মঙ্গলবার, ২ এপ্রিল, ২০১৩

থমকে সময়, তোমার পায়ে - দিবাকর দাস

থমকে সময়, তোমার পায়ে
দিবাকর দাস


দিগন্তটা একদম সামনে, কী আছে ওর ওপাশে, তার যা--খোঁজই চলছে জীবনভর। যে কজন স্মৃতিজন্মা সেই অদেখার খোঁজ নিয়ে পলাশ-শিউলির মত টুপ করে ঝরে পড়ে এই ভূমিতে -- গণেশ পাইন তাদের মধ্যে অগ্রগন্য। ভবিষ্যতের শিল্পীরা অবন-যোগেন-পাইন নামক মাইলফলক দেখেই সংখ্যাছবি চিনে যায়। কলকাতার সিমা প্রদর্শনশালায় তার সারা জীবনের শ্রেষ্ট শিল্পকর্মের মধ্যে দাঁড়িয়ে এই অনুভূতিই হল। আমাদের দৃষ্টি শেষ হয়ে যায় দিগন্তে। আর ওনার ছবি শুরুই হয় দিগন্ত থেকে। অর্থাৎ সবই চতুর্থ ভুবনের (4th dimention) কথামালা। কী থেকে যে কী হয় শিল্পীও কি তার খবর রাখে ছাই ? তাঁর সৃষ্টিকর্মের সামনে দাঁড়ালেই টের পাওয়া যায় -- মাতাল সমীরণ সব ওলট পালট করে দিয়েছে। পপ-কর্ন ফোটার আনন্দ। এক একটা ছবি যদি দুই-তিন মাস ধরে আঁকা হয়, তবে তো এরকম হবেই। শুরু হবে বোধের একস্তর থেকে, উন্নীত হয় অন্যস্তরে। আমাদের জীবন, সে তো পুতুল খেলা -- তার প্রকাশ ছড়িয়ে আছে মহাভারত বিষয়ক সব ছবিতে।


মন্দার বোস অমর, কেজরিওয়াল ও তাঁর কয়েক প্রজন্ম নিশ্চিন্ত, রাখীদি গর্বিত, মনে আনন্দ ও বেশ কিছু শব্দ কোলাহল শিল্পীকে স্মরণ করে পাওয়া যাবেই। আমার বাবা কদিন আগেই বলছিলেন (ওর ছবি দেখে), কী সব ছাই ভষ্ম টাঙিয়ে রেখেছিস ঘরে ...। তিনিই এখন বিচলিত, খবরের কাগজে ওনার মৃত্যু সংবাদ পড়ে। হায় পাইনবাবু, আপনি ঠিকদেশে ভুল মানুষের মাঝে টপকে পড়েছেন। এখানে আপনার নামের কদর আছে। কামের সাথে পরিচয় মুষ্টিমেয় কয়েকজনের। আর আপনার বোধ ? ঠহর করা যায় না বলেই আপনার শিল্পচিন্তা বিষয়ক অভিজ্ঞতার চিঠিপত্র এই দামে লোকে কেনে ...


আমিও তো বুঝি না, চেয়ে থাকতে ভালো লাগে তাই দেখি ...

দিগন্ত রেখাটা একদম সামনে।