শনিবার, ৭ ডিসেম্বর, ২০১৩

ইংরাজী কবিতা - ঐশী ব্যানার্জী

English Poetry
OISHEE BANERJEE




Oishee Banerjee was born on 14 September, 2000. These poems are her first published ones. She is an avid guitarist. Her passion runs deep in the form of wildlife conservation and photography. Presently she lives at Tezpur, Assam.




SAD TRUTH

Everyone has to die one day
Either early or late
No one can stop time
Some spend it happily
Some turn to crimes
God is just a make believe
For people who are afraid of death
People don’t work hard and say it’s fate
So start working before it’s too late
Why scared of the dark
Why not yourself
Life is a journey to a giant shelf
With steps unsteady and very small
Struggling and fighting you have to grow tall
Overcoming fears
Some come to tears
But with determination strong
You can never go wrong



CRIES OF A SOUL


What does the world know about my sorrows?
Can people understand?
There is no need to express...
When time flows like sand!

Oh! Those fake smiles
I am really tired!
My lies are not lies
They are hurting words, at random fired

No, I am not always mean
But the situation has made me
Cries, screams, fights and struggles
Is that all you want to see?

There is a good side
A side tender and bright
But there is no way to express it
Because, for the world I am never right!

In the ever so lonely world
Sometimes I really want to cry
But there is a strange fear
A fear that makes my throat dry!

Sometimes I shout
Even at my loved ones
They feel bad and neglected
That moment I realize the sin I have done!

I can’t see the light
The bright light of hope
But I have to move on

With the world I have to cope.

সম্পাদকীয় - ৩য় বর্ষ ৭ম সংখ্যা

সম্পাদকীয়


নতুন করে প্রেমের বিধি জানবার সময় এসেছে।


সম্পাদক খানিকটা দেরি করে ফেলেছেন পাঠকবন্ধুদের জন্য তাঁর এই লিখিত বক্তব্য দফতরে জমা দিতে। পক্ষকাল সময় পার করে দৈনিক পত্রিকার ভাষায় ডেটলাইন মিস করে ফেলেছেন।

সেই অধম সম্পাদকটি এবারের সংখ্যায় আমি জুঁই। কয়েকটা দিন আমি হারিয়ে গিয়েছিলাম। গন্তব্য জানা ছিল না। কোথায় বিশ্বাস হারিয়ে যাচ্ছিলাম। তাতে কি? ফেসবুকে আমাদের কবিবন্ধুদের দিনের পর দিন আমি বিমর্ষ হতে দেখেছি। ওঁদের স্টেটাস আপডেট দেখে মনে হয়েছে কোনও ঠেকে যেন জমে যাচ্ছে আখড়া। বুঝতে পারছি কবির মন অন্তরঙ্গতায়। শীতের শুরু এখানে সেখানে জলসাঘর। আমার এক ডানাওয়ালা শিশু কবিকে দেখছি বাস্তবটাকে ক্রমাগত ফুটিয়ে তুলে লিখে যাচ্ছে। তাই মন ভালো। বহুদিন বাদে আমি কবির লেখা শুনছি। আমার কাগজে, মানে আমার অফিসে একটু রাতের বেলায় কবি অভিজিৎ রায়ের সঙ্গে শীতকালীন কবিতা আড্ডা বসে। কবি কিশোর এবং অভিজিৎ এরা জানে যাপনের কবিতা কেমন করে শীতকালীন সিরিজে খাতা বদ্ধ হয়। মানুষের মধ্যে কবি জাতটাকে আমি আলাদা করেই চিনেছি। কবি বলাটা কেমন উচিত হল তা এখনই আমার জানা নেই।

পথেঘাটে মানুষকে দেখি, অনেক মানুষকে দেখলে মনে হয় তাঁর উপলব্ধিগুলোকে ছুঁয়ে ফেলি। এগিয়ে গিয়ে প্রশ্ন করি আপনি কি কবিতা লেখেন? আমাদের কবিতার পাগলা গারদের জন্য আপনার অমূল্য লেখাটি যদি আমাকে দেন।

অন্তত তেমনটাই নয় যে তাঁকে কবিতা লিখতেই হবে! কবি শুধুমাত্র কবিতাই লেখেন না। অন্তত এমনটা নয় যে তাঁকে কবিতা লিখতেই হবে। তবু কবিদের জাত ধরা পড়ে গেলে আমি বলি, পাগলে পাগল চিনে ফেলে।

মানুষ অবুঝ। তরঙ্গ না মিলিলে আমরা সহজিয়া প্রেম করতে পারি না। এভাবেই ভাবি আর সেই দিনটার স্বপ্ন দেখি। যে দিনে, কবিতার যাপন হবে সহজিয়া চুম্বনের মতন। শুদ্ধতার শ্বেতবর্ণ প্রেম সঙ্গে করে, কবিদের দল মধ্যরাতে পার হবে অশ্লীল শহর, মনের ভেতর অশান্ত গ্রাম, মোরাম রাস্তা, বুকের ওপর জোয়ারের ফুলে ওঠা এবং ভাটার টানে পুড়ে ছাই নদী। এসবই পার হবে কবিদের কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে। শুদ্ধপ্রেমের রঙ বদল হবে স্বপ্নে। শুরু হবে এশহরের সরল দাম্পত্য জীবন। বিভোর হয়ে দেখছিলাম। ভালো লাগছিল খুব। কলমে সেই দৃশ্য আঁকতে চেষ্টা করে যাবে সারাজীবন। তবুও শিল্পীর হৃদয় গাথা কোনওকালে সম্পূণ হবে না।

কলকাতায় এখনও শীত পড়েনি। ডিসেম্বরে আমাদের পা। কুয়াশা জীবন শুরু হল। আমাদের শহরতলির শীত আমাকে পুরোনো ঘরবাড়ি, গাছ, পাগল বুড়িমা, একলা পচাপানির ডোবা আর পুরোনো প্রেম মনে করায়। কুচি কুচি কামরাঙা বনে সবুজ তারার মত কাটা মেঘ ভাসে। সেই অম্ল স্বাদের কলম ধরেছি হাতে। এতো বহুকালের পুরোনো কলম।

স্বেচ্ছামৃত্যুর পরও বাকি ছিল কিছু তাই এ্ই পুরোনো কলম হাতে নিয়েছি। জয়দীপ, সৌম্য, ঋপণ, আর্ষ, শ্রীজিৎ, রাজদীপ, জুবিন, কঙ্ক, অরিত্র, প্রদ্যোৎ, সৈকত, সুমিত, সোমনাথ, শকুন্তলা, চান্দ্রেয়ী, এষা, সংঘমিত্রা, অভিজিৎ, শ্রেয়সী, রঙ্গীত, দিঘী আরও কত শুন্য দশক কবির মুখ মনে পড়ছে। শীতে্র উৎসবগুলোতে ফি বছরের বাউল আড্ডায় বার বার পরিণত হবে নতুন শুন্য দশক। বাদ পড়েছে অনেক নাম। তাতে কিছু এসে যায় না।

আমরা অনেকেই ক্ষুধার্ত হতে চেয়েছিলাম, কেড়ে খেতে চেয়েছিলাম খাবার, তারুণ্যের রক্ত আমাদের ছুটিয়েছিল। পরখ করে দেখেছিলাম আদৌ বেস্টসেলর, কবি না শব্দশিল্পী। নাকি শুধুই, গোপনে গোপনে চলে লেনদেন বিকিকিনি যত মরণাস্ত্র। কবিতা গানের যাপনের অন্যতম মোহিনের গান মনে পড়ল। কবির হাতের মরনাস্ত্র দেখেছিলাম। ব্যস্ত জীবনে ডানাওয়ালা উড়ন্ত শিশুকে দেখলে বিশ্বাসঘাতককে আর মনে পড়ে না। কলহের সংস্কৃতি আমাদের গরম রক্তকে শান্ত করে নি। মারনাস্ত্র তুলে দিয়েছে আমাদের হাতে। তা দিয়ে কত রক্তক্ষরণের দিন পার করেছি। দীর্ঘ যাপনের পর কবি হৃদয়ে মৃত্যু চেতনা প্রবেশ করেছে যখন তখন আমরাই কি টের পাইনি যে, কবির হৃদয়ে আঘাত হেনে ইচ্ছামৃত্যু ডেকে এনেছি। অথচ শান্ত আন্দোলনে আমরাই পা মিলিয়েছিলাম। অন্ধের মতন ছুটেও দেখেছি অনেকেই। কবির চোখ পুরে গেলেও দৃষ্টি নিক্ষেপ করে থাকে।

নতুন করে প্রেমের বিধি জানবার সময় এসেছে।

দশক দশক দশক পেরিয়ে যাবে। সকলেই নিস্তব্ধ রাতের ভেতর পরিণত হব। কিন্তু মানুষকে না বুঝে খোলসে জড়িয়ে থেকে এই সুরা মগ হিসেবে পান করলেও কোনও কালেও বুঝব না নতুন প্রেমের বিধি। আখড়ায় আমরা খুচরো হিসেব করে যাব। টুংটাং পয়সার শব্দে ছন্দ ভঙ্গ হবে।

আমার দীর্ঘদিনের কবিতাসঙ্গী জুবিন লিখেছিল,

আমরা কেউ কারোর পিশাচকে বুঝতে
সেই ফাঁকে আমাদের পিক্‌ খেয়ে গেছে অজানা পিশাচ
আমি তোমাকে শাদা নারী ভেবেছি
তুমি আমাকে মিছড়ির ঘোড়া।
যদিও পড়ে জুবিন কবিতাটা অনেক বড় করে এবং নাম দেয় দেবলীনার উজ্জ্বল চাকা। লেখাটা মেন পড়ছে। আমরা কেউ কারোর পিশাচকে বুঝতে পারিনি। বুঝতে পারছি কবিযাপনের গুরুত্ব।

কবি যাযাবর হলে আয়ু বাড়ে শুধু কবিতার।

ক্ষেপচুরিয়াসের দফতরে জমা পড়া বাছাই লেখা এবং নিয়মিত লেখা গুলো ছাড়াও বেশকিছু কবিকে অনুরোধ করেছিলাম এই সংখ্যাটিতে লেখার জন্য। তাঁদের অমূল্য লেখাটি পেয়ে খুব ভালো লেগেছ। সকলে ভালো থাকুন। শীতের জলসায় মেতে উঠুন প্রেমে।



কার্যনির্বাহী সপাদনায়
জুঁই সরকার

অনুবাদ ছোটগল্প – নন্দিতা ভট্টাচার্য

লজ্জা


মূল অসমীয়া গল্প - সঞ্জীব পল ডেকা
বাংলা রূপান্তর - নন্দিতা ভট্টাচার্য



( সঞ্জীব পল ডেকার জন্ম ১৯৮৬ সালে দরং জেলার দীঘিরপারে । কটন কলেজ থেকে স্নাতক । বর্তমানে আসামের বিখ্যাত মাসিক পত্রিকা ‘সাতসরী ‘র উপ-সম্পাদক । ২০০৫ এ ‘প্রান্তিক’ এ প্রকাশিত ‘সময় ‘ গল্পে আত্মপ্রকাশ । অগ্রণী প্রকাশন প্রতিষ্ঠান ‘পেঙ্গুইন‘ দ্বারা সঙ্কলিত ও প্রকাশিত ভারতের নতুন প্রজন্মের লেখক সঙ্কলন ‘ First Proof ‘ (2008) এ সঞ্জীবের গল্প স্থান পেয়েছে । ইংরেজি ছাড়াও মারাঠি , কন্নড় ও বাংলা ভাষায় অনুদিত হয়েছে । )


নারায়ণ কাকতির গলা –তালু সব শুকিয়ে আসছিল । তার পুলিসী মেজাজটা বার বার বেরিয়ে পড়তে চাইছে । তবুও নিজেকে নিয়ন্ত্রন করলেন । রাগ ই বা কার ওপরে দেখাবেন । এত ছোট জায়গাতেও যে এমন ঘটনা ঘটতে পারে তা কে জানত । গ্রামের বেশীরভাগ মানুষই তো লেখা পড়া জানে না । একজন কেরানী ও একজন স্কুলমাস্টার ছাড়া সবার ই জীবিকা দিন-হাজিরা । অবশ্য তিনজন কাঠ মিস্ত্রী , দুজন রিক্সা চালক , ঠেলাওয়ালা তো রয়েছে ই । মানে এই ছোট্ট জায়গাটার প্রায় সকলেই সকাল হতেই বেরিয়ে পড়ে । সন্ধ্যে বেলা আবার যার যার বাড়ীতে ফিরেও আসে ।

সুদীর্ঘ কর্মজীবনের অভিজ্ঞতায় কাকতির এবারের অভিজ্ঞতা অভিনব । সব দিক থেকে পিছিয়ে পড়া এরকম একটি গ্রাম যে এদেশে থাকতে পারে সেটা কাকতির কল্পনাতেও ছিল না । তার ওপর ঘটনাটি যথেষ্ট উত্তেজনাপুর্ন ।
দোষী ধরা পড়ুক না পড়ুক , এ থেকে যে কিছু লাভ হবে না এ কথাই তিনি ইতিমধ্যে অনুমান করতে পেরেছেন । সে জন্যে ঘটনাটা প্রায় ভুলেই গিয়েছিলেন । কিন্তু পরশু এস পি সাহেবের কাছ থেকে আদেশ পেয়ে আবার এই গাঁয়ে তাকে উপস্থিত হতে হয়েছে ।

মাঠের একধারে থাকা মহিরামের বাড়ি থেকে ফিরে কাকতির দলটি প্রকাণ্ড আমগাছটার তলায় এসে জড় হল । প্রত্যেকেই মুছে নিল কপালে ও নাকে জমে ওঠা ঘাম । তারপর সেপাই বিমল কাকতিকে উদ্দেশ্য করে আমগাছের ঝুলে থাকা ডালটাকে দেখে মন্তব্য করল –এই গাছটাই যত নষ্টের গোঁড়া । এই গাছটা না থাকলে ঘটনাটাই ঘটত না , স্যার । কি বলেন স্যার ?

