শনিবার, ১৪ সেপ্টেম্বর, ২০১৩

ধারাবাহিক উপন্যাস – রাজর্ষি চট্টোপাধ্যায়

অবভাস
রাজর্ষি চট্টোপাধ্যায়




- দ্বিতীয় অধ্যায় -



কুর্তি এখানে নদীটির নাম ধরে / ঘাই-হরিণীরা তামাক বনেতে আসে / নাভিগন্ধে তুমুল হর্ষে প্রাণ / বহ্নি জাগায় উৎসব পরবাসে



কুর্তি নদীর নাম সে আগে কখনো শোনে নি। শোনার কোথাও না। মুর্তি নদীর নাম শুনেছে। কিন্তু এবারের উত্তরবঙ্গ যোগাযোগটা বেশ অর্থবহ হল। লাটাগুড়ি পেরিয়ে ডান হাতে মুর্তি ঢোকার আগেই তার সাথে দেখা হল এক ঢের পুরনো বন্ধুর। বাইক-সওয়ারী, আর সে গাড়িতে।



কীরে, তুই এখানে?

আমার তো ঘর বাড়ি সব এখন এই ডুয়ার্স

সে কী রে!

নাম, চা খাই

চা? সূর্য পাটে যাচ্ছে আর তুই বলছিস চা!

তাহলে আমার বাড়ি চল

তোর বাড়ি?

হুম

হুম কী?



বাতবাড়ি ফার্মমোড় পেরিয়ে ডান হাতে একটা হলুদ রঙা বাড়ির দোতলায় ডেরা বেঁধেছে। ঢুকেই দুটো গ্লাস ধুয়ে একটা কম দামী হুইস্কির দু লিটার বোতল থেকে ঢক ঢক করে পেল্লাই মাপের পেগ বানিয়ে বসল।



এ তো পাতিয়ালা রে...

মেরে দে, তারপর চল ছোট্ট একটা কাজ আছে

কাজ?



দু পাত্র মারার পর ওর বাইকের পেছনে সেও উঠে বসল। ফার্মমোড় থেকে ডান হাতে ঘুরে প্রায় দু কিলোমিটার যাওয়ার পর একটা গ্রামের ভেতর দিয়ে নেমে গেল সোজা। রাস্তা নয়, রাস্তার একটা আদল মাত্র। তারপরে গিয়ে পৌঁছল অনেকটা সমতল ভূমি, গোচারণ ক্ষেত্রই বলা যায়। এক লপ্তে অনেকটা সমভূমি, নদীটা একটা দিক ঘিরে রয়েছে। আর এক দিকে চা বাগান। উত্তর-পূর্বে স্পষ্ট আকাশের প্রেক্ষাপটে প্রতীয়মান ভূটান রেঞ্জ।



কাঁধ ঝোলায় একটা বোতল বাননোই ছিল।



বার করে বলল, ফলিং ইন্টু দিস?

আর সে তখন আকাশের দিকে মুখ তুলে বিড় বিড় কী সব বলছে...।