বৃহস্পতিবার, ১ নভেম্বর, ২০১২

রানি কাহিনি

রানি কাহিনি
ইন্দ্রাণী সরকার

চিতোরের রানী পদ্মিনী


মেবারের রাজধানী চিতোরের রানা রাওয়াল রতন সিং -এর রানী পদ্মিনী অসম্ভব রূপবতী ছিলেন |তাঁর রূপের কথা শুনে দিল্লীর সুলতান আলাউদ্দিন খিলজি ১৩০৩ সালের ২৮ জানুয়ারি রাজপুতদের সবচেয়ে শক্ত ঘাঁটি মেবারের উদ্দেশে সসৈন্যে রওনা করেন | কিন্তু মেবারে পৌঁছে তিনি হতাশ হলেন | মেবারের দুর্গটি অতীব সুরক্ষিত | তিনি রতন সিং কে খবর পাঠালেন যে তিনি তাঁর রানী পদ্মিনী কে একটিবার দেখতে চান | রতন সিং সুলতানের হাত থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য এই প্রস্তাবে রাজি হলেন |

রানী পদ্মিনী রাজি হলেন সুলতানকে দেখা দিতে আয়নায় প্রতিবিম্বের মাধ্যমে | সুলতান তাঁর কিছু ধূর্ত সৈনিকদের সঙ্গে দুর্গে এলেন এবং তাঁদের নির্দেশ দিলেন প্রাসাদের সুরক্ষার ব্যবস্থা বিশদভাবে লক্ষ্য করতে | পদ্মিনীকে দেখে সুলতান ঠিক করলেন তাঁকে যেভাবেই হোক তাঁর চাই | তিনি রতন সিংকে কারারুদ্ধ করে পদ্মিনীকে রতন সিং - এর কাছে দাবি করলেন |

এ খবর রাজপুতদের কাছে পৌঁছার পর রাজপুত সেনাপতিরা কূটকৌশলে সুলতানকে পরাজিত করার ফন্দি আঁটেন | তাঁরা সুলতানকে জানালেন, পরদিন সকালে পদ্মিনীকে তার কাছে হস্তান্তর করা হবে | নির্দিষ্ট সকালে রাজপুতদের দেড়শ’ পাল্কি আলাউদ্দিনের তাঁবুর দিকে যাত্রা করল | পাল্কিগুলো তাঁবুর কাছে এমন জায়গায় থামল যেখানে পদ্মিনীর স্বামী রাজা রতন সিং বন্দি আছেন | আকস্মিকভাবে পাল্কি থেকে রানী পদ্মিনী ও তার পরিচারিকাদের পরিবর্তে নেমে এল সশস্ত্র সৈন্যবাহিনী | তারা রতন সিংকে মুক্ত করে নিয়ে যান আলাউদ্দিন কিছু বুঝে ওঠার আগে | এ ঘটনায় ক্ষুব্ধ সুলতান চিতোর গড় তছনছ করার জন্য মরিয়া হয়ে উঠলেন | তিনি চিতোর দুর্গ অবরোধ করে রইলেন | এ অবস্থায় রাজা রতন সিং দুর্গের ফটক খুলে দিয়ে শেষ রক্তবিন্দু পর্যন্ত লড়াই করে যাওয়ার জন্য রাজপুতদের নির্দেশ দিলেন | রাজার এই নির্দেশে রানী পদ্মিনী হতচকিত হয়ে পড়লেন | তিন বুঝতে পারলেন যে সুলতানের শক্তিশালী বাহিনীর সঙ্গে তাঁদের লড়াই করে জেতা সম্ভব নয় | এ অবস্থায় তাঁর সামনে দুটো পথ খোলা ছিল | হয় জহরপানে আত্মহত্যা, নয়তো রাজপুত রমণীসহ নিজেকে সুলতানের কাছে সমর্পণ করা | এদিকে প্রাসাদের বাইরে লড়াইয়ে রাজপুতদের পরাজয় ঘনিয়ে আসছিল | আলাউদ্দিন সদলবলে চিতোর দুর্গে ঢুকে পড়লেন |

নগর রক্ষার্থে রাজপুতগণ প্রাণপণে যুদ্ধ করে নিহত হলেন | দুর্গের অভ্যন্তরে রানী পদ্মিনীর সঙ্গে তেরো হাজার রাজপুত রমণী ‘জহরব্রতের’ অনুষ্ঠান করে প্রাণ বিসর্জন করলেন | তাঁরা জীবন্ত অগ্নিকুণ্ডে লাফ দিয়ে আত্মহত্যা করলেন |

আত্মহত্যা করা সৈন্য ও রানীদের ছাইভস্ম দেখে আলাউদ্দিন হতাশ হয়ে পড়েন | চিতোর গড় দখল করলেও রানীকে না পাওয়ার বেদনা তাকে প্রচণ্ড আহত করে |তিনি স্বীকার করতে বাধ্য হন হিন্দু নারীদের কাছে সম্মান জীবনের চাইতেও বড় |

এই আত্মমর্যাদাপুর্ণ পরম সাহসী রানীকে এস আমরা সবাই প্রনাম জানাই |


কোলকাতার রানী রাসমনি


উনিশ শতকে ব্যবসায়ী রাজচন্দ্রের সাথে রাসমনির বিয়ে হয় | রাসমণি খুব সুন্দরী, তেজস্বিনী ও ধর্মপরায়ণা রমণী ছিলেন | তিনি রাজচন্দ্রের তৃতীয় স্ত্রী ছিলেন | রাজচন্দ্রের আগের দুই স্ত্রী মারা যান |

রাসমণি চারটি কন্যার জন্ম দেন | তাঁর তৃতীয় কন্যার মৃত্যুর পর জামাই মথুরানাথ বিশ্বাসের সঙ্গে চতুর্থ কন্যার বিয়ে দেন এবং তাঁকে এসটেটের ম্যানেজার নিযুক্ত করেন | মথুরানাথ (মথুর বাবু নামে তিনি বিখ্যাত) সৎ এবং ধার্মিক লোক ছিলেন |

রাজচন্দ্র মারা গেলেন | স্বামীর শ্রাদ্ধের সময় দু’হাতে দান করলেন রাসমণি | তাঁর দয়ালুতার খবর সারা কলকাতা শহরে ছড়িয়ে গেল | স্বামীর নাম রাজচন্দ্র হওয়ায় রাসমণির নামের আগে মুখে মুখে ‘রাণী’ যোগ হয়ে গেল | রাণী রাসমণি সত্যিকারের রাণী ছিলেন না বটে, তবে পৃথিবীর অনেক রাণীই তাঁর সমকক্ষ ছিল না। কেননা, রাণী রাসমণি অকাতরে দান করছেন। অতুল বিত্ত বৈভবের মধ্যে থেকেও রাণী রাসমণি অত্যন্ত শুদ্ধাচারিণী ছিলেন |

রাণী রাসমণি একবার কাশী গিয়ে তীর্থ করবেন বলে মনস্থ করলেন | কাশী অনেক দূরের পথ তাই বজরায় অস্ত্রধারী প্রহরী এবং ছয় মাসের জন্য দরকারি খাদ্যদ্রব্য তোলা হলো | যেতে যেতে এক রাতে রাণী রাসমণি স্বপ্ন দেখলেন যে স্বয়ং মা কালী তাকে বলছেন, ‘গঙ্গাতীরে মন্দির প্রতিষ্ঠা কর |আমি তোর হাতের পুজা গ্রহন করব |’

পরদিনই রাণী রাসমণি বজরা থামানোর নির্দেশ দিলেন | সমস্ত জিনিসপত্র স্থানীয় দরিদ্রদের মধ্যে বিলিয়ে দিয়ে কলকাতার জানবাজারের বাড়িতে ফিরে এলেন | ম্যানেজার (মেয়েজামাই) মথুরবাবুকে ডেকে রাণী রাসমণি বললেন গঙ্গার তীরে জমি দেখতে |

গঙ্গার পূর্বতীরে দক্ষিণেশ্বর গ্রামে সাড়ে চুয়ান্ন বিঘা জমির উপর তৈরি হলো বিরাট স্নানের ঘাট; নির্মিত হলো দ্বাদশ শিবমন্দির, বিষ্ণুমন্দির, নবরত্ন চূড়াযুক্ত কালী মন্দির ও নাট মন্দির |

এদিকে ব্রাহ্মণরা বলল, জানবাজারের জমিদার পত্নী রাণী রাসমণি জাতে শূদ্র | তিনি মন্দির নির্মাণ করলে তা হবে অশাস্ত্রীয় | রাণী রাসমণি হতাশ হলেন তবে ভেঙে পড়লেন না | তিনি অনেক খরচ করে ব্রাহ্মণদের মুখ বন্ধ করলেন | কিন্তু ব্রাহ্মণরা এবার বললেন, মন্দিরের যাবতীয় সম্পদ কোনোও ব্রাহ্মণকে দান করতে হবে |তারপর সেই ব্রাহ্মণ যদি মন্দিরে বিগ্রহ প্রতিষ্ঠা করেন আর অন্নভোগের ব্যবস্থা করেন তবেই মন্দির প্রতিষ্ঠা শাস্ত্রসম্মত হবে |

খোঁজ করতে করতে রামকুমার ভট্টাচার্য নামে একজনকে পাওয়া গেল | রাণী রাসমণি দক্ষিণেশ্বরের কালী মন্দিরটি রামকুমার ভট্টাচার্যকে উৎসর্গ করলেন | মন্দির প্রতিষ্ঠার দিন ধার্য করা হলো জ্যৈষ্ঠ পৌর্ণমাসী তিথিযোগে জগন্নাথদেবের স্নানযাত্রার দিন (৩১ মে ১৮৫৫ খ্রিস্টাব্দ) | নিমন্ত্রিত এক লক্ষ অতিথি ছাড়াও যাঁরা যাঁরা এই মহা উৎসবে যোগ দেন রাণী রাসমণির নির্দেশে সবাইকে প্রচুর খাওয়ানো ও দান করা হয় | একজন ধর্মপরায়ণা ও দানশীলা নারী হিসেবে রাণী রাসমণির নাম আজও মানুষের মনিকোঠায় এক বিশিষ্ট স্থান নিয়ে আছে |

ব্রিটিশরা ওই সময় গঙ্গায় মাছ ধরার শুল্ক বাড়িয়ে দেয় | তার ফলে গরিব জেলেদের খুব কষ্টে পড়তে হয় |

রানী রাসমনি এর প্রতিবাদে গঙ্গার একটা দিক অবরোধ করে দিলেন এবং তার ফলে ব্রিটিশ পণ্য জাহাজের ওই পথে আনাগোনা বন্ধ হয়ে যায় | বাধ্য হয়ে ব্রিটিশ রাজ শুল্কের বৃদ্ধি মকুব করলেন |

রানী রাসমনি গঙ্গার ধারে বাবুঘাট, নিমতোলা ঘাট এবং আহিরীটোলা ঘাট নির্মানে আর্থিক সাহায্য করেন |

তাঁর এই মহৎ জীবনের সর্ব উল্লেখযোগ্য ঘটনা হলো দক্ষিনেশ্বর মন্দিরের প্রতিষ্ঠা | এই মন্দির ক্রমে পরমপুরুষ রামকৃষ্ণ পরমহংসের লীলাভূমি হিসেবে ভারতের ইতিহাসে একটি তীর্থস্থান হিসেবে বিখ্যাত |

যখন রামকৃষ্ণের কার্যকলাপ সবার চোখে পাগলের আচরণ বলে আখ্যা পায় তখন রানী রাসমনি আর তাঁর জামাতা মথুরবাবু রামকৃষ্ণের পক্ষ নেন এবং তাঁকে পাকাপাকিভাবে মন্দিরের পুজারী হিসাবে নির্বাচিত করেন | তাঁর নাম আজও কোলকাতার উন্নতির এক অতুলনীয় শরিক হিসাবে মানব হৃদয়ে গাথা |


ঝাঁসির রানী লক্ষীবাঈ


ঝাঁসির রানী লক্ষীবাঈ ছিলেন অসম সাহসী বীরাঙ্গনা নারী | তিনি মাত্র ১৮ বছর বয়সে বিধবা হন | ২২ বছরে মৃত্যু ... কিন্তু তারপরও ইতিহাস মনে রেখেছে এই অতুলনীয় নারীকে ... যিনি স্বাধীন ভারত প্রতিষ্ঠার প্রথম পর্বে রেখেছিলেন অসামান্য অবদান, হয়ে উঠেছিলেন স্বাধীনতাকামী ভারতবর্ষের মানুষের প্রেরণার উৎস|

১৮৩৫ খ্রিস্টাব্দের ১৯ নভেম্বর বারানসীর কাশি তে রানী লক্ষীবাঈ-এর জন্ম | বাবামা কন্যার নাম রেখেছিলেন মনিকর্ণিকা | অবশ্য আদর করে ডাকতেন মানু |

মেয়েবেলায় মানু মিশুকে এবং সুন্দর দেখতে ছিল বলে আত্বীয়স্বজনেরা ওকে ‘চামেলি’ বলেও ডাকতেন | শিক্ষাদীক্ষা অবশ্য ঘরেই হয়েছিল মানুর | চার বছর বয়েসে মা মারা যায় | বলতে গেলে বাবার কাছেই মানুষ | বাবা বিথুরেরর পেশোয়া দরবারে চাকরি করতেন | বিথুর জায়গাটা উত্তর প্রদেশের কানপুর শহরের কাছে | বিথুর- এর শাসক ছিলেন রাজা বাজী রাও পেশওয়া | মানু ছিল রাজার চোখের মনি |

এরপর মানুর বাবা মরোপান্ত তামবে ঝাঁসির মহারাজার দরবারে যোগ দিলেন। মানুর বয়স তখন ১৩।

ঝাঁসির মহারাজার নাম রাজা বাল গঙ্গাধর রাও নিউওয়ালকার | রাজার সঙ্গে বিয়ে হলো মানুর| স্বামীর সঙ্গে মানুর বয়েসের ফারাক ছিল চল্লিশ বছর | বিয়ের সময় মানুষ বয়স ছিল মাত্র ১৪ বছর | যা হোক। রাজা মানুর নতুন নাম দিলেন- লক্ষীবাঈ |

