এপিটাফ
০৩।
শীত আসে।উত্তর বাংলার মাঠে মাঠে কুয়াশা।সাদা বকের দল আসর বসায়।কুয়াশার ভিতর তারা উড়েও যায়।কুয়াশা পাতলা হতে থাকে।।রোদ ভাসিয়ে নিয়ে যায় শীতসকাল।রোদ,মানে শীতের রোদ সবর্দাই সংক্রামক।কিঞ্চিত উদাসও করে হয়তো বা।মিনিটে মিনিটে আবার পাল্টে যায় রোদের রঙ ও রেখা।রোদ প্রায়শঃ টেনে নিয়ে যায় আমাকে নদীর কাছে।নদী কখনো প্রবীণ হয় না জানি।এও জানি নদী থাকলেই নদীচর থাকবে।আর নদীচর মানেই বালির নকশাকাটা সুবিশাল শামিয়ানা।নদীর সাথে মাঝি মাল্লা ডিঙি নৌকো আর সারিগান এসবের আশ্চর্য যোগাযোগ। আবার শীতের নদী অন্যরকম। সে হাওয়াবাতাসের । সরষেক্ষেতের আর তরমুজবাগানের।নদী আমাকে টানে।উসকে দেয়।ঝাউগাছের পৃথিবীতে একা থাকবার কোন কষ্ট থাকে না।চাঁদও বিষমমাত্রায় ডাকে আমাকে।নদীপথে কাহিনী তৈরী হয় কতশত।আর কাহিনী সমূহে মিশে যেতে থাকে লোকগান।লোকবাজনা।নদীকে উপাস্য ভেবে আমাদের উত্তরবাংলায় গান বাঁধা হয়।পূজোর ফুলে ভরে ওঠে নদীগর্ভ।উত্তরবাংলার রাজবংশী মহিলারা দলবদ্ধ হয়ে নাচে।।তিস্তা বুড়ির পুজোহয়।বাজে ঢাক আর ঢোল।এইভাবে অন্ধকার ও আলোয় পূর্ণ হয়ে উঠতে থাকি আমি।আবেগ টেনে আনে চোখের জল।আবার চোখের জল দিয়ে মাঝে মাঝে অন্যমনস্ক এঁকে রাখি বিকেল।বিকেল প্রসঙ্গে খুব,খুব চলে আসে পুকুরঘাট।নৈঃশব্দ খানিকটা।পুকুরঘাটে কেউ কেউ হারিয়ে ফেলে নাকছাবি।রুপোর বিছে।লন্ঠনের মৃদু আলোয় শুরু হয় অনুসন্ধান পর্ব।আবার কুয়াশা নামে।কুয়াশা জড়ানো হাসপাতালের বারান্দায় এলোমেলো আর একা আমি হাঁটি কিঞ্চিৎ আলগোছে।
০৪।
অতিরিক্ত মদ্যপানের পর একটা ফাঁকা মাঠ অতিক্রম করি। কখনো কখনো ফাঁকা মাঠে বসেই মদ্যপান করি।আমার কোন নির্দিষ্ট ব্র্যান্ড নেই।যা জোটে তাই খাই কেননা আমার কোনো আভিজাত্য নেই।তবে সামান্য ক্রোধ ও অসাধারণ অহংকার রযেছে এবং দিনে দিনে সেটা বাড়বে বই কমবে না।অহংকার পতনের মূল একথা সত্য।তবে আমি নিশ্চিত আমার পতনের কোনো সম্ভাবনাই নেই। কেননা আমার অহংকারের শ্রেণীচরিত্র আলাদা।আমার অহংকার পতন শব্দটাকে তাড়া করছে খুব।আমার অহংকার মিলিত হচ্ছে ব্যক্তিত্ব শব্দটির সাথে।অতিরিক্ত মদ্যপানের পর আমি তাই অহংকারি হয়ে উঠি আর অতিক্রম করি ফাঁকা মাঠ।আর মাঠ ধরে রাখে শীত ঋতু।অজস্র পদচিহ্ন।তবে মদ্যপান করাটা সত্যিই ভালো নয়।মদ্যপান আমাদের নষ্ট করে দেয়।যেমন জীবনানন্দকে কারুবাসনা।তবে নষ্ট শব্দটায় আমার তীব্র আপত্তি আছে।জীবনে আসলে কিছুই নষ্ট হয় না।সমগ্র আয়ুপথ জুড়ে কেবল অর্জন আর পাওয়া।তবুও মদ্যপান সমর্থনযোগ্য নয়।যেমন সমর্থন করা যায় না ঘন ঘন আয়নায় মুখ দেখা।এতে আত্মবিশ্বাস কমে যায়।সুখ কমে যায়।আর সুখ কমে গেলে অসুখ আসে।স্থিতি ও গতি ব্যহত হয়। মদ্যপান করাটা ঠিক নয় তবুও মদ্যপানের জন্য খামারবাড়ির উঠোন বেছে নেওয়াটাই যথাযথ।উঠোন জিনিসটা আমার প্রিয়।দোলাচল
কেটে যায়।সবচেয়ে ভালো হয় যদি মদ্যপানের সময় হ্যাজাকবাতি বা সরু সরু মোমবাতি জ্বালিয়ে দেওয়া হয়।মোমের আলোয় মাতালদের নাচ আর লোকশিল্পীর মুখচোখ ভীষণই ভালো বা মায়াময় দেখায়।মায়াময় আর মায়ামমতা কিছুতেই এক নয় জেনেও আমাদের কান্নাকাটির শব্দে বিঘ্নিত হয় আমাদের ভোজসভা।মদ্যপান করাটা বাঞ্ছনীয় নয় যদি মদ্যপান আমাদের অন্যায় কাজের দিকে এগিয়ে দেয় কিন্তু সোজাসুজি একটানে খুলে দেয় যাবতীয় মুখোশ।
০৩।
শীত আসে।উত্তর বাংলার মাঠে মাঠে কুয়াশা।সাদা বকের দল আসর বসায়।কুয়াশার ভিতর তারা উড়েও যায়।কুয়াশা পাতলা হতে থাকে।।রোদ ভাসিয়ে নিয়ে যায় শীতসকাল।রোদ,মানে শীতের রোদ সবর্দাই সংক্রামক।কিঞ্চিত উদাসও করে হয়তো বা।মিনিটে মিনিটে আবার পাল্টে যায় রোদের রঙ ও রেখা।রোদ প্রায়শঃ টেনে নিয়ে যায় আমাকে নদীর কাছে।নদী কখনো প্রবীণ হয় না জানি।এও জানি নদী থাকলেই নদীচর থাকবে।আর নদীচর মানেই বালির নকশাকাটা সুবিশাল শামিয়ানা।নদীর সাথে মাঝি মাল্লা ডিঙি নৌকো আর সারিগান এসবের আশ্চর্য যোগাযোগ। আবার শীতের নদী অন্যরকম। সে হাওয়াবাতাসের । সরষেক্ষেতের আর তরমুজবাগানের।নদী আমাকে টানে।উসকে দেয়।ঝাউগাছের পৃথিবীতে একা থাকবার কোন কষ্ট থাকে না।চাঁদও বিষমমাত্রায় ডাকে আমাকে।নদীপথে কাহিনী তৈরী হয় কতশত।আর কাহিনী সমূহে মিশে যেতে থাকে লোকগান।লোকবাজনা।নদীকে উপাস্য ভেবে আমাদের উত্তরবাংলায় গান বাঁধা হয়।পূজোর ফুলে ভরে ওঠে নদীগর্ভ।উত্তরবাংলার রাজবংশী মহিলারা দলবদ্ধ হয়ে নাচে।।তিস্তা বুড়ির পুজোহয়।বাজে ঢাক আর ঢোল।এইভাবে অন্ধকার ও আলোয় পূর্ণ হয়ে উঠতে থাকি আমি।আবেগ টেনে আনে চোখের জল।আবার চোখের জল দিয়ে মাঝে মাঝে অন্যমনস্ক এঁকে রাখি বিকেল।বিকেল প্রসঙ্গে খুব,খুব চলে আসে পুকুরঘাট।নৈঃশব্দ খানিকটা।পুকুরঘাটে কেউ কেউ হারিয়ে ফেলে নাকছাবি।রুপোর বিছে।লন্ঠনের মৃদু আলোয় শুরু হয় অনুসন্ধান পর্ব।আবার কুয়াশা নামে।কুয়াশা জড়ানো হাসপাতালের বারান্দায় এলোমেলো আর একা আমি হাঁটি কিঞ্চিৎ আলগোছে।
০৪।
অতিরিক্ত মদ্যপানের পর একটা ফাঁকা মাঠ অতিক্রম করি। কখনো কখনো ফাঁকা মাঠে বসেই মদ্যপান করি।আমার কোন নির্দিষ্ট ব্র্যান্ড নেই।যা জোটে তাই খাই কেননা আমার কোনো আভিজাত্য নেই।তবে সামান্য ক্রোধ ও অসাধারণ অহংকার রযেছে এবং দিনে দিনে সেটা বাড়বে বই কমবে না।অহংকার পতনের মূল একথা সত্য।তবে আমি নিশ্চিত আমার পতনের কোনো সম্ভাবনাই নেই। কেননা আমার অহংকারের শ্রেণীচরিত্র আলাদা।আমার অহংকার পতন শব্দটাকে তাড়া করছে খুব।আমার অহংকার মিলিত হচ্ছে ব্যক্তিত্ব শব্দটির সাথে।অতিরিক্ত মদ্যপানের পর আমি তাই অহংকারি হয়ে উঠি আর অতিক্রম করি ফাঁকা মাঠ।আর মাঠ ধরে রাখে শীত ঋতু।অজস্র পদচিহ্ন।তবে মদ্যপান করাটা সত্যিই ভালো নয়।মদ্যপান আমাদের নষ্ট করে দেয়।যেমন জীবনানন্দকে কারুবাসনা।তবে নষ্ট শব্দটায় আমার তীব্র আপত্তি আছে।জীবনে আসলে কিছুই নষ্ট হয় না।সমগ্র আয়ুপথ জুড়ে কেবল অর্জন আর পাওয়া।তবুও মদ্যপান সমর্থনযোগ্য নয়।যেমন সমর্থন করা যায় না ঘন ঘন আয়নায় মুখ দেখা।এতে আত্মবিশ্বাস কমে যায়।সুখ কমে যায়।আর সুখ কমে গেলে অসুখ আসে।স্থিতি ও গতি ব্যহত হয়। মদ্যপান করাটা ঠিক নয় তবুও মদ্যপানের জন্য খামারবাড়ির উঠোন বেছে নেওয়াটাই যথাযথ।উঠোন জিনিসটা আমার প্রিয়।দোলাচল
কেটে যায়।সবচেয়ে ভালো হয় যদি মদ্যপানের সময় হ্যাজাকবাতি বা সরু সরু মোমবাতি জ্বালিয়ে দেওয়া হয়।মোমের আলোয় মাতালদের নাচ আর লোকশিল্পীর মুখচোখ ভীষণই ভালো বা মায়াময় দেখায়।মায়াময় আর মায়ামমতা কিছুতেই এক নয় জেনেও আমাদের কান্নাকাটির শব্দে বিঘ্নিত হয় আমাদের ভোজসভা।মদ্যপান করাটা বাঞ্ছনীয় নয় যদি মদ্যপান আমাদের অন্যায় কাজের দিকে এগিয়ে দেয় কিন্তু সোজাসুজি একটানে খুলে দেয় যাবতীয় মুখোশ।
অলংকরণ –কৌশিক বিশ্বাস
2 comments:
সুবীর, পড়লুম । পড়ে, নিজেকে বলতে শুনলুম, আহা !
khub valo,ek maya prithhibir galpa
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন