শনিবার, ১৬ মার্চ, ২০১৩

সম্পাদকীয় - ২য় বর্ষ, ৪র্থ সংখ্যা

সম্পাদকীয়


যে কোনো প্রাণীই বেঁচে থাকে তাঁর বেঁচে থাকার সময়কালেই। নিজের জীবদ্দশার আগে এবং পরে কারোরই পক্ষে জীবিত থাকা সম্ভব নয়। অর্থাৎ কেউই অনাদি-অনন্ত নই। সুতরাং আমাদের যা কিছু করার তা তো ঐ জীবত্কালেই সমাধা করে যেতে হয়। আর তাই আমরাও আমাদের যে যাঁর মতো করেই কাজ করে থাকি। নিজের পরিচিত গণ্ডীর মধ্যে নিজেকে সুপরিচিত করে তুলতে আমরাও শশব্যস্ত হই। সেকারণে প্রত্যেকেরই বেঁচে থাকার বা বলা ভালো নিজেকে বাঁচিয়ে রাখার নিজস্ব কিছু কৌশল থেকেই থাকে; যেটা সম্পূর্ণভাবেই তাঁর একান্ত ব্যক্তিগত। এমনকি নিজের পুরুষটির সঙ্গে বা নিজের স্ত্রীটির সঙ্গেও পরস্পরে বিভিন্ন সদ্‌-অসদুপায় অবলম্বন করেই দাম্পত্য যাপন করেন। তাই শুধু যে সমাজের এক্কেবারে নিচু থেকে উপরতলা পর্যন্ত ধান্দাবাজ, বেকার, সুবিধাখোর, পার্টির নেতাগোছের লোকেরাই কৌশল করে তা কিন্তু নয়।


যাইহোক, বিষয়ের কথায় আসি। এই যে ‘কৌশল’ এরই এক সংকীর্ণ অর্থে ‘রাজনীতি’ শব্দটির ব্যাপক প্রয়োগ লক্ষ্য করা যায়। যদিও শব্দটির আক্ষরিক অর্থ রাজার নীতি তথা রাষ্ট্রনীতি; তবুও একটু খেয়াল করলেই দেখা যায় যে শব্দটিকে আমরা আখছার ‘কৌশল’ অর্থেই ব্যবহার করে থাকি। যেমন ধরুন, আমাদের স্কুল-লাইফে এইসব ছিল কিনা মনে পড়ে না, তবে কলেজ থেকে শুরু করে ইউনিভার্সিটির সহপাঠী-পাঠিনীদের মধ্যে আর এখনও কর্মস্থলে কলিগদের মধ্যে আমরা বলেই থাকি ‘জানিস/জানেন তো ও/অমুক না দারুন পলিটিক্সে (রাজনীতিরই ইংরাজি অর্থ) চলে। এমনি এমনি একটা কথাও খরচ করেন না’। আবার কারাও-বা নিজেদের (আমরা) দিকে না দেখে শুধুই অন্যের দিকে তাক করে বলে থাকেন - ‘আরে বলবেন না মশাই, ওদের (ওরা) মধ্যে ভীষণ পলিটিক্স! স্বার্থ ছাড়া এক-পা’ও এগোয় না।’ ইত্যাদি, ইত্যাদি...


তাহলেই বুঝুন। যখন নিউক্লিয়ার ফ্যামিলির হাঁড়িটি থেকে শুরু করে দেশ-মহাদেশের তাবড় তাবড় হাঁড়িগুলো ভরা হাটে ভাঙলে ভিতরে ঐ তথাকথিত ‘পলিটিক্সের পাঁশ’ ছাড়া দু-মুঠো স্বস্তির অন্নই পাওয়া দুষ্কর তখন সাহিত্য-সংস্কৃতি-শিল্পকলার ক্ষেত্রই বা কি করে ধৃতরাষ্ট্র হবে! আর যেহেতু, কোনো সৃষ্টিই কখনো সমকালকে এড়িয়ে অসম্ভব (যদিও সমকালকে নিয়েই লিখতেই হবে এমনটাও নয়) তাই রাজনীতির বহির্ভূত কেউ নেই কিছু নেই। কাব্যসংসারে এই রাজনীতির প্রাদুর্ভাব ঘটে দুভাবে। প্রথমত, কবি-লেখকগোষ্ঠীর মধ্যে আর দ্বিতীয়ত, সাহিত্যের মধ্যে; কবিতার মধ্যে। তাই 'দেশ-কাল-পাত্র'র উপেক্ষা করে সাহিত্যে রাজনীতির গোছানো ঘরকন্না কিভাবে ছিল-আছে-থাকবে তা দেখে নিই 'ক্ষেপচুরিয়াস'এর পাতায় পাতায়...


ক্ষেপচুরিয়াস'এর পক্ষে
বাণীব্রত কুণ্ডু