গুচ্ছ কবিতা - রাজেশ চন্দ্র দেবনাথ 
  
নীরবতা 
সমস্ত রামধনু নিংড়ে 
দলছুট মাছি ভুলে যায় 
                   চওড়া ভয় । 
  
নদীতে আলোর কোলাজ 
ঘ্রান বাঁধে প্রতিটি ছিপ । 
  
ঘুরে ঘুরে ফেরি করে নীরবতা 
ছায়া ছুঁয়ে ঘুমিয়ে আছে মৌচুষকি । 
  
বিষুববেদনা যেন নিয়ম ভেঙ্গে যেন ভুতুরে ধোঁয়া 
ঝাঁকড়া পাতাগুলো এক একটি ভিসুভিয়াস ।   
  
শীতরেখা 
সবটুকু লাল সন্মান নিয়ে 
স্থীর বাঁশির ফৌত মেজাজ 
রক্তক্ষরণের অনুবাদ শেষে 
বাউন্ডুলে বালিকার সবকটি পাখি 
নিমপাতায় গুটিয়ে রাখে শীতরেখা 
  
শিকারির নক্সায় নেই বৈরাগ্য 
উগ্র চাণক্য প্রেম বাঁধছে ধ্রুবতারায় । 
গন্ধপাঠ 
ধীরে ধীরে জোড় কলায় ভুরু ঘষে 
ফাগুয়া বাতাসে প্রকাশিত 
ভৌত রাউন্ডের গন্ধপাঠ 
  
মেঘের ঠোঁটে কামড়ে একরোখা চিল 
জলপাহাড়ে বৈঠা টেনে 
পুষছে মাছের ফ্যান-চাটা ধ্যান 
ত্রিমুখী শূন্যতায় হুলস্থূল 
প্রতিটি নিঃশ্বাসের ফালিতে চলছে বউকাঁটকি । 
ঢেউ 
  
পাললিক সভ্যতায় সম্ভবনাময় অসুখগুলো জিইয়ে রেখে কেন্দ্রবিন্দু হই লোকজ স্বার্থে । প্রতিদিন মখমল জিহ্বায় খন্ড খন্ড জ্যোৎস্নায় পুড়ছে এক ঝাঁক কান্না । ভাঙ্গতে থাকে হাসির উৎফুল্ল ঢেউ । বারোয়ারি সংস্পর্শে হেঁটে চলি জং ধরা প্রলয়ে । বিছানা চুলকাতে গিয়ে ক্রিয়া – বিক্রিয়ায় ভাগাভাগি তিন চাকার মগজ । নিয়মিত তালুতে পত্নক্ষত চেটে ঘুমিয়ে যাই ... 
হিংস্রতা 
নিবু নিবু শহরের গুপ্ত স্বভাব 
হাড়  ছিঁড়ে সরে যাচ্ছে 
দৈর্ঘ্য – প্রস্থের গুচ্ছ গুচ্ছ হিংস্রতা । 
  
ভেষজ বাতাসে পেঁচিয়ে 
বহুজাতিক সংশয় 
মানবী জানালায় মেপে নেয় লৌকিক বসন্ত 
  
স্বাচ্ছন্দ্যের বৈজ্ঞানিক প্রথায় 
চুরি হচ্ছে সুখের ইমেজ ।   
  
  
 বোতাম 
  
  
দূষিত মাস্তুলে পরিত্যক্ত আলপনায় 
ভোরের ইভ খুঁজে নেয় 
পাঁচমিশেলি ঢেউ 
  
খসখসে চামড়ায় নগদ শিল্পে 
মাসের প্রতিটি বোতাম ছিঁড়ে 
লটকে আছি নিধুবনে । 
চিহ্ন 
    
প্রদর্শনের স্টপেজ ছেড়ে 
গিলে নিচ্ছে বুকের প্রপঞ্চ । 
বিদগ্ধ স্রোতে ছবির পরিনতি 
যেন অনিবার্য ঘুড়ির চিহ্ন । 
  
নিজস্ব বিস্তৃতি সাঁকোর ওপাড়ে 
বীজগণিতের ভুলে ক্লান্তিহীন সাঁই । 
একুশ 
    
সরে যাচ্ছে শামলা বেলা 
গাছের ডগায় বুলেটপ্রুফ আলো 
বর্ণমালার দীর্ঘ বারান্দায় 
সম্পর্কের একুশ এলো । 
  
শাসন ছেড়ে রাত্রি নামে 
ঘুমপ্রচ্ছদের আয়নায় 
শব্দ ফোটে আলপথে 
শ্যামার নরম ডানায় ।  
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন