“শুনেছ কি বলে গেল সীতানাথ বন্দ্যো?
আকাশের গায়ে নাকি টকটক গন্ধ?”
সে কোন ছেলেবেলায় যে বাবুরামের হাত ধরে সুকুমারকে জানতে শিখেছি তা আজ আর ঠিকঠাক মনে পড়ে না! তবে মনে আছে আজো, সেই কোনো এক শীতের সকালে চওড়া উঠোনে মাদুরি বিছিয়ে পড়তে বসতাম রোদের দিকে পিঠ পেতে। গায়েতে থাকতো মায়ের হাতে বোনা লাল-হলুদ-সবুজ রঙের শোয়েটার আর মাথায় মায়ের হাতের মতো নরম আর আঁচলের মতো প্রশস্ত মাফলার। আমার ছোটো সাইজের মাথা প্রায় পুরোটাই ঢেকে যেত। মনে হতো আমি হারিয়ে যাচ্ছি! তবু যেন কোথাও একটা পরম নিশ্চিন্তের আশ্রয়েই আমার বসবাস। ঘুমিয়ে উঠে আবার ঘুম চলে আসতো। প্রথমভাগ, দ্বিতীয়ভাগ সব যেন ছুঁড়ে ফেলতে ইচ্ছা করতো! দু-একটা ডিগবাজি খেতে খেতে অবশেষে মায়ের বকুনিতে খানিক স্থির হতাম। তারপর আমারই অত্যাচারে ন্যাতা হয়ে যাওয়া বইগুলোকে কাছে টেনে নিতাম সযত্নে। পড়া শুরু করতাম...
“বাবুরাম সাপুড়ে,
কোথা যাস্ বাপু রে?
আয় বাবা দেখে যা,
দুটো সাপ রেখে যা!
যে সাপের চোখ নেই,
শিং নেই নোখ নেই,
ছোটে না কি হাঁটে না,
কাউকে যে কাটে না,
করে নাকো ফোঁস ফাঁস,
মারে নাকো ঢুঁশ্ঢাঁশ,
নেই কোনো উত্পাত,
খায় শুধু দুধভাত –
সেই সাপ জ্যান্ত
গোটা দুই আনত?
তেড়ে মেরে ডাণ্ডা
ক’রে দিই ঠান্ডা।”
এমনিভাবেই হাঁটি-হাঁটি পা-পা করে কখন যে শিশুশ্রেণীর দিনগুলি, উঠনের রোদে পিঠ করে বসে থাকার দিনগুলি ক্রমশ পিছনে পড়ে গেছে সে খেয়ালও করিনি কখনো। তবুও আজ লিখতে বসে মনে পড়ছে শিশুকাল থেকে যৌবনে উত্তীর্ন হবার প্রতিটি পদক্ষেপেই ছিল সুকুমারের সহজ অস্তিত্ব। স্কুলপাঠ্যেই ছিল কিনা সঠিক মনে নেই যদিও, সেই সময়ে পড়েছিলাম ‘সত্পাত্র’, ‘ছায়াবাজি’, ‘রামগরুড়ের ছানা’, ‘নোটবই’, ‘আবোল তাবোল’ ‘কুমড়ো পটাশ’, ‘গোঁফচুরি’, ‘খুড়োর কল’, ‘পালোয়ান’, ‘বোম্বাগড়ের রাজা’, ‘গন্ধ বিচার’, ‘ভয় পেয়ো না’ ইত্যাদি বহুপ্রিয় কবিতাসমূহ। হইহুল্লোড়মাখা স্কুলজীবনের দিনগুলিতে আমাদের সবরকম হাসি-ঠাট্টা, আনন্দ-ফুর্তি, মনখারাপের অনুভূতিগুলো আবর্তিত হতো সুকুমারকে ঘিরেই। খানিকটা না জেনেই। এমনকি কলেজজীবনেও সুকুমার ছিলেন ভীষণ ভীষণভাবে জড়িয়ে। হোস্টেলের তিনটি বছরের প্রায় গোটা একটি বছর কেটে গিয়েছিল ‘লক্ষ্মণের শক্তিশেল’ নিয়ে। নাটক নির্বাচন-চরিত্র নির্ধারণ-পাঠ বিভাজন-পাঠ মুখস্ত করা... আর রাত্রে খাওয়ার পর অনুশীলন। স্বপ্নের মধ্যে ডায়ালগ আওড়াত কেউ কেউ। রিহার্স্যালকালীন সময়গুলো ছিল হাসি-খুশির স্বর্ণযুগ। যাঁর রেশ রয়ে আছে এখনো। হনুমানের জবানিতে জনান্তিকে বলা সেই উক্তি, - হ্যাঁরে! কে আমার লেজে পা দিয়ে দিলি? – কৌতুক মিশ্রিত ক্লেশানুভূতির অভিনয় আজও অমলিন হয়ে আছে। আজও। এখনো দেখা হলেই বন্ধুদের সঙ্গে শুরু হয়ে যায় একে অপরকে রাগানো। আর এখনো... কর্মজীবনেও...। সুকুমার অম্লান।
সে যাইহোক! যে কথা বলার- এই লেখাটি লেখার জন্য সুকুমারের বইগুলো ঘাঁটাঘাঁটি করতে করতে মনে মধ্যে ছোটো ছোটো জিজ্ঞাসাচিহ্নের আনাগোনা সংশয়ের সৃষ্টি করে। আমরা আবালবৃদ্ধবনিতা সকলেই সুকুমারের কবিতায়, নাটকে যে কৌতুকরস উপভোগ করি তা কি নেহাতই হাল্কা মেজাজে বন্ধু-স্বজনের মধ্যে হাল্কা হাসি-ঠাট্টা, খোশ-গল্প, ইয়ার্কির উপজীব্য! আমার তো তা মনে হয় না। কবির প্রখর বাস্তবতাবোধই রক্ষণশীল সমাজকে ব্যঙ্গরসে বিদ্ধ করেছে সত্যের সন্ধানে। আমরা যারা সমাজে প্রচলিত চিরাচরিত রীতিনীতিকে সংস্কার করার পরিবর্তে সেটাকেই আগলে ধরে রাখতে চাই পদস্খলনের ভয়ে কবিকলম তাদেরকেই হেনেছে বিদ্রূপবাণ। ভাববিলাসী ‘বাবুসম্প্রদায়’কে উচিত শিক্ষা দিইয়েছেন তিনি সমাজের নিচুতলার অভাবী মানুষের মাধ্যমে। ‘জীবনের হিসাব’ কবিতায় একথা পরিস্কার। “বিদ্যেবোঝাই বাবুমশাই চড়ি সখের বোটে
মাঝিরে কন, “বলতে পারিস্ সূর্যি কেন ওঠে?
চাঁদটা কেন বাড়ে কমে? জোয়ার কেন আসে?”
বৃদ্ধ মাঝি অবাক হয়ে ফ্যাল্ফেলিয়ে হাসে।
বাবু বলেন, “সারা জনম মরলি রে তুই খাটি,
জ্ঞান বিনা তোর জীবনটা যে চারি আনাই মাটি!”
খানিক বাদে কহেন বাবু “বল্ত দেখি ভেবে
নদীর ধারা কেম্নে আসে পাহাড় হতে নেবে?
বল্ত কেন লবণপোড়া সাগরভরা পাণি?”
মাঝি সে কয়, “আরে মশাই, অত কি আর জানি?”
বাবু বলেন, এই বয়সে জানিসনেও তাকি?
জীবনটা তোর নেহাত খেলো, অষ্ট আনাই ফাঁকি।”
* * *
খানিক বাদে ঝড় উঠেছে, ঢেউ উঠেছে ফুলে,
বাবু দেখেন নৌকাখানি ডুব্ল বুঝি দুলে।
মাঝিরে কন, “একি আপদ! ওরে ও ভাই মাঝি,
ডুব্ল নাকি নৌকো এবার? মরব নাকি আজি?”
মাঝি শুধায়, “সাঁতার জানো?” মাথা নাড়েন বাবু,
মূর্খ মাঝি বলে, “মশাই, এখন কেন কাবু?
বাঁচলে শেষে আমার কথা হিসেব করো পিছে,
তোমার দেখি জীবনখানা ষোল আনাই মিছে।”
তো, এ ভাবেই! এভাবেই সুকুমার তাঁর অন্তরের বিদ্রোহকে প্রকাশ করতেন এক রসালাপী ভাববিভঙ্গীমায়। সরল গল্পচ্ছলেই এ কবির কথা বলা। পুরাতন যুগে বিষ্ণুশর্মা, নারায়ণশর্মা প্রমুখ পন্ডিতগণ মানুষকে নীতিশিক্ষা দেবার উদ্দেশ্যে যেমন অবলম্বন করেছিলেন পশুপাখিদের! তাদের মুখ দিয়ে গল্প বলানো, সু-উপদেশ দেওয়ানো! কারণ, প্রত্যক্ষ পরামর্শ গ্রহণ করতে মানুষ হীনমন্যতায় ভোগে। গগনচুম্বী আশা-আকাঙ্ক্ষা মানুষকে ভুলিয়ে দেয় তার নীতিবোধ, ভুলিয়ে দেয় উচিত-অনুচিত, যুক্তি-চেতনা। পরশ্রীকাতরতা মানুষকে অন্ধ করে তোলে। একবারের জন্যও সে ভাবে না – স্থান-কাল-পাত্রের পরিস্থিতিতে সে কতটা উপযোগী। মানবসমাজে কাকেরা আজকাল বড় বেশি ময়ূর সেজে ঘুরে বেরাচ্ছে। কিন্তু তাদের আত্মবিবেচনা নেই। যা সুকুমারের বিদ্ঘুটে জানোয়ারেরও আছে। তাই সে নিজেকে সাজায়, আবার নিজেকে নিজে বিশ্লেষণও করে। “বিদ্ঘুটে জানোয়ার কিমাকার কিম্ভূত
* * *
এটা চাই সেটা চাই কত তার বায়না-
কি যে চায় তাও ছাই বোঝা কিছু যায় না।
কোকিলের মতো তার কন্ঠেতে সুর চাই,
* * *
আকাশেতে উড়ে যেতে পাখিদের মানা নেই-
তাই দেখে মরে কেঁদে-তার কেন ডানা নেই!
হাতিটার কী বাহার দাঁতে আর শুণ্ডে-
ওরকম জুড়ে তার দিতে হবে মুণ্ডে!
* * *
সিংহের কেশরের মতো তার তেজ কৈ?
পিছে খাসা গোসাপের খাঁজকাটা লেজ কৈ?
* * *
চুপিচুপি একলাটি ব’সে ব’সে ভাবে সে –
লাফ দিয়ে হুশ্ করে হাতি কভু নাচে কি?
কলাগাছ খেলে পরে কাঙ্গারুটা বাঁচে কি?
ভোঁতামুখে কুহুডাক শুনে লোকে কবে কি?
এই দেহে শুঁড়ো নাক খাপছাড়া হবে কি?
“বুড়ো হাতি ওড়ে” ব’লে কেউ যদি গালি দেয়?
কান টেনে ল্যাজ ম’লে “দুয়ো” ব’লে তালি দেয়?
কেউ যদি তেড়েমেড়ে বলে তার সামনেই –
“কোথাকার তুই কেরে, নাম নেই ধাম নেই?”
জবাব কি দেব ছাই, আছে কিছু বলবার?
কাঁচুমাচু ব’সে তাই, মনে শুধু তোলপাড় –
“নই ঘোড়া, নই হাতি, নই সাপ বিচ্ছু
মৌমাছি প্রজাপতি নই আমি কিচ্ছু।
মাছ ব্যাং গাছপাতা জলমাটি ঢেউ নই,
নই জুতা নই ছাতা, আমি তবে কেউ নই!”
কবির নিজস্ব কল্পলোক থাকবে সত্য, কিন্তু তা রচিত হয় বাস্তবের অভিজ্ঞতার নিরিখেই। তাই যুগে যুগে কবি-সাহিত্যিকেরা যা সৃষ্টি করেছেন তা কখনোই সমকাল বহির্ভূত নয়। বাস্তবে ঘটে যাওয়া ঘটনাই কবিকল্পনায় জারিত হয়ে সাহিত্যের রূপ লাভ করে। যেহেতু সমকালের দৃষ্টিতে কোনো সমসজই কখনোই স্বচ্ছ নয়, আর তাই বলা যায় – বর্তমানেও যেমন অর্থের বিনিময়ে শিক্ষার হাতফেরি হয় অতীতেও তার অন্যথা ছিল না। হতে পারে এখনকার সময়ের তুলনায় অল্পসংখ্যক, কিন্তু ব্যাপারটা ছিল। উদাহরণ স্বরূপ, দেশের শিক্ষাক্ষেত্রে যে চিরকালই কলুষতা ছিল তা “হাতুরে” কবিতা থেকে খানিক আন্দাজ করতে অসুবিধা হয় না। “একবার দেখে যাও ডাক্তারি কেরামৎ-
কাটা ছেঁড়া ভাঙা চেরা চট্পট মেরামৎ।
কয়েছেন গুরু মোর, “শোন শোন বত্স,
কাগজের রোগী কেটে আগে কর মক্স”।
উত্সাহে কি না হয়? কি না হয় চেষ্টায়?
অভ্যাসে চটপট্ হাত পাকে শেষটায়।
খেটে খুটে জল হ’ল শরীরের রক্ত –
শিখে দেখি বিদ্যেটা নয় কিছু শক্ত।
* * *
ছেলে হও, বুড়ো হও, অন্ধ কি পঙ্গু,
মোর কাছে ভেদ নাই, কলেরা কি ডেঙ্গু –
কালাজ্বর, পালাজ্বর, পুরোনো কি টাট্কা,
হাতুড়ির একঘায়ে একেবারে আট্কা!”
আবার, রাস্তাঘাটে মানুষ রাস্তা হারালে কিছু কিছু মানুষ যে সেই সুযোগের সত্ভাবে অসৎ ব্যবহার করে তার নিদারুন উদাহরণ অনেকেরই থাকে। আমার ক্ষেত্রেও ঘটেছিল একবার। যারা এপ্রকার কান্ডটি সমাধা করে ওমনি তাদের প্রতি মন্তব্য ঠিক্রে আসে- “আজকালকার ছোক্রারা...” কিন্তু এরকম রাস্তায় ঘোরানোর রীতি চলে আসছে, চলেই আসছে। আর সেই বাস্তবতাই উঠে এসেছে “ঠিকানা”য়। “ঠিকানা চাও? বল্ছি শোন; আমড়াতলার মোড়ে
তিন-মুখো তিন রাস্তা গেছে তারি একটা ধ’রে,
চলবে সিধে নাক বরাবর, ডানদিকে চোখ রেখে;
চল্তে চল্তে দেখবে শেষে রাস্তা গেছে বেঁকে।
দেখ্বে সেথায় ডাইনে বাঁয়ে পথ গিয়েছে কত,
তারি ভিতর ঘুর্বে খানিক গোলকধাঁধার মত।
তারপরেতে হঠাৎ বেঁকে ডাইনে মোচড় মেরে,
ফিরবে আবার বাঁইয়ের দিকে তিনটে গলি ছেড়ে।
তবেই আবার পড়্বে এসে আমড়াতলার মোড়ে –”
সমাজের চালাক-চতুর, মোড়ল কিংবা বিদ্বত্জনকেও তথা নাগরিক সমাজের গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গকে তিনি হাসতে হাসতে চূড়ান্ত ব্যঙ্গের শিখরে দাঁড় করিয়েছেন। অগাধ সত্য বলছেন অথচ বলছেন না। “এসব কথা শুন্লে তোদের লাগবে মনে ধাঁধা,
কেউ বা বুঝে পুরোপুরি, কেউ বা বোঝে আধা।
কারে বা কই কিসের কথা, কই যে দফে দফে,
গাছের ’পরে কাঁঠাল দেখে তেল মেখ না গোঁফে।
একটি একটি কথায় যেন সদ্য দাগে কামান,
মন-বসনের ময়লা ধুতে তত্ত্বকথাই সাবান।
বেশ বলেছ, ঢের বলেছ, ঐখেনে দাও দাঁড়ি,
হাটের মাঝে ভাঙবে কেন বিদ্যে বোঝাই হাঁড়ি!”
যাইহোক! কবি ‘সুকুমার রায়’কে নিয়ে বাঙালি কবি, সাহিত্যিক কিংবা গবেষক- কারোরই কোনো হেলদোল চোখে পড়ে না। অথচ যাকে নিয়ে, যাঁর কবিতা-গল্প-নাটক-প্রবন্ধ নিয়ে অনেক কিছুই করার আছে, কেন তাঁকে শুধু শিশুদের কবি বলে আড়াল করা হয়! কেন তাঁর সাহিত্যের অন্তর্নিহিতার্থ ব্যাখ্যাত হচ্ছে না! সেখানেও কি সমাজের মাথাদের কোনো কারসাজি লুকিয়ে আছে! যেহেতু আমরা সবাই তেলা মাথায় তেল দিতে পছন্দ করি। আমরা সবাই শক্তের ভক্ত। এই অল্পসময়ের স্বল্পপরিসরে কিছুই লিখে উঠতে পারলাম না। গুটিকতক কবিতার উপরই সারতে হল। বাকি পরে রইল সমস্তটাই। এখানে উল্লেখ না করা তাঁর বাকি লেখাও উঠে এসেছে কঠিন বাস্তবেরই জঠর নিঙড়ে। শুধু প্রকাশভঙ্গিমাটি অন্যরকম। হয়তো তিনি ভালোবেসে ভালো করতে চেয়েছিলেন! হয়তো বা হাসি দিয়ে জয় করতে চেয়েছিলেন! আর তাই আমার কাছে সুকুমারের কবিতার অর্থবোধ কিছুদিন আগে পাওয়া এক বন্ধুর এস.এম.এস-এর মতোই। সবারই জানা। যেটা ছিল এই রকম- স্যার – থ্রি ইডিয়ট্ ফিল্ম সে ক্যা শিখা?
কে.জি স্টুডেন্ট – আত্মহত্যা কর্না বুড়া হ্যায়।
স্কুল স্টুডেন্ট – এইম্ খুদ্ নে ডিসাইড্ ক্যরো
কলেজ স্টুডেন্ট – নাক বিচ্ মে নাহি আতি।
তো, সেই রকমই!! আমাদের শিশুবেলায় সুকুমার শৈশবের কবি হলেও সময়ের সাথে সাথে, আমাদের বয়স বাড়ার সাথে সাথে বহু পথ পেরিয়ে সেইসব একই কবিতার ভিতরে জ্বলে ওঠে বারুদ, ফুটে ওঠে সমাজের গভীর, গভীরতর অসুখের সন্ধান। যেদিকে আমারা তাকাতে চাই না। যদি কেঁচো খুঁড়তে গিয়ে আমাদেরই কাঠগোড়ায় দাঁড়াতে হয়! অথচ দেখুন, মায়ের মতো করে স্নেহচুম্বন কপালে এঁকে দুষ্টু ছেলেকে তাঁর শোধরাতে চেয়েছেন, শিশুসুলভ ভঙ্গিমাতেই! যেন, বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে শীতের রোদে যখন পিঠ তেতে যায়; মায়ের হাতের স্নেহপরশ, মায়ের হাতের শান্তিসুধা - “টকটক থাকে নাকো হলে পরে বৃষ্টি-
তখন দেখেছি চেটে একেবারে মিষ্টি।”