সোমবার, ৩১ ডিসেম্বর, ২০১২

এই সংখ্যার কবি - বিদিশা সরকার

বিদিশা সরকার - জন্ম -১৯৬৩, মূলত শূন্য দশকের কবি, বিবেকানন্দ কলেজ থেকে স্নাতক পরে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অসমাপ্ত এম এ আত্মজীবনীমূলক কবিতার স্বরে লিখেছেন বহু পত্র পত্রিকায় । উল্লেখযোগ্য কাব্যগ্রন্থ - যার সঙ্গে থাকি, শূন্যের মাঝারে, ঈশ্বর গোপনে আসে
পরবাসে
বিদিশা সরকার

(১)
ঝুল বারান্দার নীচে চলমান শ্রমিক শহর
পার্কের কোনায় এক স্বপ্ন নিরুত্তর
গাছ গাছালির ফাঁকে শহুরে সূর্যের
                             তীর্ষক ঝলক!


(২)
সবই আছে, তবু যেন কিছু নেই
ভীষন শহুরে সব বিনোদন
পাহাড়ি রাস্তায় পাহাড়ি নির্যাস নেই, শুধু স্পীড
আর তুই ও রোমিং দুরত্বে।


(৩)
তোর প্রাকৃতিক বর্ণনার বলিহারি যাই
আপেল গাছের নীচে বসে
ফলন্ত কিছুই চোখে পড়ল না
দেবদারু হাওয়ার শব্দে জানলা বন্ধ করে দিলে
নির্বাসন, শুধু নির্বাসন
গরাদ প্রকট হয়, বনসাই যত্নে বাড়ে মিনারেল জলে।


(৪)
এ ঘরে ছায়ার লিরিক
কবিতা সরিয়ে তোকে কাছে টেনে নিলে
ঘটে যাওয়া জানি বাস্তবিক
হঠাৎ আছড়ে পড়ে দামাল সমুদ্র
                          কোভালাম বীচে ...


(৫)
চিঠি লিখি, ছিড়ে ফেলি
যেন বাল্যপ্রেম!
মোমের আলোয় কাঁপে দুরত্বের কিছু অনিশ্চয়
সিটি ট্যুর সেরে ফেরে “যাত্রা ট্যুরিজম”


(৬)
ঝড় থেমে গেলে বৃষ্টি নামে
ছাদের দরজা কেউ বন্ধ করে না
আকাশের মুখোমুখি হতে ভয় করে
এ্যাতোটা বিশাল হতে তুমিও পারবে না


(৭)
দাগের মত দাগ হলে
প্রকাশ্যে আনব জখম
এখানে বলির আগে ঢাক বাজে
প্রযোজক স্ক্রীপ্ট রাইটার!


(৮)
ভুল থেকে ভুল ঘরে আরও ভুল ঘরে
ভেষজ ইচ্ছারা সব আসা যাওয়া করে


(৯)
আর কি কি দিবি
ভোডাফোন, টক্ টাইম
                        প্রেমের পাঁচন
বিষ দিচ্ছি বিষ নিচ্ছি
                        এসো বৃন্দবন


(১০)
বাজার জানিনা
শপিং মলেও থাকে ভাষা বিনিময়
ক্রেতার পরখ

এখানে পাগল নেই
একটাও নেই ?
শপিং মলেও নেই

কার সঙ্গে কথা বলি তবে ?


(১১)
আবার এসেছ বাঁধভাঙ্গা
অ্যালবাম খুলে বসি
মার শৈশব
বাতাসিয়া লুপ থেকে উঁচুর আকাশ
হঠাৎ মেঘেরা এলো
ভেজা ভেজা মেঘেরা আবার
আমরা হারিয়ে গেছি অন্ধকারে
স্বপ্নে হারিয়ে যায় যেভাবে টাওয়ার


(১২)
এভাবে আসতেই পারো
গান হয়ে, ডেটল সাবান
এভাবে টার্কিস হয়ে
এভাবে গিজার
সেমিকোলনের পর এভাবে আসতেই পারো
                                     অসমাপ্ত স্থান...


(১৩)
এদেশে আমদানি হয়, রপ্তানিও হয়
ভোগবাদ মাথাপিছু, ওপেন রেস্তোরা
আমি তো মহুয়া ঘোরে ভাঙ্গাচোরা রাত
ক্ষেপনাস্ত্রে বিদ্ধ হই, এমন মরিয়া!


(১৪)
একবার মাঠে এসো, আমাদের মাঠে
মেরুন সবুজ আর গোল পোস্টে
রেফারি ভাবুক!
তবে খেলা কেন
মাঠেই রচনা হ’ক বইমেলা
মন্ত্রীরাও টিকিট কাটুক –


(১৫)
যদি বলি পড়ে ফেল সবটুকু,
সবটুকু আগাথা ক্রিষ্টির
হত্যা, আত্মহত্যা সব ষড়যন্ত্র
পড়ে ফেল ফুটপাতে শীতে
জড়োসড় ঘুম আর রোয়াকের শ্বাপদ ছায়ায়
আমার ট্রিলজি, শৈশবের সেই রানওয়ে
জেরুজালেমের আস্তাকুঁড়
সারারাত জেগে পড় ঋতুর সংহার


(১৬)
গান থেমে গেলে বাঁচব কিভাবে
সব আয়োজন বৃথা হলে
এ ওয়ান সিটি উচ্চকিত
অথচ ময়ূর ঘোরে এ ঘরে ও ঘরে!


(১৭)
গোছানো হলোনা, ঘরদোর জেগে থাকে
গোছাবো কখন
পেপারওয়েট চাপা আমার কবিতা