বৃহস্পতিবার, ৬ ফেব্রুয়ারী, ২০১৪

কবিতা - অঞ্জন খান

অঞ্জন খানের কবিতা



১।

মেঘগুলোকে খুব বিমর্ষ লাগছে
ফাঁসিতে ঝোলার আগে দন্ডপ্রাপ্ত'র যেমন লাগে
মেঘেদের কি ফাঁসি হয় ! ফাঁসির আগে তারা কি কান্না টান্না করে
কিংবা প্রিয় কোন খাবারের বায়না ...
এখন আকাশ রোদ্রকরোজ্জল !
এখন বিকেল ;
দুপুরে এক দল মেঘ-কে ফাঁসিতে ঝোলানো হয়েছে ।
এ সময় তারা আশ্চর্যরকম স্থির ছিলো ।
তবে আরো আশ্চর্যের ব্যাপার হচ্ছে : দলছুট এক মেঘ গলায় দড়ি পরানোর আগেভাগে
এক নীল চোখ রমণীর চুম্বন প্রার্থনা করে বসলো !
এখন বিকেল ; জেল পুলিশরা সব শহরের রাস্তায় রাস্তায়
তারা চলমান নারীদের চোখে চেয়ে চেয়ে খুঁজছেন
নীল চোখ রমণী ...


২।

উপরে উঠে যাচ্ছে
এলোমেলো হাঁটছে আমাদের দীর্ঘশ্বাস
ঝরে পড়ছে
বৃষ্টির মতোন আমাদের দীর্ঘশ্বাস
আহা ! দীর্ঘশ্বাস ছেড়ো না তবু আর !
আমরা এখন কানে কানে কথা বললে
রাষ্ট্র ভাবতে পারে : ষড়যন্ত্র
দরকার নেই ;
তুমি বরং আড়াই হাজার মাইল দূর থেকে আমার নাম ধরে ডাকো
আমি শুনতে পারবো
দীর্ঘশ্বাস ছেড়ো না তবু আর !


৩।

আগের নম্বরটাই আছে দেখছি ! পালটাসনি যে
হরহামেশা সিম পালটায় অনেকে আজকাল
পোশাকের মতন
কতদিন তোর খবর রাখি না
মাঝরাতে ফোন করে ঘুম জাগিয়ে
(দুর্দান্ত ) আবদার করিনা কোন
যা শোনে পাথরের মতন শক্ত হয়ে যেতে পারিস
কেমন থাকিস আজকাল
আজকাল খুব হিসেব করে চলতে হয়। চাঁদ উঠলে আকাশ দেখি না। রাতের বেলায় ঘুম জাগি না।
বৃষ্টি-ত্রিস্টি এলে মধ্যবয়সী দোকানদারের মতন নাক কুচকে বলে উঠি : কি শুরু হলো আবার !
তোর খবর কী
পড়শোনা, আর কি সব যেনো করছিলি
লেগে থাক ! কাজে লাগবে ; না লাগলেও সমস্যা নেই
এই অঞ্চলে নারীরা এখনো জব মারকেটের চেয়ে টিভিতে রান্নার প্রোগ্রাম দেখতে পছন্দ করে বেশি ।
একটা খবর আছে ! সেই অসুখটা বেড়েছে আবার ! ওই যে মধ্যরাতে আধোঘুমে জল-পতনের শব্দ শোনা !
অসুখটা বেড়েছে ! এখন একটা নদী দেখি ! কাবেরী ! দীপা'র নদী ! রুপালী জলে সোনালী মাছ কাটছে সাতার !
একদিন জিজ্ঞেস করবো দীপাকে : ওই নদীটির কোন শাখার নাম কোন কালে 'অঞ্জন' ছিলো কিনা ...
রাখি এখন । অন্যদিন অনেক করে কথা হবে । আজ একটু কাজ বেড়েছে । রাখি এখন ।
মাঝেমধ্যে খবর নিলেও পারিস ! আমার কথা !
আমার কথা থাক
আমি এখন ভালো থাকি
ভালো থাকি ...