সোমবার, ১৬ জুন, ২০১৪

গুচ্ছ কবিতা - বিকাশকুমার সরকার

লিঙ্গ-লজি




প্রণয়, ঢালের মতো এই ধারনায় সারা দুনিয়া ঘোরে

টানটান উত্তেজনা, থোড়াই কেয়ার করে

প্রকৃত প্রস্তাবে আবার গলেও পড়ে, তার এই দীনতা

অপূরনীয় ক্ষতিকারক পোকার মতো প্রাত্যহিক জীবনে থাকা, - দাগা

জমাটি রান্নায় হাত পাকিয়ে তৈরী করে আরও গভীর জট

আলাদা আলাদা স্বাদের ষড়যন্ত্রে সবাইকে একা করে দিলো?

আকারের ভিন্নতায় দক্ষতার আঁচড়ে ফুটে ওঠা দু-একটা মুখ

রূপদানে এই রহস্যময় মনিবকে যে ক্যাশে নিয়েছে

তাতেই ধন্য যন্ত্রণার ভূমি আবাদের অযোগ্য হয়ে আছে

এই কুতর্কে তেহাই দিয়ে এখনও কেউ কেউ আলাপ করতে এসে

দাম্ভিক নরের কাছে কলাকার সাজে

আর প্রজনন পরবে মাতে...






আলোর থেকেও বেশি সরল অন্ধকার!

সবাইকে সমপরিমান ঢেকে রাখে






রোগ




ঘুমও আর ঘুমোতে পারছে না

সাড়া দেবার এটাই নাকি স্বাভাবিক পথ

সবাই অপলক তার দিকে চেয়ে থাক!





অবাক হবার বহু ভঙ্গিমাই তো আজ লজ্জার



আকাশ শাওয়ারের নীচে সভ্যতার চাপানো সুতো না খুলে

যারা চানঘরে ঢোকে, তারা কি আর জোছনা মাখতে পারে




শূন্য সময়ের ফকিরও তাই লাটাইয়ে রোল করে রাখলো নিজেকে

ছাড়তে পারলো না সুতো, আকাশে





মঞ্চ


তোমার স্বপ্নের কাগজে আজও আমার দুঃস্বপ্ন ছাপা হল না

তবু মগজমাটিতে এখনও ফসল ফলে

ফলনের সেইসব সাফল্য লিখে লিখে পাঠিয়ে দিচ্ছি

                           নানান দপ্তরে

অনেকেই সাড়া দিয়েছে, তুমিই শুধু খাপ খুলছো না তরোয়ালের

সহজাত এই পিনোন্নত প্রতিভা আটকে থাকবে খোরাকের খোপে?

তাহলে তুমিও কিন্তু হারাবে এই স্বাভাবিক শিল্পসত্বাকে





দাঁড়ানো একটা লোক শুধুই কি দাঁড়িয়ে থাকার অভিনয় করে যাবে






টণ্টটিজ




রহস্যে নৌকা ভাসিয়ে জেলে, জাল ফেলে জলে

তরলে ডুবে থাকার ঘোরে আচমকা ওপরের ডাক শুনে

তল্পিতল্পা গোটানোর আগেই ঠাকুমা রেকাবি ছেড়ে ওঠে

অদৃশ্য হাতপাখায় হাওয়া দেয় শুধু, হাত নড়ে...

মোহমাছের পাখনা এই ফাঁদে অকেজো হয়ে পড়ে

সাততাড়াতাড়ি ছাড়িয়ে এনে তাদের

খলুইয়ে রাখলেই শৃঙ্খল পরে খলবল করে।

 



জন্ম আর মৃত্যুর পর...



ঘরের গোছানো গোরে শুয়ে আছি চুপ করে

যতদিন না ছুঁয়ে দিচ্ছে ছত্রাক আত্মার আশ্রয়
                           
  সুগন্ধ ছড়াক

এই বিশ্বাসে ভর করেই এখনও বিভোর...

ভেদ করি দুরূহ দাঁড়ি! যা সবাইকে ভাবাবে

আর দূর্গন্ধের দুয়োরে এসে দাঁড়াবে

কেউ বা কয়েকজন, খাটিয়ায় করে নিয়ে যাবে

শ্মশানের মতো মাংস মাটি করার মেশিনে

এই তো জীবনচক্র, আয়ুরেখা দিয়ে আঁকা চিত্র




জানো, এখন এইসব দক্ষ দুহাতের দুঃখ

মায়ার মতো মাথায় খেলা করে



এতদিন অনেকের আমি, এখন শুধুই হাওয়ার




জীবনগাড়ি



পাশাপাশি স্লিপারে শুয়ে, দুটো রেললাইন, ধরে

দূর-কথোপকথনে একদল, যাত্রীযানে

গন্তব্য নামের প্রতিবন্ধকতায় পৌঁছায়



এই আলাদা আধার কিছুতেই এক হল না একে অপরে

গায়ের পথে এমন ধাতব পদচারনা, তারপরও

একটা মিলনাত্মক মানে বহন করে



এই উদ্দেশ্য আগুনে হোম করা সাজে

মনও অনুসন্ধানের সামনে অস্থির, তাহলে যাওয়া

শ্মশানে ব্যাগভর্তি হাড়মাস থুয়ে জীবন নিয়ে হাওয়া




অক্সিজেন নিয়ে প্রাণীকূল জীবিত

ধড় থেকে বেরোলেই সবার

প্রকৃতির প্রয়োজনেই রক্তে যৌবন নোঙর ফ্যালে




পরিপূরক হয়ে ওঠে বিপরীত সৃষ্টাঙ্গে

ব্যবহারে বড় একা হয়েও

চালনার জন্য লাগে



ধাতব এই দাঁড়ির দুদিক দিয়ে

তৃতীয় একটা তরঙ্গ, তবু


চলাচল করে।