লক্ষীবাঈ কেবল অন্দরমহলে আটকে থাকতেন না | অশ্বারোহনসহ তীরধনুক শিক্ষা করতেন নিয়মিত | এমন কী ঘনিষ্ট সহচরীদের নিয়ে খেলাচ্ছলে গড়ে তুলেছিলেন সৈন্যের দল |

১৮৫১ সালে লক্ষীবাই - এর একটি পুত্রসন্তান হয় | রাজা সে পুত্রের নাম রাখেন দামোদর রাও | রাজা অসম্ভব ভালোবাসতেন পুত্রকে | কিন্তু শিশুটি অকালে মারা যাওযায় রাজা শোকগ্রস্থ হয়ে পড়েন | তারপর রাজা একটি শিশুকে দত্তক নেন এবং তার নাম রাখেন দামোদর রাও | কিন্তু তার অল্পকাল পরেই ঝাঁসির মহারাজা রাজা বাল গঙ্গাধর রাও নিউওয়ালকার মারা যান |

আনন্দ রাও যেহেতু ঝাঁসির রাজপরিবারের রক্তের সন্তান ছিল না সে হেতু তৎকালীন গর্ভনর জেনারেল লর্ড ডালহৌসি প্রবর্তিত নিয়ম অনুযায়ী ঝাঁসি ব্রিটিশ প্রশাসনের নিয়ন্ত্রনে চলে যায় | ১৮৫৪ খ্রিস্টাব্দে লক্ষীবাঈকে ৬০,০০০ রুপি পেনশন দেওয়া হয় এবং তাঁকে ঝাঁসির দুর্গ ত্যাগ করতে বলা হয় |

লক্ষীবাঈ পেনশন ভাতা প্রত্যাখ্যান করে ব্রিটিশ আইনবিদের সঙ্গে পরামর্শ করা সিদ্ধান্ত নেন। পরে লন্ডনের আদালতে শুনানীর জন্য মামলা দায়ের করেন | কিন্তু ব্রিটিশ আলাদত রানীর আপিল খারিজ করে দেন | রানীকে ঝাঁসি দুর্গ পরিত্যাগ করতে বলা হলো | কিন্তু ঝাঁসিকে মুক্ত রাখতে দৃঢ় শপথ নিলেন রানী লক্ষীবাঈ |

রানীর সামনে এক অভূতপূর্ব সুযোগ চলে আসে | ১৮৫৮ খ্রিস্টাব্দে ভারতবর্ষজুড়ে ব্রিটিশ বিরোধী সিপাহী বিপ্লব আগুন ছড়িয়ে পড়ে |

সিপাহী বিপ্লব অন্যতম কেন্দ্র হয়ে ওঠে ঝাঁসি । রানী লক্ষীবাঈ বিক্ষুব্ধ সৈনিকদের ব্রিটিশদের বিরুদ্ধে সংহত করতে থাকেন | অন্যান্য স্থানীয় রাজাদের সাহায্য কামনা করেন |

রানী লক্ষীবাঈ নিয়মিত সৈন্যের পাশাপাশি স্বেচ্ছাসেবকদের সমন্বয়ে প্রতিরক্ষা বাহিনী গড়ে তুলতে থাকেন। যে সৈন্যবাহিনীতে নারীরা যোগ দিয়েছিল | অভিজ্ঞ সেনাধ্যক্ষরা রানীর পাশে দাঁড়ালেন |

স্যার হিউ রস- এর নেতৃত্বে ১৮৫৮ সালের জানুয়ারি মাসে ব্রিটিশ সৈন্যরা ঝাঁসির অভিমূখে এগুতে থাকে | রানী অত্যন্ত কার্যকরী এক প্রতিরক্ষা গড়ে তোলেন | ব্রিটিশরা ঝাঁসি অবরোধ করে এবং তারপর যুদ্ধ শুরু হয়ে যায় | ব্রিটিশরা ঝাঁসির দুর্গে ভয়াবহ গোলা বর্ষন করতে থাকে | ঝাঁসি অবরোধকালে নারীরা সৈন্যদের জন্য খাদ্য ও অস্ত্রবহন করে | স্বয়ং রানী প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার তত্ত্বাবধান করতেন | অবশ্য মাত্র ১,৫৪০ সুশৃঙ্খল সৈন্য নিয়ে ব্রিটিশরা ঝাঁসি দখল করে নেয় | রানী পুরুষের ছদ্মবেশে রাতের অন্ধকারে সেই দত্তক পুত্রটিকে নিয়ে দেওয়াল টপকে পালিয়ে যান | ব্রিটিশরা ঝাঁসি জয় করে রাজ্যটিকে ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের সঙ্গে সংযুক্ত করে নেয় |

