সোমবার, ১৬ জুন, ২০১৪

গুচ্ছ কবিতা - হিমাদ্রী মুখোপাধ্যায়

চল আজ চল





আলোর সাকিন বিছিয়ে দিল  জাহ্নবী ভোর,

আগুন আগুন আগুন আমার বুকের হাফর।

পাখ-পাখালি উড়াক কলি আলতো গানের 

আলোর তুলি আঁকুক ছবি অভিমানের...

মন পিয়াসার গল্প তাকে শোনায় পাগল 

সুখ সুখ সুখ এখন অসুখ চোখের কাজল,

পায়ের তলে পড়ছে গলে এই নিরালা 

দিন-মাস-সাল ক্রমেই বিফল বর্ণমালা

আই তোকে আজ একটা চুমু অবাধ্যতার 

বুলিয়ে দেব প্রেমের তুলি ঠোঁটের পাতার 

তখন আঁচল উড়িয়ে দেবে লাজুক হাওয়া_

পাথর পাথর পাথর আমার স্বপ্ন চাওয়া

চোখ বিছিয়ে বসেই আছি কাকতাড়ুয়া-

কষ্ট চিনে নষ্ট হওয়ার প্রথম ছোঁয়া-

লাগল চোখে, কানেও যেন বাজল নুপূর
 
নষ্ট নষ্ট কষ্ট আমার একলা দুপুর_

দুপুর দুপুর দুপুর জুড়ে রোদের মিছিল

হাসির ভাঁজে চমকে ওঠা একখানা তিল -

নজরদারির পাঁচিল গলে ছায়ার ডানা _

চল আজ চল হারিয়ে ফেলি সব ঠিকানা





সংকেত 

 

সুখ চিনি আর ব্যবচ্ছেদ কে চিনি

কাল চিনতে আকাল বেলাও চিনি,

রূপের ভিড়ে অরূপ খুঁজে খুঁজে -

সুখের ঘরে অসুখ বেচি কিনি

ভালো থাকা একেই বলি বটে 

প্রতিদিন তো অনেক কিছুই রটে _

নীলগাভি-দিন চমকে ওঠে ক্ষেতে,

কামরাঙা রোদ পৌষালি ধানশিষে 

শালিকমতির বিপন্ন বন্দিশে  

পদ্মাবতী মেঘ কে ডাকে রাখালি সংকেতে

এসব কথা থাকুক না হয় আজ,

মুলতুবি থাক - মনের বিরুদ্ধতা 

আজকে না হয় মেঘের জন্য জাগি?

এবং কাঁকড়া জন্মের ঠোঁটে রাখি এই মুগ্ধতা



ভালবাসা 



দু'চোখে আগুন রেখে পুড়িয়েছি প্রথাগত ঘুম,

নিবিড় সান্নিধ্যে এসে কক্ষচ্যুত হয়েছিল রাত 

তুমিও বদলে গেলে বদলালো চেনা মরশুম

সোহাগি মেহেন্দি রঙে আঁকা হল আলোক প্রপাত;

আলো তো নিভৃতে জ্বলে, তার কথা বলছিনা আজ 

তোমার বুকেও জানি জেগেছিল আকাঙ্খার হাত!

সে হাত ছুঁয়েছি যেই - খুলে গেল অলিক দেরাজ 

অপরূপ আলো চিনে পুড়েগেল মোহমুগ্ধ চোখ 

পিপাসা ইঁদারা হয়ে গাইল সে সুখের কোলাজ

আমাকেও স্তব্ধ করে ফিরেগেল সোনালি আলোক,

তাই আমি অন্ধ আজ - ছুঁয়ে ফেলি ফেনিল কুয়াশা

হৃদয় ঢেঁকেছে তার হংসিনী মেঘের পালক-

বাতাসে উড়ছে তার সোনাঝুরি অগনন আশা _

মাঝে মাঝে সাপ হয়ে- সুখ গিলে খায় ভালবাসা... 




ক্ষুধা 

 


মৃত্যুগন্ধি চোখের কোনে মত্স্যবতী জল 

কদম তলায় শাপিত রাধার প্রেমবুটি আঁচল;

কক্ষচ্যুত রাত্রি এলে - বক্ষচ্যুত ভয় 

বন্ধু হলেই সুজন তবু কাহ্না তা নয়

প্রেম প্রেম প্রেম খিদে এখন- শরীর গিলে খায় 

রাত্রি নামে, রাত্রি এখন - রাত্রি ফিরে যায়...

চন্দ্রাতপে আধখানা বুক ক্ষুধার হাতে ছাড়া 

আর কিছু নয় রোজ দু'মুঠো ভাত জুটাতে পারা _


ভাতের জন্যে রাতের কাছে শরীর বাধা রেখে -

রাধা এখন পতিতালয়ে খরিদ্দারি শেখে...