মঙ্গলবার, ১৯ আগস্ট, ২০১৪

গুচ্ছ কবিতা- অব্যয় অনিন্দ্য

শেষ বেঞ্চ


যতো দূর - চক্ষুলজ্জার দেয়ালটা ততোই স্বচ্ছ  
তাই শেষ বেঞ্চেই বসি।

ম্যাডাম ভূগোল পড়ান বিঠোফেনকে ঠোঁটে নিয়ে
আর আমার নিউরন বয়সের পার্লামেন্টে ভূগোলকে রসায়ন পড়ায়।
অন্তঃবিক্রিয়া খাতার কোনায় চড়াই-উৎড়াই আঁকে
জ্যান্ত কোকের বোতলের ভাঁজ গুনতে থাকে
একটু বাদে বাদে চুঁইয়ে চুঁইয়ে গুড়া দুধের বিজ্ঞাপন মনে আনে
এভাবেই প্রতিদিন বয়ঃসন্ধির ঘন্টা বাজার আগেই ক্লাশ শেষ হয়ে যায়।  

সন্ধ্যাবেলা প্রতিটা অংকে জিরো ফিগার ঘুর ঘুর করে
মাঝরাতে ঘুম ভাঙতেই টের পাই
কাঁপনের সাথে তাপমাত্রার সম্পর্কটা আসলেই সমানুপাতিক।

গন্ধ

পৃথিবীর হামাগুঁড়ি চুঁইয়ে পড়া দোলঘড়ি চেটে চেটে 
স্থূল হচ্ছি আমি, স্লিম হচ্ছে আমার শৈশব
সাথে পাল্লা দিয়েই তন্বী হচ্ছে শৈশব কাঁখে হেঁটে চলা তিস্তা
আহা, ফিগার বিলাসী মডেল--ডায়েট করেই চলছে 
নদীর ডায়েটিংও বুঝি মিলন-সংক্রামক   
যারা ছুঁয়েছিল, সবারই ঝরছে মেদ -   
মাছের দুধ আর ধানের যৌবন ভরা জাহাজ ছেড়েছিল  
ফিরে এসেছে মন-মাঝির শীর্ণ বৈঠা     

আর একটু তন্বী হলেই তিস্তা ফ্যাশন-টিভিতে যাবে
কূটনীতির টাইয়ের নট ছুঁয়ে এঁকেবেঁকে হাঁটবে তিস্তাচুক্তি বরাবর
চুক্তির পাতায় আমার শৈশবের ঘ্রাণে ভাসতে থাকবে ডায়েটিং             

ডায়েটিং বুঝি নদী আর ফুলে ভিন্ন
ফুলেদের মধ্যে রজনীগন্ধার ডায়েটই সবচেয়ে কার্যকর
ওর চিকন কোমর অনেকক্ষণ সইতে পারে--গন্ধের ভার

আমি তিস্তা নই, আমি রজনীগন্ধাও নই -
এই স্থূল আমিকে আর বেশীদিন বইতে পারবেনা পৃথিবী 
তবে পৃথিবী কথা দিয়েছে
আমার সূক্ষ্ম গন্ধটাকে বয়ে চলবে সূর্য্য নিভে যাওয়া পর্যন্ত 
তাই প্রতিটি রজনীগন্ধার ঠোঁটে ঠোঁট ছুঁইয়ে দেখ
একটা অব্যয় অব্যয় গন্ধ



রাজহাঁসের কুচকাওয়াজ

কলম আর শ্যামের বাঁশির কলহে কোকিল এল রেফারী হয়ে
পৃথিবীর যাবতীয় চমক ঠোঁটে নিয়ে নাম নিল মিডিয়া
মিডিয়াই পৃথিবীর একমাত্র চুম্বক
নামজারি করছে সুমেরু-কুমেরু
মাউথ অর্গানে ঢেউ তুলে

আর কলম আর বাঁশি দুজনেই হলদে বুট পরে
মিডিয়ার পেছনে লেফট-রাইট করে
সুপন্থাকে আক্ষেপের লেজে বেঁধে
নিরপেক্ষতার বেড়ালকে ভিজাতে সমান্তরালে খেঁউড়ও গায়

আমিও ভানুমতীকে সংবাদ দিয়েছি
উঠোনটা মেকুড় চলনক্ষম হলেই
জগতের যাবতীয় কলমবাজদের ফ্যাশনটিভিতে ডেকে বলব
রাজহাঁসের কুচকাওয়াজ নিয়ে লিখুন
             *****


** (ক্যাট-ওয়াক = মেকুড় চলন)