শনিবার, ১৫ সেপ্টেম্বর, ২০১২

ঋপণ আর্য


ঋপন আর্য
রুদ্রপুর,৭৪৩২৭৪


(এক)
সমস্ত কুরিয়ার থেকে অনেক দূরে
শীতের মাঝামাঝি এখানে সস্তায় মাটি।
শক্তিমান লরি...বড় বড় পুকুর...আর
ক্রমশ পাড় ভাঙার শব্দ

পিওন গোবিন্দদা কখনও সখনও একটানা
কাঠঠোকরার শব্দ রেখে যান ঝুলবারান্দায়


(দুই)
আমার দিক দিয়ে তাকালে গ্রামটাকে ভাবাযাচ্ছে লম্বুগাছ।
অন্যান্য গাছের মাথা ছাড়িয়ে অনেকটা,
ঝড় এলে মাটি থেকে মাথার দূরত্ব যার
সব থেকে কম


(তিন)
আমার ঠিকানার ডাকনাম খাসপাড়া ।
হাবড়া ভ্যানস্ট্যান্ডও জানে। আমি সাইকেলেই...
গ্যারেজের মলয়দা অসংখ্য সাইকেলের মধ্যে
কী অদ্ভুত আমারটাকে চিনে নিচ্ছে !
না ফিরলে ঘরে তুলে রাখছে...

ফিরতেই হয়... রবিবার, মাঘমাস, জ্যামভর্তি বছর

ব্যবহৃত তারিখের মতোই ফেরনি আর...।
ব্যবহৃত তারিখ হয়ে থেকে গেছে
ভেঙে যাওয়া থার্মোমিটার


(চার)
ঝাঁপ খুল্লেই ছ’ফুট বাই ছ’ফুটের একটা জানলা।
কারো কোনো বিশেষ পরিস্থিতির দরজা, এই মুহূর্তে যেমন চালভাঙা মেশিনের একটানা ঝাঁঝাঁ। এমনিতেই ঝাঁপ খুল্লেই সরাসরি চোখে ঝাঁপিয়ে পড়ে চু-কিতকিত চুমুক নিয়ে অশ্বত্থ আর

পাখিদের শূণ্যতা
এয়ারগান নিষিদ্ধ হ’লেও ভাইভাই দোকানে ঝুলতে গুলতি
তারও অনেক আগে
গুলতি থেকে
বহু গান
লম্বু বাগান পেরিয়ে
পিয়ালীদের ছাদে


(পাঁচ)
পিয়ালির জন্য হলুদফুলকে ভাববো না,
হলুদফুলের জন্যই পিয়ালি ।
বাড়ি থেকে বেরিয়ে গাছটি দেখেই মনে পড়লো
২৩শে জুন । অথচ
গাছটিতে একটাও হলুদফুল নেই



(ছয়)
বিগত কয়েক বছরে মায়ের অনেক চুল উঠে গেছে
উঠে যাওয়া চুল জমিয়ে ফিরিওলার কাছ থেকে
বিনিময়ে কখনো স্টিলের বাটি কখনো বা কাচের গ্লাস।
যার একটি গ্লাসে রোজ চা খাই আর ভাবি,
লেবেল ক্রসিংটাই পারস্পরিক ফারাক...

নিজের আদলে নির্জনতা খুঁজতে গিয়ে দেখছি,
প্রত্যেক দাবির পেছনে থেকে যাচ্ছে একটানা গোয়ার্তুমি
আর প্রত্যেক ঘুমের পেছনে নানান মাপের মুন গ্লাস

(সাত)
বিশ্বাস এখানেও পরভোজী । বনভূমি ভাসে শিরায় ।
টিপতে টিপতে মধ্যরাত্রি ঘরের তুচ্ছতায় আদর হচ্ছে...
প্রকৃত আদরে শব্দ থাকে না।
বাতাসের বিনিসুতোয় ঘটনার রটনা অনেক,
অন্যের ঘটনা সহজেই গায়ে জড়াচ্ছে এখানে।
কোনো কাঠামোই নীলকণ্ঠ ফুলগাছ হচ্ছে না !
মুখ থেকে মুখে ঘুরে বেড়াচ্ছে সবুজ মাউথ অরগ্যান।

(আট)
রাতের পর রাত রাস্তা ডিঙিয়ে ঘর !
টেবিলভর্তি ক্লোজ শট ছড়িয়ে রেখে
একটা বোবা সফরে... আমি ঘুমিয়ে গেলে
শেষ আত্মরক্ষা মশারি।
কী অদ্ভুত, মশারির ভিতর থেমে যাওয়া
সময়টুকুই সম্পর্কের তলানি হয়ে থেকে যাচ্ছে

(নয়)
সপ্তাহ দুয়েক আগেই স্বদেশবাবুর সঙ্গে পরিচয়,
শিয়ালদহ টিকিট কাউন্টারে । এক সঙ্গের গল্প নিয়ে হাবড়ায়।
তার নাকি রোজ আমার বাড়ির সামনে দিয়ে যাতায়াত ।
মিথ্যে মনে হল, কোনোদিনই আমি তাকে দেখিনি... ।
অথচ পরিচয় হবার পর থেকে তাকে নিয়মিত দেখছি




1 comments:

অপরাজিতা বলেছেন...

কোন্‌টা রেখে কোন্‌টা বলি....... প্রতিটি অসাধারন হয়েছে, আপা.... :))