সোমবার, ১৬ জুন, ২০১৪

দুটি কবিতা – শাফিনূর শাফিন

অসুখ -




 শৈশবের বন্ধ কবাটে খুলে রাখা



ছয় নাম্বার চুড়ি,

গোলাপি অ্যাপ্রন

হাতের তালুতে  রাখা   মাংসপিন্ড

স্ক্রিনে ভেসে ওঠা  ইসিজির স্বরলিপি

পানপাতা জরায়ু

অসুখের শব

নিঃসঙ্গ আঙুলের সমস্ত শোক-

তোমাদের  পেছনে ফেলে রেখে 

আমি  উঠে  আসি।

আমার জন্য কোন রাস্তা দাঁড়িয়ে থাকে না




নিঃশব্দতার রঙ, বর্ণ, স্বাদ আছে।

আছে তার ঘাসফুল সৌরভ

কখনো ভ্রম হয় তার গন্ধ পাই, 

ডুবে যাই তার অসহ্য    নীলিমায়।

অমলরাত্রি

আমায় তুমি চেনা সুরে বেঁধো না!





অসুখ -



আমি টের পেতে থাকি কীভাবে কীভাবে যেন 

আমার শরীরে গজিয়ে উঠছে

একটা শহর, পকেটে মার্বেল গুঁজে পৌরাণিক পথঘাট, 

থমকে-দাঁড়ানো ঝাউপাতা , কার যেন চিৎকার!

একটা মরচে-ধরা গেইট ঠেলে, দূরে-ছুঁড়ে-ফেলা শৈশব থেকে
 

ভেসে আসে বাচ্চাদের সুর-করে-খেলতে-থাকা,

"মেলা গো মেলা, আমরা সবাই খেলা, একটি মেয়ে বসে আছে, 

তার কোনো বন্ধু নাই, ওঠো গো ওঠো, চোখের পানি মোছো!"...






ঘুমের মতো স্নান মানুষের সবচেয়ে একান্ত। 

আচমকা বাথরুমের দরজা খুলে অর্ধোউন্মাদিনীর একবিষদৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকা!




সুর মিলিয়ে যায়! শৈশব মিলিয়ে যায়!





একদিন এক পাগল জ্যান্ত মুরগি হাতে নিয়ে দৌড়ে

রাস্তার মোড়ের হোটেলের সামনে জ্বলন্ত কড়াইতে ছেড়ে দিল।

আমি টের পাই উন্মাদ হবার পরও মানুষের সাবকনশাস জানে,

মাংস রান্না করেই খেতে হয়! টের পেতে থাকি একজোড়া খুনে-লাল চোখ 

ছুটে আসছে- চোখ বন্ধ করে ফেলি! ঘুমের ভেতর শুনি অবাধ্যতা-

সবকিছু ভেঙে পড়ার শব্দ... ঘুমিয়ে পড়লে আমি হারিয়ে যাই।

ঘুমিয়ে পড়লে বেজে উঠে অ্যাসাইলামের পাগলা সাইরেন।




জুহু বীচের ব্যালকনিতে ক্রমাগত ঝুঁকে পড়ছে সমস্ত অসুখ

মিলিয়ে যাচ্ছে খিলখিল হাসি, উন্মাদনা ক্রমাগত...