বুধবার, ১৯ ফেব্রুয়ারী, ২০১৪

দুটি কবিতা - সুপ্রিয় মিত্র


দুটি কবিতা
সুপ্রিয় মিত্র

১৫.
পড়শিরা খুব চালাক,
মেনে নিয়েছি সেই কবেই
তোমাদের মত পরিস্কার মন
আমাদের নেই.
    তবু, যতজন মানুষকে ভালোবেসেছিলাম
যারা আমাদেরও ভালোবেসেছিল -
      প্রত্যেকের রং মেপে মেপে
আমাদের বুকে মাখা আছে.
    সবুজ - নীল সুতোয় বাঁধা
           খয়েরী - সাদা কাগজে
    মুড়ে  রাখা    আছে
                             ঘরের চিলেকোঠায় ...

     বিকেল হলে যখন ছাতে এসে
ঘুরতাম, তোমরাই পুঁচকে চোখগুলোকে আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়েছিলে -
                          " ওই দেখ!!
       ছোট্ট ছাতটা থেকে
            রামধণু বেরিয়েছে.... "



২৫.
কিছু কিছু পার্থিব দুঃখ,
বয়সের সাথে, পোড়োবাড়ির মতো
জানলা - দরজার কপাট হারিয়ে ফ্যালে
ঝরে যায় চুন সুরকির বাঁধন
ইঁটের গাঁথুনি ...
রহস্যময়ী কবিতা হয়ে ওঠে.
    পাঠক - শ্রোতার চোখে ভাসে
  টেরাকোটা মন্দির, অজন্তার গুহাচিত্রের কথা.
 

   কোথাও বা পাঁজর - কঙ্কাল হারাতে
   হারাতে, অজুহাত হয়ে যায়
      বেঁচে থাকার, বা নিজের মৃত্যু টুকু
     সাক্ষী হওয়ার একমাত্র কারন.

  আমার ভয় করে বলতে....  কিন্তু,
শুধুমাত্র নিপাট ভালোবাসার কথা, আমার একতলা বাড়িকে ভালোবেসে যাওয়ার
কথা, - বোবা ছাদ জানে.
           কত কত রাত তার বুকে হেঁটে
পার করেছি
               অসংখ্য ছায়াপথ
           কত কত দুপুর, ভোরে ক্লান্তিকে
পুষেছি, দাঁড়ি দিয়েছি তারই
                   ছায়ার জঠরে....

  যাবৎ কেউ তোমার নামে
   অভিযোগ - অভিমান করলে স্মিত হাসি.
 আর প্রশ্নের বদলে
                        প্রশ্ন ছুঁড়ে দিই -
   গাছের উপকারিতা বলতে কি
 আমাদের শুধু বটগাছের ছায়া আর
 গুল্মের গুনে অসুখ উধাও -
    যৌন তৃপ্তির কথাই মনে পড়ে ? আমরা
কি কোনোদিন, বটের ফল দিয়ে
 গুলি খেলিনি, অর্থের অভাবে?
  গুল্ম - ঘাসফুলে ঠেকাইনি গাল
    কারোর আদরের কথা
                                  ভেবে?


   তারপর চোখ ঘুরিয়ে নিই...
ইদানীংক্ষনিকের মৃত্যু  দেখতে
   আমার গা গুলিয়ে ওঠে...