কবিতাজীবনী-১
পিয়াস মজিদ
আমার জীবনী মানে আমার কবিতাজীবনী। সারা জীবন ধরে তন্তু বয়ন করেও তো একটি কবিতা সেলাই করে ওঠা অনিশ্চিত। আর আমি বলছি কিনা কবিতামণ্ডিত আমার এ দোয়েল, ফড়িং, শালিকপ্রতিম জীবন!
হ্যাঁ, কেঁচো-ক্লিন্ন আমার জীবনের কিছুমাত্র তাৎপর্য যদি থাকে তবে তা কবিতার দামে কেনা। কারণ কবিতা স্বাভাবিক মনুষ্যজন্মের পর আমাকে দিয়েছে রক্তাক্ত নতুন জন্ম।
বাংলার সাধারণ নিম্নমধ্যবিত্ত পরিবারে কোনো সনত্মানের কবিতা লেখাটা মা-বাবা প্রসন্ন মনে মেনে যে নেন না তা তো সবারই জানা কথা। কবিতা লেখার পরিবেশ হয়তো পাইনি পরিবার থেকে তবে এ কথা অস্বীকার করি কী করে যে নিম্নমধ্যবিত্ত পরিবারের মানুষের অপ্রাপ্তি-টানাটানি-হতাশাই আমাকে ঠেলে দিয়েছে কালো অক্ষরে গঠিত কবিতার কন্দরে। যেখান থেকে ফেরার আর উপায় নেই।
অভিশাপ, সোনালি অভিশাপ।
২.
শাপগ্রস্থ কবিজীবন পেয়ে মাঝে-মধ্যে বঙ্কিমচন্দ্রের মতো আমিও ভাবি- এ জীবন লইয়া কী করিব? এ জীবন লইয়া কী করিতে হয়? জানি না কিছু। শুধু জানি এইখানে সরোজিনী শুয়ে আছে। জানি না তো এইখানে সরোজিনী শুয়ে আছে কি না। কবিতা আমার কাছ থেকে কেড়ে নিয়েছে নিদ্রা ও জাগৃতির মধ্যবর্তী ব্যক্তিগত সব সেতু। একথা শুনেই শিমুলপুর থেকে জনৈক বিনয় মজুমদার বলে উঠলেন সেতু চুপচাপ শুয়ে আছে জলের উপর ঘুমনত্ম তার ছায়া পড়ছে।
৩.
ঘড়ির ভেতরে বাস করে যে অমায়িক রাক্ষস, তার প্রহার প্রতিদিন আমাদের খেতে হচ্ছে নিঃশব্দে।
(সময় নিয়ে এক মিনিট; শরৎকুমার মুখোপাধ্যায়)
ঘড়ির এই নিদানহীন প্রহারের কথা বারংবার বলে গেছেন দূর দেশের ওই অন্ধ হোর্হে লুইস বোর্হেসও। কবিতাজীবনী লিখতে গিয়েই সেই কালচক্রের কথাই মনে আসছে আমার। এক একটি কবিতায় আমি কি আমাকেই লিখে চলেছি না? আর যে আমাকে লিখছি সে কোন আমি?
অতীতের,
বর্তমানের
না ভবিষ্যতের?
৪.
কবিতার জীবনী লিখতে বসে দেখছি এ লেখার শুরু নেই। শেষ তো নেই-ই। হয়তো কালের যাত্রার অনন্ত ধ্বনিমালায় মিলিয়ে গিয়ে কবিতায় গুপ্ত শ্বাস-প্রশ্বাসেরা আমাকে ধন্দে ফেলতে চাইছে।
...তাই এখানেই ইতি।
আমার জীবনী মানে আমার কবিতাজীবনী। সারা জীবন ধরে তন্তু বয়ন করেও তো একটি কবিতা সেলাই করে ওঠা অনিশ্চিত। আর আমি বলছি কিনা কবিতামণ্ডিত আমার এ দোয়েল, ফড়িং, শালিকপ্রতিম জীবন!
হ্যাঁ, কেঁচো-ক্লিন্ন আমার জীবনের কিছুমাত্র তাৎপর্য যদি থাকে তবে তা কবিতার দামে কেনা। কারণ কবিতা স্বাভাবিক মনুষ্যজন্মের পর আমাকে দিয়েছে রক্তাক্ত নতুন জন্ম।
বাংলার সাধারণ নিম্নমধ্যবিত্ত পরিবারে কোনো সনত্মানের কবিতা লেখাটা মা-বাবা প্রসন্ন মনে মেনে যে নেন না তা তো সবারই জানা কথা। কবিতা লেখার পরিবেশ হয়তো পাইনি পরিবার থেকে তবে এ কথা অস্বীকার করি কী করে যে নিম্নমধ্যবিত্ত পরিবারের মানুষের অপ্রাপ্তি-টানাটানি-হতাশাই আমাকে ঠেলে দিয়েছে কালো অক্ষরে গঠিত কবিতার কন্দরে। যেখান থেকে ফেরার আর উপায় নেই।
অভিশাপ, সোনালি অভিশাপ।
২.
শাপগ্রস্থ কবিজীবন পেয়ে মাঝে-মধ্যে বঙ্কিমচন্দ্রের মতো আমিও ভাবি- এ জীবন লইয়া কী করিব? এ জীবন লইয়া কী করিতে হয়? জানি না কিছু। শুধু জানি এইখানে সরোজিনী শুয়ে আছে। জানি না তো এইখানে সরোজিনী শুয়ে আছে কি না। কবিতা আমার কাছ থেকে কেড়ে নিয়েছে নিদ্রা ও জাগৃতির মধ্যবর্তী ব্যক্তিগত সব সেতু। একথা শুনেই শিমুলপুর থেকে জনৈক বিনয় মজুমদার বলে উঠলেন সেতু চুপচাপ শুয়ে আছে জলের উপর ঘুমনত্ম তার ছায়া পড়ছে।
৩.
ঘড়ির ভেতরে বাস করে যে অমায়িক রাক্ষস, তার প্রহার প্রতিদিন আমাদের খেতে হচ্ছে নিঃশব্দে।
(সময় নিয়ে এক মিনিট; শরৎকুমার মুখোপাধ্যায়)
ঘড়ির এই নিদানহীন প্রহারের কথা বারংবার বলে গেছেন দূর দেশের ওই অন্ধ হোর্হে লুইস বোর্হেসও। কবিতাজীবনী লিখতে গিয়েই সেই কালচক্রের কথাই মনে আসছে আমার। এক একটি কবিতায় আমি কি আমাকেই লিখে চলেছি না? আর যে আমাকে লিখছি সে কোন আমি?
অতীতের,
বর্তমানের
না ভবিষ্যতের?
৪.
কবিতার জীবনী লিখতে বসে দেখছি এ লেখার শুরু নেই। শেষ তো নেই-ই। হয়তো কালের যাত্রার অনন্ত ধ্বনিমালায় মিলিয়ে গিয়ে কবিতায় গুপ্ত শ্বাস-প্রশ্বাসেরা আমাকে ধন্দে ফেলতে চাইছে।
...তাই এখানেই ইতি।
0 comments:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন