বুধবার, ১৪ নভেম্বর, ২০১২

বাঙালির শিশুসাহিত্য - ফাল্গুনী মুখোপাধ্যায়

বাঙালির সৃষ্টি ভুবনে শিশু মানস
ফাল্গুনী মুখোপাধ্যায়


লীলা মজুমদার আক্ষেপ প্রকাশ করেছিলেন যে সুকুমার রায় ভুল সময়ে জন্ম গ্রহণ করেছিলেন । তাঁর মনে হয়েছিল ‘ঐ সময়ে সুকুমারের জন্য দেশটা প্রস্তুত ছিলনা’ । ছোটদের জন্য যে সাহিত্য রচনা বিগত দেড়শ’ বছর ধরে হয়ে আসছে তাকে আমাদের সাহিত্য আলোচকরা কেন সাহিত্যের মর্যাদা দিতে কুন্ঠা বোধ করেন সে এক রহস্য । বিশ্ববিদ্যালয় স্তরের পাঠ্য বাংলা সাহিত্যের ইতিহাসে শিশু সাহিত্যের কোনো উল্লেখ নেই । সেই পাঠ্য ইতিহাস তন্ন তন্ন করে খুজলেও উপেন্দ্রকিশোর রায়চৌধুরী, দক্ষিণারঞ্জন মিত্রমজুমদার , কিংবা সুকুমার রায় সম্পর্কে একটা অক্ষরও খুজে পাওয়া যাবে না । অথচ ঠাকুরমার ঝুলি, টুনটুনির গল্প , আবোল তাবোল পড়ে বড় হইনি এমন বাঙালি খুঁজে পাবো না ।


লীলা মজুমদার এই আক্ষেপ প্রকাশ করেছিলেন তাঁর জেঠতুতো দাদা সুকুমার রায়ের জন্ম শতবর্ষের স্মৃতি চারণে । তারপর ২৫টা বছর কেটে গেছে । আমাদের পারিবারিক ও সামাজিক বিন্যাশ বদলে গেছে – বদলে যাচ্ছে এবং সেই বদলের প্রক্রিয়াতেই চুরি হয়ে গেছে আমাদের সন্তানের শৈশব । এখন আর ‘বাঁশ বাগানের মাথার ওপর চাঁদ’ ওঠে না , ‘শোলক বলা কাজলা দিদি’রাও আর নেই । সে আর ঘুমাতে যায় না ‘ঘুম পাড়ানি মাসি-পিসির’ গল্প শুনে । শৈশব নেই , সুতরাং শিশুসাহিত্যও নেই ।

আধুনিক কবিযশ প্রার্থী – আমরা, শিশুমনের চিরন্তন খোরাক এই সব ছেলেভোলানো ছড়াকে সাহিত্য পদবাচ্য বলে মেনে নিতে কুন্ঠিত হই, কিন্ত ভাষাচার্য সুকুমার সেন যুগ যুগান্তের ধারাবিকতায় প্রবহমান ছড়া – গান- রূপকথার গল্পকে চিহ্নিত করেছেন ‘শিশু-বেদ’ বলে । মুণি ঋষিদের মুখে মুখে সৃষ্ট চার খন্ডের বেদ যেমন কোনো এক মানব গোষ্ঠীকে আদি-অনন্তকাল থেকে নিয়ন্ত্রিত করছে , সে ধ্রুব সত্য বলে মেনেছে , তেমনই রচয়িতার নাম না জানা অথচ সময়ের আদীমতম কালখন্ড থেকে মানুষের মুখে মুখে সৃষ্ট প্রবহমান শিশুতোষ ছড়া-গান-গল্প তো আরো এক বেদ – শিশু-বেদ । সমস্ত মানব গোষ্ঠিরই এই ‘শিশুবেদ’ আছে, এমনকি যে মানব-গোষ্ঠীর কোনো স্থায়ী সাহিত্য নেই তাদেরও । সর্বদেশে সর্বকালে এই ছেলেমি ছড়া শুনে শুনেই আমরা বড় হয়েছি, জীবনকে জেনেছি, চিনেছি, আমাদের সাহিত্যেরও বীজ হয়ে গেছে এইসব অজস্র লৌকিক ছড়া, রূপকথার গল্প, গান । আর তাই-তো শিশুসাহিত্যের চিরকালিন উপাদান লোক পরম্পরায় প্রচলিত ‘ছেলে ভুলানো ছড়া’র আলোচনায় রবীন্দ্রনাথ লিখেছেন “ভালো করিয়া দেখিতে গেলে শিশুর মতো পুরাতন আর কিছুই নাই । দেশ-কাল-শিক্ষা-প্রথা অনুসারে বয়স্ক মানবের কত নতুন পরিবর্তন হইয়াছে, কিন্তু শিশু শত সহস্র বৎসর পূর্বে যেমন ছিল আজও তেমনি আছে; সেই অপরিবর্তনীয় পুরাতন বারম্বার মানবের ঘরে শিশুমূর্তি ধরিয়া জন্মগ্রহণ করিতেছে – অথচ সর্বপ্রথম দিন সে যেমন নবীন, যেমন সুকুমার, যেমন মূঢ়, যেমন মধুর ছিল আজও ঠিক তেমনই আছে । এই নবীন চিরত্বের কারণ এই যে শিশু প্রকৃতির সৃজন” ।

