সোমবার, ১৬ জুন, ২০১৪

কবিতা - রাজীব

গ্রাম্য পথে অতীত রোমন্থন 




আমি এখন লাল-কমলার আবেশ ভরা গোধূলিতে বসে 

নির্জনে প্রতীক্ষারত গ্রাম্য সন্ধ্যা নেমে আসবে বলে--- 

আরও নৈঃশব্দ্য এবং স্থবিরতা নিয়ে ।

সারাদিন সূর্যের তাপে এ মাঠ পুড়েছে-------

পুড়েছে কোমল ঘাস , গাছে গাছে সবুজ পাতা ;

রাতের আড়াল এলে চুপি চুপি তারা 

উদাসী হাওয়ার কাছে চেয়েছে কি শুশ্রূষা তাই !

অথবা দগ্ধ বুকে আর কোন শীতলতা 

নাকি শুধু জমে থাকা চাপ চাপ বেদনা 

দীর্ঘশ্বাসের সাথে বিলিয়ে দিয়েছে মুখ বুজে ।






একদিন নির্বোধের মত আমরা গড়েছি স্বপ্নকুঞ্জ 

ওই স্যাঁতসেঁতে জায়গাগুলোতে 

যেখানে শক্তিমান ভাঁড়সদৃশ বাজিকর 

নিরন্তর ভেল্কি দেখায় বালসুলভ জনতার মাঝে 

এবং যথাবিহিত কুৎসিত কুচকাওয়াজ দেখে ; 

উদ্ভট ভঙ্গিতে সালাম পেয়ে ফুলে ওঠে গেঁজে ওঠা ফেনার মত !

ওদের নিশানগুলো অনুজ্জ্বল , শতচ্ছিন্ন -------

ছেঁড়া কলাপাতার সাথে দাঁড়ানোর নখের যোগ্যতাও নেই ।






ওদের মঞ্চগুলোর তলে অজস্র বিকৃত কঙ্কাল ;

ওই কেল্লার চারপাশ রক্তের ঐতিহ্যে ভৌতিক,বিষণ্ণ ;

সমস্ত তল্লাটে স্যুট-বুট-বাবুয়ানা-সোনা-রুপো-জরি 

সবমিলিয়ে জবড়জং অভিনয় !

কিন্তু আশ্চর্য এই যে ওরা তাতেই খুশি ------

শুয়োরের পাল যেমন খুশি কাদার মধ্যে ঘেঁচু খুঁজে ।





ভেবে দেখো, ওইরকম নির্জীব পটভূমিতে 

আমরা শ্যামল স্বপ্নসৌধ তুলতে চেয়েছি প্রতিদিন ----  

কিন্তু কেমন বেঢপ লাগত কখনও ভাবি নি !

আমরা ছিলাম তিনটি উপাদান ------

একান্ত তুমি ও আমি আর কল্পনার নদী-মাঠ-পাখি ; 

মেঘের উপর মেঘ ছেয়ে ছিল চাঁদোয়ার মত ;

সেদিন কিছুই কম পড়ে নি দিনের শেষ আলো আর বাতাসের ছোঁয়া 

শুধুই হৃদয়ে ছিল বলে !

ঘাসের ডগায় শিশিরের সান্নিধ্যের মত 

আজ আমি নিবিড় হয়ে বসে আছি 

তার চেয়ে মায়াবীর দেশে ;

শুধু তুমি আজ কল্পময়ী, মায়াবিনী আরও ------ অদৃশ্য ,অস্পৃশ্য !

তাই এ দেহের ইচ্ছে হয় সত্ত্বাহীন হতে ,

সে দৈব নেই তাই  -----

সূর্যের মত সাধ তারাদের মত ভেসে যায় দূরে , 

নিবুনিবু করে ওই জোনাকির মত ,

তারপরে নিভে যায় গাঢ় অন্ধকারে 


হৃদয়ের ক্রমাগত শূন্যতার বোধে ।