বৃহস্পতিবার, ১ নভেম্বর, ২০১২

রত্নদীপা দে ঘোষ

রত্নদীপা দে ঘোষ
ইন্দ্রিয়

নক্ষত্রের আলো বিশ্লেষণ করে পাওয়া যায় পাঁচ প্রকার ইন্দ্রিয় ।
চক্ষু , কর্ণ , নাসিকা, জিহ্বা এবং ত্বক । এই পাঁচ ইন্দ্রিয় ঘিরে প্রজাপতির সীমান্তট্রলার , অস্ফুট সন্ততির স্পেসমহলো ...


চক্ষু

তামা , আকরিক এবং পাতালের কনডেন্সড জল দিয়ে তৈরি চক্ষু বা চোখ । অল্পবয়েসিনী চোখে সুরেলা গয়না । জাদুজ্যোৎস্নায় পৃথিবীর সাদা রেলিং । একেকদিন রাতবিরেতে ঘুম ভেঙে চোখের বারান্দায় ঘন হয়ে আসে আস্তিনপতঙ্গ । জ্যামিতিতে দাঁড়ানো চোখের দরিয়ায় ছিপছিপে ঘুর্নি । যেভাবে তুফান গিলে খায় পাখিচর , কুণ্ডলী পাকিয়ে পাথরকুচিচোখে দস্তানা নামিয়ে রাখে যাবতীয় ঋতু , পলিমাটির সকলচিহ্ন । নকল পশম খুলে চেয়ে দেখো হে বৃদ্ধচক্ষু , হৃৎপিণ্ডের মায়াবী ধারে ঝুঁকে দাঁড়ানোই চৈত্রপ্রাণায়াম


কর্ণ

কথ্য ভাষায় সূর্যের গিরিখাদ থেকে পার্থিব টিউন । সদ্যোজাত জোয়ারে ফিসফিসিয়ে ওঠে মৎস্যগন্ধা গোমতী । তার ডুমোডুমো শব্দগুলো শুনতে পাই স্পষ্ট । পূরবী লাগে যখন ফিনফিনে ঢেউয়ের মোজাইকবিস্তার এমনকি কান পেতে শুনি নাতিদীর্ঘ আয়ুহ্রদের ভাঙা বোতাম। চাঁদ সদাগর আর মনসার বাঁক পেরিয়ে হাফিজের পাণ্ডুলিপির শব্দে সিন্দবাদ জেগে ওঠে জাহাজের দ্রাঘিমায় ... পালতোলা বালিকার রুখাশুখা চুল গাঁথে মুখচোরা বিনুনিশব্দ , খুশির লহমায় হরিণপায়ে দৌড়োয় সেফটিপিনপুতুল .. অলৌকিক মুক্তো গড়ার শব্দবিকেলে ধরা পড়ে অযুতকর্ণকুহর !


নাসিকা

নাসিকা অর্থাৎ নাকের অবস্থান জোড়া দীঘির মাঝখানে । লম্বাটে রোদঘড়ির দুপাশে রেডিওছাউনি ঈষদুষ্ণ পায়রাশাওয়ার । প্রবল সূর্যের খিলানে একরোখা চুম্বনশস্য আলরেখা চুরমার করে পিছল মনুমেন্ট । ঘাসের সিঁড়ি যেমন কিশোরীর ছুটন্ত ঘ্রাণ ...অর্চনা , বিশাখার নাকছাবিতে দীর্ঘসুনামিগন্ধ ... মেতে থাকা ট্যুরিষ্ট আবাসের বেতঝুড়ি । পরিক্রমা শেষে ঘ্রাণতলে হাজির দলে দলে স্নায়ুতন্ত্র , মেডুলার বীজধ্বনি ।

জিহ্বা


গীটারের মতো আদুরে , সরু সরু রেখায় জলফাৎনার তুমুল হর্ষ । কোলাহলো ভেঙে ভেঙে সাঁতার , গলে যাওয়া কোলাপসেবল্ । মোমবাতির মতো এ পাড়ের আকাশও চুঁইয়ে পড়ে ও পাড়ের নদীতে । যেন ঘড়ির দুটি কাঁটা । আনন্দের হোমপেজে হাঁকপাঁক এক সফল সাঁতারুর টুকরো ক্ষিধেমশাল । মেনুকার্ডে স্যালাডের জব্বর ক্রিং ক্রিং । উষ্ণ চিলিফিশেরর গায়ে বসানো ট্র্যাফিকলাল সিগন্যাল । রসালো আকারের কেবিন বিজ্ঞাপনে চেয়ে থাকে বোনচায়নার শিরা উপশিরা আর রুফটপকোরাস ...


ত্বক

বৃষ্টিমেয়ের ত্বকে উচ্ছ্বসিত ভাংরাবাতাস । যেন একফালি চাঁদ জড়ানো ধানের খোসাঅঘ্রান । স্পন্দনে খোদাই বনভিত্তিক দিনযাপন । উড়ালবেলার বেলকুঁড়ির ত্বক নদীমিউজিকে বোনা প্রত্নজ সানাই । কতো গান নৈশশিশিরের টিপসই । কেউ ত্বকে লিখছে থারমাসফাগুন , কারুর ত্বকে তামাম শিকারা , সব মুলতুবি থাক ... চেয়েছি সুতীব্র আমলকীত্বকের পানশালা , সুগন্ধে আবাদ হোক্ বানভাসি । হেলাফেলার ত্বকে হুটহাট ঢুকে পড়া অশ্বত্থগাছ , ঘটিবাটি হারিয়ে রিফিউজি বাগানে গোখরোর ওম ...

ফসলের ভারে প্রতিবন্ধী ইন্দ্রিয় কিছু আগুন দিই তোমাকে , কিছু ভারসাম্য ... পঞ্চতট ...লতানো পাতার নতমুখ ... হিমসতেজ মৃত্যুর বিউগল ...

ক্ষুধা অমা তৃষ্ণা হে ইন্দ্রিয়াসক্ত জীবন !