বয়ঃক্রম ও মানসিক বিকাশের স্তর অনুযায়ী শৈশব, বাল্য কৈশোর ইত্যাদি ভাগ করে থাকি । যোগীন্দ্রনাথ সরকার, দক্ষিনারঞ্জন মিত্রমজুমদার, উপেন্দ্রকিশোর রায়চৌধুরী , সুকুমার রায় প্রমুখের রচনা শিশুমনের খোরাক যোগায় । ঠিক একশ’ বছর আগে উপেন্দ্র কিশোর শিশু মনের পত্রিকা ‘সন্দেশ’ শুরু করেছিলেন ৬ থেকে ১৪ বছর বয়সীদের কথা মনে । সুকুমার রায়ের যা কিছু সৃষ্টি তা এই সন্দেশ পত্রিকাতেই । বাংলা শিশু সাহিত্যের নিজস্ব কোন চরিত্র তখনো গড়ে ওঠেনি । বলা যায় উপেন্দ্র কিশোরের হাত ধরেই বাংলা শিশু সাহিত্যের একটা স্পষ্ট অবয়ব গড়ে ঊঠেছিল, হয়েছিল বাংলা শিশু সাহিত্যের প্রাণ প্রতিষ্ঠা ।

শিশু সাহিত্য বলতে আজও আমরা যাদের কাছে ফিরে যাই তারা হলেন যোগীন্দ্রনাথ সরকার, উপেন্দ্রকিশোর, দক্ষিনারঞ্জন মিত্র মজুমদার , সুকুমার রায় এবং সেই এক ও অদ্বিতীয় রায় পরিবার- সুখলতা, পুন্যলতা, লীলা মজুমদার । তারও আগে, অবশ্যই বাঙালির শেষ আশ্রয় রবীন্দ্র নাথ’এ । শিশু মনকে রবীন্দ্রনাথের মত কেইবা বুঝেছেন তাঁর আগে ? বস্তুত, শিশু সাহিত্য কেমন হবে , তার কল্পনার জগৎটা কেমন, তার নির্দেশ রবীন্দ্রনাথই দিয়েছেন । রবীন্দ্রনাথের শৈশব কেটেছে কঠোর শৃঙ্খলার মধ্যে – ভৃত্য পরিবৃত হয়ে । শিশুমনের শৈশব হারানোর বেদনা তিনি বুঝেছিলেন । রবীন্দ্রনাথের গল্প-কবিতা- নাটকে তাই দেখি অনেক অসামান্য শিশু চরিত্র , তার মনোজগত, কল্পনা জগতের বিশ্বস্ত ছবি । পুনশ্চ কাব্যগ্রন্থের ‘ছেলেটা’ কবিতায় তিনি নির্দেশ করেছেন যে শিশুর নিজের জগতটাকে তার চোখে, তার মত করে না দেখলে তাদের ভালোলাগার কবিতা –গল্প হতে পারেনা । লিখেছেন –

“থাকতো ওর নিজের জগতের কবি
তাহলে গুবরে পোকা এতো সুস্পষ্ট হ’ত তর ছন্দে
ও ছাড়তে পারতোনা
কোনদিন ব্যাঙের খাঁটি কথা কি পেরেছি লিখতে ?
আর সেই নেড়ি কুকুরের ট্রাজেডি !”

