শনিবার, ১ সেপ্টেম্বর, ২০১২

উল্কা











পলাশ গঙ্গোপাধ্যায়-এর কাব্যগ্রন্থের পর্যালোচনা করলেন উল্কা 

জ্যামিতিক সংজ্ঞাছুঁয়েরেখারউৎসএবংবিস্তারএকবিন্দুথেকেঅপরবিন্দুপর্যন্ত।তাকখনোসূক্ষ্মথেকেসূক্ষ্মতরআবারকখনোদীর্ঘথেকেদীর্ঘতর।নিজের ছন্দে রূপ বদলে রেখা হয়ে ওঠে কখনো সরল-মনা আবার কখনো বক্র-ব্যক্তিত্ব।গোলার্ধ ভেদে দীর্ঘায়ু হয়েছে মূলমধ্য এবং নিরক্ষরেখা।অক্ষরেখা দ্রাঘিমারেখার দোহাই দিয়ে পৃথিবীর উপর জাল বেঁধে ছড়িয়ে পড়েছে  অসংখ্যকাল্পনিকঅদৃশ্যরেখা।যে রেখা পৃথিবীকে গুরুত্বপূর্ণ করে তোলে। গাণিতিক সমাধানে ডিগ্রি মিনিট সেকেন্ড বুঝিয়ে দেয় বদলে যাওয়া আকাশের রঙ।

এরকমই কিছু রেখাটেনেকবিপলাশগঙ্গোপাধ্যায় ছায়াবৃত্তের গভীরে উদ্ভূত চলমান সময়-রঙের এক অসাধারণ সংমিশ্রণে সম্পর্ক জুড়ে জুড়ে উপলব্ধ সমাজ ভাবনা ফুটিয়ে তুলেছেন তাঁরঅদৃশ্যরেখাকাব্যগ্রন্থে।দশকের শূন্যস্থান কবি পূর্ণ করেছেন নিজের সুসম ভাবনা চেতনার প্রতিস্থাপনে।দাড়ি কমা সেমিকোলন প্লাবন ডেকেছে সমাজের বুকে সেই প্লাবনে সজ্ঞ্যানে ভেসে গেছেন কবি-“সিম্বল নিয়ে মাথা ঘামাতে ঘামেতে সিম্বলিক হয়ে উঠিঅব্যক্ত’- সতর্ক ছদ্মবেশ নিয়েছেন বিস্ময় এবং চলবে চিহ্ন কথা শেষ হয়ে আসে /কমা এবং দাড়ি চিহ্নেও কথা শেষ হয়ে আসে

জ্যামিতিক রেখারসীমাবদ্ধতাকে উল্লঙ্ঘন করে-“নির্ভরশীলতা থেকে বহুদূরে হাঁটাহাঁটিকবি সামাজিক বৃত্তের কেন্দ্র বিন্দুর অন্ধকারকে নিজের অদৃশ্যরেখার টানে দৃশ্যমান আলোয় এনে বৃত্তের শূন্যতত্ত্বে নির্ভীক ভাবে রুলার পেন্সিল চালিয়ে এঁকেছেন এর ব্যাস - শূন্য দশকে শূন্যতত্ত্ব নিয়ে কপচাচ্ছি / বিশ্বের জলস্তর কমেআসছে / ভারতবর্ষ লোডশেডিং- জেরবার

প্রতিদিন নতুন জন্ম,প্রতিজন্মনতুনদৃশ্যআরপ্রতিদৃশ্যনতুনঅভিজ্ঞতা।প্রয়োজন অপ্রয়োজনের সাথে প্রতিনিয়ত আপোষ আর জীবন সংগ্রামে জমা হতে থাকা উপলব্ধি কবির কলমে সমার্থক বিপরীত দৃশ্যগুলোর সাথে / পরিচিত হই ক্রমশ...”একলা চলতে চলতে হাতের রেখাও হঠাৎ একদিন দোকা হয়ে যায়।বহুমূল্য লিখিত পড়িতের পাতায় থাকানিহত ফুল/বাসি সকাল/স্তিমিত রাত/ঝাপসা অচেনাআচমকা মিলিয়ে যায়।ইশারা আঁচানো সম্পর্কের সাথে মাখামাখি হয়ে পড়ে থাকে দীর্ঘ পায়ে চলা পথ- যদিও সবটাই বলা হয়েছে হাবেভাবে / মাথা তুলতেই অনেকটাপথবাকি বাস্তবের সাথে সামঞ্জস্য রেখে পরিস্থিতির হাতলে মোচড় উঠে এসেছেএলিজিকবিতাতে। মেলাঙ্কলিক অস্তিত্ব আত্মসাৎকরেছেকবিতারস্মার্টউপস্থাপনা - কেসটাকীহলো ? জানতেচাইলেবলি /ইহাজন্ডিসকেস 

 'মাইলেজ’ ‘জার্নি’, ‘স্রোতদৃশ্যান্তরে বারবার ফেলে যায় সময়ের বোহেমিয়ান ছাপ। ভাব এবং ভাবনার ককটেল থেকে বেঁচে / ফিরে আসি রোমকূপের ভেতরবাচিরন্তন দহন থেকে ওমের সিঁড়ি বেঁয়ে যত তলায় / ওঠা যায় তারও লিফট-এর সর্বোচ্চ নম্বর /ভুলেছি কবেই। পর্ণমোচী জীবনের ব্যাস্ততার সাথে ওতপ্রোত শুয়ে থাকা শরীরের অটুট ঘুম শায়িত দেহ শুয়ে থাকে / পাশ ফিরে শুয়ে থাকে  কখনওটানটান / তন্দ্রা এসে যায়।ঘুমের তারও পর / পরের দিন...”

কবির প্রত্যাশার সাথেছুটেচলতেচলতেকবিতাওপ্রোডাক্টহয়েযায়অসাধারণভাবনাপ্রকাশপেয়েছেকবিতাবিষয়ক-কবিতাতে - বাংলাকবিতারআবাদিপ্রচুর,বরবাদিশূন্য,মারচালনাকিকিছুনেই / আসলেকবিতারওকিএতটাইপ্রত্যাশাছিলো?”  জীবনকে সমাজকে সম্পর্ককে প্রতিটা আঙ্গিকে প্রতিটা দৃষ্টি কোন থেকে তুলে ধরেছেন কবি।আবহমানের অভিজ্ঞ্যান হিসেবে রেখেছেন ভেষজ টোটকায় বোজানো ক্ষতের দাগ - মজার ব্যাপার দাগ- অতীত,দাগ- ভবিষ্যৎ

তবে শুধু কবিতার ভাবনানয়কবিতারসাবলীলপ্রকাশভঙ্গি, শব্দের প্রয়োগ যথেষ্ট সচেতন এবং নাম করণ প্রশংসার দাবী রাখে।বেশ কিছু কবিতার যথাযথ আবরণ রক্ষিত হয়েছে তবে কিছু জায়গায় এর অন্যথা হলেও পাঠকের জন্য যথেষ্ট স্পেস ছেড়েছেন কবি।শূন্য দশককে পাথেয় করে এগিয়ে যাওয়ার প্রয়াস প্রতিটি কবিতায় স্পষ্ট হয়ে উঠেছে।প্রচ্ছদ ভাবনায় অজস্র দৃশ্যমান রেখা ধরা পড়েছে যা সমাজ সম্পর্ক এবং সময়ের কাছে চির অধরা।তাই প্রচ্ছদটিও প্রাসঙ্গিক হয়ে উঠেছে কবিতার সাথে সাথে।আশা করা যায় এই কাব্যগ্রন্থ কবির অদৃশ্য হাতিয়ার হয়ে উঠবে।  

অদৃশ্যরেখা পলাশ গঙ্গোপাধ্যায় দিগন্তবলয় ৬০ টাকা

2 comments:

KRUCIAL বলেছেন...

আলোচোনা খুব সাবলীল,ভালো লাগলো

কিছু বানান ভুল গুড়ে বালি হলেও উপাদেয়,টেস্টি

অপরাজিতা বলেছেন...

valo laglo.