সম্পাদকীয়
ক্ষেপচুরিয়াসের পক্ষে বাণীব্রত কুণ্ডু
এসো হে বৈশাখ...
বসন্তের দুয়ারে দাঁড়িয়ে আমরা গৃহবাসীরা দ্বার খুলে দিই। নব আনন্দে নতুন বছরকে আহ্বান জানাই, বরণ করি মহানন্দে। নতুন আশা-আকাঙ্ক্ষা, নতুন শপথ, নতুন লক্ষ্যনির্মাণ, নতুন উদ্যম... আরো আরো নতুন অনেক কিছু করার জন্য বুকবাঁধি! আমরা চলতে শুরু করি... চলি... একদিন... দুদিন... তিনদিন...! তারপর! তারপর আমাদের অস্থি-মজ্জাগুলো ক্রমশ আত্মকেন্দ্রিক হয়ে ওঠে...চিরাচরিত আলস্যধর্মে মুখ ডুবিয়ে যাপন শুরু করি... সেখানে উধাউ হয়ে যায় বর্ষারম্ভের সেই সব বাক্যরাশি! আর হবেই না বা কেন!! যেখানে চারিদিকে এতো নৃশংসতা! এতো স্বার্থপরতা! এতো মনুষ্যত্বের অবমাননা... আমাদের মনকে করে তোলে পঙ্গু! শপথ পালন করার সেই স্ব-পথ ঢেকে যায় বিধর্মী (যে নীতি-নিয়মাদি সমাজকে ধারণ করে তার বিপরীত) ঘূর্ণাবর্তে। আমরা ‘ওই আকাশের নিচে এই পৃথিবী আর পৃথিবীর প’রে ওই নীলাকাশ’ দেখতেও ভুলে যাই! ভুলে যাই ‘পরের কাষ্ঠাহরণ যাহার স্বভাব, সে পুনর্বার পরের কাষ্ঠাহরণে যাইবে’... ভুলে যাই ‘সমুখে সাগর বিরামহীন তাকিয়ে আছে, বুকে তার নয় বিরামহীন আবেগধারা’... এইভাবেই বিদায় দিই এক একটি বছরকে! হয়তো বা তার সাথে একটু একটু করে বিদায় দিই আমাদের মান-হুঁশ...
যাইহোক, বন্ধুরা! এই নববর্ষটি হোক আমাদের কাছে অন্যরকম। শুধু সাহিত্যাঙ্গনেই নয়, আমরা যেন তুখোরভাবে সমাজেও বিচরণ করতে সার্থক হই আমাদের প্রত্যেকের মধ্যে নিহিত প্রতিবাদীসত্ত্বা নিয়ে! নির্মল সমাজগঠনে অগ্রদূত হই যেন কবি-সাহিত্যিক-শিল্পী মানুষজনেরাই... যুগে যুগে এঁরাই পথ দেখিয়ে এসেছেন সমাজকে, রাষ্ট্রকে... আসুন বন্ধুরা নতুন বছরকে নতুনত্বে সাজিয়ে তুলি মনুষ্যত্বের আলোয় আলোয়... সৌরভে ভরিয়ে দিই বকুলে বকুলে...
ক্ষেপচুরিয়াসের পক্ষে বাণীব্রত কুণ্ডু