ভাটশালিকের ম্যানিফেস্টো
আশরাফুল কবীর
আশরাফুল কবীর
এক.
একটি শান্ত-সন্ধ্যার পরেই হয়তো
আসন্ন ঝড়ের আশংকা পেণ্ডুলামের ন্যায় দোলে;
খানিকটা এপাশ-ওপাশ, কিয়ৎকাল, সর্বকাল
ঘটে পূর্বাভাষের অবলুপ্তি, ধ্যানযোগী হয়ে থাকা
কিছু জটিল সমীকরন কুয়াশা বাড়িয়ে চলে..
গা-ঝাড়া দিতে থাকে ভাদুরে উত্তাপ-
মিইয়ে যেতে যেতে নীল লিটমাসে রঞ্জিত হয়
ভাটশালিকের মুখ।
অবিভক্ত সময়ে আরজি তুলি হাওয়ার কাছে,
বইয়ে দাও সেই আদিম ঝড় যা এখনও বহ্নিমান,
সুশীতল হতে এখনো অপেক্ষায়; তাবৎ পৃথিবীর
সকল উত্তপ্ত বনাঞ্চল।
দুই.
দ্রিম. দ্রিম. দ্রিম. দ্রিমম..! স্ফীত ঢেউ উপচায়
জলবাড়িটার ঠিক মধ্যিখানে, খলবলায়;
ফালপাড়া জলে অবশ হয় মাছরাঙাদের ভাবুকদল
দুরন্ত সূর্যালোকে একদিন ওরা ও ডানামেলতো মদিরা হয়ে;
পাড়ি দিতো অপরিচিত কোন আন্দামান-নিকোবর।
তিরোহিত হয় দ্বীপাঞ্চল!
ভিজেমাটিতে ছাপ বসাতে খু-উ-ব বেয়াকুল হয়
দশাশই যুধিষ্ঠির; মধ্যগগণের নানান এজেন্ডা
রাধাকান্তের
মনে ছোপ ছোপ কালি ফেলে।
তিন.
একান্তে ভৈরবীর সাথেই কথা হয়েছিল
প্রতিশ্রুতি
ব্যক্ত হয়েছিল মেলান্দহের মেলা দেখার;
উপলক্ষ হয়েছিল নানান বায়না মেটানোর।
একখানা পুতুল, ক’খানি শাঁখ
হয়তো আরো কিছু;
তবে চড়কায় ওঠা হয়নি; শুধু হাতের
রিনিকিঝিনিকি’র ছন্দে হয়েছিল পালাবদল
তাতেই ঢেড়!
সওয়াড়ী হইনি ও-পথে বহুকাল;
তবুও কোন এক বৈশাখী দুপুরে
ভাতঘুমে পা-হড়কাই মেলান্দহে।
চার.
একদিন বুঝি ছুটি ফুরোয় সময়ের কাছে।
তাই ফেলে যাই খাল-বিল, ডুবো-নালা, সব
ভাসানচরের বাড়িঘর; ধানশীষের রঙ,
ভাটিয়ালী সুর, শৈশবের ঘোলাজল।
একদিন ছাড়ি উজানে গাঙ, ঢেউ টলমল;
ছুটে চলি নিরুদ্দেশ পথে,
নাও! পালতোলা এক ছইয়া নাও!
কোন পথে লইয়া যায় সে আমারে?
ছেড়েছুড়ে যাই বাঁশরিয়া সুর
লক্ষের যাঁতাকলে পিষ্ট হতে থাকে
অবচেতন-মন, মহেন্দ্রক্ষণ
এক ঝটকায় আটকে ফেলে অবতল-লেন্স,
আক্ষেপে গড়ায়, অনবরত পুড়িয়ে চলে,
মনপবনের কিছু নোনাজল।
0 comments:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন