বৃহস্পতিবার, ১৪ ফেব্রুয়ারী, ২০১৩

ধারাবাহিক - রাজর্ষি চট্টোপাধ্যায়


অবভাস (দ্বিতীয় কিস্তি)
রাজর্ষি চট্টোপাধ্যায়


আসলে হাইওয়েটাই সবকিছু গুলিয়ে দিচ্ছিল


সে তাকিয়ে থাকে আর দেখে তার ছোট্ট ঘরের দেওয়ালগুলো শুয়ে, জানলাগুলো নুয়ে আর ছাদ ভুঁয়ে এসে পড়েছে। বাইরে আকাশের দিকে একটা তোরণ, হতে পারে কোন মণ্ডপ আর নহবতখানা। তার আগে মেঘে মেঘে কিছু রঙ হয়েছিল। পৃথিবীর কন্যাদের বিদায়। এই সময়, যে, কন্যে নয়, হাইওয়ের দিকে উঠছিল। পেট্রোল ভ্যানের আলো মাপমত তার পেছনে এসে পড়েছিল। তারপর আর কিছু জানা নেই।

বিষাদ জ্বর নিয়ে গাছগুলো, মনে হয়, দেখেছিল। প্রলাপমারীর মধ্যে ছিল তারা। তাই সে ভাষা পাতায় পাতায় বোনা আছে। কোনদিন পাঠোদ্ধার হতে পারে। এদিকে তোলাবাজরা আকছার দানা ব্যবহার করছে। সন্ধের পর থেকেই শোনা যাচ্ছে সেসব অনিপুণ হাতের কারবার। ভারী ভারী মোটরবাইক সব শহরে ঢুকে পড়ছে। যেসব দোকানীরা ফ্লাইওভার, মেট্রো, মল শুঁকে শুঁকে এসেছিল, তারা হাতের সাথে সাথে ল্যাজও গোটাচ্ছে। হয়েছে বেশ। খচ্চর ছোকরারা যা যা মারাচ্ছিল, তার সাথে সংস্কৃতি মিশিয়ে দিচ্ছে। দেদার। লুটছেও ভাল।


সে শুধু লক্ষ্য রাখছে। হিপ পকেটে একটা ছোট নোটবুক, আর পেন্সিলারদের হাতে যেরকম থাকে ঠিক সেরকম একটা পেন্সিল। সুযোগ পেলেই আঁকিবুঁকি কাটছে। আর এমন ভাবে লেখাগুলো আওড়াচ্ছে যে মনে হচ্ছে বাপের না হলেও তার নিজের শ্রাদ্ধের খরচপত্রাদি। একাজে স্টেশানটা তাকে সাহায্য করছে খুব। স্টেশানের নিচে বাজারচত্বর। সব কটা নেশার ঠেক। মদ্দামাগি। শনিমন্দির লাগোয়া মাদুলি দোকান। গেল শনিবারের শালপাতা যেখানে একটা বাছুর চাটছে, ঠিক তার পাশ দিয়েই হাইওয়েটাতে উঠে যাওয়া যায়। এখন একটা ছেলে আর দুটো মেয়ে উঠছে।