কথাটা বিমল ঠিকই বলেছে । পঞ্চায়েত কর্মীরা তাহলে কি আর ব্যানারটা মারতে পারত ? যে মানুষগুলোর ক খ জ্ঞান নেই , ওরা ব্যানারের ভাষা কি বুঝবে ? সরকারের সাফল্য , বছর পূর্ণ হওয়া ---এ গুলোর সঙ্গে ওদের সম্পর্কই বা কি ? ব্যানারের অর্থ বুঝতে না পারলে , কেউ কি ভাবতে পারবে এর থেকে কি উপকার হবে । এটা কি এত বড় কোন অপরাধ যে পুলিসকে অনুসন্ধান চালাতে হবে ? কাকতির এস পির এই আদিখ্যেতায় মাথা গরম হয়ে উঠল । এই নিচুতলার মানুষগুলো কোন অপরাধ করলেই ‘ প্রসাশন যন্ত্র ‘ যে শক্তিশালী সেটা দেখাতে চায় , এদিকে সারাদেশে রোজ কত কি ঘটে যাচ্ছে তার কোন মা বাপ নেই । মুল্যবান সম্পত্তি উধাও হচ্ছে । কোটি কোটি টাকার কেলেঙ্কারী ধরা পড়ছে । যোগ্য শিক্ষকদের বঞ্চিত করে অযোগ্য লোকদের পয়সার বিনিময়ে শিক্ষক পদ দেয়া হচ্ছে । কিন্তু অপরাধীর শাস্তি হচ্ছে কোথায়? তখন প্রসাশন যন্ত্র নাকে তেল দিয়ে ঘুমোয় ?

অবশ্য কাকতির অপরাধীকে খুঁজে বের করতে কোন আপত্তি নেই । কিন্তু আজ এস পি সাহেবের জোর তলব পেয়ে মনে কতগুলো প্রশ্নের উদয় হয়েছে । এস পি তাকে বলেছিল-- আপনি ঘটনাটাকে হাল্কা ভাবে নিয়েছেন মনে হয় । এই দরিদ্র অশিক্ষিত মানুষগুলোকে দেখে আপনার সহানুভূতি জাগা স্বাভাবিক । কিন্তু অপরাধী ওদের মধ্যে থাকাটাই তো স্বাভাবিক। দুই – তিন দিনের মধ্যে অপরাধী ধরতে না পারলে আমারও লজ্জা , আপনার ও লজ্জা । ওপর থেকেও বার বার ফোন আসছে ।

ঃ স্যার , কি ভাবছেন ? --- বিমলের ডাকে কাকতির সম্বিত ফিরে এল ।

ঃ দোষীকে আমাদের দু একদিনের মধ্যেই ধরতে হবে । আর এমন চুপ করে থাকতে পারব না বুঝেছ ।

কথাটা বলে কাকতি আমগাছের গুঁড়ির দিকে একদৃষ্টে তাকিয়ে রইল । ওখানে বিশ –পঁচিশ দিন আগে সরকার একটি ব্যানার মেরেছিল , ওদের সরকারে আসার চতুর্থ বছর পুর্তি উপলক্ষ্যে । তাতে ছিল বিগত চার বছরের সকারের সাফল্যের খতিয়ান । কিন্তু আশ্চর্য , দুদিন পর ওটাকে আর সেখানে দেখা গেল না , অন্তর্হিত হয়েছে হঠাৎ করেই । কেই বা প্রথমে কথাটা জানতে পারল ! যেই হোক আস্তে আস্তে কথাটা মুখ্যমন্ত্রীর কানে গিয়ে পৌঁছল । চারিদিকে হৈচৈ পড়ে গেল । এই এলাকার বিধায়ককে চেপে ধরলেন মুখ্যমন্ত্রী--- তোমার এলাকায় আমাকে এভাবে অপমান করার সাহস লোকে পায় কি করে? তারপর তিনি তড়িঘড়ি দোষীকে ধরার জন্যে এক নির্দেশ দিয়েছেন । ঘটনাটা ইতিমধ্যে খবরেরে কাগজে প্রকাশিত হয়েছে । প্রথম পৃষ্ঠাতে ছাপা হয়েছে ঃ সরকারী ব্যানার অন্তর্ধান । গ্রামের নিরক্ষর এলাকায় রাজনীতির খেলা । আসলে ঘটনাটা এতদূর পর্যন্ত গড়াত না । গায়ে গঞ্জের ছোটখাট ‘নেতা’দের জন্যেই এটা ঘটল । ওরা তো হুলুস্থুল লাগিয়ে দিয়েছে এই ঘটনায় বিরোধীদের হাত আছে বলে । ওপরমহলও তাই সন্দেহ করছে । এদিকে সামনে ইলেকশন ।

ঃ আমাদের এখানে দাঁড়িয়ে থেকে কোন লাভ নেই । বাকি ঘরগুলো দেখে আসি চল । --কাকতি একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে সেপাইদের দিকে তাকিয়ে বলল ।
কাকতির দলটি লক্ষ্মী মাস্টারের ঘরের দরজায় এসে উপস্থিত হল । মাস্টারের সঙ্গে কাকতির এতিমধ্যে পরিচয় ঘটেছে । মাস্টার তাকে জলচৌকি টা এগিয়ে দিলেন ।

ঃ তাহলে নিয়ম মাফিক কথাবার্তা গুলো শুরু করি আর কি । আমার কাজই এরকম , বুঝলেন । কোন চার্ম নেই --- নারায়ন কাকতি লক্ষ্মী মাস্টারের দিকে তাকিয়ে বললেন ।

বিমলরা বাড়ীর ভেতরে ঢুকে গেলেন । কাকতি বাইরে রইলেন । এই চাতালেই পরশু মিটিং করে মানুষকে বুঝিয়ে দেয়া হয়েছিল। লক্ষ্মী মাস্টার এই ব্যাপারে অনেক সহায়তা করেছিলেন । পুলিশ সভা করে কথাও দোষী ধরেছে বলে শোনা যায়নি । তবুও তিনি মানুষকে বোঝাবার চেষ্টা করেছিলেন ।

লক্ষ্মী মাস্টার মানুষজন ডেকে জড় করেছিলেন । গামছা পরে খালি গায়ে কিছু লোক এসেছিল , বুকে মেঠোনি ( মেখলা টা বুকে বাঁধা ) বেঁধে কিছু স্ত্রী লোক এসেছিল । এমনকি ধুলোমাখা আদুড় গায়ে বাচ্চা বাচ্চা ছেলে- মেয়েরা ভিড় করেছিল লক্ষ্মী মাষ্টারের বারান্দায় । সবার চোখে কাকতি দেখেছিল এক ভয়ার্ত দৃষ্টি ।

কাকতি বলেছিল – আপনাদের এখানে কেন ডেকে আনা হয়েছে আপনারা নিশ্চয়ই বুঝতে পারছেন । আজ এক সপ্তাহ ধরে আপনাদের এখানে আসছি দেখতে পাচ্ছেন নিশ্চয়ই । ঘরে ঘরে অনুসন্ধান করছি দেখতে পাচ্ছেন । এর কারণ হচ্ছে ওই ব্যানার । ব্যানারে সকারের সাফল্যের কথা উল্লেখ করা ছিল । সেখানে আপনাদের মত গরিব গুর্বোদের সাহায্যের কথা লেখা ছিল । কিন্তু আশ্চর্য কথা আপনারা সেটা গাছ থেকে উধাও করে দিলেন । দেখুন আপনারা , ছোট আছেন ছোট হয়েই থাকুন । কারোর চক্রান্তের বলি হলে আপনাদের কঠোর শাস্তি দেয়া হবে । এখন সময় আছে বলুন কে এই কাজ করেছেন ।

কেউ কোন কথা বলছিল না । পুলিসের সামনে কেউ মুখ খুলতে সাহস করছিল না ।

নারায়ণ কাকতির অনুরোধে লক্ষী মাসটারও বলছিলেন ---আপনাদের সঙ্গে আমার রক্তের সম্পর্ক । এই পুলিস সাহেব কি বলছেন বুঝতে পারছেন তো ? আমরা হাজিরা খেটে খাওয়া মানুষ , সারা জীবন হাজিরা খেটেই খেতে হবে । যে দলই সরকার গঠন করুক না কেন , যে দলেরই পতন ঘটুক , আমাদের দুঃখ মোচন কেউ করতে পারবে না । কি লজ্জার কথা , আমাদের গাঁয়ের নাম পেপারে উঠেছে , সারা দেশের মানুষ চোরের গ্রাম বলে জেনেছে । গতিকে স্বীকার করুন ।

না , সভাতেও কাজ হল না । কাকতি ভেবেছিল এই সরল মানুষগুলো স্বীকার করবেই । সেদিন ভেবেছিলেন দেখতে সরল সোজা মানুষগুলোর মধ্যে কি কমপ্লেক্স রয়েছে ?

বিমলরা বেরিয়ে এল । নারায়ণ কাকতি উঠে বলল – আসছি , মিছিমিছি কষ্ট দিলাম আপনাকে ।

ঃ না না আপনারা কর্তব্য করেছেন মাত্র ।

কাকতিদের সাথে সাথে লক্ষ্মীমাস্টারও এল ।

এখানে একসঙ্গে তিন ঘর মানুষ আছেন । বিমলরা প্রথমে শেষের ঘরটায় গেল ।

ঘর দুটো । ছোট ছোট । নিচু নিচু । এই ঘর খড় দিয়ে ছাওয়া । দুটো ঘর খাগড়ার বেড়া । বৃষ্টিতে যে দুটো ঘরেই ভেসে যাবে সেটা সহজে অনুমেয় ।

নারায়ন কাকতি আগে কখনও এই বাড়ীটায় আসেননি , বিমলরা এসে ঘুরে গিয়েছিল । কাকতি লক্ষ্য করেছিল প্রথম তল্লাসিতে প্রত্যেকেই যেন ভয় ও লজ্জা পাচ্ছিল । কয়েকজন হেসে হেসে বলল , স্যার আমাদের কাপড় চোপড় এই যা পরনে দেখছেন সেটুকুই এর ওপরেই বাচ্চারা হাগা--মোতা করে । আপনাদের সরকারী লোকজন হয়ত এমন কাপড় চোপড় দেখেনি ।

কাকতি নিরাশ হয়েছিলেন । স্বামী – স্ত্রী – ছেলে – মেয়ে পাঁচটা মানুষ একই বিছানাতে শোয় । পরার কাপড়টুকু ছাড়া কেঁথা রয়েছে মাত্র ।

নারায়ণ কাকতি চাতালে দাঁড়িয়ে থাকতে থাকতেই হঠাৎ একজন স্ত্রীলোক তার পায়ে এসে পড়ল । কাঁদতে লাগল স্ত্রীলোকটি ।

ঃ দেখি, দেখি কি হয়েছে , কাঁদছেন কেন ?

স্ত্রীলোকটি উঠে দাঁড়াল ।

তারপর বলতে লাগল , --- স্যার আমাকে শাস্তি দেবেন না স্যার । এই ছোট ছেলেটার কথা ভাবুন স্যার । ওকে কে পালবে বলুন ? অন্তত যদি কোন কাজকর্ম করতে পারত তাও একটা কথা ছিল ।

ঃ কি হয়েছে বলছেন না কেন ? --- কাকতি ওর মখের দিকে তাকিয়ে রইলেন ।

ঃ স্যার আমিই এনেছিলাম ঐ কাপড়টা । কিন্তু এত যে হৈচৈ হবে আমি ভাবতে পারিনি --- ভয়ার্ত গলায় কাঁদতে লাগল আবার ।

ঃ এত দিন কেন চুপ করেছিলে ?—কাকতি প্রশ্ন করল ।

ঃ স্যার পরশু দিন আমি বাড়ি ছিলাম না । তার আগেও আপনাদের লোকজন এসেছিল । কিন্তু......

ঃ কোথায় লুকিয়ে রেখেছিলি এতদিন ? কেন চুরি করেছিলে ?

ঃ স্যার , এর বাবা গাছ কাটত কিন্তু গত কার্তিক মাসে গাছ থেকে পড়ে মারা গেল সে । তারপর আমিই হাজিরা কাজ করি , --- ধান ঝাড়ি , মাঠে কাজ করি , ...... বিধবা পেনশনের জন্যে কতদিন গেলাম । কিচ্ছু পাইনি । স্যার ।

ঃ বল কেন চুরি করেছ ?

ঃ স্যার , আমার পেটিকোটটা ছিঁড়ে গেছে । সেই বিয়েতে পাওয়া , আর কতদিন পরা যায় বলুন । স্যার আমি সেই কাপড়টা দিয়ে পেটিকোট বানিয়েছি । ঐ যে স্যার মেলা রয়েছে তারে । ...... আমাকে শাস্তি দেবেন না । ...... পরেছিলাম বলে আপনারা খুঁজে পান নি ।

কাকতি কি করবে , কি বলবে বুঝতে পারছিল না । বুকের কোন টা হুম হুম করে উঠল । যাইহোক না কেন ব্যানারটা এস পির অফিসে জমা দিতে হবে । কাকতির নির্দেশে বিমলরা পেটিকোটের সেলাই খুলে ফেলল । জলে ধোয়া কাচা হওয়া মার্কিন কাপড়ে অস্পষ্ট ভাবে সাম্যবাদী সরকারের বৃহৎ সাফল্য । দেশে দরিদ্র দূরীকরণ , নিরক্ষরতা , দূরীকরণ সবকিছুতেই অভূতপূর্ব সাফল্য । তার ওপর বিধবা পেনশন ,বার্দ্ধক্য ভাতা .........। তারপর তার আর কথা বলতে ইচ্ছা করল না ।

অসহায়ভাবে কাঁদতে থাকা মহিলার কাছে গিয়ে তিনি বললেন , শুনছেন আপনার ভয় পাওয়ার কিছু নেই । আমরা আপনাকে এ্যারেস্ট করব না । শুনুন , এই নিন পাঁচশ টাকা । পেটিকোট কিনে নিন । নোটে থাকা মহাত্মা গান্ধীর ছবি ও স্বাধীনতা বিপ্লবের ছবিটির দিকে তাকাতে কাকতির ইচ্ছে হল না । খণ্ডিত ব্যানারটি নিয়ে ওরা জীপে বসল ।

অনুবাদ কবিতা – ইন্দ্রাণী সরকার

অনুবাদ কবিতা
ইন্দ্রাণী সরকার



মূল কবিতা - ক্রিষ্টফার মার্লো

ভাবপ্রবণ মেষবালক তার প্রেমিকার প্রতি
ক্রিষ্টফার মার্লো
(অনুবাদ - ইন্দ্রাণী সরকার)


তুমি এসো আমার সাথে আমার ভালোবাসা হয়ে
আমরা দুজন সব আনন্দ উজাড় করে দেবো
ওই উপত্যকায়, গিরিখাদ, পাহাড় আর প্রান্তরে,
জঙ্গলে অথবা ওই সুউচ্চ পর্বতমালায় |
আর তখন আমরা পাথরের উপর বসে বসে
মেষবালকদের পশুদের খাওয়ানো দেখবো,
আর ওই সরু নদীর পাশে যেখানে সুরেলা পাখিরা
উড়ে এসে বসে তাদের সুমিষ্ট কলতান শুনবো |
আমি তোমার জন্য গোলাপফুলের শয্যা পেতে দেব
হাজার খানেক সুগন্ধি ফুলের তোড়া গেঁথে দেব,
ফুলের টুপি আর মার্টল পাতার বেশ বানিয়ে দেবো;
আমাদের সুন্দর ভেড়াগুলি থেকে সংগৃহীত
সুক্ষ্ন পশমের গাউন , শীতের জন্য সুদৃশ্য
সোনার ফিতায় বাঁধা চটি বানিয়ে দেব;
খড় আর লতাগুল্মের কোমরবন্ধনী যাতে
প্রবালের ফিতে আর এম্বার পিন থাকবে;
আর এইসব খুশিতে যদি তুমি খুশি হও
আমার সাথে এসো আমার ভালোবাসা হয়ে |
বসন্তের প্রত্যেকটি সকালে আমার বন্ধুরা
তোমায় নাচে গানে খুশিতে ভরাবে;
আর এইসব সব আনন্দে যদি তোমার মন খুশিতে
ভরে ওঠে তবে আমার ভালোবাসা হয়ে
আমার জীবনসঙ্গী হয়ে থাকো |

নীচে মূল কবিতাটি দেওয়া হল -

The Passionate Shepherd To His Love
Christopher Marlowe


Come live with me and be my love,
And we will all the pleasures prove
That valleys, groves, hills, and fields,
Woods, or steepy mountain yields.
And we will sit upon rocks,
Seeing the shepherds feed their flocks,
By shallow rivers to whose falls
Melodious birds sing madrigals.

And I will make thee beds of roses
And a thousand fragrant poises,
A cap of flowers, and a kirtle
Embroidered all with leaves of myrtle;
A gown made of the finest wool
Which from our pretty lambs we pull;
Fair lined slippers for the cold,
With buckles of the purest gold;
A belt of straw and ivy buds,
With coral clasps and amber studs;
And if these pleasures may thee move,
Come live with me, and be my love.
The shepherds's swains shall dance and sing
For thy delight each May morning:
If these delights thy mind may move,
Then live with me and be my love.

গুচ্ছ কবিতা - কৌশিক ভাদুড়ী

গুচ্ছ কবিতা
কৌশিক ভাদুড়ী



চা দোকান

চা দোকানের ছেলে-
চারটে গ্রাহক এক মিনিটে
হাঁকে বন---অ বলে
দেখেছি ওকে বনমালী ডেকে
ঠোঁটটি টিপে রেখে
ঝট করে হাফ গ্লাস চা রাখে
ওর মুখে যে খুশি
নামের সঙ্গে শব্দ ফাউ পেয়ে
তাতে গণিত কষি
সাদর নামক শব্দ বিষম
ধ্বনিত করে বেঁটে
উপেক্ষা ও অবজ্ঞা হয় কম
গাঁ গঞ্জের লোক
পেটের দায় তাড়ায় সন্তান
এড়ায় না চোখ
একা বলে জিভে মলম জ্ঞান।



যে শেষে

ঘাটের পাদদেশে
কড়াই যে ভাবে ডোবে
শুকনো দুব্বো মাজে
যে ভাব ঘসে ঘসে
পদতল হারাও সে ভাবে
মাটিতে লিলিমাসি
গন্ধ ডলো দুপুর তেঁতুল।
অদূরে ডাকে যে পাখি
শহর ডাহুক বলে
খুশি হবে যদি বলি প্লেন?
ডাকো ওকে ও পিওন
যে আদর সাইকেল
অপাতন বেয়ারিং ক্রিং
শেষ দেবো কুলুঙ্গি মাশুল।



ছোঁয়া


কী ছুঁয়েছি শীতের চামচ
চায়ের গরম কাপ
পাঁউরুটি টোস্টার
মোড়ের দোকান ইলেকট্রিক তার
চাঁইএর মাথায় লাইট
বাচ্চার খোলা পা
পায়ের ডিমে ঠেসে ধরা রেডহট
খন্তায় মাছের আঁশ
মান গোড়ায় ছাই
গৃহ কাঁপিয়ে বয়সবন্দীর পিছুডাক
আর্ট-লাভিং লাইফ
জিআরই স্কোরকার্ড।
গোড়ালি ডোবায় খোয়াবে চাঁদ
ভরাডুবি ইমেল
চোরিছুপা সাধ।
এবং খুঁটেছি নারী স্তনের বোঁটা
তোমার শরীর
বাধ্যবাধক অফলাইন।



দরজা

বলছি না কুকুরের ইনজেকশন
বরং প্রয়োজন
যে ভাবে দরজা খোলায়
মৃদুল হাওয়ায়
অথবা যে ভাবে দরজা ভাঙে
ঝড় তার পর আত্মস্থ
সেরকম আয়েলার মতো নয়
দরজার প্রয়োজন বোঝায়
দরজার স্বয়ম্বর
দরজার আত্মাহুতি দরজার বিলোপ
তেমন বিচ-রিসর্ট নয় সত্যের ভিতর
থাকুক তপোবন বৃক্ষ-পথ
ও এক অকপট দ্বার।
সে রকম সোনার খাঁচা
বাঁচা ডাবল সিঙ্গল মল্ট
গিটার ব্যাঞ্জো সিন্থেসাইসার
তুলি ক্যানভাস কাজু বাদাম
সে রকম বনের পাখি
বল্কল কমণ্ডলু নাম
ঝড়ে পড়া কাঠের ফাঁক
আটকে পড়া আর্ত ডাক
সে রকম সেবাব্রত
আমরা বলিনি লিঙ্গ
বিরাজ স্বগৃহে
বরং বলেছি স্বার্থক লোকাল
ট্রেন বনে ও খাঁচায়
যেমন সত্যনিষ্ঠ বায়ুতে প্রাণ।
হে মানুষ যে তুমি দ্বার খুলে রাখো
হাট--- নারী হও
হে মানুষ যে তুমি সদর্থক বাহক
হও পুরুষ
এবং বার্তা যেহেতু কবিতার যোগ্য
নয় ভুলেও বাতাস
কবিতা হয়ো না
যাপন হয়ে ছাপিয়ে যাও দুর্জন বাঁধ।

কবিতা - দেবজিৎ মুখোপাধ্যায়

একলা তার
দেবজিৎ মুখোপাধ্যায়



নেমে আসা জুড়ে খেলা
       পাতলা
                সূক্ষ্ম ছায়াখোকাদের
তুই আঁকিবুকি হবি

এই রোদ্দুর উঠোন ছুঁইয়ে দিলি?

জিভময় আদরের পাশবালিশ
আফসোস দ্বিতীয় জিভের জন্য

গন্তব্য রোদ্দুরে পৌঁছালো

নিজেকে মেলতে দি তখন ন্যাড়া ছাদে

কবিতা - ইলিয়াস কমল

পরিযায়ী কবিতা
ইলিয়াস কমল


০১.

তোমার বাগান জুরে কেবল হরিণ শৈশবের গল্প লেখা; সময় আর অসময়ে কে তোমাকে লিখে দেয় এইসব ইতিহাস? সে কি জানে না, হাওয়াও মাঝেমাঝে হারিয়ে যায় নিজেরই ভূমিজ পৃথিবীতে-

সে এসেছিলো সন্ধ্যা; এসে আকাশের নাম দিয়ে গেছে ময়ূর- আর তাই প্রতিসন্ধ্যায় বৃষ্টির মতো অন্ধকার বাসা বাধে ভুলে যাওয়া ঠিকানার ওঠানে।

প্রতিবেশী বাতাসের স্কোরবোর্ডে কেবল শূন্যের পর শূণ্য বসিয়ে যাচ্ছে সময়, ভুলে যাচ্ছে অসময়েও সময় থাকে, তার কোনও নাম থাকে না।

­

০২.

আর বেলা মাছের ইতিহাস পড়াতেন জিওগ্রাফি স্যার, লাল টুকটুকে বউ মাছগুলোর গল্প বলতেন তিনি; সেবার আমাদের স্কুলে চাঁদ বিষয়ক একটা লাইব্রেরি চালু হয়েছিলো। সেখান প্রতি পুর্ণিমায় আমরা চাঁদের গর্ভবতি রূপ দেখতাম। বালিকারা লজ্জা পেয়েছিলো প্রতিবারই।



০৩.

কবে মৃত্যুর পাহাড় বেয়ে চূড়ায় উঠবে রক্তিম জবা ফুল
তার শরীরে কি আজও বাতাসের গন্ধ মেখে বসে আছে
       রাতের কুসুম?
ঈশ্বরের বেগুনি ঠুঁটে চুমু খাওয়ার বদলে সে তাই বসে আছে
আর এক পৃথিবীর যৌন তৃষ্ণা মেটাতে
কারণ, ছুটি পেলেই পালিয়ে যাবে ঘাস ফড়িং।



০৪.

হাতের কাছে গোলাপী ঘড়ি সময়ের নাম ভুলে জিকির তুলে
এই পথের পথিকের হাতে ছিলো ডানাভাঙা ঘুড়ির চিত্রনাট্য

আপনার হাতে কি ঘুড়ি উড়ানোর সময় হবে?
এই প্রশ্ন তাকেও করেছিলো পাশের বাড়ির ব্যাঙ
রোজকার গল্পে যে কিনা একটি হাতিশালের মালিক
তবুও অন্ধ হরিণের ডানার কথা কেউ কেউ
মনে করে থাকতে পারে

আমি আসলে তেমন একটা রাজপুত্রের
                  দিঘী’র কথা বলতে চেয়েছিলাম
যে কিনা রাত আর দিনের পার্থক্য বুঝে।

কবিতা - শুভেন্দু দেবনাথ

বিগত কাঠবাদাম
শুভেন্দু দেবনাথ



উষ্ণতাকে উপড়ে ফেলে আচমকা ঢুকে পড়ে,
নিথর অন্ধকারে ঘুমিয়ে থাকা বস্তুহীনেরা।
শীতার্ত সন্ধ্যেগুলো সাজিয়েছি ক্লান্ত স্মৃতির উচ্ছ্বাস।
কাঁচের শার্শি খুলে আবরণহীন নেশা ছুঁয়ে তীব্রতায়
পেরিয়েছি ঘর।
শরীরের উত্তাপ ছড়িয়ে অপার্থিব পবিত্রতায়-
আঁচড় গুলোয় আদর ভরতে গিয়ে কোনো প্রতিক্রিয়া
বাসা বাধে না।
ডানায় পালক মেখে ডাকনামগুলো ফিরে যাচ্ছে
ব্যালকনি ছুঁয়ে। নিছক শব্দসুখ পেতে ------
নৈঃশব্দের বুকে ঝরে পড়ে ঘুমন্ত টেলিগ্রাম আর ঝরাপাতা।
পুলিশের হুইসেল গলে শিশির ছোঁয়ার আগেই সে সব
দুঃখ হয়ে যায়।
রিক্ততা খুঁজে অন্তিরিক্ত নিয়নের তীব্রতায় যৌনতা
গিরগিটি উপাধি পেলে
মানুষের মত আততায়ীরা লেডিস সিটে ভিক্ষা করে
বিগত কাঠবাদাম।

কবিতা - কিশোর ঘোষ

মা জেগে আছে
কিশোর ঘোষ



যখন নাইট গার্ডও ঘুমিয়ে পড়েছে
তার বাঁশির পেটে... তখনও
মা জেগে আছে। আমার মায়ের
মেদহীন স্নেহপদার্থের সাথে
জেগে আছি আমি
#
যখন নেলপালিশ ডুবে যায় পশ্চিমাকাশে
তখনও মায়ের আঁচল, হাত বাড়ালেই কাছে
#
চারপাশে আধমরা গাছের রাত
ব্যর্থ শুয়োপোকাদের পাড়া
জোনাকিনগর চোখে ঘুম নিয়ে একা
তখনও
মা জেগে আছে
#
পাতে স্নেহ পদার্থ বেড়ে
তবে নিজে খাবে


কবিতা - নীলাঞ্জন সাহা

জুতো
নীলাঞ্জন সাহা



অন্তত জুতো হ'লেও দুজনে থাকা যেত
হাঁটা যেত একই রাস্তায়
আমি খন্দে পড়লে ছন্দপতন
হতো তোমার , তুমুল বর্ষায় জলকেলি
করতাম কাদাজলে
ফিরে আসতাম একই ঠিকানায় প্রতিদিন
তারপর সারারাত একে অপরের
পাথর ও কাঁটার ক্ষতে রাখতাম হাত

জুতো হ'লে আরো কত কিছু হতো
একজন ছিঁড়ে গেলে সহমরণে যেতাম
সহজেই ।

কবিতা - সৌগত সরকার

জীবন
সৌগত সরকার



তোর কাঁধ ছুঁয়েছি, জীবন
রাস্তা পারাপার ওপারে মানুষ
এপারে জলছবির নীল স্বপ্ন
তোর চোখ ছুঁয়েছি জীবন
ভীর বাস গরম চাকা
মাটির ভাঁড়ে চা
সময় দাঁড়িয়ে জেব্রা ক্রসিং­ আঁকা রাস্তায়
তোর ঠোঁট ছুঁয়েছি জীবন
শুকনো পাতা ওড়ে বাবুই বাসা
শীতকাল নামে অকাল শহরে।
ওই ব্রিষ্টি এল, এলোমেলো
ভিজল রাস্তা
পেছনে যন্ত্রনার জীবাস্ম
জীবন তুই ছুঁয়েছিস আমায়

কবিতা - বাপি গাইন

ভুল
বাপি গাইন



প্রতিটি গলিরই একটা নিজস্ব গন্ধ আছে, গন্তব্য আছে
কিছুদূর পর্যন্ত যা যা থাকার

গলির পর গলি পাল্টেও অবশেষে
একটা নির্ভরযোগ্য অন্ধকারই মানুষ খোঁজে
আস্তানা খোঁজে

খোঁজ মহোদয় সেই শত্রু, যার
প্ররোচনায় আমরা বিনা শর্তে পা দিই
ভালোবাসতে শিখি

ভালোবাসা স্বয়ং খুব মহান বিভূতি কিনা
তাই মাঝেমধ্যই উপাচারে ভুল থেকে যায়।

ভুল মানুষকে কখনও হাতছাড়া করে না, দেবী
একা মানুষ কখনই সেভাবে ভুলও করতে পারে না
ঠিক।


কবিতা - রঙ্গীত মিত্র

প্রতিশব্দ
রঙ্গীত মিত্র



যখন মানুষ পার করে দিয়ে যাওয়া আরেকজন মানুষ
কাঁধ থেকে খাটিয়াটা নামিয়ে রাখে,মাটিতে।
তখন তার কাঁধে আগুন-চোঁয়া ধোঁয়া লিখে রাখে,
দেশটির নাম ভারতবর্ষ ।
যদিও আলাদা শব্দটা ভোটের আগেই উদ্বায়ী ;
কিন্তু আমার খুব বিপ্লব পায় ।
আমি বিপ্লব পাবার পর
দেখি, আমার বিছানায় ম্যাকডোনাল্ডস
এবং ক্লাব-কালচার বিছানার মতো
পলিটিক্স নামক বেলুন উড়িয়ে দিয়ে জানাচ্ছে
“মা”শব্দটার-ও সঠিক হিন্দি প্রতিশব্দ
কি করে বাংলায় ব্যবহার করা যায়,তার সন্ধানে
ব্যস্ত
গণতন্ত্র ।

কবিতা - সিদ্ধার্থ বসু

২টি কবিতা
সিদ্ধার্থ বসু



তাপ


হেরে গেছি? জয়োল্লাস সম্পন্ন হল না?
এ কেমন প্রেম,মায়া?কীসের ছলনা?

তোমায় চেয়েছি এত, সেকি শুধু নিজেরই প্রতিষ্ঠা?
মান? শ্লাঘা? আত্মমোহ-বিষ্ঠা?

কেন যে পারিনা হতে সম্পূর্ণ ভিখারী?
ভালবাসতে,কাছে আসতে,নিঃস্ব-অধিকারী |



আমার কথা

আমি, নিজের কথা চেপে রেখেছি বলে
হারিয়ে গেছি অগাধ ঘোলা জলে,
   বৃষ্টি গেছে,রোদে পোড়ার দিন
   হিম-কুয়াশা,পথরেখা বিলীন—
   আমি, বুঝতে গেছি তোমার দুটো কথা
   হয়ে উঠতে গেছি তাদের মুখরতা
   আমি, পাখির মত,বুড়ো গাছের ভাষা
   চিনে, সুদুর থেকে এসে বেঁধেছি বাসা;
   আমি, বুঝতে চেয়ে পাখির কলস্বর
   ভুলে,ভুল করেছি আপন খেলাঘর;
   আমার নিজের কথা বলতে গিয়ে আজ
          তলিয়ে গেছি বোবার ইশারায়,
          জংলি ফুলের মত সরল কাজ
          নীরবে ঝরা,তোমার ধুলোপায়ে |


কবিতা - অভিজিৎ রায়

কবিতা 
অভিজিৎ রায়



কবিতা - নবাব আমিন

নিজের জন্য বাঁচতে হবে
নবাব আমিন




কবিতা - প্রমিতা ভৌমিক

তোমার উড়িয়ে দেওয়া চুম্বন
প্রমিতা ভৌমিক



তোমার উড়িয়ে দেওয়া চুম্বন
পলাতক পাখির মতো খুঁজেছে আমায়
আর আমি ছড়িয়ে দিয়েছি সোনালি অসুখ

যন্ত্রণার পাশে এতো প্রলোভন
সন্ধের পাশে নিঃসঙ্গ নগর-

তোমার সন্ধে মানে ককটেল পার্টি,
তোমার সন্ধে মানে অলিপাব,
রেড ওয়াইন,মাংস-মাংস মাতাল শরীর

অন্ধকার লুট করছো আজ
আর তোমার ব্যস্ত বাইপাসের পাশে
নদী হয়ে বয়ে যাচ্ছি আমি

অলীক,তুমি জানবে না-
নদীর মতো নারীরও পা ছোঁয়া যায়।



কবিতা - তন্ময় ভট্টাচার্য

আশঙ্কাময়ী
তন্ময় ভট্টাচার্য



রক্ত দে মা শঙ্কাময়ী
ডবকা ছুঁড়ি পটছে না

মেঘলা দিনেও মন গলে না
চোখ মারা-টাও ঘটছে না

শক্ত হ' আশঙ্কাময়ী
নাম লিখেছি হাত কেটে

আপলোডে কাল নেট ঝোলালো
পকেট ঝুলে খেপ খেটে

টাটকা তাজা ডবকা ছুঁড়ি
জন্তু সেজে বলবে - "আয়

তুই তো আমার মরদ আছিস
চিলের মতো ঠুকরে খা"

এই না হলে,শঙ্কাময়ী
রক্ত ফেলে লাভ-টা কী

ঠোঁটের ফাঁকে ঝুলবে ছুঁড়ি
শরীর জোড়া গোস্তাকি

রাগিস নে আশঙ্কাময়ী
তুই তো নিজেই ঠ্যাং তুলে

বরের চোখে ঘোর এনেছিস
আমিই শালা চুলবুলে! 


কবিতা - রাজেশ চন্দ্র দেবনাথ

বক
রাজেশ চন্দ্র দেবনাথ



তুমুল ব্যস্ততায় খুঁতখুঁতে
লোডশেডিং রাতে ডিপোজিট মন
উষ্ণ দ্বীপে পরিনাম ভুলে
পথ হারিয়ে যুগের ভ্রমণ ।

যা ছিল নিরিবিলি জন্মগত
শূন্য আর রৌদ্র মাখা তিলক
রঙিন যন্ত্রণায় মেঘেদের বেঞ্চে
স্বপ্ন বুনছে উলঙ্গ বক ।

সংস্করণ শেষে দশকের উল্লাস
প্রতারিত গ্রীবায় খুনসুটি প্রবাদ
রাধিকার প্রেমে পুড়ছে রুটি
প্রতি বিশেষণে অজানা খাদ ।

কবিতা - মনোরঞ্জন বর্মণ

সেই স্মৃতি
মনোরঞ্জন বর্মণ



সেদিন মেঘে ঢাকা আকাশের পাশে চাঁদটা
দিয়েছিল আমায় আলো ,
হিম শীতল বাতাসে বালুচর দিয়ে হাটতে হাটতে
পৌছে ছিলাম খেয়া ঘাটে ।
জন মানবহীন পাথারের শৃগাল কুকুরের ডাক বাদে
তুমি ছিলে পাশে ,
আমার মানব বন্দনার তুমি পবিত্ৰ কাশ ,
যে কাশের আগমনে শারদে ঘটে মহত্‍সব ।

চোখে ফোটা সব শিউলি ফুলগুলো ঝড়ে
দক্ষিনা বাতাসের স্মৃতি গন্ধ ,
অঙ্কে অঙ্কে ভরে যাওয়া পাতা গুলো
শুধু গচ্ছিত থাকে জোস্নার মৃদু আলোয় ।
পিদ্দিম থেকে পুড়ে যাওয়া কেরোসিনের মত...

কবিতা - অভিজিৎ দাস

ঘুণত্ব
অভিজিৎ দাস



মাছের বাজারে বিড়াল কুকুরের বন্ধুত্বে
যদি আইনস্টাইন হয়ে পড়ো,
বিস্কুটের টুকরো গুলোকে প্রশ্ন করো
কেন ওরা প্যাকেট বন্দী হয়।

প্যাকেট করা আর খোলা
মধ্যে যে দূরত্বটুকু,
তাকে খড়কুটো করলে না
কফি হাউসের টেবিল সমেত ডুবে গেলে।

যে বিশেষ দিন গুলোতে
সেলাই বরাবর তিন টুকরো হয়ে যাও।
বাজারের ব্যাগ অজগর হয়
সন্তানকে সাইকেলের চাকা ভেবে বসো।

তাঁরই স্পোক জুড়ে একটা বড়শি বানিয়েছি
যাতে মাছ বেড়াল কুকুর
এমনকি,আইনস্টাইন ও সেই দুরত্ব গাঁথা যায়। 


কবিতা - সোমনাথ সাউ

শীতকাল আসছে
সোমনাথ সাউ



একটা কাক কিংবা কোকিলের ছানা

নড়ছিল গাছ

একটা হরিন ও হরিণী আসে

বরফে চাপা পড়ে আছে সমস্ত চিরহরিৎ পাতা

সম্পর্ক গড়িয়ে পড়ে

শূন্যতার মাঝে অশূন্যতার সুতো দিয়ে
যেখানে লাট খাওয়া ঘুড়ি ওড়ে।

কবিতা - অপু মেহেদী

দুটি কবিতা
অপু মেহেদী



দ্বিধা

হাওয়ার সাথে দর কষাকষি শেষ হলে বেঁচে দিব কাঠঠোকরার কবন্ধ ভাষা।

আমার উঠোনে ঘর পালানো রোদ; জন্মান্ধ ফড়িংয়ের উড়াউড়ি। হলুদ পাতার দিনে এসে ভিড় করে লাল নীল অবৈধ স্মৃতি।

স্মৃতি মাত্রই অতীত নয়। কিছু স্মৃতি থেকে যায় প্রশ্নাতীত। কিছু প্রশ্ন উত্তরাতীত।

অতীত ও স্মৃতির দ্বিধায় কেটে গেছে সকল প্রশ্নবিদ্ধ দিন। তবু উত্তরের ত্রিবেণী গিঁট খোলার সাহস হয়নি শুধু এই ভেবে- আমি শুধু প্রশ্নেই ছিলাম; উত্তরে না।




মাতাল কাব্য

এই তিমি শিকারের রাতে তুই জলপিপি। মখমল বাতাসে তোর মানবিক প্রণয়। অধিকারে নিয়েছিস নক্ষত্রের ঝিলিক যৌবন। তবুও আলো বিলোচ্ছে বোকা চাঁদ।

লবনশাদা জোছনায় পানশালা থেকে ফিরছে এক উপেক্ষিত মাতাল। তার মুখের গন্ধে ভেসে আসা সিরামিক ভয়কে অনুবাদ করে পার্কের শেষ রাতপরীটি দেয় চুম্বনের অধিকার।

চুম্বন কিংবা সঙ্গম মানেই প্রেম নয়। প্রেম এক ধাতব অভিশাপ; মিশে থাকে প্রেমিকার কামুক বক্ষবন্ধনীতে।

কলঘরে অবগাহন শেষে বক্ষবন্ধনী খুলে ফেললে ভাবিস- মাতালের একাকীত্ব নিয়ে মিশে আছি তোর রৌদ্রজলা বক্ষবন্ধনীর রঙে।

কবিতা - শামীম সাঈদ

কবিতার মতো মনে হয় শামীম সাঈদ



কোন কোন কবির কবিতা পড়ে কিছ কিছু বোধ ঈর্ষার মতো মনে হয়,
মনে হয় - আরে, ওরা তো কবিতা লিখছে, আর আমি কি লিখছি বাকল ছাকল;
কাব্য জনে কয়- বাপ, শিখে নে, কেমনে বাইর হয় দুধের থেকে দই;
আমিও ভাবি- আরে, চুনের সাথে একটু বাদামি রঙ মিশাইলেই তো হয় দই অবিকল!

কবিতা - অনিমেষ সিংহ

নক্ষত্রহীনা শহর
অনিমেষ সিংহ



যারা চলে গেল শহরের পথে হেঁটে
আয়নায় উথলে ওঠা সমুদ্র দেখেনি
রাতের রাস্তা ফোঁস করে ফেনা তুলে দাঁড়ায় সম্মুখে
ধ্রুপদী শরীর বেয়ে ফিক হেঁসে বাঁক নেয় আব্দার চাঁদ ।
যারা বর্ষার নাচ শিখেছিল প্রেয়সীর নখে নখ রেখে
তাদের শহর লবনাক্ত আজ
গর্ভাশয়ে কুঁকড়ে থাকে দুর্ভেদ্য অবয়ব গুলো,
তীক্ষ্ণ আলোক শিখায়-
একা বসে থাকি, কখন সবুজ হয়
কখন লাল হয়- লোকায়ত সুর ,জীবনের গান !
#
এখনও রক্তক্ষরণ হচ্ছে আমার দুচোখ ভর্তি
পায়ে পায়ে মিছিল নামে
শহর ছেড়ে যারা যারা চলে গেছে তারা ছিল বোধিবৃক্ষ।

কবিতা - সাহাব আহমেদ বার্ক

কোনো জমাট লাল ফুটুক আপনার দীর্ঘ-মরু'তে
সাহাব আহমেদ বার্ক



মেম, আমি জানতাম না, আপুনি লালণ করেন এক ভীতরকার
"লালনমাঝে মধ্যে কিছু পোস্ট দেখে মন খারাপ হয়,
মন্তব্য পড়ে তা আরও বহু-গুন মাত্রিকতা পায় ।
কিছু ব্যাপার হয় একান্ত নিজস্ব, তা শেয়ার না করলেও হয় নিজেকে
এতো হালকা না করলেও জীবন মর্যাদা নিয়ে এগিয়ে চলে
রাস্তার নই, এসিড ছুঁড়তে মারবো না কোনো দিন ;
মেম, আপুনি তবে জান্নাম ছুঁড়েছেন জেনে বা না জেনে
এতো তাপে আমার কোল্ড ব্লাস্টিং হচ্ছে ।
মেম, আপনার আর আমার মাঝে যৎ সামান্য ছিল দূরত্ব যা প্রেম পর্যন্ত আপাতত পৌছায় না ;
তবে মনে নিষিক্তএ পর্যন্ত আমাকে আপোনার দূরে কি কখনও পেয়েছেন ?

এক দীর্ঘ প্রশ্বাস মিশে গেলো সিলিং ফ্যানের তাতানো বাতাসে আশপাশের কিছু ঠুনকো শব্দ
একাত্তর গড়ছে অহরহকি আমি বলতে চাই আর কোনো দিন বলা হয়তো হবে না ...
এক শব্দগুচ্ছ কবরস্থ করে আমার প্রস্থান হবে আপনার অজান্তে
শুকনো তোড়া আমি হয়েই রইল মসজিদের পাশে ।
.. কোনো লাল ফুটুক আপনার দীর্ঘ-মরু'তে ।


কবিতা - সৌগত রায় বর্মন

ইতি তব ভবদিও
সৌগত রায় বর্মন




শিল্পকলা - বিনোদবিহারী মুখোপাধ্যায়


শিল্পকলা - অশোক মন্ডল


শিল্পকলা - গৌরব রায়


শিল্পকলা - লালুপ্রসাদ সাউ


শিল্পকলা - অমিত বিশ্বাস


শিল্পকলা - নন্দলাল বসু