বুধবার, ১৪ নভেম্বর, ২০১২

ইন্দ্রাণী সরকার

ব্যাঙ্গমা আর ব্যাঙ্গমীর গল্প


ব্যাঙ্গমা কয় ব্যাঙ্গমীরে - বলব তোকে আজ,

আজব দেশের রূপকথা মস্ত যে তার রাজ |
রাজকুমারী চম্পাবতীর চাঁপার মতো রঙ
মেঘবরণী কৃষ্ণকেশী লজ্জাবতী ঢঙ |
দোরের ধারে বসেছিল রূপমতি কন্যা
চাঁদের আলোয় উছলে পড়ে এমন রূপের বন্যা |
হঠাৎ দেখে জ্যোত্স্না ঢাকা আলের পথ বেয়ে
স্বপ্নদেশের রাজার কুমার তার দিকেতে চেয়ে
পলকহারা চোখের তারায় গভীর চাউনি তার
রাজকুমারীর অবাক চোখে পলক পড়ে না আর |
ব্যাঙ্গমী কয় ব্যঙ্গমারে, তারপরে কী বল্
চুপ করে আর থাকিস না তো, করিস মিছে ছল |
হাস্যমুখে ব্যঙ্গমা কয়, তারপরে কী বলি
চুপ করা এই রূপকথাতেই ভরল কথার থলি |


আজব রাজা



আজবপুরের রাজামশাই

থাকত একটা ঝিলে
লোক লস্কর গিলে গিলে
পেটে হলো তার পিলে |
পিলের ব্যথায় রাজামশাই
বাপরে মারে চেঁচায়
সবার তখন গালে হাত
জানটা বুঝিবা যায় |
জ্যোতিষ আসে, বদ্যি আসে
ঘোড়ার গাড়ি চড়ে
চোখ বুজিয়ে চিন্তা করেন
লম্বা দাঁড়ি নেড়ে |
কূল কিনারা পায় না কেউ
এ কী ভীষণ দায় !
অসুখটা যদি না ধরা যায়
প্রাণটা যে তার যায় |
ছুতোর এক যাচ্ছিল বুঝি
সেই পথটি দিয়ে
ভিড়টা দেখে অবাক হয়ে
ভাবল মনে কী এ !
লোকের কাছে জানলো ডেকে
সব কিছু ঠিক ঠিক
ভাবলো মনে, এই ব্যাপার,
করব একটা গতিক |
রাজার কাছে গিয়ে বলল,
চিন্তা কিছুই নাই,
ভালো আপনায় করবই আজ
ওগো রাজামশাই |
এই না বলে কাস্তে দিয়ে
মারলো রাজার পেটে
ফটাস করে বেরিয়ে এলো
পিলেটা পেট ফেটে |
সবাই বলে, ও বাবা গো,
এ কী আজব কাণ্ড !
এই জন্যই পেটের ব্যথা
থামে না এক দণ্ড |
ছুতোর তখন সেলাই করে
রাজার মস্ত পেট
সেলাই শেষে রাজা মশাই
মাথা করল হেঁট |
বলল কেঁদে, আর কখনো
লোক খাবো না ওরে
ও ভগবান, এবার আমায়
ক্ষমা কর যে রে |
নাক মুলছি, কান মুলছি
ভালো ছেলে হবো
সবাইকে আদর করে
দই মিষ্টি দেবো ||