শুক্রবার, ১ ফেব্রুয়ারী, ২০১৩

ধারাবাহিক - রাজর্ষি চট্টোপাধ্যায়

অবভাস
রাজর্ষি চট্টোপাধ্যায়



Only this piece of sheet will introduce me…



... দীর্ঘ মাস্তুল আর্ত ডাকে না কেউ কিনারায় পড়্‌ / মিথ্‌ ও মিথ্যে দ্বীপবন্দর থেকে বিপন্ন শিকার ভেসে আসে...


ময়না দ্বীপ থেকে তাঁবু গুটিয়ে ফেলা হচ্ছে, ফেরানো হচ্ছে ক্যামেরা, নষ্ট করে দেওয়া (Burn) হচ্ছে সমস্ত সেলুলয়েড । ময়না দ্বীপে বহিরাগত নিষিদ্ধ ঘোষণা হয়েছে । তবে, হোসেন মিঞার গোরস্থানটি বড় সুরম্য । প্রাণিত সবুজ সব চারপাশ । আশ্চর্য, দ্বীপপুরাণে এর কোনো উল্লেখ নেই । হাইব্রিডিটির যে মনোজগৎ, তার বিপরীতে এখানে ভূমিপুত্রদের পুনর্জন্মলাভ হয় । ক্রমিক বিরতিতে এই দ্বীপ তলিয়ে যায় মৃত অমৃত সব নিয়ে, আবার ভার্জিন উঠে আসে । চাঁদের কাল ও কলা ক্ষয়ের প্রতি লক্ষ্য রাখতে হয় মাত্র । এখানে কিছু গাণিতিক নির্মমতা প্রয়োগ উল্লেখ্য হয়ে ওঠে ।


একজন যাজককে এই ধারণার সম্যক বশবর্তী হতে হয় যে মাস্তুলই এখানে একমাত্র পূজ্য দেবতা এবং জ্যোস্না মুণ্ডিতমস্তক মহিলাদের বুক দিয়ে ধোঁয়া মৃত আঁশের আশনাই মাত্র । এরপর জল থেকে পুরা প্রাণীরা শুধু ধ্বনি সংবিদের কারণে ডাঙায় উঠে আসতে থাকে । যারা ময়না দ্বীপ নিয়ে ডক্যুমেন্টরি বানাতে আগ্রহী ছিল, তারা আপাতত, একটা খোঁড়া বেলুনওয়ালার সন্ধানে বেরিয়ে পড়ে; দ্বিতীয় মহাযুদ্ধের আগেও যাকে প্রতিদিন গড়ে দশ দশটা লাল বেলুন চ্যারিটি করতে দেখা গেছে ।




মানুষের ইতিহাস তার স্মৃতির দাসত্ব থেকেও বেশি কিছু, দেশ ও দৈশিকতা বিরোধী এই শিক্ষা ধর্মযাজকদের ঘুম কেড়ে নেওয়ার জন্য যথেষ্ট । মৃত মানুষের অক্ষিদানের পর অন্ধত্ব নিয়ে যে বিশেষ কিছুই বলা যায় না, সেটাও ক্ষয়িষ্ণু ইতিহাসের শিক্ষা । এতএব, এই কুরঙ্গশালা তার যাদুছাদ খুলে দিচ্ছে । বামনাকার কুশী-লব, যাদের পাসপোর্টে গিনি ও মদের সুযোগ কিছু বেশি ছিল, তারা, চাঁদ নয়, চাঁদের প্রচ্ছায়া ছুঁতে চাইছে মাত্র । এসবই গীতিকবিতার পুনরুত্থান, যা সূত্রধরকে শিখণ্ডি রাখে, যাতে অধুনা-পুরাণ বর্ণিত একজাতি-একরাষ্ট্রের ধারণাগত অনুপ্রবেশ ধীরে ধীরে সংক্রামিত হয় এবং সেই ব্যাধির কোনো প্রতিব্যাধিশেধক কখনই আবিষ্কৃত হয় না । ফলতঃ, লেখাটি বাতিল তালিকাভুক্ত বলে কোনো একদিন ঘোষিত হয় ।


উল্লাস ।


( ক্রমশ: )