ইচ্ছেবাড়ী - ভিতপুজো ও শুরুর কথা
অবশেষে শুরু হল তবে। প্রথমে ভিতপুজো - তারপর যাপন। "ইচ্ছেবাড়ী" - বনদেবতার কাছে জোড়া মোরগ মানত রেখে গহনে পুঁতলাম ইচ্ছের বীজ - ক্ষ্যাপামির অভয়ারণ্যের একেবারে মাঝবরাবর এই বসত-ভিটা। তাও আবার সেই পাগলা রঙে রাঙানো - তাতে সবুজ হলুদ হাকুচ কালো পাতা, বাদামি ধূসর শুকনো ডালের ডাঁই, দাবানলে উড়ে পুঁড়ে যাওয়া ছাই, এমনকি, গায়ে গায়ে ঘেষা বিরোৎ আর আখাম্বা গাছগুলোর ফাঁক দিয়ে ক্ষীণ সুঁড়িপথ বেয়ে হঠাৎ ছুঁয়ে ফেলা অগভীর আধবোজা ডোবার পলি... সমস্ত - সব! সমস্ত রঙ এর দেওয়ালে মিশেছে। আর তাই ইচ্ছেবাড়ীর কোন নির্দিষ্ট রঙ নেই - চিত্তির বিচিত্তির মায়া রঙের পাগলা প্রান্তরে আমাদের আস্তানা কেমন অদ্ভুত মানিয়ে গ্যাছে।
ইচ্ছে তুমি দেয়াল ধরে লেখো,
অন্য অন্য প্রচুর আঁকিবুঁকি
সমস্ত সব দেয়াল জুড়ে আছে -
তারই মাঝে ইচ্ছে তুমি থাকো...
এদিক সেদিক মেলা জায়গা আছে
বন্ধুদের বসতে বলি এই মায়াময় দাওয়ায়, পাতাপুতি, শুকনো ডাল, কাগজের টুকরো, শুকনো ধুতরো ফল, সমস্ত যা পেরেছি ঝাঁটা দিয়ে পরিষ্কার করে রেখেছি... আর দু এক কুঁচি ধুলো যা এখনো লেগে আছে - তা থাকুক নাহয়... ঐ ধুলোতেই প্রতীতি অনন্য রূপ নেবে - অভিনব হয়ে ধরা দেবে পরিচিত প্রেম - বিষাদে উঠবে ডেকে নেপথ্যে ডাহুক!
বাড়ী তো হল - এবারে? এবারে আবার কি... এবারে সপরিবার ঘরে এসে দিব্যি সেঁধোবে মন। তবে হ্যাঁ - সে এক জমানা ছিলো বটে যখন জনৈক রসিক রায় একই সাথে চার সতীনে আয়েশ করতেন পিতা পিতৃব্যের চক মিলানো কোঠিতে...
আর এখন? এখন সে রামচন্দ্র নেই - বা থাকলেও তিনি বন্দী রয়েছেন ঘরের কোণে - আন্তর্জালের উদ্বাহু আলিঙ্গনে। পৃথিবী তো এখন ভেতরবাগে! ক্রমশ ছোট হতে হতে অবশেষে আটকে আছে কিবোর্ডের উপর আঙ্গুলের টরে টক্কা শব্দে! এখন জিনিস পত্রের দাম বাড়ছে - আন্তর্জালে ডালপালা মেলেছে বহুমাত্রিক সম্পর্ক সব - নানা তল - অদ্ভুত সমস্ত সব ত্রিকোণ চতুষ্কোণ! এমন ঘূর্ণাবর্তের ঘোরে সময় কিন্তু অর্থহীন! স্থান কাল পাত্র যে যার জায়গায়...
আমরা বরঞ্চ আলপথ ধরে হাঁটি আর এক মহাকাশ অন্ধকার নিয়ে একে অপরের সাথে জাহান্নামের খেলায় মাতুক বিভিন্ন সময়-কেলাশে বন্দী উপগ্রহ সব... পরাবাস্তব - অধিবাস্তব এবং ঐন্দ্রজালিক বাস্তবের কল্পসকল...