শিশু তার নিজের জগতের কথাকার পেয়েছিল – দক্ষিনারঞ্জন মিত্রমজুমদার, উপেন্দ্রকিশোর রায়চৌধুরী, সুকুমার রায়ের মধ্যে । স্বাধীনতা উত্তর কালে প্রেমেন্দ্র মিত্র , শিবরাম চক্রবর্তী , নারায়ণ গঙ্গোপাধ্যায় বা সত্যজিৎ রায় প্রমুখের রচনাগুলি কিশোর সাহিত্য, কিশোর বয়ঃক্রমের চাহিদা অনুযায়ী লেখা, সেগুলি এ নিবন্ধের আলোচ্য নয় । স্বাধীনতা উত্তর কালে শৈলেন সরকার প্রমুখ শিশু মনের গল্প-কবিতা লিখেছেন সত্য, কিন্তু চিরন্তন শিশু সাহিত্যের সন্ধান করতে আজও আমাদের যেতে হয় উপেন্দ্র কিশোর –দক্ষিনা রঞ্জন – সুকুমার- এই ত্রয়ীর কাছে ।

উপেন্দ্রকিশোর মূলত গদ্যই লিখতেন । শিশু মনের গল্প আর সেইসঙ্গে ইতিহাস, পুরান, বিজ্জান ও প্রাণীতত্ব প্রভৃতি জটিল বিষয়গুলির রমনীয় ভঙ্গিতে শুনিয়েছেন শিশুদের – তারা সেই প্রথম সাহিত্যের স্বাদ পেতে শিখেছিল উপেন্দ্রকিশোরের কাছ থেকেই । শুধুমাত্র ছোটদের জন্য যে পত্রিকা ‘সন্দেশ’ পত্রিকা প্রকাশ করেছিলেন, তাকে ঘিরেই গড়ে উঠেছিল তাঁর জীবদ্দশার ও পরবর্তী সময়ে, শিশু সাহিত্যের এক লেখক গোষ্ঠী - শিশু সাহিত্যের আশ্চর্য লেখক পরিবার - উপেন্দ্র কিশোর – সুকুমার-সুখলতা- পূণ্যলতা-কুলদা রঞ্জন-প্রমদা রঞ্জন – লীলা – সত্যজিৎ ।

উনিশ শতকের দ্বিতীয়ার্ধে বাংলার শিশু সাহিত্যের এই প্রাণ প্রতিষ্ঠা, শিশু মনে রূপকথার কল্প-জগতকে উন্মুক্ত করে দেওয়া এবং শিশু মানসে এক উদ্ভট কল্প-জগতের সৃষ্টি করে শিশু সাহিত্যের যে অপরূপ বৈভ্‌ তাতে রবীন্দ্রনাথের উৎসাহ ও সাহচর্য ছিল । বস্তুত ঠাকুর পরিবারের সাহিত্য- সঙ্গীত- শিল্প চর্চাই উপেন্দ্রকিশোরকে অনুপ্রাণীত করেছিল ঠাকুর বাড়ি থেকে তখন প্রকাশিত হ’ত ‘বালক’, পন্ডিত শিবনাথ শাস্ত্রী সম্পাদিত ‘মুকুল’ প্রভৃতি ছোটদের পত্রিকা । ঠাকুর বাড়ির এই সাহিত্য-সংস্কৃতির পরিবেশই তাঁকে উদবুদ্ধ করেছিল, আর বাঙালি পেয়ে যায় শিশুমনের প্রাণের মানুষ অদ্বিতীয় শিশু সাহিত্যিক উপেন্দ্রকিশোরকে । এমনকি উপেন্দ্রকিশোরের প্রথম গ্রন্থ ‘ছেলেদের রামায়ণ’এর পান্ডুলিপি ও প্রুফ সংশোধন করে দিয়েছিলেন রবীন্দ্রনাথ । পুস্তকটির ভূমিকা থেকে আমরা একথা জানতে পারি।

উপেন্দ্রকিশোর ছিলেন রবীন্দ্রনাথের সুহৃদ । তাঁর চেয়ে ষোল বছরের কনিষ্ঠ দক্ষিণারঞ্জনের ক্ষেত্রেও রবীন্দ্রনাথের আশির্বাদ ছিল । উপেন্দ্র কিশোর সরস ভাষায় পশু-পাখী, বাঘ-ভাল্লুকের গল্প শোনালেন আর দক্ষিণারঞ্জন শিশুমনকে রূপকথার কল্প-জগৎ’এ নিয়ে গেলেন আর সুকুমার রায় সৃষ্টি করলেন শিশুমনের অজানা এক উদ্ভট জগৎ । দক্ষিণারঞ্জন বাঙ্গালির চিরায়ত শিশু সাহিত্য ‘ঠাকুরমার ঝুলি’ লিখেছিলেন আজ থেকে ১০৫ বছর আগে । আমার কাছে বইটির যে সংস্করণ আছে সেটি ২৯তম সংস্করণ, প্রকাশিত হয়েছিল ১৯৮০তে । তখন পর্যন্ত ঠাকুরমার ঝুলির বিক্রয় সংখ্যা ছিল এক লক্ষ চল্লিশ হাজার । তথ্যটি দেওয়া এইজন্য যে এ থেকে বোঝা যায় কি বিপুল জনপ্রিয় বাঙ্গালির শিশু সাহিত্যের এই সোনার খনিটি । দক্ষিণারঞ্জন কোথা থেকে সংগ্রহ করেছিলেন নীলকমল-লালকমল , বুদ্ধু-ভুতুম , কাঞ্চনমালাদের কথা ? তাঁর নিজের কথায় “মা’র আঁচলখানির উপর শুইয়া রূপকথা শুনিতেছিলাম...মা’র মুখের অমৃত-কথার শুধু রেশগুলি মনে ভাসিতঃ পরে কয়েকটি পল্লীগ্রামের বৃদ্ধার ময়ূখে আবার যাহা শুনিতে শুনিতে শিশুর মতো হইতে হইয়াছিল ...”। উৎসর্গ করেছিলেন রবীন্দ্রনাথকে , আর বইটির ভূমিকা লিখেছিলেন স্বয়ং রবীন্দ্রনাথ । যেখানে তিনি লিখেছিলেন “...ইহার উৎস বাংলা দেশের মাতৃস্নেহের মধ্যে । যে স্নেহ দেশের রাজ্যেশ্বর রাজা হইতে দীনতম কৃষককে পর্যন্ত বুকে করিয়া মানুষ করিয়াছে, সকলকেই শুক্ল সন্ধ্যায় আকাশে চাঁদ দেখাইয়া ভুলাইয়াছে এবং ঘুমপাড়ানি গানে শান্ত করিয়াছে। নিখিল বঙ্গের সেই চির পুরাতন গভীরতম স্নেহ হইতে এই রূপকথা উৎসারিত । অতয়েব বাঙালির ছেলে যখন রূপকথা শোনে – তখন কেবল যে গল্প শুনিয়া সুখী হয়, তাহা নহে – সমস্ত বাংলা দেশের চিরন্তন স্নেহের সুরটি তাহার তরুণ চিত্তের মধ্যে প্রবেশ করিয়া তাহাকে যেন বাংলার রসে রসাইয়া তোলে”। রবীন্দ্রনাথের এই নির্দেশ থেকেই আমি বুঝতে চেয়েছি বাঙ্গালির চিরায়ত শিশু সাহিত্যের স্বরূপ ও তার লোকপ্রিয়তার সূত্রটি ।

মৃত্যুর ২বছর পূর্বে উপেন্দ্রিকিশোর শুরু করেছিলেন ‘সন্দেশ’ পত্রিকার প্রকাশনা । ঐ বছরই পুত্র সুকুমার লন্ডন থেকে মুদ্রণ প্রযুক্তিতে উচ্চতর শিক্ষা ও দক্ষতা অর্জন করে , এদেশের প্রথম ‘ফেলো অফ রয়াল ফোটোগ্রাফিক সোসাইটি’ শিরোপা নিয়ে দেশে ফেরেন ও ‘সন্দেশ’এ লেখা, ছবি আঁকা ও অন্যান্য কাজে নিবিড় ভাবে জড়িত হয়ে পড়েন জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত । পিতার মৃত্যুর পর তিনিই ‘সন্দেশ’এর সম্পাদকের দায়িত্ব গ্রহণ করেন । এই নয় বছরে (শেষ আড়াই বছরের শয্যাশায়ী অবস্থা সহ), সুকুমার লিখেছিলেন ১০৩টি কবিতা, ৮৮টি নানা ধরণের ছোট গল্প, ১২২টি প্রবন্ধ, ৮টি নাটক ও ২টি বড় গল্প আর এঁকেছিলেন পত্রিকার সমস্ত ছবি । সুকুমার রায়ের কনিষ্ঠ খুড়তুতো ভগ্নী শিশু সাহিত্যের দিকপাল, প্রয়াতা লীলা মজুমদার আক্ষেপ করেছিলেন “এখন মনে হয়, ঐ সময়ে সুকুমারের জন্য এ দেশটা প্রস্তুত ছিল না” । তাঁর আক্ষেপের কারণ আছে, এবং আমাদেরও । সুকুমার রায়ের সমকালীন আলোচক বৃন্দ তাঁকে ‘ছোটদের জন্য হাসির কবিতা লেখেন’ এর বেশি মর্যাদা তাঁকে দেননি । লীলা মজুমদারের জিজ্ঞাসা ছিল “ কোনো বাংলা সাহিত্যের ইতিহাসে শিশু সাহিত্যিকদের উল্লেখযোগ্য বলে মনে করা হতনা, সেটাই কি কারণ”? এই আক্ষেপ আমাদেরও । আজও আমরা তাকে ‘ননসেন্স লিটারেচর’এর আশ্চর্য শ্রষ্টার বেশি জানিনা । জানিনা যে তিনি হাফটোন মুদ্রণ পদ্ধতির অন্যতম পুরোধা, একাধিক বিজ্ঞান বিষয়ক প্রবন্ধ রচনা করেছেন । জন্মের একশ’পঁচিশ বছর পরেও বাংলা শিশু সাহিত্যে সুকুমার রায়ের অবদান অমলিন হয়ে আছে – নিশ্চিতভাবেই থাকবে আরও বহুদিন ।

একটা মূলত কবিতার পত্রিকা যখন সুকুমার রায়কে ১২৫তম জন্মবর্ষের শ্রদ্ধা নিবেদন করে তখন আশা জাগে, প্রত্যাশা করতে ইচ্ছা হয় – হয়তো বা বাংলার শিশু সাহিত্যের অতীত গৌরবকে স্মরণে রেখে বাংলার শিশু সাহিত্যকে সমৃদ্ধ করার প্রয়াস পাবো । আগামী বছরের প্রথমার্ধেই আমাদের শিশু সাহিত্যের প্রাণপুরুষ উপেন্দ্র কিশোরের সার্ধ-শতবর্ষ পূর্তি , এ বছর সুকুমার রায়ের একশ’পঁচিশতম জন্মদিন পেরিয়ে এলাম ,আগামী বছরের প্রথমার্ধে উপেন্দ্রকিশোরের সার্ধ-শতবর্ষ পূর্তি আর ছোটদের প্রাচীনতম পত্রিকা ‘সন্দেশ’এর শতবর্ষ পূর্তি । নিশ্চিত ভাবেই বাঙ্গালির শিশুসাহিত্য সম্পর্কে কিছু আলোচনা হবে । সুকান্ত ভট্টাচার্য লিখেছিলেন “যে শিশু ভুমিষ্ঠ হল আজ রাত্রে....../এ বিশ্বকে এ শিশুর বাসযোগ্য করে যাবো আমি --/নবজাতকের কাছে এ আমার দৃঢ় অঙ্গীকার” । এই প্রজন্মের আমরা ছড়া - গল্প-কবিতা – গানে শিশুমনের কাছে পৌছাতে পারলে সেই অঙ্গীকার পালনে কিছুটা অংশভাগী হতে পারি ।