২৬ / ০২ / ২০১২
অনেক, অনেকদিন পর আয়নার সামনে দাঁড়ালাম,
আর,
অনেক, অনেকদিন পর দেখতে পেলাম
এক আশ্চর্য চশমাধারী গর্দভকে।
অতিপরিচিত এক গর্দভ,
কোনো মানবীর গর্ভ ভ্রমবশত:
আশ্রয় দিয়েছিল তাকে,
কিছুদিনের জন্য।
অতঃপর বিতাড়িত,
তথাপি অত্যন্ত হতাশাজনকভাবে নিশ্চেষ্ট,
আমার অনিকেত বান্ধব, বাল্যসখা।
"কেমন আছ?" প্রশ্ন করলাম।
হাসল বোধহয়,
দেখতে লাগল ঠিক পরিত্যক্ত কবরখানার মত।
ডানহাতটা তুললো একটু,
যেন আমাকেই অভাগা দিচ্ছে আশ্বাস।
খেয়াল করলাম,
বেখেয়ালে উত্তর দিচ্ছে আমার জন্মসূত্রে পাওয়া বামহাত।
"এসব কি হচ্ছে?" রাগলাম,
কারণ, পরিচালিত হতে না চাওয়াটা
মানবপ্রজাতির গর্বিত বৈশিষ্ট্য।
"এই, দেখছি একটু," বোকার মত কাশল আবার,
হাসল,
ওভারহেড তারে ঝুলতে থাকা
ছেঁড়া কাপড়।
( "বহু ধ্বংসস্তূপে ঘুরেছি আমি,
চেহারাটাও হয়েছে তাই
ইট-কাঠ-বালির মত।" )
"আসতে পারো," দেখালাম আমি
কলমদানিটার দিকে।
মনে হল যেন কাঙালকে দেখাচ্ছি
শাকের ক্ষেত।
"সত্যি?" একচিলতে হাসি এল,
(ডিম ফুটে ছানা বেরনোর আগে, পার্থ,
যেভাবে তিরতির করে কাঁপে ডিমের খোলস!)
আর, আমি,
একবিংশ শতাব্দীর ব্যর্থতম ব্যক্তি,
একজন ডাইনোসর-যুগের
প্রায়-মৃত আয়না আমাকে বিশ্বরূপ দর্শন করালো।
সরস্বতী নদীর জীবনী বয়ে গেল
আমাজনের হিংস্র শ্বাপদের দাঁতের গোড়া দিয়ে।
আধো-অন্ধকারে কত যুবক কথা বলে চলে গেল,
কত জনপদে।
তাদের ভাষারা শুধু বসে ছেঁড়া-ছেঁড়া সুতো বুনল
চায়ের টেবিলে।
তারপর এল যুদ্ধ।
রক্তের শ্যাওলায় পা হড়কাতে গিয়ে
ভাগ্যিস,
ধরে ফেললাম
কূপমন্ডূকতার দেওয়াল।
নরম সবুজ ক্যাসাবিয়াঙ্কারা সব মরে গেলে
সেই আগুন দিয়ে ধীরে-সুস্থে ধরালাম একটা সিগারেট।
তারপর আয়নার দিকে চোখ তুলে বললাম,
"কলমদানিটা ফাঁকাই পড়ে আছে।
চলে এসো,
ভাড়া লাগবে না।"
0 comments:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন