সোমবার, ১ জুলাই, ২০১৩

ধারাবাহিক - রাজর্ষি চট্টোপাধ্যায়

অবভাস
রাজর্ষি চট্টোপাধ্যায়


৯।

ও পরাণ, পরাণের লাইগ্যা কান্দে তুমি / পরাণ বান্ধব হইয়া ওঠো…

আজ সে, সেই প্রথম পরিচ্ছেদের বিষাদ্গাছগুলোর কথা, যারা প্রলাপমারীর মধ্যে ছিল, ভাবতে বসল। ওরা কি সত্যি ওদের পাতায় পাতায় লিপিবদ্ধ করেছিল এই হিংস্রতার কথা? সংবাদ পরিবেশনের কোন দায় ওদের নেই। প্রথম, দ্বিতীয়, বা, তৃতীয় কোন প্রতিশ্রুতিও নেই।
অথচ, প্রাণের প্রথম ভালবাসার কথা ওরা জানত। ভালবাসা তো কোন প্রতিশ্রুতি নয়।
পিঁপড়েদের উপসংসার, বা, মেয়েটির অনিন্দসুন্দর গোড়ালিও এই কথা জানত।
যথারীতি, ১৫ দিনের মধ্যে সরকারের পক্ষে চার্জশিট দেওয়া যায় নি। ফরেন্সিক রিপোর্ট পুলিশের হাতে এসে পৌঁছয় নি। কিন্তু সরকার রুল ঢোকাচ্ছে। তাই পরে সাপ্লিমেন্টারি চার্জশিট দেওয়ার কথা ভাবছে বঙ্গের পুলিশ।
এদিকে লোকজন, আঞ্চলিক বেশ কিছু কারণে ফুঁসছে। বেশি ফুঁসছে, দেখে মিডিয়া যেভাবে একটা প্রাগৈতিহাসিক সমাজকে প্রাপ্তবয়স্ক করে তোলার দায়িত্ব নিয়েছে। কাট্টু-কুট্টুসরাও আকছার ধর্ষণ নিয়ে মাসি পিসিকে শুধচ্ছে। মাসি পিসিরাও মিডিয়াতে বসা পেইড-পার্সোনাদের মত হেলে-দুলে-বেঁকে-চুরে
উত্তর দিচ্ছেন।
বোকচোদ, বোকচোদ সব।
বিরোধীরাও খোঁয়াড় থেকে বেরিয়ে এসে দিশেহারা হয়ে এমন একটা আচরণ করছে, যেন, এটাই একমাত্র তাদের ঘুরে দাঁড়ানোর রাস্তা হতে পারে। বিদ্বদজনেরাও রাস্তায় হেঁটে নিলেন। বিরোধীরা মিছিল ভরাল। সিঙ্গুর, নন্দীগ্রামের পর পুনরায় ‘বিবেক’ জাগ্রত হল। সবাই এই জনসমাজ নিয়ে ভাবছেন। এটা ভাল। এক পৃথিবী এক রাষ্ট্র আর কখনো না হওয়ার মত ভাল।
মুখ্যমন্ত্রী তো তকমা নিয়ে ঘোরেন। প্রতিবাদীদের মুখে ‘মাওবাদী’ তকমা সেঁটে দিলেন। মিডিয়া সেটাই গিলে নিল।
কানা ফকির একটা গান লিখলঃ
ও পরাণ দুলিয়া দুলিয়া ওঠো
ও পরাণ ভগ্ন পরাণে ফোটো
ও পরাণ, পরাণের লাইগ্যা কান্দে তুমি
পরাণ বান্ধব হইয়া ওঠো…

আর একটানা, ঘ্যান ঘ্যান করে সেটা হাটে মাঠে গাইতে থাকল…।