লক্ষীবাঈ কালপি নামক স্থানে শিবির স্থাপন করেন | অন্যান্য বিদ্রোহীর সঙ্গে তাঁর যোগাযোগ হয়। ...এর মধ্যে অন্যতম ছিলেন তাতিয়া তোপি | পুরুষের বেশে তিনি যুদ্ধক্ষেত্রে নামেন | কিন্তু ব্রিটিশদের সঙ্গে যুদ্ধ করে জেতা সম্ভব হলো না | ১৮৫৮ সালের ১৭ ই জুন লক্ষীবাঈ গোয়ালিয়র যুদ্ধে লড়তে লড়তে নিহত হন |

তাঁর অনুগত সৈন্যরা মৃতদেহটি গোপনে সরিয়ে ফেলে দ্রুত চিতায় তুলে দেয়। কেননা, ব্রিটিশ সৈন্য কর্তৃক লাঞ্ছিত হওয়ার আশঙ্কা ছিল।

রানী লক্ষীবাঈকে নিয়ে লেখা হয়েছে অজস্র গল্পকাহিনি আর আঁকা হয়েছে অজস্র ছবি ...
লক্ষীবাঈ সম্বন্ধে এক ইউরোপীয় উৎসে বলা হয়েছে ...
Because of her bravery, courage, and wisdom, and her progressive views on women's empowerment in 19th century India, and due to her sacrifices, she became an icon of Indian independence movement. The Rani was memorialized in bronze statues at both Jhansi and Gwalior, both of which portray her on horseback.


ভারতের বুলবুল সরোজিনী নাইডু


সরোজিনী নাইডু ভারতবর্ষের খুব জনপ্রিয় ও প্রভাবশালী মহিলা এবং "ভারতের নাইটিংগেল" বলে পরিচিত ছিলেন |সরোজিনী নাইডু ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেসের প্রথম মহিলা সভাপতি নির্বাচিত হন |স্বাধীন ভারতে তিনি উত্তরপ্রদেশ রাজ্যের রাজ্যপালও হয়েছিলেন |

১৮৭৯ খ্রিস্টাব্দের ১৩ ফেব্রুয়ারী হায়দ্রাবাদে তাঁর জন্ম হয় |তাঁর পৈত্রিক বাড়ি ছিল অধুনা বাংলাদেশ রাষ্ট্রের মুন্সীগঞ্জ জেলার লৌহজং উপজেলার কনকসার গ্রামে | তিনি ছিলেন বিজ্ঞানী, দার্শনিক ও শিক্ষাবিদ অঘোরনাথ চট্টোপাধ্যায় ও কবি বরদাসুন্দরী দেবীর জ্যেষ্ঠা কন্যা | অঘোরনাথ ছিলেন নিজাম কলেজের প্রতিষ্ঠাতা এবং তিনি ও তাঁর বন্ধু মোল্লা আব্দুল কায়ুম ছিলেন হায়দরাবাদের ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেসের প্রথম সদস্য |পরবর্তীকালে রাজনৈতিক আন্দোলনে অংশ নেবার জন্য তাঁকে কলেজের অধ্যক্ষের পদ থেকে পদচ্যুত করে হয় |

১৯ বছর বয়সে সরোজিনী ড. মুথ্যালা গোবিন্দরাজুলু নাইডুর সঙ্গে পরিণয়সূত্রে আবদ্ধ হন | সেই যুগে অসবর্ণ বিবাহ সমাজে নিষিদ্ধ ছিল | সরোজিনী ব্রাহ্মণ হলেও গোবিন্দরাজুলু ছিলেন অব্রাহ্মণ | ১৮৯৮ সালে মাদ্রাজে ১৮৭২ সালের আইন অনুযায়ী তাঁদের বিবাহ হয়| তাঁদের চারটি সন্তান হয়েছিল: জয়সূর্য, পদ্মজা, রণধীর ও লীলামণি | কন্যা পদ্মজা পরবর্তীকালে পশ্চিমবঙ্গের রাজ্যপাল হন |

বারো বছর বয়সে সরোজিনী মাদ্রাজ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ম্যাট্রিকুলেশন পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয় সমগ্র মাদ্রাজ প্রেসিডেন্সিতে প্রথম স্থান অধিকার করেন | ১৮৯১ সাল থেকে ১৮৯৪ সাল পর্যন্ত পড়াশোনা বন্ধ রেখে তিনি নানা বিষয় অধ্যয়ন করেন | ১৮৯৫ সালে ইংল্যান্ডে প্রথমে লন্ডনের কিংস কলেজ ও পরে কেমব্রিজের গার্টন কলেজে পড়াশোনা করেন| সরোজিনী উর্দু, তেলুগু, ফারসি ও বাংলা ভাষা শিখেছিলেন |


রাজনৈতিক জীবনের ইতিহাস

১৯০৫ সালে বঙ্গভঙ্গ আন্দোলনের পরিপ্রেক্ষিতে সরোজিনী যোগ দেন স্বাধীনতা আন্দোলনে | ১৯০৩ সাল থেকে ১৯১৭ সালের মধ্যবর্তী সময়ে তিনি গোপালকৃষ্ণ গোখলে, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, মহম্মদ আলি জিন্না, অ্যানি বেসান্ত, সি. পি. রামস্বামী আইয়ার, মহাত্মা গান্ধী, জওহরলাল নেহরু প্রমুখের সংস্পর্শে আসেন |

১৯১৫ সাল থেকে ১৯১৮ সালের মধ্যবর্তী সময়ে তিনি ভারতের নানা স্থানে যুবকল্যাণ, শ্রমের গৌরব, নারীমুক্তি ও জাতীয়তাবাদ বিষয়ে বক্তৃতাদান করেন | ১৯১৬ সালে জওহরলাল নেহরুর সঙ্গে সাক্ষাতের পর তিনি চম্পারণে নীলচাষীদের হয়ে আন্দোলন শুরু করেন | ১৯২৫ সালে তিনি কংগ্রেস সভাপতি নির্বাচিত হন। তিনিই ছিলেন কংগ্রেসের প্রথম মহিলা সভাপতি |

১৯১৯ সালের মার্চ মাসে ব্রিটিশ সরকার রাওলাট আইন জারি করে সকল প্রকার রাজদ্রোহমূলক রচনা নিষিদ্ধ করে | এর প্রতিবাদে গান্ধীজি অসহযোগ আন্দোলন সংগঠিত করলে সরোজিনী সর্বপ্রথমেই আন্দোলনে যোগ দেন | পরে ব্রিটিশ সরকার এই আন্দোলনের উপর ব্যাপক দমননীতি প্রয়োগ করে |

১৯১৯ সালের জুলাই মাসে সরোজিনী ইংল্যান্ডে হোমরুল লিগের দূত মনোনীত হন | ১৯২০ সালের জুলাই মাসের তিনি ভারতে প্রত্যাবর্তন করার পর, ১ অগস্ট গান্ধীজি অসহযোগ আন্দোলন ঘোষণা করেন | ১৯২৪ সালের জানুয়ারি মাসে তিনি পূর্ব আফ্রিকান ভারতীয় কংগ্রেসের দুই জাতীয় কংগ্রেস প্রতিনিধির অন্যতম রূপে নির্বাচিত হন |

১৯২৮ সালের অক্টোবর মাসে তিনি নিউ ইয়র্ক সফর করেন | এই সময় যুক্তরাষ্ট্রে আফ্রিকান আমেরিকান ও আমেরিইন্ডিয়ানদের প্রতি বৈষম্যমূলক আচরণের নিন্দা করেন তিনি | ভারতে প্রত্যাবর্তনের পর তিনি কংগ্রেস ওয়ার্কিং কমিটির সদস্য নির্বাচিত হন |

১৯৩০ সালের ২৬ জানুয়ারি জাতীয় কংগ্রেস ব্রিটিশ সাম্রাজ্য থেকে স্বাধীনতা ঘোষণা করে। ৫ মে গান্ধীজিকে গ্রেফতার করা হয় | এর অনতিকাল পরেই গ্রেফতার হন সরোজিনী | এই সময় কয়েক মাস তিনি কারারুদ্ধ থাকেন | ১৯৩১ সালের ৩১ জানুয়ারি, গান্ধীজির সঙ্গে সঙ্গে তাঁকেও মুক্তি দেওয়া হয়। সেই বছরেই পরে আবার তাঁদের গ্রেফতার করা হয় | স্বাস্থ্যহানির কারণে অল্পদিনের মধ্যেই ছাড়া পেয়ে যান সরোজিনী। গান্ধীজি মুক্তি পান ১৯৩৩ সালে | ১৯৩১ সালে গান্ধীজি ও পণ্ডিত মালব্যের সঙ্গে তিনিও গোলটেবিল বৈঠকে যোগ দেন | ১৯৪২ সালের ২ অক্টোবর ভারত ছাড়ো আন্দোলনে অংশ নেবার জন্য তাঁকে পুনরায় গ্রেফতার করা হয়েছিল | এই সময় তিনি গান্ধীজির সঙ্গে ২১ মাস কারারুদ্ধ ছিলেন |

মহাত্মা গান্ধীর সঙ্গে সরোজিনী নাইডুর সম্পর্ক এতটাই অন্তরঙ্গ ছিল যে গান্ধীজিকে তিনি "মিকি মাউস" বলেও ডাকতেন |

১৯৪৭ সালের মার্চ মাসে সরোজিনী নাইডু এশীয় সম্পর্ক সম্মেলনের স্টিয়ারিং কমিটির পৌরহিত্য করেন |

১৯৪৭ সালের ১৫ অাগস্ট স্বাধীনতার পর সরোজিনী নাইডু যুক্তপ্রদেশের (বর্তমানে উত্তরপ্রদেশ) রাজ্যপাল নিযুক্ত হন | তিনিই ছিলেন ভারতের প্রথম মহিলা রাজ্যপাল |

এইবার নিয়তি তাঁকে আজীবন কর্মরত অবস্থা থেকে মুক্তি দেবার জন্য ডাক দেন |

১৯৪৯ সালের ২ মার্চ উত্তরপ্রদেশের রাজধানী এলাহাবাদে কার্যরত অবস্থায় হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে তাঁর মৃত্যু হয় |

কি বলার আছে এর পর ? লেখনী যে আর চলতে চায় না | এই অতি অসামান্য বিদুষী মহিলা যুগ যুগ ধরে সমগ্র মহিলাজাতির পথপ্রদর্শিকা হিসেবে সম্মানিত হন |

সরোজিনী নাইডুর রচনাসমূহ :
The Golden Threshold
The Bird of Time: Songs of Life, Death & the Spring
The Broken Wing: Songs of Love, Death and the Spring
The Sceptred Flute: Songs of India
The Feather of the Dawn

বীরাঙ্গনা চাঁদ সুলতানা


ভারতবর্ষে মুঘল সম্রাট, ‘মুঘল-এ-আজম' জালালউদ্দিন মহম্মদ আকবরের রাজত্বকালে (১৫৫৬-১৬০৫ খ্রি:) দাক্ষিণাত্যের আহমদনগর রাজ্যে বীরাঙ্গনা স্বাধীনতা সংগ্রামী চাঁদ সুলতানা সম্পর্কে জানা যায় |বীরাঙ্গনা চাঁদ সুলতানা ছিলেন আহমদনগরের হুসাইন নিজাম শাহের যোগ্য, কন্যা এবং বিজাপুরের প্রথম আলী আদিল শাহের বিধবা পত্নী |

সম্রাট আকবর ১৫৬১ খ্রি: হতে ১৫৯৫ খ্রি: পর্যন্ত প্রায় ৩৪ বছর যুদ্ধ-বিগ্রহ পরিচালনা করে কান্দাহার হতে বাঙ্গাল মুলুক পর্যন্ত উত্তর ভারতের বিস্তীর্ণ অঞ্চলে আধিপত্য বিস্তার করেন | এরপর সম্রাট দক্ষিণ ভারতে অভিযান পরিচালনা করে রাজ্য বিস্তারের পরিকল্পনা গ্রহণ করেন |

দাক্ষিণাত্যে প্রথম মুসলিম অভিযান পরিচালিত হয়েছিল ভারতবর্ষের সুলতান আলাউদ্দীন খলজীর রাজত্বকালে (১২৯৬-১৩১৬ খ্রি:) | ১৩১০ খ্রি: সীমিত আকারের এ অভিযান সফল হয়েছিল | দাক্ষিণাত্যের হিন্দু রাজ্য বিজয়নগরের পতনের পর আহমদনগর, বিজাপুর, গোলকুন্ডা এবং খান্দেশ ইত্যাদি ছোট ছোট মুসলিম রাজ্যে রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা, অরাজকতার সুযোগে সম্রাট আকবর সেখানে মুঘল প্রভুত্ব প্রতিষ্ঠার জন্য সচেষ্ট হন | এ লক্ষ্যে ১৫৯১ খ্রি: আকবর দক্ষ কূটনীতিবিদদের প্রেরণ করে স্বাধীন রাজ্যগুলোর আনুগত্য লাভের চেষ্টা করেন | এতে আহমদনগর আর খান্দেশ ব্যতীত অন্যান্য রাজ্যগুলো, যেমন- বিজাপুর, বিদর, গোলকুন্ডা সম্রাট আকবরের বশ্যতা স্বীকার করে | এ থেকে আহমদনগর ও খান্দেশের সঙ্গে বিরোধ থেকেই যায় | এ বিরোধ সৃষ্টি হলে সম্রাট সেনাপতি আব্দুর রহমান খান-ই-খানান ও যুবরাজ মুরাদের নেতৃত্বে প্রথমে আহমদনগর অভিযানের জন্য এক বিশাল সৈন্যবাহিনী দাক্ষিণ্যত্যে প্রেরণ করেন | ১৫৯৫ খ্রি: আহমদনগর রাজ্য মুঘল সৈন্যবাহিনী দ্বারা অবরুদ্ধ হয়ে পড়ে | তখন মুঘল বাহিনীর সঙ্গে আহমদনগরের সংঘর্ষ অনিবার্য হয়ে পড়ে | শোনা যায় এ সময় মুঘল সেনাপতিদ্বয়ের মধ্যেও বিরোধ সৃষ্টি হয়েছিল। মুঘল বাহিনীর অবরোধের বিরুদ্ধে আহমদনগর বাহিনী বীরাঙ্গনা চাঁদ সুলতানার যোগ্য নেতৃত্বে শক্তিশালী প্রতিরোধ গড়ে তুলেছিল | চাঁদ সুলতানার অসীম বীরত্ব, নির্ভীক দৃঢ়তা আর রণকৌশলে উন্নত অস্ত্রে সজ্জিত, দক্ষ ও বিশাল মুঘলবাহিনীর অবরোধ কার্যকর হয়নি |

দুঃসাহসী এই মহিয়সী নারী বিশাল মুঘলবাহিনীর বিরুদ্ধে যে তীব্র প্রতিরোধ গড়ে তুলেছিলেন তা মধ্যযুগের বীরত্ব গাথা হিসেবে আজও অতুলনীয় | এই বীরাঙ্গনা দুর্গ প্রাচীরে দাঁড়িয়ে দক্ষ সেনাপতির মত সৈন্য পরিচালনা করেছিলেন, বর্ম পরিহিত অবস্থায় তরবারি হাতে সৈন্যবাহিনীকে যুদ্ধে উৎসাহিত করেছেন | মাথায় উড়নি দিয়ে তিনি গোলন্দাজ বাহিনীকে কামান বসানোর স্থান নির্ণয় করে দিতেন। দুর্গ প্রাচীরে দাঁড়িয়ে মুঘল সৈন্যদের উপর পাথর নিক্ষেপ তদারক করতেন | নৈশকালীন যুদ্ধে তিনি কর্তব্যরত সৈন্যবাহিনীর পাশে দাঁড়িয়ে উৎসাহ দিতেন | বীরযোদ্ধা কবি নজরুলের ভাষায় বলা যায়, ‘মার হাঁক হৈদরী হাঁক/কাঁধে নে দুন্দুভি ঢাক/ডাক্ ওরে ডাক/মৃত্যুকে ডাক জীবনপানে |’’ শত্রুবাহিনীর অবিরাম গোলাবর্ষণে দুর্গ প্রাচীরে ফাটল সৃষ্টি হলে তিনি নিজে তা মেরামত কাজের তদারক করতেন | এর ফলে অবরোধকারী মুঘল বাহিনী বার বার ব্যর্থতার কারণে হতোদ্যম হয়ে পড়ত | অবশেষে দীর্ঘদিন অবরোধের পর মুঘলদের সঙ্গে ১৫৯৬ খ্রি: চাঁদ সুলতানার একটি সমঝোতা চুক্তি সম্পাদিত হয় | চাঁদ সুলতানা নাবালক ভ্রাতুুত্র বাহাদুর নিজাম শাহের অভিভাবিকা ছিলেন | প্রতিটি রাজকার্য ও সৈন্য পরিচালনায় চাঁদ সুলতানা ছিলেন দক্ষতা ও সুখ্যাতির অধিকারিণী | পরবর্তীতে বাহাদুর মুঘলদের বশ্যতা স্বীকার করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ হন | বেরার সম্রাট আকবরকে ছেড়ে দেয়া হয় | আমীর-ওমরাহ্দের ষড়যন্ত্র আর সীমান্ত সংঘর্ষের কারণে ১৫৯৭ খ্রি: মুঘল বাহিনীর সঙ্গে দাক্ষিণাত্যবাসীদের দ্বিতীয় যুদ্ধ শুরু হয় | অভ্যন্তরীণ কোন্দলের কারণে বীরাঙ্গনা চাঁদ সুলতানাকে সম্ভবত বিষ প্রয়োগে হত্যা করা হয় | এরপর আহমদনগর ১৬০০ খ্রি: মুঘল সাম্রাজ্যভুক্ত হয়ে যায় | জন্মভূমি প্রিয় আহমদনগরের স্বাধীনতা অক্ষুণ্ণ রাখতে বীরাঙ্গনা চাঁদ সুলতানা যে সংগ্রাম করে গেছেন সে সম্পর্কে প্রখ্যাত ভারতীয় ঐতিহাসিক ঈশ্বরী প্রসাদ লিখেছেন, ‘‘এমনকি মুঘল ইতিহাসেও চাঁদ সুলতানার মত এরূপ বীরত্বপূর্ণ ও আত্মত্যাগের কাহিনী খুবই বিরল |’’ মধ্যযুগীয় বীরগাথায় চাঁদ সুলতানার নাম অমর হয়ে আছে একজন বীরশ্রেষ্ঠা হিসেবে।