খাচ্ছি কিন্তু গিলছি না
ধর্ষণের মানসিকতা নিয়ে সরকার চলে?
মানুষ বড় আশা নিয়ে নতুন একটা সরকার এনেছে। দিল্লিতে
নরেন্দ্র মোদির সরকার তৈরি হয়েছে। ২৫ বছর পর একটা একদলের সরকার এসেছে, জোটের নয়। তাই মানুষের আশা আরও
বেশি। যে সব কাজ এতদিন মানুষ শুনেছে যে জোট রাজনীতির কারণে করা যাচ্ছে না, এবার সেগুলি হতে পারবে।
সিদ্ধান্ত গ্রহণে কোনও মমতা-জয়া-মায়ার দিকে তাকাতে হবে না। সরকার সেগুলি সহজেই করে দেবে।
দেবে তো বটেই।
ভোটের আগেই তা তাঁরা বলেছে, সুদিন আসছে। আচ্ছে দিন আনেবালা হ্যায়। ভোটের থেকে মাত্র
কয়েকটা দিন পরেই আর কাউকে জল আনতে যেতে হবে না। জল আপনি আসবে। পেটড়ল-দিজেলের দামের জন্যে চন্তা করতে
হবে না, দাম কমে
যাবে। বাজারের তরিতরকারির দাম তো একেবারে জলের মত সস্তা হয়ে যাবে। সুদিন আসছে যে! ‘আচ্ছে দিন আনেবালা হ্যায়’ না!
খাচ্ছি
কিন্তু গিলছি না-র মতো সেই
দিন এল, কিন্তু ‘আচ্ছে’ হল না! পেট্রল-ডিজেলের দাম এরই মধ্যে একাধিক বার বেড়েছে। গ্যাসের দাম এক
ধাক্কায় ১৬.৫০ টাকা
বাড়িয়েছে সরকার। অর্থাৎ, গ্যাসের দাম বেড়েছে কেজি প্রতি এক টাকারও বেশি। আনাজপাতি, তরিতরকারির দাম কমাতো দূরস্থান, আলুর কেজি ২৫ টাকা হয়েছে। বাড়তে
চলেছে কেরোসিনের দামও। পেয়াজের দামের ঝাজেই লোক বাজার থেকে পালাচ্ছে। কেজি প্রতি
৪০ টাকা পার হয়েছে আগেই, সামনে ৪৫ এর গণ্ডী। খোলা বাজারে যে যেমন পারছে, লুটে নিচ্ছে।
লুটে
নিচ্ছে। বাজার তো লুটছেই। সরকারও পাল্লা দিয়ে লুটছে। রেলের টিকিটের দাম যে হারে
বেড়েছে, তা অতীতে
কখনও হয় নি। শুধু উচু ক্লাসের ভাড়াই বাড়েচি, একেবারে তৃতীয় শ্রেণির টিকিটের দাম, এমনকি মাসিক টিকিটের দাম পকেটের
গতিতে বাড়ল। সরকার বাজেট পেশ করা পর্যন্ত অপেক্ষা করতে বলেছে, অর্থাৎ ইঙ্গিত দিচ্ছে যে, রেল বাজেটে কমতে পারে বা অন্য
অর্থে নাও কমতে পারে। কড়া দাওয়াইয়ের সুপারিশ যে মানুষের পেটে আঘাত করছে, নরেন্দ্র মোদির সরকারও সেটা
বুঝল। ফলে, বিপদ আসছে
ঘরের ভিতর থেকেই। শরিকরাও এতটা বৃদ্ধি মানতে পারছে না। বিশেষ করে মাসিক টিকিটের
ভাড়া ১৫ বার চড়ার বদলে ৩০ বারের এবং সঙ্গে সঙ্গে ১৪.২ শতাংশ হারে জ্বালানী তেলেজ দাম সংগতি শুল্ক। বাপ রে
বাপ! ১০০ টাকার
মান্থলির দাম বেরে হচ্ছিল ২৩০ টাকা। অথচ, টিকিট না কেটেও উপায় নেই। মানুষ বাধ্য হয়েই চড়া হারে মাসিক
টিকিট কাটল। পকেট লুট হয়ে গেল। পরে অবশ্য কিছুটা রহাই দিয়েছে, তবে ঐ ৮০ কিমি দূরত্ব পর্যন্ত।
তাঁর চেয়ে দূরে থাকলে চড়া হার দিতেই হবে।
রেলের মাল
পরিবহনের ভাড়াও যে জ্যামিতিক হারে বাড়ল। অর্থাৎ, আলপিন থেকে এলিফ্যান্ট – যা যা কিছু রেলের মাধ্যমে স্থানীয় বাজারে আসে, তাঁর প্রতিটির দাম বাড়বে। কোনও পণ্যের
এক কেজি ওজনের রেলের মাশুল যদি ১.৮৭ পয়সা পড়ে, বাজারে তাঁর দাম বাড়বে আরও ৩ টাকা ১৩ পয়সা, ‘রাউন্ড ফিগার’ করার তাগিদে। ফলে সব জিনিষেরই
দাম ইতিমধ্যেই বেড়েছে, খাদ্যশষ্যের
মূল্যবৃদ্ধির হার আগের চেয়ে পাঁচ শতাংশ বেড়েছে। সরকারের নতুন দাওয়াইয়ে সব পণ্যের
আরেক দফা দাম বাড়বে। লুট হবে সাধারণ মানুষের পকেট। সঙ্গে সঙ্গে
গেল মানসিক শান্তি। নতুন সরকার এনে যে শান্তি এসেছিল, তা এখনই উধাও।
আসলে এই লুট
ব্যাপারটা সবার দ্বারা হয় না। তাঁর একটা মানসিকতা চাই। চেঙ্গিস-তৈমুরের বংশধর মোগলরাও সীমানা
পেরিয়ে ভারতে এসেছিলেন, আবার নাদির শাহও এসেছিলেন। মোগলরা এদেশ শাসন করেছে দুই দশক, অনেক কিছু দিয়ে গেছে এই দেশকে – অনেক স্থাপত্য, অনেক কীর্তি। খেয়াল, কাওয়ালি থেকে সেলাই করা
জামাকাপড়ের রেওয়াজ, মশলা দিয়ে
রান্না আরও কত কি। কিন্তু নাদির শাহ এসেছিলেন লুট করতে। তিন্মাস দিল্লিতে ছিলেন। যাওয়ার
সময় ৭০০০ ঘোড়া, ৮০০০ হাতি আর
১০০০০ উট বোঝাই করে মূল্যবান সম্পদ নিয়ে গিয়েছিলেন। তৎকালীন শায়েরদের ভাষায়, দিল্লির সিথির সিঁদুর যেন মুছে
গিয়েছিল সেদিন। এই তফাৎ আসলে মানসিকতার। এই সরকারের ক্ষেত্রেও তাঁর একটা স্পষ্ট
ইঙ্গিত দেখতে পাচ্ছি।
সরকারে এসেই
মোদির মন্ত্রী-সান্ত্রীরা
তাঁদের গোপন এজেন্ডাগুলি রূপায়নের জন্য উঠে পড়ে লাগলেন। কৌশলটা নেওয়া হল পরোক্ষে
দাবি তোলার। ৩৭০ ধারা বাতিলের দাবি উঠল। সরকারের কেউ না, তুলল দল আর সঙ্ঘ পরিবার। দিন পাঁচেক কাগজে টিভিতে তাই
নিয়ে তর্ক-বিতর্ক হল।
তাঁর মধ্যেই আকালি দল ও অন্য শরিকদের কেউ কেউ সরকারকে সতর্ক করল, ধীরে চলার পরামর্শ দিল। বোঝাল, সেই ধারা বাতিল হলে কাশ্মীর
ভারতে থাকবে না। তাহলে বিজেপিকেই লোকে ভারত-বিরোধী বলবে। চেপে গেল ৩৭০ ধারা বিতর্ক। এ যেন, ‘আয় ছুরি, তোর কাপড় খুলি’ বলে তেড়ে যাওয়া। যেই না সে
চিৎকার করল, অমনি ‘দে হাওয়া চাগিয়ে কাপড়’।
শুধু কি ৩৭০ ধারা? এক সঙ্ঘ কর্মী ‘ইউনিফায়েড সিভিল কোড’ বা অভিন্ন দেওয়ানি বিধির দাবিতে
দিল্লি হাই কোর্টে মামলাই করে বসলেন। সে নিয়ে বাজার গরম করতে গিয়ে ধাক্কা খেল
বিজেপি। আদালত বলে দিল, ‘এই দাবী সংবিধান বিরোধী। রণেও ভঙ্গ দিতে হল। তার পরেই ইউপিএ
সরকারের একটি পচা ডিমের ঝুড়ি মাথায় চাপিয়ে মোদি বাজারে বেরোলেন বিক্রি করতে। আইবি-র রিপোর্ট দেখিয়ে সরকার বলল, দেশের উন্নয়নের পথে সবচেয়ে বড়
বাধা পরিবেশ কর্মীরা। তাঁরা নাকি বিদেশের অর্থে পুষ্ট। কারা তাঁরা? একজন এস পি উদয় কুমার, যিনি মতস্যজীবী ও সাধারণ মানুষকে
নিয়ে কুড়ানকুলামে পরমাণু বিদ্যুৎ কেন্দ্রের বিরুদ্ধে লড়ছেন এবং আমেরিকা-রাশিয়া-ফ্রান্সয়ের পরমাণু প্রযুক্তি বিক্রির বিরোধিতা করছেন।
আরেকজন গান্ধী ভাবাদর্শে বিশ্বাসী মেধা পাটকার, যাকে বিদেশী অর্থে পুষ্ট বলার আগে কল্কে নয়, একবস্তা গঞ্জিকা সেবন প্রয়োজন
হয়। তেমনই গ্রিন পিস, যারা সরকারের
কোকাকোলা,পরমাণু নীতি
সহ বহু পরিবেশ-বিরোধী
পদক্ষেপের বিরোধিতা করে। ক্ষুব্ধ পরিবেশ কর্মীরা চেপে ধরলেন। উদয়কুমার মাওম্লার
হুমকি দিয়ে তাঁর সম্পর্কিত আই বি রিপোর্টের কপি চাইলেন। চুপ হলেন ‘প্রবল প্রতাপশালী নরেন্দ্র
মোদি। হয়তো এ-সব কিছুর
জন্যেই তাঁকে আবার উদ্যোগ নিতে হবে, অন্য পথে এগোতে হবে, এমনকি ফের সঙ্ঘ পরিবারকে কাজে লাগিয়ে বাবরি ভাঙার মত
মব (mob) কে ক্ষেপিয়ে
মবোক্র্যাসি-র পথ ধরতে
হবে। অথচ, আগের সরকারের
পচা মাল বাতিল করার শপথ নিয়েছিলেন মোদি।
সেতা করেছেন বা করতে চলেছেন, সেগুলি ওই ধর্ষণের মানসিকতাকেই
সামনে আনে। যেমন, ক্ষমতায় এসেই
এয়ার ইন্ডিয়া, কোল ইন্ডিয়া, ভারতীয় রেল এবং রাষ্ট্রায়ত্ত
ব্যাঙ্কে বেসরকারিকরণের ঘোড়া ছোটানোর ঘোষণা করেছে। আরও বিপজ্জনক, দেশের সেনাবাহিনীর জন্যে
প্রয়োজনীয় বন্দুক, কার্তুজ, গোলাগুলি, কামান, সাঁজোয়া গাড়ি বা ট্যাঙ্ক বানানোর অধিকার সরকারি
কোম্পানির থেকে নিয়ে বিদেশি বেসরকারি কোম্পানির হাতে দেওয়ার পথ ধরতে চলেছে।
এমনিতেই দেখা যাচ্ছে, খনিতে
বেসরকারি পুজির পথ খুলে দেওয়ার পর খনিতে ব্যবহৃত ডিনামাইট সহজেই যাচ্ছে মাওবাদী
থেকে জঙ্গীদের হাত। আর এই সব অস্ত্রশস্ত্র যে সরাসরি তাঁদের হাতে যাবে না, তাঁর গ্যারান্টি কে দিতে পারে! তা না গেলেও, দেশের সেনাদের কেন
অস্ত্রশস্ত্রের জন্য টাতা-বিড়লা-আম্বানি-আদানিদের মুখের দিকে চাইতে হবে? এঁকে কি দেশের স্বার্থ রক্ষা বলে না কি? যা খাওয়াবেন, তাই খেতে হবে? বাধ্য করলে খাবো হয়ত, গিলবো না। ভুলে তো যায় নি মানুষ
যে, পৃথিবীতে
একটি মাত্র দেশে সরকারি কোম্পানী জলের দরে ব্যক্তিপুজির মালিকদের হাতে তুলে দিতে
একটা মন্ত্রক তৈরি হয়েছিল। সেটা ভারত। আর বাজপেয়ী আমলের সেই মন্ত্রকের মন্ত্রী
ছিলেন বিজেপির অরুণ শৌরী। সেন্টুর হোটেল থেকে বহু সরকারি কোম্পানির বেসরকারিকরণে
দুর্নীতির কাহিনীও মানুষ ভোলে নি।
তাই, গিলতে পারব না। ধরুন, ভোটের আগে মোদিজী ‘দামাদ জি’ নিয়ে কত কথাই না বললেন। তাই মেনে বিমান পরিবহন মন্ত্রকের
কর্তারা ‘দামাদ জি’ রবার্ট ভদেরার গিন চ্যানেল দিয়ে
যাতায়াতের অধিকার প্রত্যাহার করলেন। পালটা চিঠি দিলেন প্রিয়ঙ্কা ভদেরা। মোদিকে
চিঠি দিয়ে গত ১০ বছরে রবার্ট কতবার গ্রিন চ্যানেল দিয়ে গিয়েছেন, তা জানাতে বললেন। সেই সঙ্গে
বললেন, তাঁর নিজের
প্রাপ্য গ্রিন চ্যানেলের অধিকারও যেন প্রত্যাহার করা হয়। “আমি আমার স্বামীর সঙ্গেই সাধারণ চ্যানেল দিয়েই যাই।
সেখান দিয়েই যাব।” পর্দার আড়ালে
খেলা শেষ। মোদি নির্দেশ দিলেন, যেমন ছিল অধিকার, তেমনই থাকবে। হল? লোক ক্ষেপিয়ে ভোট, তারপরেই নজর ব্যবসায়ীর নোট’।
কি করে
ভুলবেন, রবার্ট যে
ব্যবসায়ী!
এঁর পর যেটা করলেন, সেই ভুল গত ৪৪ বছরে কেউ করেনি।
১৯৬০এর দশকে সুপ্রিম কোর্টে এক বিচারপতি নিয়োগ নিয়ে ইন্দিরা গান্ধীর পক্ষপাতিত্ব
দেশ জুড়ে নিন্দার স্রোত বিয়ে দেয়। সেই সময় থেকে সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি নিয়োগ হয়
একটি কলেজিয়ামের সুপারিশ মেনে, যার নেতৃত্ব দেন দেশের প্রধান বিচারপতি। এবারও সেই নিয়ম
মেনেই প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বে কলেজিয়াম প্রাক্তন সলিসিটার জেনারেল গোপাল সুব্রহ্মণ্যম
এঁর নাম সুপারিশ করে। এই গোপাল সুব্রহ্মণয়মই সোহরাবুদ্দিন-কৌশর বি, তুলসিদাস প্রজাপতিদের ঠাণ্ডা মাথায় হত্যার মামলায় মোদির ডান
হাত অমিত শাহ-এঁর বিরুদ্ধে
চার্জ শিট দিতে বলে। তাই তাকেই বলির পাঠা করলেন মোদি। কলেজিয়াম তৈরির পর থেকে
সুপ্রিম কোর্টে বিচারপতি নিয়োগে রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ কখনও হয় নি, এবার হল।
সব নিয়মকে উল্টেপাল্টে দিতে চায়
এই সরকার। দেশের সব সম্পদকে বেচে দিতে চায়। (এতে কাটমানির কথা না হয় বাদই দিলাম।) মানুষের পকেট কেটে য়াম্বানী-আদানীদের জন্য ‘আচ্ছে দিন’ নিয়ে আসতে চায়। যারা মানুষের
হয়ে লড়ে, তাঁদের ‘শত্রু’ নিহ্নিত করতে চায়। এই মানসিকতাটাই গণ্ডগোলের। এটাই
ধর্ষকের মানসিকতা। ধর্ষক কখনও প্রতিপক্ষকে যৌন সঙ্গমের জন্য প্রস্তুত করে নেয় না, জোর করেই করে। বেশির ভাগ সময়
জোর করে ঘরে ঢোকে বা তুলে নিয়ে যায়, কখনও কখনও পরিচিতের ছদ্মবেশে আসে। তারপর জোর করেই বিবস্ত্র
করে এবং সবকিছু লুট করে। ডাকাতরাও এমনটাই করে। অষ্টাদশ-উনবিংশ শতকের আগাম খবর দিয়ে আসত, ডাকাতেরা ধর্ষণ করত না। এখনকার
ডাকাতেরা খবর দিয়ে আসে না, ধর্ষণ করে। নন্দীগ্রাম করে, সিঙ্গুরে তাপসীর ঘটনা ঘটায়, লালগড়ের গ্রামে আদিবাসী মেয়েদের ধর্ষণ করে। আর, তারপর ভয়ে কেউ আর তাদের
বিরুদ্ধে যায় না।
মনে রাখুন, ভোটের আগে মোদি সরকারের
ইস্তাহার বেড়িয়েছিল সবার শেষে, প্রথম দফার ভোটের দিন। কেউ সেই ইস্তাহার হাতে পেয়েছেন? পেয়ে থাকলে তিনি ‘কোটি মে এক’। বাকিরা কেবল মোদির কথা শুনেছেন।
সেটাই ছিল সাধারণের জন্যে ইস্তাহার। তাতে কি একবারও ব্যাংক-বীমা-প্রতিরক্ষা উৎপাদন-কয়লা খনি-ভারতীয় রেল-এয়ার ইন্ডিয়াকে বেসরকারি করার কথা ছিল? আদিবাসীদের ‘মাওবাদী’ তকমা দিয়ে আধা সামরিক বাহিনীর
বন্দুকের সামনে দাঁড় করানোর কথা ছিল? ক্ষমতা এসেই কিন্তু জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, মাওবাদী আর উত্তর পূর্বের
মানুষের উপর নজরদারি ও যুদ্ধের সুবিধার জন্য ঢালাও অস্ত্রশস্ত্রের পাশাপাশি ৩৭০০
স্যাটেলাইট ফোন দেওয়া হবে। আসলে, বস্তারের গোণ্ড সুন্দরী বা মণিপুরের মনোরমা-চানুর বোনেরা তো কাপড় খুলছে না! তবে এই দেখ আমার বন্দুক, খোল কাপড়… আয় তোকে… ‘।
এই নীতি নিয়েই সরকার চালাবেন
মোদি, যিনি বিয়ের
পর থেকে তাঁর স্ত্রীকে মর্যাদাই দেন নি। যে মহিলা তাঁর স্বামীকে প্রধানমন্ত্রী
দেখতে চেয়ে সারা জীবন তিতিক্ষায় কাটালেন, তাঁর স্বামী প্রধান্মন্ত্রীর শপথের দিনেও তাঁকে ডাকেন নি।
হায়! স্নাতক না
হয়েই নিজের হলফনামায় যিনি নিজেকে স্নাতক বলেছিলেন, সেই অসত্যভাষণ দেওয়া স্মৃতি ইরাণি সামলাবেন শিক্ষা
মন্ত্রক। জমি কেলেঙ্কারী ও নানা দূর্নীতিতে যুক্ত নীতিন গডকড়ি, ক্রিকেট-দূর্নীতির শিরোমণি শ্রীনির দোসর
অরুণ জেটলিরা কেন্দ্রের গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রকের দায়িত্ব নিয়েছেন। দল যাকে নৈতিক-মানসিক অধঃপতনের দায়ে বদিস্কার
করেছিল, সেই উমা
ভারতী গঙ্গার দূষণ মুক্তির দায় নিয়েছেন। হায়! ফের মুক্তি পাক ‘রাম তেরী গঙ্গা ময়লি’।
আর আছেন সার
ও রসায়ন মন্ত্রকের রসিক মন্ত্রী নিহালচান্দ মেঘওয়াল, যিনি স্বামীকে বিধানসভার প্রার্থী করার প্রতিশ্রুতি
দিয়ে তাঁর সামনেই এক সদ্যযুবতীকে মাদক খাইয়ে তাঁর স্বামীর সামনেই ধর্ষণ করেছেন তিন
বছর ধরে।
মাত্র ২১ শতাংশ ভারতবাসীর
সমর্থনপুষ্ট, অন্য অর্থে
প্রদত্ত ভোটের মাত্র ৩১ শতাংশ পেয়ে) সরকার ১০০ শতাংশকেই যে শত্রু ভাবছে। সবাইকেই দাবিয়ে রেখে
নিজের উল্লু সিধা করতে চায়। গোটা দেশকেই ধর্ষণ করতে চায়! শুরুতেই এত তেজ! এই মানসিকতা নিয়ে সরকার চলে না কি!