শনিবার, ১৫ সেপ্টেম্বর, ২০১২

পৃথা রায়চৌধুরী


ছাপ পড়ে থাকে

কবে কোনো যুগে স্কুলের পরীক্ষায়
একটি খালি টুথপেস্ট টিউবের আত্মকথা লিখে
দুর্ভাগ্যক্রমে পঁচিশের মধ্যে বাইশ পেয়েছিলাম
সেই থেকে আনন্দ কাকু স্যার
কি এক সম্ভাবনা খুঁজেই যেতেন,
সেনবাড়ির টিকলি আকাশ ছোঁবে

নিয়ম করে ঘষা কাঁচের দৃষ্টিপাতে
কঠোর অনুশীলন
ঠিক সন্ধ্যে ছটা থেকে;
নতুন কেনা টিভিতে
সদ্য তেরো মন পড়ে থাকত
অসহ্য অস্থির রাগে

ব্যাজার মুখে একের পর এক
অঙ্ক, ইংরেজি, বাংলা, বিজ্ঞান
ঠেসে যেতাম নিরুপায় মগজে;
চা জলখাবারের ওপর দিয়ে
মা নিত্য শুনত,
মেয়ে আপনার রত্ন!

হাজার বিরক্তিতে চিনতাম
সপ্তর্ষি মণ্ডল, পানকৌড়ি বা
ভেনাস ফ্লাই ট্র্যাপ;
তৈরি হতাম অহংকারী
একটু একটু করে

একালের স্বনামধন্যা লেখিকা
গুপ্তবাড়ির বৌমা আরাত্রিকার
শ্বশুরবাড়ির জানালায় প্রতি দুপুরে
ডাঁটি ভাঙা বাইফোকাল এসে দাঁড়ায়
একরাশ ক্ষিধে নিয়ে,
যা মেটাতে আসে না ডলারি ভাত
সুদূর আমেরিকা থেকে

নিয়মযত্নে বেড়ে দেওয়া
থালাভর্তি মায়া পেটপুরে খেয়ে
বিড়বিড় করে সনেট বা ক্যালকুলাস
বোঝাতে বোঝাতে
পরেরদিন ফিরে আসবার আশ্বাসে
মিলিয়ে যান রাস্তার বাঁকে
তখনকার বিরক্তিকর স্যার

কলম ধরে রোজ পাতার পর পাতা
লিখি তাঁর প্রাচীন হাই পাওয়ার কাঁচের
প্রতিফলনে
একটু একটু করে পৌঁছে গেছি
তাঁর ইচ্ছেখ্যাতির চূড়ায়


 

6 comments:

indrajit বলেছেন...

অপূর্ব লাগলো লেখাটা পড়ে। প্রীথা, খুব সুন্দর লেখো তুমি।

Chiranjeet Laha বলেছেন...

asadharon pree. just awesome.

Indra বলেছেন...

Khub sundor..........

milan বলেছেন...

" ইচ্ছেখ্যাতির চূড়ায়"
খুব ভালো লিখেছিস পৃথা ।

Banibrata বলেছেন...

ভালো লাগলো।
বহতা নদীর মতো কবিতার কথা!!

Preetha Roy Chowdhury বলেছেন...

সবাইকে অসংখ্য ধন্যবাদ জানাই। ভালো থাকো / থাকুন সবাই।