়
তোমার অঞ্জলিজল
২।
তোমাদের লোহার গেটটা দুহাট করে খোলা।
মরচে ধরেছে
জামগাছটায় কি আবার মৌচাক হল?
ডানার মৃদু সোনালী শব্দে ভরে আছে
দুপুরবাগান
তুমি নেই। কেউই বুঝি নেই বাড়িটায়
একটা ছোট্ট নীলা রুমাল
ভবঘুরের মতো তাড়াখাওয়া
এদিক ওদিক হাওয়ায় উড়ছে
যেন রেলস্টেশনে ঘুম পেয়েছে ওর!
ওকে একটু শুতে দাও দুপুরের বাড়ি
জানো, আমি একা দাঁড়িয়ে দেখি
কেউ না থাকলে তোমাদের বাড়িখানা
ঠিক যেন এক রেলজাংশন
দূরপাল্লার বাঁশি বাজে
ভবঘুরের নিস্পৃহ চোখ চেয়ে দেখে
ফুল্লকুসুমিত পরিবার ক্রমশ দূরে যায়
৩।
পায়ে পায়ে ওকে দেখে এলাম
সারাগায়ে গোলাপি পুতুলের মতো ফুল
রঙ্গনগাছ দুপুরের স্তব্ধতায়
সামান্য কথা কয়
এক ফালি রোদ হরিণের মতো
নীচে শুয়ে ফুলের দিকে ফিরে
শুনছে, একদিন বর্ষা হয়েছিল
আমার শরীরে আজকাল টের পাই
হরিণেরক্তের ভীরু স্রোত
বয়ে চলেছে
নতুন অববাহিকা রচনায়
চলেছে শতদ্রুধারা
আবার জল হবে কবে?
গাছের আদর, তুমি জানো? জানো,
বর্ষারা?
৪।
ছোটানাগপুরের দেশে যে ছেলে
ট্রেনের জানলায় জানলায়
জল নিয়ে ঘোরে
মাটির ভাঁড়ের মতো গড়ায়
দিনাবসান হাওয়ায়
গুঁড়ো হয়ে মিশে যায় যার নাম দেশ
তার জন্মদিনের মতো আনন্দ আজ
স্পর্শকাতরতা চারদিক, চারদিকে
আর, আমাদের রঙ্গনগাছে কি প্রথম
মধুময় ফুল
আজ চলো, নতুন করে হাওয়াপাঠ করি
নদীজলপাঠ
চলো যাই নতুন নতুন সব ভুল!
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন